০৪:৫৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৪

খোলা বারান্দায় একসাথে চার শ্রেণীর পাঠদান

কক্ষ সংকটে প্রতিদিন চার শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের সীমাহীন ভোগান্তির মধ্যে খোলা বারান্দায় চলছে পাঠদান। গত পাঁচ মাসের অধিক সময় রোদ-বৃষ্টির মাথায় নিয়ে এখনও সেখানেই ক্লাস করছে তারা। সূর্য পশ্চিম দিকে একটু হেলে পড়ায় রোদ সরাসরি শিক্ষার্থীদের গায়ে লেগেছে। শিক্ষকের লেখার বোর্ডও নেই। সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চিত্র এটি। বলছি নাটোরের বাগাতিপাড়ার স্বরুপপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কথা।১৯৮০ সালে বিদ্যালয়টি স্থাপিত হয়। প্রথমে রেজিষ্টার এবং পরে ২০১৩ সালে সরকারীকরণ হয়। বর্তমানে বিদ্যালয়টিতে শতধীক শিক্ষার্থীর জন্য প্রধান শিক্ষক ও চারজন সহকারী শিক্ষক রয়েছেন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়ে বর্তমানে তিনটি কক্ষ রয়েছে। এর একটিতে নতুন ভবনের নির্মাণ সামগ্রী রাখা, একটি অফিস কক্ষ এবং অপরটিতে চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পাঠদান চলছে। চলতি বছরের ৬মার্চ নতুন বিল্ডিং নির্মাণের উদ্বোধন করা হয়। সেই সময় তিন কক্ষ বিশিষ্ট পুরাতন ভবনটি ভেঙে ফেলা হয়। তারপর থেকেই কক্ষ সংকট। তবে নতুন ভবনের কাজ ধীরে হওয়া, আরও এক বছরের অধিক সময় লেগে যাবে বলে ধারণা ভুক্তভূগীদের।
পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী আকলিমা খাতুন বলে, খোলা বারান্দায় ক্লাস করতে গিয়ে রোদ সরাসরি গায়ে লাগে, আবার ফ্যানও নাই তাই গরমে অনেক কষ্ট হয়। বৃষ্টি আসলে ক্লাস বন্ধ করে অফিসে গাদাগাদি করে বসে থাকতে হয়। এতে আমাদের পড়াশোনার অনেক ক্ষতি হচ্ছে।

প্রধান শিক্ষক আমজাদ হোসেন জানান, প্রথম শিফটে দ্বিতীয় শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের কক্ষে পাঠদান হয়, আর শিশু ও প্রথম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের ওই বারান্দায় পাঠদান করানো হয়। আবার দ্বিতীয় শিফটে চতুর্থ শ্রেণির কক্ষে এবং তৃতীয় ও পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের খোলা বারান্দায় বসে পাঠদান হয়। এতে করে ওই অল্প স্থানটিতে একসঙ্গে তিনজন শিক্ষক পাঠদান করাতে গিয়ে যেমন শিক্ষকরা বিড়ম্বনার শিকার হন। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের একই সাথে একাধিক শিক্ষকের কথা কানে শুনতে পাওয়ায় মনোযোগ বিঘœ হয়। এছাড়াও যেকোন দূর্যোগে দুই শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের অফিসের মধ্যে গাদাগাদি করে বসিয়ে রাখতে হয়।

বিদ্যালয়টির পরিচালনা কমিটির সভাপতি সামস্তাব রেজ আল রুমি বলেন, সরকারী স্কুলে কক্ষ সংকটের এমন দৈন্যদশা দেশের কোথাও আছে কিনা জানা নেই। কর্তৃপক্ষের নিকট লিখিত আবেদন করেও কাজ হয় নি। সিলিপের টাকা থেকে ছোট একটি টিনের ছাবরা ঘর করা হয়েছে, যার বেড়া অর্থের অভাবে দেওয়া সম্ভব হয়নি। নতুন ভবনের কাজে ধীর গতি হওয়ায় শিক্ষার্থীদের এই দুর্ভোগ আরও কতো দিন পোহাতে হবে বুঝতে পারছি না।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ড. সাবরিনা আনাম বলেন, আমি নতুন যোগদান করেছি। এই সকল ক্ষেত্রে শিক্ষা অফিসের বরাদ্দ থাকে না। সরকার তো স্থায়ী বিল্ডিং নির্মাণ করে দিচ্ছে।নতুন ভবন নির্মাণের জন্য পুরনো ভবনটি ভেঙে ফেলায় এই সমস্যা,নির্মাণ কাজ শেষে শ্রেণী কক্ষ সংকট আর থাকবে না। তারপরও অস্থায়ীভাবে স্থানীয়দের সহযোগীতায় কিছু করা হবে বলেও জানান তিনি।

বিজনেস বাংলাদেশ/হাবিব

জনপ্রিয়

মুরাদনগরের সাবেক ৫বারের এমপি কায়কোবাদের অপেক্ষায় নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ

খোলা বারান্দায় একসাথে চার শ্রেণীর পাঠদান

প্রকাশিত : ০১:৩৮:৩৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৪ অগাস্ট ২০২২

কক্ষ সংকটে প্রতিদিন চার শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের সীমাহীন ভোগান্তির মধ্যে খোলা বারান্দায় চলছে পাঠদান। গত পাঁচ মাসের অধিক সময় রোদ-বৃষ্টির মাথায় নিয়ে এখনও সেখানেই ক্লাস করছে তারা। সূর্য পশ্চিম দিকে একটু হেলে পড়ায় রোদ সরাসরি শিক্ষার্থীদের গায়ে লেগেছে। শিক্ষকের লেখার বোর্ডও নেই। সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চিত্র এটি। বলছি নাটোরের বাগাতিপাড়ার স্বরুপপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কথা।১৯৮০ সালে বিদ্যালয়টি স্থাপিত হয়। প্রথমে রেজিষ্টার এবং পরে ২০১৩ সালে সরকারীকরণ হয়। বর্তমানে বিদ্যালয়টিতে শতধীক শিক্ষার্থীর জন্য প্রধান শিক্ষক ও চারজন সহকারী শিক্ষক রয়েছেন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়ে বর্তমানে তিনটি কক্ষ রয়েছে। এর একটিতে নতুন ভবনের নির্মাণ সামগ্রী রাখা, একটি অফিস কক্ষ এবং অপরটিতে চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পাঠদান চলছে। চলতি বছরের ৬মার্চ নতুন বিল্ডিং নির্মাণের উদ্বোধন করা হয়। সেই সময় তিন কক্ষ বিশিষ্ট পুরাতন ভবনটি ভেঙে ফেলা হয়। তারপর থেকেই কক্ষ সংকট। তবে নতুন ভবনের কাজ ধীরে হওয়া, আরও এক বছরের অধিক সময় লেগে যাবে বলে ধারণা ভুক্তভূগীদের।
পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী আকলিমা খাতুন বলে, খোলা বারান্দায় ক্লাস করতে গিয়ে রোদ সরাসরি গায়ে লাগে, আবার ফ্যানও নাই তাই গরমে অনেক কষ্ট হয়। বৃষ্টি আসলে ক্লাস বন্ধ করে অফিসে গাদাগাদি করে বসে থাকতে হয়। এতে আমাদের পড়াশোনার অনেক ক্ষতি হচ্ছে।

প্রধান শিক্ষক আমজাদ হোসেন জানান, প্রথম শিফটে দ্বিতীয় শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের কক্ষে পাঠদান হয়, আর শিশু ও প্রথম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের ওই বারান্দায় পাঠদান করানো হয়। আবার দ্বিতীয় শিফটে চতুর্থ শ্রেণির কক্ষে এবং তৃতীয় ও পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের খোলা বারান্দায় বসে পাঠদান হয়। এতে করে ওই অল্প স্থানটিতে একসঙ্গে তিনজন শিক্ষক পাঠদান করাতে গিয়ে যেমন শিক্ষকরা বিড়ম্বনার শিকার হন। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের একই সাথে একাধিক শিক্ষকের কথা কানে শুনতে পাওয়ায় মনোযোগ বিঘœ হয়। এছাড়াও যেকোন দূর্যোগে দুই শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের অফিসের মধ্যে গাদাগাদি করে বসিয়ে রাখতে হয়।

বিদ্যালয়টির পরিচালনা কমিটির সভাপতি সামস্তাব রেজ আল রুমি বলেন, সরকারী স্কুলে কক্ষ সংকটের এমন দৈন্যদশা দেশের কোথাও আছে কিনা জানা নেই। কর্তৃপক্ষের নিকট লিখিত আবেদন করেও কাজ হয় নি। সিলিপের টাকা থেকে ছোট একটি টিনের ছাবরা ঘর করা হয়েছে, যার বেড়া অর্থের অভাবে দেওয়া সম্ভব হয়নি। নতুন ভবনের কাজে ধীর গতি হওয়ায় শিক্ষার্থীদের এই দুর্ভোগ আরও কতো দিন পোহাতে হবে বুঝতে পারছি না।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ড. সাবরিনা আনাম বলেন, আমি নতুন যোগদান করেছি। এই সকল ক্ষেত্রে শিক্ষা অফিসের বরাদ্দ থাকে না। সরকার তো স্থায়ী বিল্ডিং নির্মাণ করে দিচ্ছে।নতুন ভবন নির্মাণের জন্য পুরনো ভবনটি ভেঙে ফেলায় এই সমস্যা,নির্মাণ কাজ শেষে শ্রেণী কক্ষ সংকট আর থাকবে না। তারপরও অস্থায়ীভাবে স্থানীয়দের সহযোগীতায় কিছু করা হবে বলেও জানান তিনি।

বিজনেস বাংলাদেশ/হাবিব