০৪:৪৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০৭ অক্টোবর ২০২৪

ভাঙ্গুড়ায় কাঁচা মরিচের কেজি ২৭০ও ডিমের খাচি ৩২০ টাকা

বর্ষায় আবাদ ‘কম হওয়ার’ কারণে ভাঙ্গুড়ার বাজারগুলোতে বেড়েছে কাঁচা মরিচের দাম।
সরেজমিনে ভাঙ্গুড়ার বিভিন্ন হাট-বাজার ঘুরে শরৎনগর-হাট,ভাঙ্গুড়া কাঁচাবাজার,কালিবাড়ী বাজার, ঘুরে দেখা যায় প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ২৭০ টাকায়।

শরৎনগর হাটের কাঁচা মরিচ বিক্রেতা আব্দস সাত্তার, সিংগাড়ীর আকতার হোসেন বলেন, “হঠাৎ করে বাজারে কাঁচা মরিচের আমদানি (সরবরাহ) অনেক কমে গেছে। আমরা ভাঙ্গুড়া পাইকারি বাজার থেকে (৫০ কেজির বস্তা) পাইকারি দরে কাঁচা মরিচ কিনে থাকি।

“আজকে প্রতি ৫০কেজির বস্তা পাইকারি দরই ৯০০০ টাকার ওপরে কেনা পড়েছে। এখন আমরা পোয়া (২৫০ গ্রাম) বিক্রি করছি ৬৫ টাকায়।”
গত কিছু দিন ধরেই চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে কাঁচা মরিচ। চলতি সপ্তাহে এর দাম কেজিতে আরও ৫০ টাকা বেড়েছে।
শাহ জালাল বলেন, “গত সপ্তাহেও কাঁচা মরিচ ১৫০ থেকে ১৬০ টাকার মধ্যে ছিল। পাইকারি বাজারেই এর সংকট দেখা দিয়েছে, টাকা দিয়েও পাওয়া যাচ্ছে না।”

মুল্লিক চক গ্রামের সবজি বিক্রেতা ফারুক হোসেন বলেন, “আবহাওয়াগত কারণে কাঁচা মরিচের ক্ষেত নষ্ট হয়েছে, এই কারণে উৎপাদন কমেছে। এখন বাজারে গিয়ে এই সংকট পড়েছে।
“দুই এক দিনের মধ্যে যদি ইন্ডিয়ান কাঁচা মরিচ দেশে আসে তাহলে দাম কমে আসবে।”

শরৎনগর হাটের সবজি বিক্রেতা আনোয়ার হোসেন জানান, “বেশি কাঁচা মরিচ আসে উত্তরবঙ্গের কিছু জেলা থেকে, সেখানে ফলন কমে গেছে। পাইকারি বাজারে সরবরাহে ঘাটতি দেখা দিয়েছে। যে কারণে দাম চড়েছে।”
চৌবাড়ীয়ার(সাহেব পাড়া) বাসিন্দা শাহিনুর রহমান বলেন, “বাজারে তো সব কিছুর দামই বাড়তি, কোনো সবজিই ৩০ টাকা কেজির কমে কিনতে পাওয়া যায় না। এর মধ্যে কাঁচা মরিচের দাম আকাশ ছোঁয়া!

দেশের সবচেয়ে বেশি মরিচ আবাদ হয় বগুড়ার বিভিন্ন উপজেলায়। ওই জেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কার্যালয়ের উপ-পরিচালক দুলাল হোসেন জানান বর্ষা মৌসুমে মরিচের আবাদ কমে যায়।
তিনি বলেন, “এই সিজনে আবহাওয়া খারাপ থাকে, বৃষ্টি-বাদল-বন্যার কারণে মরিচ গাছের গোড়া পচন ধরে গাছ মরে যায়।

“কৃষকরা মরিচের চাষাবাদ করে বেশি ভালবান হতে পারে না। এই কারণে বহু কৃষক আবাদ কমিয়ে দেয়। এসব কারণে ফলন কম হয় বলে প্রতি বছরের এই সময়ে কাঁচা মরিচের দামও বেশি থাকে।”
আগামী দেড় থেকে দুই মাস এই অবস্থা চলবে জানিয়ে তিনি বলেন, “নতুন করে চাষাবাদ হচ্ছে, তখন নতুন মরিচ বাজারে আসলে দাম স্বাভাবিক হবে।”

ডিম-মুরগির দামও চড়া

ভাঙ্গুড়ার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায় ডিম এবং মুরগির দামও বেড়েছে। ফার্মের প্রতি খাচি(৩০ডিম) লাল ডিম ৭০ টাকা এবং সাদা ডিমের দাম বেড়েছে ৬০ টাকা। ব্রয়লার, সোনালী ও লেয়ার মুরগির দামও কেজিতে ৩০ থেকে ২৫ টাকা বেড়েছে।
এদিন (প্রতি খাচি) ৩০টি ফার্মের ডিম ৩৩০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়। গত সপ্তাহে ছিল ২৫০ টাকা। , গত সপ্তাহের চেয়ে খাচিতে ৮০ টাকা বেড়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

এছাড়া ব্রয়লার মুরগির দাম গত সপ্তাহের চেয়ে ১০ টাকা বেড়ে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৬৫ টাকায়। সোনালী ও লেয়ার মুরগির দামও কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা বেড়ে ২৮০ থেকে ২৯০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। যা গত সপ্তাহে ২৭০ থেকে ২৭৫ টাকায় বিক্রি হয়।
শরৎনগর ও ভাঙ্গুড়া বাজারের ব্রয়লার হাউসের বিক্রেতা,মহন, ইমরান,মোস্তাক বলেন, আমরা পাইকারি দরে মুরগি কিনে আনি, সেখানেই দাম বাড়তি। কেনা দাম বেশি হলে তো বিক্রিও সেই অনুসারে করতে হয়।”

ভাঙ্গুড়া বাজারের পাইকারি মুরগির দোকানী ওমর ফারুক জানান, খামারি পর্যায়ে উৎপাদন কমে যাওয়ায় সরবরাহ কমেছে বলে মুরগি দাম বেড়েছে।
“গরম আবহাওয়ার কারণে ফার্মের ভেতরে মুরগি মারা যায়, এছাড়া মুরগির খাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় উৎপাদন পর্যায়ে ব্যয় বেড়েছে, এই কারণে দাম বাড়তি।”

বিজনেস বাংলাদেশ/হাবিব

জনপ্রিয়

রংপুরে রেল স্টেশনে বৈষম্য উন্নয়ন হয়নি,প্রতিবাদে অবরোধ

ভাঙ্গুড়ায় কাঁচা মরিচের কেজি ২৭০ও ডিমের খাচি ৩২০ টাকা

প্রকাশিত : ০২:৩২:৪০ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৪ অগাস্ট ২০২২

বর্ষায় আবাদ ‘কম হওয়ার’ কারণে ভাঙ্গুড়ার বাজারগুলোতে বেড়েছে কাঁচা মরিচের দাম।
সরেজমিনে ভাঙ্গুড়ার বিভিন্ন হাট-বাজার ঘুরে শরৎনগর-হাট,ভাঙ্গুড়া কাঁচাবাজার,কালিবাড়ী বাজার, ঘুরে দেখা যায় প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ২৭০ টাকায়।

শরৎনগর হাটের কাঁচা মরিচ বিক্রেতা আব্দস সাত্তার, সিংগাড়ীর আকতার হোসেন বলেন, “হঠাৎ করে বাজারে কাঁচা মরিচের আমদানি (সরবরাহ) অনেক কমে গেছে। আমরা ভাঙ্গুড়া পাইকারি বাজার থেকে (৫০ কেজির বস্তা) পাইকারি দরে কাঁচা মরিচ কিনে থাকি।

“আজকে প্রতি ৫০কেজির বস্তা পাইকারি দরই ৯০০০ টাকার ওপরে কেনা পড়েছে। এখন আমরা পোয়া (২৫০ গ্রাম) বিক্রি করছি ৬৫ টাকায়।”
গত কিছু দিন ধরেই চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে কাঁচা মরিচ। চলতি সপ্তাহে এর দাম কেজিতে আরও ৫০ টাকা বেড়েছে।
শাহ জালাল বলেন, “গত সপ্তাহেও কাঁচা মরিচ ১৫০ থেকে ১৬০ টাকার মধ্যে ছিল। পাইকারি বাজারেই এর সংকট দেখা দিয়েছে, টাকা দিয়েও পাওয়া যাচ্ছে না।”

মুল্লিক চক গ্রামের সবজি বিক্রেতা ফারুক হোসেন বলেন, “আবহাওয়াগত কারণে কাঁচা মরিচের ক্ষেত নষ্ট হয়েছে, এই কারণে উৎপাদন কমেছে। এখন বাজারে গিয়ে এই সংকট পড়েছে।
“দুই এক দিনের মধ্যে যদি ইন্ডিয়ান কাঁচা মরিচ দেশে আসে তাহলে দাম কমে আসবে।”

শরৎনগর হাটের সবজি বিক্রেতা আনোয়ার হোসেন জানান, “বেশি কাঁচা মরিচ আসে উত্তরবঙ্গের কিছু জেলা থেকে, সেখানে ফলন কমে গেছে। পাইকারি বাজারে সরবরাহে ঘাটতি দেখা দিয়েছে। যে কারণে দাম চড়েছে।”
চৌবাড়ীয়ার(সাহেব পাড়া) বাসিন্দা শাহিনুর রহমান বলেন, “বাজারে তো সব কিছুর দামই বাড়তি, কোনো সবজিই ৩০ টাকা কেজির কমে কিনতে পাওয়া যায় না। এর মধ্যে কাঁচা মরিচের দাম আকাশ ছোঁয়া!

দেশের সবচেয়ে বেশি মরিচ আবাদ হয় বগুড়ার বিভিন্ন উপজেলায়। ওই জেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কার্যালয়ের উপ-পরিচালক দুলাল হোসেন জানান বর্ষা মৌসুমে মরিচের আবাদ কমে যায়।
তিনি বলেন, “এই সিজনে আবহাওয়া খারাপ থাকে, বৃষ্টি-বাদল-বন্যার কারণে মরিচ গাছের গোড়া পচন ধরে গাছ মরে যায়।

“কৃষকরা মরিচের চাষাবাদ করে বেশি ভালবান হতে পারে না। এই কারণে বহু কৃষক আবাদ কমিয়ে দেয়। এসব কারণে ফলন কম হয় বলে প্রতি বছরের এই সময়ে কাঁচা মরিচের দামও বেশি থাকে।”
আগামী দেড় থেকে দুই মাস এই অবস্থা চলবে জানিয়ে তিনি বলেন, “নতুন করে চাষাবাদ হচ্ছে, তখন নতুন মরিচ বাজারে আসলে দাম স্বাভাবিক হবে।”

ডিম-মুরগির দামও চড়া

ভাঙ্গুড়ার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায় ডিম এবং মুরগির দামও বেড়েছে। ফার্মের প্রতি খাচি(৩০ডিম) লাল ডিম ৭০ টাকা এবং সাদা ডিমের দাম বেড়েছে ৬০ টাকা। ব্রয়লার, সোনালী ও লেয়ার মুরগির দামও কেজিতে ৩০ থেকে ২৫ টাকা বেড়েছে।
এদিন (প্রতি খাচি) ৩০টি ফার্মের ডিম ৩৩০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়। গত সপ্তাহে ছিল ২৫০ টাকা। , গত সপ্তাহের চেয়ে খাচিতে ৮০ টাকা বেড়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

এছাড়া ব্রয়লার মুরগির দাম গত সপ্তাহের চেয়ে ১০ টাকা বেড়ে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৬৫ টাকায়। সোনালী ও লেয়ার মুরগির দামও কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা বেড়ে ২৮০ থেকে ২৯০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। যা গত সপ্তাহে ২৭০ থেকে ২৭৫ টাকায় বিক্রি হয়।
শরৎনগর ও ভাঙ্গুড়া বাজারের ব্রয়লার হাউসের বিক্রেতা,মহন, ইমরান,মোস্তাক বলেন, আমরা পাইকারি দরে মুরগি কিনে আনি, সেখানেই দাম বাড়তি। কেনা দাম বেশি হলে তো বিক্রিও সেই অনুসারে করতে হয়।”

ভাঙ্গুড়া বাজারের পাইকারি মুরগির দোকানী ওমর ফারুক জানান, খামারি পর্যায়ে উৎপাদন কমে যাওয়ায় সরবরাহ কমেছে বলে মুরগি দাম বেড়েছে।
“গরম আবহাওয়ার কারণে ফার্মের ভেতরে মুরগি মারা যায়, এছাড়া মুরগির খাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় উৎপাদন পর্যায়ে ব্যয় বেড়েছে, এই কারণে দাম বাড়তি।”

বিজনেস বাংলাদেশ/হাবিব