নওগাঁর রাণীনগরে কাঁটা বেগুন গাছে গ্রাফটিং কলম করে টমেটো চাষে সফল হয়েছেন আদর্শ কৃষক জহুরুল ইসলাম বাদল। ১০হাজার টাকা খরচ করে মাত্র পৌনে আট শতক জমিতে টমেটো চাষ করেছেন। তিনি আসা করছেন হয়তো লক্ষাধীক টাকা লাভ হবে। ইতি মধ্যে তার চাষকৃত টমেটো বাজারে বিক্রি শুরু হয়েছে। কৃষক বাদল উপজেলার একডালা ইউনিয়নের শিয়ালা গ্রামের মৃত আজাহার আলীর ছেলে।
বাদল জানান,দীর্ঘ দিন আগে থেকে তিনি বিভিন্ন সবজি চাষ করে আসছেন। প্রতি বছর তিনি বিভিন্ন সবজির পাশা-পাশি টমেটোও চাষ করে থাকেন। এরই মধ্যে ইন্টারনেটে কাঁটা বেগুন গাছে গ্রাফটিং কলম করে টমেেেটা চাষ পদ্ধতি দেখে কাঁটা বেগুনের বীজ সংগ্রহ শুরু করেন। তিনি বলেন,প্রথমে কাঁটা বেগুনের বীজ বোপনের পর চারার বয়স ১৫দিন হলে টমেটোর বীজ বোপন করতে হয়। এর পর চারার বয়স একমাস হলে গ্রাফটিং কলম করে এক সপ্তাহ ছায়াযুক্ত স্থানে রাখার পর,পরের এক সপ্তাহ রোদে রাখতে হয়। এর পর জমিতে চারা রোপন করতে হবে। কৃষক বাদল বলেন,এবার পরীক্ষামূলক প্রায় পৌনে আট শতক জমিতে ৮০০পিস টমেটো কলম চারা রোপন করেছেন। কাঁটা বেগুন গাছ অতি বৃষ্টি,শ্যাতশেতে এবং প্রখর রোদ সহনশীল হওয়ায় গাছের গোরা নষ্ট হয়না।ফলে কলমের গাছ প্রায় ৮মাস পর্যন্ত টিকে থাকে এবং ফল পাওয়া যায়।
এছাড়া সাধারণ টমেটো গাছের চাইতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক বেশি।তাই রোগ বালাইও কম।এতে কিটনাশক ও রাসায়নিক সারের খরচ কম হওয়ায় লাভও বেশি হবে। তিনি বলেন,পৌনে আট শতক জমিতে টমেটো চাষ করতে এপর্যন্ত প্রায় ১০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। প্রতিটি গাছ থেকে শেষ পর্যন্ত প্রায় ৫/৬ কেজি টমেটো পাবেন বলে ধারনা করছেন। তিনি ইতি মধ্যে ক্ষেত থেকে টমেটো তোলা শুরু করেছেন। গত কয়েক দিনে প্রায় ১২০কেজির মতো টমেটো তুলে স্থানীয় বাজারে প্রতি কেজি ১১০থেকে ১২০টাকা দরে বিক্রি করছেন।তিনি বলেন,মৌসুমের শুরুতেই ফল পাওয়ায় চড়া দামে বিক্রি করতে পারছেন,তাই চাষকৃত জমি থেকে লক্ষাধীক টাকা লাভ হবে এমনটায় আসা তার।
আগামী বছর টমেটো চাষের পরিধি বাড়াবেন বলে জানান তিনি। এর আগে ইন্টারনেটে দেখে পরীক্ষামূলক পরিত্যাক্ত ছায়া যুক্ত ৬ শতক জায়গায় প্রায় এক হাজার ৬০০ বস্তায় আদা চাষ করেছেন। হয়তো আগামী দুই/তিন মাসের মধ্যেই আদা তুলতে পারবেন। তিনি বলেন,আদা চাষে প্রতি বস্তায় খরচ হয়েছে প্রায় ২০/২২ টাকা,কিন্তু বস্তা প্রতি আদার ফলন প্রায় দেড় থেকে দুই কেজি পরিমান পাবেন বলে আসা করছেন।এক্ষেত্রে স্থানীয় কৃষি অফিস থেকে সার্বিক পরামর্শ নিচ্ছেন। বাদল জানান,সরকারীভাবে সার্বিক সহযোগিতা করলে এবং উন্নত প্রযুক্তি অনুসরণ করে আবহাওয়ার সাথে মানানসই যে কোন ফসল ফলাতে পারলে অবশ্যই স্বাবলম্বি হওয়া সম্ভব।
রাণীনগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম বলেন,রাণীনগরে এই প্রথম কৃষক বাদল গ্রাফটিং কলম করে টমেটো চাষ করেছেন। আমরা তাকে সার্বিকভাবে পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করে আসছি। তিনি বলেন,গ্রাফটিং কলম গাছের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি এবং গোরালী অতি সহজে পচেনা ,তাই গাছটি দীর্ঘজীবি হয়। ফলে দীর্ঘ সময় ধরে ফল পাওয়া যায়। এছাড়া আগাম চাষ করার কারনে টমেটোর দামও ভাল পাওয়া যায়। এতে কৃষকরা অধিক লাভবান হবেন।
বিজনেস বাংলাদেশ/ হাবিব
























