০৫:১৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৭ জুলাই ২০২৪

আজ কুষ্টিয়ার তিন উপজেলায় হানাদার মুক্ত দিবস

আজ ৭ ডিসেম্বর কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা, মিরপুর ও দৌলতপুর উপজেলা হানাদার মুক্ত দিবস। দীর্ঘ টানা ৯ মাস সশস্ত্র সংগ্রামের পর এই দিনে হানাদার মুক্ত হয় ঐ তিন উপজেলা। ১৯৭১ সালের এ দিনে বহু ত্যাগের বিনিময়ে কুষ্টিয়ার ৩টি থানা শত্রুমুক্ত করে ৮ ডিসেম্বর স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উড়িয়েছিলেন এদেশের দামাল ছেলেরা। সেই থেকে এ দিনটি পাকহানাদার মুক্ত দিবস হিসেবে ৩টি থানায় ইতিহাসের পাতায় স্থান পায়।

বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ভেড়ামারা উপজেলার সাবেক কমান্ডার এ্যাডঃ আলম জাকারিয়া টিপু বলেন, ১৯৭১ সালের এই দিনেই পাকহানাদার বাহিনীকে পরাজিত করে মিত্র বাহিনীর সহায়তায় মুক্তিযোদ্ধারা কুষ্টিয়ার ভেড়ামারাকে শত্রæ মুক্ত করে। এই দিন ৮ নম্বর সেক্টরের কমান্ডার মেজর আবুল মঞ্জুর নেতৃত্বে জেলা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা রাশেদুল আলমের নেতৃত্বে ২ ভাগে বিভক্ত হয়ে ভোর ৭টার সময় ভেড়ামারা ফারাকপুর রেলগেটের সন্নীকটে পাকহানাদার বাহিনীর সঙ্গে সম্মুখযুদ্ধে অবতীর্ণ হয়। প্রায় ৭ ঘণ্টাব্যাপী এ যুদ্ধে প্রায় ৯জন পাকসেনা নিহত হয়। এই ঘটনার পর ঐদিন তারা সন্ধ্যার আগেই ভেড়ামারা থেকে ভয়ে পালিয়ে যায়। ৮ই ডিসেম্বর মুক্তিপাগল মানুষ ও মুক্তিযোদ্ধারা দলে দলে ভেড়ামারায় প্রবেশ করতে থাকেন। পরে বিভিন্ন বয়সের হাজারও নারী-পুরুষ রাস্তায় নেমে ব্যাপক আনন্দ উল্লাস করতে থাকে।

বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ মিরপুর উপজেলার সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা নজরুল ইসলাম বলেন, শহীদ সিপাহী মহিউদ্দিনের কবরের পাশে মিরপুর উপজেলার শহীদ স্মৃতিসৌধ নির্মিত হয়েছে। ৮ ডিসেম্বর ভোরেই ৯ এর গ্রæপ কমান্ডার আফতাব উদ্দিন খান ১শ ৭০ জন মুক্তিযোদ্ধা নিয়ে মিরপুর থানায় স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা গান স্যালুটের মাধ্যমে উত্তোলন করেন। এর পর ৬৫ জন পাকহানাদার বাহিনীর দোসর ও রাজাকার পাহাড়পুর মুক্তিবাহিনীর ক্যাম্পে আত্মসমর্পন করে। মিরপুর হানাদার মুক্ত হওয়ার সংবাদ এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে ১৯৭১ সালের এই দিনে বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষ রাস্তায় নেমে আনন্দ উল্লাস করতে থাকে।

বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা দৌলতপুর উপজেলা সাবেক সহকারী কমান্ডার হায়দার আলী বলেন, ৮ ডিসেম্বর একই দিনে দৌলতপুর হানাদার মুক্ত হয়। ১৯৭১ সালের এই দিনে দৌলতপুরকে শত্রুমুক্ত করে থানা চত্বরে বিজয় পতাকা উড়ানোর মধ্য দিয়ে মুক্তিকামী বীর সূর্য সন্তানেরা দৌলতপুরকে হানাদার মুক্ত করেন।

দৌলতপুরকে হানাদার মুক্ত করতে মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে পাকসেনাদের সম্মুখ যুদ্ধসহ ছোট-বড় প্রায় ১৬টি যুদ্ধ সংঘঠিত হয়। যুদ্ধে ৩৫ জন বীর মুক্তিযোদ্ধাসহ কয়েকশ নারী-পুরুষ শহীদ হন। সবচেয়ে বড় যুদ্ধ সংঘঠিত হয় উপজেলার ধর্মদহ ব্যাংগাড়ী মাঠে। এ যুদ্ধে প্রায় সাড়ে ৩শ পাকসেনা নিহত হয়। শহীদ হন তিনজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তিনজন ভারতীয় মিত্র বাহিনীর সদস্য। ৮ ডিসেম্বর সকালে আল্লারদর্গা হয়ে পাক সেনারা দৌলতপুর ত্যাগ করার সময় তাদের গুলিতে মুক্তিযোদ্ধা রফিক শহীদ হয়। এরপর দৌলতপুর হানাদার মুক্ত ঘোষণা করেন তৎকালীন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মেজর নুরুন্নবী। দিবসটি পালন উপলক্ষে সকল উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড র‌্যালি, মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশ ও আলোচনা সভার আয়োজন করেছে।

বিজনেস বাংলাদেশ/ হাবিব

 

দুই মাসে পিয়াজের দাম বেড়েছে ৮০  শতাংশ , আলু ৫৫ শতাংশ

আজ কুষ্টিয়ার তিন উপজেলায় হানাদার মুক্ত দিবস

প্রকাশিত : ০৩:২৮:২৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ৭ ডিসেম্বর ২০২২

আজ ৭ ডিসেম্বর কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা, মিরপুর ও দৌলতপুর উপজেলা হানাদার মুক্ত দিবস। দীর্ঘ টানা ৯ মাস সশস্ত্র সংগ্রামের পর এই দিনে হানাদার মুক্ত হয় ঐ তিন উপজেলা। ১৯৭১ সালের এ দিনে বহু ত্যাগের বিনিময়ে কুষ্টিয়ার ৩টি থানা শত্রুমুক্ত করে ৮ ডিসেম্বর স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উড়িয়েছিলেন এদেশের দামাল ছেলেরা। সেই থেকে এ দিনটি পাকহানাদার মুক্ত দিবস হিসেবে ৩টি থানায় ইতিহাসের পাতায় স্থান পায়।

বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ভেড়ামারা উপজেলার সাবেক কমান্ডার এ্যাডঃ আলম জাকারিয়া টিপু বলেন, ১৯৭১ সালের এই দিনেই পাকহানাদার বাহিনীকে পরাজিত করে মিত্র বাহিনীর সহায়তায় মুক্তিযোদ্ধারা কুষ্টিয়ার ভেড়ামারাকে শত্রæ মুক্ত করে। এই দিন ৮ নম্বর সেক্টরের কমান্ডার মেজর আবুল মঞ্জুর নেতৃত্বে জেলা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা রাশেদুল আলমের নেতৃত্বে ২ ভাগে বিভক্ত হয়ে ভোর ৭টার সময় ভেড়ামারা ফারাকপুর রেলগেটের সন্নীকটে পাকহানাদার বাহিনীর সঙ্গে সম্মুখযুদ্ধে অবতীর্ণ হয়। প্রায় ৭ ঘণ্টাব্যাপী এ যুদ্ধে প্রায় ৯জন পাকসেনা নিহত হয়। এই ঘটনার পর ঐদিন তারা সন্ধ্যার আগেই ভেড়ামারা থেকে ভয়ে পালিয়ে যায়। ৮ই ডিসেম্বর মুক্তিপাগল মানুষ ও মুক্তিযোদ্ধারা দলে দলে ভেড়ামারায় প্রবেশ করতে থাকেন। পরে বিভিন্ন বয়সের হাজারও নারী-পুরুষ রাস্তায় নেমে ব্যাপক আনন্দ উল্লাস করতে থাকে।

বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ মিরপুর উপজেলার সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা নজরুল ইসলাম বলেন, শহীদ সিপাহী মহিউদ্দিনের কবরের পাশে মিরপুর উপজেলার শহীদ স্মৃতিসৌধ নির্মিত হয়েছে। ৮ ডিসেম্বর ভোরেই ৯ এর গ্রæপ কমান্ডার আফতাব উদ্দিন খান ১শ ৭০ জন মুক্তিযোদ্ধা নিয়ে মিরপুর থানায় স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা গান স্যালুটের মাধ্যমে উত্তোলন করেন। এর পর ৬৫ জন পাকহানাদার বাহিনীর দোসর ও রাজাকার পাহাড়পুর মুক্তিবাহিনীর ক্যাম্পে আত্মসমর্পন করে। মিরপুর হানাদার মুক্ত হওয়ার সংবাদ এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে ১৯৭১ সালের এই দিনে বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষ রাস্তায় নেমে আনন্দ উল্লাস করতে থাকে।

বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা দৌলতপুর উপজেলা সাবেক সহকারী কমান্ডার হায়দার আলী বলেন, ৮ ডিসেম্বর একই দিনে দৌলতপুর হানাদার মুক্ত হয়। ১৯৭১ সালের এই দিনে দৌলতপুরকে শত্রুমুক্ত করে থানা চত্বরে বিজয় পতাকা উড়ানোর মধ্য দিয়ে মুক্তিকামী বীর সূর্য সন্তানেরা দৌলতপুরকে হানাদার মুক্ত করেন।

দৌলতপুরকে হানাদার মুক্ত করতে মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে পাকসেনাদের সম্মুখ যুদ্ধসহ ছোট-বড় প্রায় ১৬টি যুদ্ধ সংঘঠিত হয়। যুদ্ধে ৩৫ জন বীর মুক্তিযোদ্ধাসহ কয়েকশ নারী-পুরুষ শহীদ হন। সবচেয়ে বড় যুদ্ধ সংঘঠিত হয় উপজেলার ধর্মদহ ব্যাংগাড়ী মাঠে। এ যুদ্ধে প্রায় সাড়ে ৩শ পাকসেনা নিহত হয়। শহীদ হন তিনজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তিনজন ভারতীয় মিত্র বাহিনীর সদস্য। ৮ ডিসেম্বর সকালে আল্লারদর্গা হয়ে পাক সেনারা দৌলতপুর ত্যাগ করার সময় তাদের গুলিতে মুক্তিযোদ্ধা রফিক শহীদ হয়। এরপর দৌলতপুর হানাদার মুক্ত ঘোষণা করেন তৎকালীন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মেজর নুরুন্নবী। দিবসটি পালন উপলক্ষে সকল উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড র‌্যালি, মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশ ও আলোচনা সভার আয়োজন করেছে।

বিজনেস বাংলাদেশ/ হাবিব