সিরাজগঞ্জের মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণের পাশাপাশি হাটিকুমরুল গোলচত্বর এলাকায় ৭৪৩ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক মানের ইন্টারচেঞ্জ। ইতোমধ্যে প্রকল্পের টেস্ট পাইলিংয়ের কাজ শুরু হয়েছে। এটি বাস্তবায়িত হলে এই পথে চলাচলকারী বিভিন্ন জেলার যানবাহন সহজেই রাস্তা পরিবর্তন করতে পারবে। পাশাপাশি কমবে সড়ক দুর্ঘটনা ও দূরত্ব। বদলে যাবে যোগাযোগ ব্যবস্থা।
সংশ্লিষ্ট অফিস সূত্রে জানা যায়, হাটিকুমরুল মোড় ব্যবহার করে দেশের উত্তর ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২২ জেলার মানুষ যাতায়াত ও পণ্য পরিবহন হয়ে থাকে। এ কারণে ইন্টারচেঞ্জ নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর ( সাসেক সড়ক সংযোগ প্রকল্প-২ এর আওতায়)। টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা থেকে রংপুর পর্যন্ত চার লেন সড়কের নির্মাণকাজ এগিয়ে চলছে। এর পাশাপাশি সিরাজগঞ্জের হাটিকুমরুল মোড়ে ইন্টারচেঞ্জ নির্মাণের কাজও শুরু হয়েছে। বর্তমানে প্রকল্পের টেস্ট পাইলিংয়ের কাজ শুরু হয়েছে। ভূমি জটিলতার কারণে এতোদিন ইন্টারচেঞ্জের নির্মাণকাজ বন্ধ ছিল । ২৮ অষ্টোবর ইন্টারচেঞ্জ নির্মাণের এলাকা হতে সকল স্থাপনা সরিয়ে নিতে নোটিশ দেওয়া হয়েছে। যার ফলে নির্মাণ এলাকা হতে স্থাপনা গুলো ভাঙ্গা শুরু হয়েছে। সূত্রে আরও জানা যায়, এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের সহযোগিতায় প্রায় ৭৪৩ কোটি টাকা ব্যয়ে এই ইন্টারচেঞ্জ নির্মাণ করা হবে। ২০২৪ সালের মধ্যে নির্মাণ কাজ সমাপ্ত হবে । আধুনিক ইন্টারচেঞ্জে থাকবে নানা সুযোগ-সুবিধা। গাড়ি পার্কিং সুবিধাসহ চালকদের জন্য বিশ্রামাগার থাকবে। পথচারীদের পারাপারের জন্য ফ্লাইওভার ও ওয়াকওয়ে থাকবে। ইন্টারচেঞ্জ চালু হলে উত্তরবঙ্গে উন্নয়নের নতুন দিগন্তের দ্বার খুলবে।
বাসচালক জহুরুল বলেন, বঙ্গবন্ধু সেতু পার হয়ে হাটিকুমরুল গোলচত্বরে যানজটে বসে থাকতে হয়। বিশেষ করে দুই ঈদযাত্রায় ভোগান্তির শেষ থাকে না তাদের। মহাসড়ক উন্নীতকরণের পাশাপাশি হাটিকুমরুল গোলচত্বর এলাকায় যে ইন্টারচেঞ্জ হচ্ছে, এটির কাজ শেষ হলে দুর্ভোগ কমে যাবে। সহজেই হাটিকুমরুল গোলচত্বর পার হতে পারবেন তারা।
জেলা আ.লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা কে এম হোসেন আলী হাসান জনান, বর্তমান সরকার দেশের মানুষের অর্থ সামাজিক অবস্থার উন্নয়নের স্বার্থে উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার হাটিকুমরুল গোলচত্বরে আন্তর্জাতিক মানের দৃষ্টি নন্দন ইন্টারচেঞ্জ। সরকার এই মহাসড়কের কথা বিবেচনা করে বিশেষ করে এশিয়ান হাইওয়ে সঙ্গে কানেটিং জন্য ইন্টারচেঞ্জে দূরপাল্লার যানবাহনের পাশাপাশি ধীরগতির যানবাহনের জন্য থাকবে আলাদা লিংক রোড। যে সড়ক দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার যানবাহন চলাচল করে। এজন্য প্রায়ই এখানে যানজট লেগে থাকে। এতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় যাত্রী ও চালকদের। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে গোলচত্বরের এক কিলোমিটার দূর থেকেই পথ পরিবর্তন করে গন্তব্যে যাবে বিভিন্ন জেলার যানবাহন।
হাটিকুমরুল ইন্টারচেঞ্জ প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, এই সড়ক ব্যবহার করে প্রতিদিন হাজার হাজার যানবাহন চলাচল করে। এজন্য প্রায়ই এখানে যানজট লেগে থাকে। এতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় যাত্রী ও চালকদের। দুর্ভোগ কমাতে সরকার, মহাসড়কটি চারলেনে উন্নীত করার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক মানের ইন্টারচেঞ্জ নির্মাণের গ্রহণ করে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে যাতায়াত সহজ হওয়ার পাশাপাশি যোগাযোগ ব্যবস্থায় গতি আসবে উত্তরাঞ্চলের মানুষের। ইতোমধ্যে পাঁচলিয়া এলাকায় মাটি ভরাট ও পাইলিংয়ের কাজ শুরু হয়েছে। ঠিকাদার দ্রæতগতিতে কাজ করে যাচ্ছেন। তবে এখানে জমি অধিগ্রহণ নিয়ে কিছু সমস্যা হচ্ছে। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে নির্মাণকাজ শেষ হবে আশা করছি ।
বিজনেস বাংলাদেশ/ হাবিব