০১:৪১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

ইউরোপে পোশাক রফতানিতে চীনের কাঁধে নিঃশ্বাস ফেলছে বাংলাদেশ

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ধাক্কায় ওলটপালট হয়ে যাচ্ছে ইউরোপের দেশগুলোর অর্থনীতি। তবে এই সংকটের মধ্যেও অঞ্চলটির বাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রফতানি বেড়েছে। ইউরোপীয় কমিশনের পরিসংখ্যান সংস্থা ইউরোস্ট্যাট-এর চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন; এই ছয় মাসে ইউরোপের পোশাক আমদানির তথ্য প্রকাশ করেছে।

ইউরোস্ট্যাটের তথ্য বলছে, বছরের প্রথমার্ধে ইউরোপীয় ইউনিয়ন কর্তৃক বাংলাদেশ থেকে পোশাক আমদানি প্রবৃদ্ধি সর্বোচ্চ ছিল। এই সময়ে বাংলাদেশ থেকে ইউরোপের পোশাক আমদানি আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৪৪ দশমিক ৬০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, যেখানে তাদের বৈশ্বিক আমদানি বৃদ্ধি পেয়েছে ২৫ দশমিক ০৩ শতাংশ। ফলে বাংলাদেশ থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পোশাক আমদানি এই সময়ে ১১ দশমিক ৩১ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের শীর্ষ পোশাক আমদানির উৎস হলো চীন। উল্লেখিত সময়ে চীন থেকে ইউরোপের পোশাক আমদানি ২১ দশমিক ৭৮ শতাংশ বেড়েছে। চীন থেকে তাদের আমদানি ১২ দশমিক ২২ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে।

অপরদিকে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের পোশাকের তৃতীয় বৃহত্তম উৎস তুরস্ক থেকে অঞ্চলটিতে পোশাক আমদানি বেড়েছে ২০ দশমিক ৩৮ শতাংশ। একই সময়ে ইউরোপ তুরস্ক থেকে ১০ দশমিক ৮৯ বিলিয়ন ডলার সমমূল্যের পোশাক আমদানি করেছে।

এই সময়ে ইউরোপের অন্যান্য শীর্ষ পোশাক আমদানির উৎস যেমন কম্বোডিয়া, পাকিস্তান, ইন্দোনেশিয়া এবং ভারত থেকে আমদানি যথাক্রমে ২৪ দশমিক ৯০ শতাংশ, ৪০ দশমিক ১৫ শতাংশ, ৩২ দশমিক ২৮ শতাংশ এবং ২৮ দশমিক ৬৪ শতাংশ হারে বেড়েছে।

এ প্রসঙ্গে তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর পরিচালক মো. মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, মূলত করোনা মহামারি থেকে ঘুরে দাঁড়ানো এবং ভোক্তাদের কেনাকাটা বৃদ্ধির ফলে ইউরোপের খুচরা বিক্রয় স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে মূল্যস্ফীতি এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে মন্দার কারণে ২০২২ সালের বাকি সময়টিতে প্রবৃদ্ধির এই ঊর্ধ্বমুখী ধারা কতটা টিকে থাকবে সেটি ভাবনার বিষয়। এছাড়া, অস্বাভাবিক দীর্ঘ গ্রীষ্মের কারণে শীতের পোশাক চাহিদাও ইউরোপে বর্তমানে তুলনামূলকভাবে কম।

তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের মোট পোশাক রফতানি আগস্ট পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য হারে প্রবৃদ্ধি বজায় রেখেছিল, ফলে বাংলাদেশ থেকে ইউরোপের আমদানি সেপ্টেম্বর পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি বজায় রাখতে পারে। তবে পরবর্তীতে অর্থনৈতিক অস্থিরতার কারণে খুচরা বিক্রয়ে নেতিবাচক প্রভাব পড়ায় ক্রেতারা আপাতত সতর্ক অবস্থানে আছেন।

ইউএস ডিপার্টমেন্ট অফ কমার্সের অফিস অব টেক্সটাইল অ্যান্ড অ্যাপারেলের (অটেক্সা) হালনাগাদ প্রতিবেদনের তথ্য বলছে চলতি বছরের প্রথম সাত মাসে (জানুয়ারি-জুলাই) যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন ব্র্যান্ড ও ক্রেতাপ্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ থেকে ৫৭১ কোটি ডলারের পোশাক কিনেছে। এই অংক গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৫৪ দশমিক ৪৩ শতাংশ বেশি। এই সাত মাসে বাংলাদেশের প্রধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বী দেশ চীন ও ভিয়েতনামের পোশাক রফতানি বেড়েছে যথাক্রমে ৪০ শতাংশ ও ৩৫ দশমিক ৩০ শতাংশ।

যদিও যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশ তৃতীয় শীর্ষ তৈরি পোশাক রফতানিকারক দেশ। এই সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে চীন পোশাক রফতানি করেছে ১ হাজার ২৭৯ কোটি বা ১২ দশমিক ৭৯ বিলিয়ন ডলার। যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে প্রথম সাত মাসে চীন প্রথম অবস্থানে রয়েছে।

 

বিজনেস বাংলাদেশ/ হাবিব

জনপ্রিয়

ইউরোপে পোশাক রফতানিতে চীনের কাঁধে নিঃশ্বাস ফেলছে বাংলাদেশ

প্রকাশিত : ১১:১২:৪৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১ অক্টোবর ২০২২

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ধাক্কায় ওলটপালট হয়ে যাচ্ছে ইউরোপের দেশগুলোর অর্থনীতি। তবে এই সংকটের মধ্যেও অঞ্চলটির বাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রফতানি বেড়েছে। ইউরোপীয় কমিশনের পরিসংখ্যান সংস্থা ইউরোস্ট্যাট-এর চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন; এই ছয় মাসে ইউরোপের পোশাক আমদানির তথ্য প্রকাশ করেছে।

ইউরোস্ট্যাটের তথ্য বলছে, বছরের প্রথমার্ধে ইউরোপীয় ইউনিয়ন কর্তৃক বাংলাদেশ থেকে পোশাক আমদানি প্রবৃদ্ধি সর্বোচ্চ ছিল। এই সময়ে বাংলাদেশ থেকে ইউরোপের পোশাক আমদানি আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৪৪ দশমিক ৬০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, যেখানে তাদের বৈশ্বিক আমদানি বৃদ্ধি পেয়েছে ২৫ দশমিক ০৩ শতাংশ। ফলে বাংলাদেশ থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পোশাক আমদানি এই সময়ে ১১ দশমিক ৩১ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের শীর্ষ পোশাক আমদানির উৎস হলো চীন। উল্লেখিত সময়ে চীন থেকে ইউরোপের পোশাক আমদানি ২১ দশমিক ৭৮ শতাংশ বেড়েছে। চীন থেকে তাদের আমদানি ১২ দশমিক ২২ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে।

অপরদিকে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের পোশাকের তৃতীয় বৃহত্তম উৎস তুরস্ক থেকে অঞ্চলটিতে পোশাক আমদানি বেড়েছে ২০ দশমিক ৩৮ শতাংশ। একই সময়ে ইউরোপ তুরস্ক থেকে ১০ দশমিক ৮৯ বিলিয়ন ডলার সমমূল্যের পোশাক আমদানি করেছে।

এই সময়ে ইউরোপের অন্যান্য শীর্ষ পোশাক আমদানির উৎস যেমন কম্বোডিয়া, পাকিস্তান, ইন্দোনেশিয়া এবং ভারত থেকে আমদানি যথাক্রমে ২৪ দশমিক ৯০ শতাংশ, ৪০ দশমিক ১৫ শতাংশ, ৩২ দশমিক ২৮ শতাংশ এবং ২৮ দশমিক ৬৪ শতাংশ হারে বেড়েছে।

এ প্রসঙ্গে তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর পরিচালক মো. মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, মূলত করোনা মহামারি থেকে ঘুরে দাঁড়ানো এবং ভোক্তাদের কেনাকাটা বৃদ্ধির ফলে ইউরোপের খুচরা বিক্রয় স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে মূল্যস্ফীতি এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে মন্দার কারণে ২০২২ সালের বাকি সময়টিতে প্রবৃদ্ধির এই ঊর্ধ্বমুখী ধারা কতটা টিকে থাকবে সেটি ভাবনার বিষয়। এছাড়া, অস্বাভাবিক দীর্ঘ গ্রীষ্মের কারণে শীতের পোশাক চাহিদাও ইউরোপে বর্তমানে তুলনামূলকভাবে কম।

তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের মোট পোশাক রফতানি আগস্ট পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য হারে প্রবৃদ্ধি বজায় রেখেছিল, ফলে বাংলাদেশ থেকে ইউরোপের আমদানি সেপ্টেম্বর পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি বজায় রাখতে পারে। তবে পরবর্তীতে অর্থনৈতিক অস্থিরতার কারণে খুচরা বিক্রয়ে নেতিবাচক প্রভাব পড়ায় ক্রেতারা আপাতত সতর্ক অবস্থানে আছেন।

ইউএস ডিপার্টমেন্ট অফ কমার্সের অফিস অব টেক্সটাইল অ্যান্ড অ্যাপারেলের (অটেক্সা) হালনাগাদ প্রতিবেদনের তথ্য বলছে চলতি বছরের প্রথম সাত মাসে (জানুয়ারি-জুলাই) যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন ব্র্যান্ড ও ক্রেতাপ্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ থেকে ৫৭১ কোটি ডলারের পোশাক কিনেছে। এই অংক গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৫৪ দশমিক ৪৩ শতাংশ বেশি। এই সাত মাসে বাংলাদেশের প্রধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বী দেশ চীন ও ভিয়েতনামের পোশাক রফতানি বেড়েছে যথাক্রমে ৪০ শতাংশ ও ৩৫ দশমিক ৩০ শতাংশ।

যদিও যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশ তৃতীয় শীর্ষ তৈরি পোশাক রফতানিকারক দেশ। এই সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে চীন পোশাক রফতানি করেছে ১ হাজার ২৭৯ কোটি বা ১২ দশমিক ৭৯ বিলিয়ন ডলার। যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে প্রথম সাত মাসে চীন প্রথম অবস্থানে রয়েছে।

 

বিজনেস বাংলাদেশ/ হাবিব