০৩:২০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৪

সংরক্ষিত আসনে আওয়ামী লীগের ৩৮ জনের বেশির ভাগই নতুন

কেন্দ্রীয় নেতারা বলছেন, দ্বাদশ সংসদে সংরক্ষিত আসনগুলোতে নতুনদের সুযোগ দিতে চায় আওয়ামী লীগ; ফলে বাদ পড়বেন বেশিরভাগ বর্তমান এমপি।

দ্বাদশ সংসদে নারীদের জন্য সংরক্ষিত আসনে নতুনদের জায়গা দেওয়ার ওপরই জোর দিচ্ছে আওয়ামী লীগ।

৫০ আসনে সদস্য বাছাইয়ের ব্যাপারে ইতোমধ্যে আওয়ামী লীগের দুই দফা বৈঠক হয়েছে; ফলে মনোয়নপ্রত্যাশীদের কাছেও বিষয়টি স্পষ্ট হয়েছে।

দলটির কেন্দ্রীয় নেতারা বলছেন, দ্বাদশ সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনগুলোতে নতুনদের সুযোগ দিতে চায় আওয়ামী লীগ। সে কারণে বাদ পড়বেন বেশিরভাগ বর্তমান এমপি। তবে দলের সভানেত্রীর বিশেষ বিবেচনা আর ব্যতিক্রম ক্ষেত্রে ‘চার-পাঁচজন’ পুনরায় সংসদে বসতে পারেন।

গণভবনে বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগের সভাপতি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে মনোনয়ন প্রত্যাশীরা বৈঠক করেন। সেখানে ২৫ থেকে ৩০ জন মনোনয়ন প্রত্যাশী বক্তব্য দেন। ওই বৈঠকে দ্বাদশ সংসদে নতুনদের সুযোগ দিতে বলেন দলের প্রধান।

এরপর শুক্রবার সন্ধ্যায় শেখ হাসিনার ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে মনোনয়ন-প্রত্যাশীদের অনেকেই দেখা করেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে। তবে সেখানেও সবাইকে ‘না সূচক’ জবাব দিতে দেখা যায়।

এবারের সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনে কতজন বর্তমান এমপি জায়গা পেতে পারেন, এমন প্রশ্নে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, “সাধারণত নেত্রী সংরক্ষিত আসনে পুনরাবৃত্তি করেন না। গতবার যে কয়েকটা পুনরাবৃত্তি হয়েছে, সেটা এক্সেপশনাল। এছাড়া বিশেষ বিবেচনাও আছে। এবারও ব্যতিক্রমী ও বিশেষ বিবেচনার কারণে কয়েকজন থাকবেন বলে মনে হচ্ছে।”

জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক বলেন, “অনেকেই মনোনয়ন নেবেন, আসলে কে পাবেন সেটা জননেত্রী শেখ হাসিনাই দেখবেন। দীর্ঘদিন ধরে দলের জন্য কাজ করে যাওয়া, ত্যাগ ও দলের প্রতি কমিটমেন্টসহ নানা দলীয় কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্তদেরই খুঁজে বের করেন নেত্রী, এবারও তাই হবে।

“তবে তেমন বেশি কাউকে পুনরাবৃত্তি করবেন না, সেই ইঙ্গিত নেত্রী দিয়েছেন। বিভিন্ন কারণে হয়ত চার-পাঁচজনের ক্ষেত্রে পুনরাবৃত্তি হতে পারে, এর বেশি না।”

দ্বাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশন বসছে আগামী মঙ্গলবার; তার আগে প্রধান হুইপ ও পাঁচ হুইপ নিয়োগ দেওয়া হলেও বিরোধী দলীয় নেতা এখনও অনুমোদন হয়নি।

এবারের ভোটে যে রেকর্ড ৬২ জন স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন, তারা জোট বা কোনো দলে যোগ দিচ্ছেন কি না তাও স্পষ্ট হয়নি।

তবে ৫০টি সংরক্ষিত নারী আসন বণ্টনে দলে বা জোটভুক্ত হওয়ার বিষয়টি তাদেরকে আগামী ৩১ জানুয়ারির মধ্যে নির্বাচন কমিশনকে জানাতে হবে।

গত ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ২২৩টি, জাতীয় পার্টি ১১টি, জাসদ একটি, ওয়ার্কার্স পার্টি একটি, কল্যাণ পার্টি একটি এবং স্বতন্ত্ররা ৬২টি আসন পেয়েছে।

সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে সংরক্ষিত নারী আসন আওয়ামী লীগ পাবে ৩৮টি, জাতীয় পার্টি পাবে দুইটি, আর স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যরা পাবেন ১০টি আসন।

স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যদের রোববার গণভবনে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। স্বতন্ত্ররা দল বা জোটভুক্ত হচ্ছেন কি না, তা জানা যাবে সেদিনই।

নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ বলেন, “দ্বাদশ সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী পাঁচটি দল ও ৬২ জন সংসদ সদস্যকে দল ও জোটভুক্ত হওয়ার বিষয়ে মতামত জানাতে চিঠি দেওয়া হয়েছে। ৩১ জানুয়ারির মধ্যে তা কমিশনকে জানাতে হবে। এরপরই সংরক্ষিত নারী আসনের ভোটের বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”

বিদ্যমান আইন অনুযায়ী, সরাসরি ভোটে জয়ী দলগুলোর আসন সংখ্যার অনুপাতে নারী আসন বণ্টন করা হয়। সংসদের সাধারণ আসনে নির্বাচিত সংসদ সদস্যরা সংরক্ষিত আসনের নির্বাচনের ভোটার হন।

বিজনেস বাংলাদেশ/এমএইচটি

জনপ্রিয়

মুরাদনগরের সাবেক ৫বারের এমপি কায়কোবাদের অপেক্ষায় নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ

সংরক্ষিত আসনে আওয়ামী লীগের ৩৮ জনের বেশির ভাগই নতুন

প্রকাশিত : ০৬:৪৮:১৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ জানুয়ারী ২০২৪

কেন্দ্রীয় নেতারা বলছেন, দ্বাদশ সংসদে সংরক্ষিত আসনগুলোতে নতুনদের সুযোগ দিতে চায় আওয়ামী লীগ; ফলে বাদ পড়বেন বেশিরভাগ বর্তমান এমপি।

দ্বাদশ সংসদে নারীদের জন্য সংরক্ষিত আসনে নতুনদের জায়গা দেওয়ার ওপরই জোর দিচ্ছে আওয়ামী লীগ।

৫০ আসনে সদস্য বাছাইয়ের ব্যাপারে ইতোমধ্যে আওয়ামী লীগের দুই দফা বৈঠক হয়েছে; ফলে মনোয়নপ্রত্যাশীদের কাছেও বিষয়টি স্পষ্ট হয়েছে।

দলটির কেন্দ্রীয় নেতারা বলছেন, দ্বাদশ সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনগুলোতে নতুনদের সুযোগ দিতে চায় আওয়ামী লীগ। সে কারণে বাদ পড়বেন বেশিরভাগ বর্তমান এমপি। তবে দলের সভানেত্রীর বিশেষ বিবেচনা আর ব্যতিক্রম ক্ষেত্রে ‘চার-পাঁচজন’ পুনরায় সংসদে বসতে পারেন।

গণভবনে বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগের সভাপতি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে মনোনয়ন প্রত্যাশীরা বৈঠক করেন। সেখানে ২৫ থেকে ৩০ জন মনোনয়ন প্রত্যাশী বক্তব্য দেন। ওই বৈঠকে দ্বাদশ সংসদে নতুনদের সুযোগ দিতে বলেন দলের প্রধান।

এরপর শুক্রবার সন্ধ্যায় শেখ হাসিনার ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে মনোনয়ন-প্রত্যাশীদের অনেকেই দেখা করেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে। তবে সেখানেও সবাইকে ‘না সূচক’ জবাব দিতে দেখা যায়।

এবারের সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনে কতজন বর্তমান এমপি জায়গা পেতে পারেন, এমন প্রশ্নে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, “সাধারণত নেত্রী সংরক্ষিত আসনে পুনরাবৃত্তি করেন না। গতবার যে কয়েকটা পুনরাবৃত্তি হয়েছে, সেটা এক্সেপশনাল। এছাড়া বিশেষ বিবেচনাও আছে। এবারও ব্যতিক্রমী ও বিশেষ বিবেচনার কারণে কয়েকজন থাকবেন বলে মনে হচ্ছে।”

জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক বলেন, “অনেকেই মনোনয়ন নেবেন, আসলে কে পাবেন সেটা জননেত্রী শেখ হাসিনাই দেখবেন। দীর্ঘদিন ধরে দলের জন্য কাজ করে যাওয়া, ত্যাগ ও দলের প্রতি কমিটমেন্টসহ নানা দলীয় কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্তদেরই খুঁজে বের করেন নেত্রী, এবারও তাই হবে।

“তবে তেমন বেশি কাউকে পুনরাবৃত্তি করবেন না, সেই ইঙ্গিত নেত্রী দিয়েছেন। বিভিন্ন কারণে হয়ত চার-পাঁচজনের ক্ষেত্রে পুনরাবৃত্তি হতে পারে, এর বেশি না।”

দ্বাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশন বসছে আগামী মঙ্গলবার; তার আগে প্রধান হুইপ ও পাঁচ হুইপ নিয়োগ দেওয়া হলেও বিরোধী দলীয় নেতা এখনও অনুমোদন হয়নি।

এবারের ভোটে যে রেকর্ড ৬২ জন স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন, তারা জোট বা কোনো দলে যোগ দিচ্ছেন কি না তাও স্পষ্ট হয়নি।

তবে ৫০টি সংরক্ষিত নারী আসন বণ্টনে দলে বা জোটভুক্ত হওয়ার বিষয়টি তাদেরকে আগামী ৩১ জানুয়ারির মধ্যে নির্বাচন কমিশনকে জানাতে হবে।

গত ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ২২৩টি, জাতীয় পার্টি ১১টি, জাসদ একটি, ওয়ার্কার্স পার্টি একটি, কল্যাণ পার্টি একটি এবং স্বতন্ত্ররা ৬২টি আসন পেয়েছে।

সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে সংরক্ষিত নারী আসন আওয়ামী লীগ পাবে ৩৮টি, জাতীয় পার্টি পাবে দুইটি, আর স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যরা পাবেন ১০টি আসন।

স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যদের রোববার গণভবনে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। স্বতন্ত্ররা দল বা জোটভুক্ত হচ্ছেন কি না, তা জানা যাবে সেদিনই।

নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ বলেন, “দ্বাদশ সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী পাঁচটি দল ও ৬২ জন সংসদ সদস্যকে দল ও জোটভুক্ত হওয়ার বিষয়ে মতামত জানাতে চিঠি দেওয়া হয়েছে। ৩১ জানুয়ারির মধ্যে তা কমিশনকে জানাতে হবে। এরপরই সংরক্ষিত নারী আসনের ভোটের বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”

বিদ্যমান আইন অনুযায়ী, সরাসরি ভোটে জয়ী দলগুলোর আসন সংখ্যার অনুপাতে নারী আসন বণ্টন করা হয়। সংসদের সাধারণ আসনে নির্বাচিত সংসদ সদস্যরা সংরক্ষিত আসনের নির্বাচনের ভোটার হন।

বিজনেস বাংলাদেশ/এমএইচটি