ময়মনসিংহের নান্দাইলের চিনহী খালের ওপর পাকা সেতু সড়কের সঙ্গে সংযোগ না থাকায় সিমেন্টের পালা দিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আসা যাওয়া করছে লোকজন। এতে করে প্রতিদিন কয়েকটি গ্রামের মানুষ দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। সেতুর এপারের কৃষকেরা ওপারে তাদের ফসলি জমির ধান আনতে কষ্ট হচ্ছে।
স্কুলে আসা-যাওয়া করতে সমস্যা হচ্ছে কোমলমতি শিশুদের। নান্দাইল পৌরসভার ৪ নং ওয়ার্ডের ভাটি কান্দাপাড়া গা ঘেঁষে চিনহী খালের ওপর ওই সেতুটি প্রায় দুই যুগ পূর্বে নির্মাণ করা হয়েছে। ১০৫ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৯ ফুট প্রস্থের সেতুটি নির্মাণ করা হলেও সংযোগ সড়কের অভাবে ওই এলাকার মানুষের আজও দুর্ভোগ শেষ হয়নি। সেতুটির দক্ষিণ এবং উত্তর দিকে প্রায় এক কিলোমিটার করে কাঁচা সড়কের অবস্থা খুবই নাজুক। সড়কটির কোন কোন জায়গায় দু’পাশে ভেঙে খালে গর্ভে চলে গেছে। সড়ক থেকে সেতু দিয়ে পারাপার করার জন্য নেই কোন সংযোগ রাস্তা। সড়ক থেকে সেতুটির উচ্চতা প্রায় ৫ থেকে ৬ ফুট।
সেতুটির দু’পাশে সড়কের সঙ্গে সংযোগ মাটি না থাকায় সিমেন্টের পালা ব্যবহার করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রায় ২ যোগ ধরে প্রতিদিনেই চলাফেরা করছেন ৩টি ইউনিয়নের লোকজন। স্থানীয় বাসিন্দা ভাটি কান্দাপাড়া গ্রামের মো. মাসুদ মিয়া, হেলাল, বিল্লাল, নয়ন, জালাল ও শেরপুর ইউনিয়নের মেরাকোনা গ্রামের মতিউর রহমান, মো. হাদিস মিয়া জানান, সেতুটি নির্মাণ করার পর থেকেই এই দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। গত দুই বছর আগে সেতুটি দিয়ে চলাচলের জন্য দু’পাশে সিমেন্টের পালা ব্যবহার করে এলাকাবাসী। ব্রীজ নিমার্ণের পর থেকে মই দিয়ে চলাফেরা করে আসছিল গ্রামবাসী। এই রাস্তাটি নান্দাইল- দেওয়ানগঞ্জ পাকা রাস্তা শেরপুর ইউনিয়নের চাঁনপুর ঈদখানা মাঠ থেকে মেরাকোনা গ্রাম, নান্দাইল পৌরসভার ভাটি কান্দাপাড়া হয়ে একটি পাকা রাস্তা নান্দাইল সদরের পাছপাড়া নতুন মসজিদ এলাকায় ময়মনসিংহ- কিশোরগঞ্জ মহাসড়কে মিলেছে।
সেই সেতুটি কাঁচা সড়কের মাঝখানে চিনহী খালের ওপর নির্মিত। এই সেতুটি চিনহী সেতু নামে পরিচিত। সড়কের সাথে সেতুটির সংযোগ না থাকায় পার্শ্ববর্তী মেরাকোনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের যেতে পারছেন না ভাটি কান্দাপাড়া গ্রামের কোমলমতি শিশুরা। এছাড়াও ওই এলাকায় একটি ব্র্যাক স্কুল রয়েছে। ভাটি কান্দাপাড়া গ্রামের হেলাল মিয়ার মেয়ে মেরাকোনা ব্র্যাক স্কুল ছাত্রী সাদিয়া আক্তার জানান, সেতুটি দিয়ে স্কুলে যাওয়া আসা করতে তাদের অনেক ভয় লাগে। সিমেন্টের পালা দিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আসা-যাওয়া করতে হয়। এছাড়াও সেতুটির পূর্ব পাশে প্রায় ৩৫ ফুট রেলিং ভেঙে গেছে। মেরাকোনা গ্রামের কৃষক আবুল বাশার সহ আরও কয়েকজন কৃষক জানান, চিনহী খালের ওপারে তাদের জমি রয়েছে। সেখান থেকে সেতুটি দিয়ে ধানের বোঝা আনতে তাদের খুব কষ্ট করতে হয়। হাট বাজারে যাওয়া আসা করতেও সমস্যা। এছাড়াও সেতুটি দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে উঠানামার করতে গিয়ে অনেকেই আহত হয়েছেন। এই ভোগান্তির নিরসনের বিষয়ে ওই এলাকার মতিউর রহমান সহ আরও অনেকেই অভিযোগ করে বলেন, শুধু নির্বাচন আসলেই প্রার্থীগণ আশ্বাস দেন। পরে আর খোঁজ খবর রাখেন না।
বিজনেস বাংলাদেশ/হাবিব