০২:৪৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪

বিশ্ববিদ্যালয়ে উদ্ভুত পরিস্থিতি ও শিক্ষার্থীদের অনিশ্চিত ভবিষ্যত

  • মো. আল আমিন
  • প্রকাশিত : ১১:০৩:৫০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৯ মে ২০২৪
  • 110

ছবি সংগৃহীত

আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছি চোখে নানারকম রঙিন স্বপ্ন নিয়ে। বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশ্বমানের পড়াশোনা হবে। নিজের স্বপ্ন পূরণ করব। ক্যারিয়ারের সফলতার ধাপে পা রাখব। কিন্তু এসবই আমাদের বারবার হোঁচট খায় অনবরত।

আমরা দেখেছি বিশ্ববিদ্যালয় প্রায়ই অশান্ত থাকে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রছাত্রীদের নানারকম ঝামেলার কারণে অশান্ত বাতাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ ভারী হয়ে থাকে। ছাত্র-ছাত্রছাত্রীদের অভ্যন্তরীন কোন্দল, ঝগড়া বিবাদ, মারামারি, হানাহানির কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ নষ্ট হয়। অবস্থা বেগতিক দেখলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাশন ক্যাম্পাস বন্ধ ঘোষণা করে। কিন্তু শিক্ষকদের মধ্যে চলা মারামারি, তাদের অভ্যন্তরীন কোন্দল, শিক্ষক সমিতি আর ভিসির মধ্যে চলা দ্বন্দ্বের কারণেও এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ অস্থিতিশীল হয়ে উঠেছে।

সম্প্রতি এমনই একটি ঘটনা ঘটেছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ও ভিসির মধ্যে চলা দ্বন্দ্বের জেরেই পাল্টাপাল্টি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস বন্ধ ঘোষনা করা হয়। গত ২৮ এপ্রিল দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি ও ভিসির (ভিসি পন্থিদের) মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে। এরই জের ধরে শিক্ষক সমিতি উপাচার্যের পদত্যাগ না হওয়া পর্যন্ত ক্লাস, পরীক্ষা বন্ধ ঘোষনা করে। যার সর্বশেষ পরিণতি লাভ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘৯৩ তম সিন্ডিকেট পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় ও হলসমূহ বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া’র মাধ্যমে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্বমানের শিক্ষকগণ প্রকাশ্যে ছাত্রছাত্রীদের মতো মারামারিতে জড়িয়ে পড়া আর তার প্রতিবাদ স্বরূপ বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষনা করার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ‘স্টেক হোল্ডার’ শিক্ষার্থীদের শিক্ষা জীবন অনিশ্চয়তার পথে দোলায়মান।

শিক্ষকরা তাদের দাবি আদায়ে শিক্ষার্থীদের ‘বলির পাঠা’ হিসেবে ব্যবহার করছেন। এমনিতেই করোনা অতিমারির কারণে সেশনজট চলমান। তার উপর বিভিন্ন বিভাগের অভ্যন্তরীণ নানা কারণেও সেশনজট বেড়েই চলছে। এখন সিন্ডিকেট সভার এই ‘পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় ও হলসমূহ বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে’ এর অবস্থা ‘মারার উপর খাড়ার ঘা’ হয়ে দেখা দিয়েছে।

এই সেশন জটের দায় কি শিক্ষকরা নেবেন। কিভাবে শিক্ষকরা এর ক্ষতি পূরণ করবেন। জটের কারণে শিক্ষার্থীদের চাকরিতে আবেদন করার বয়স তো আর বসে থাকবে না। তার সমাধান তারা কিভাবে করবেন।

এই পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে আসে বেশির ভাগ ছাত্র ছাত্রী মধ্যবিত্ত বা তার নিচের। তাদের পরিবার তো চেয়ে থকে কবে তাদের সন্তান দেশের সনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে পড়া লেখা শেষ করে একটা ভালো চাকরি নিয়ে পরিবারের হাল ধরবে। সংসারের দুঃখ ঘোচাবে।

অন্যদিকে আন্দোলন করে ক্যাম্পাস বন্ধ ঘোষণা করা শিক্ষকরা কিন্তু ঠিকই তাদের বেতন ভাতা গ্রহন করছেন। মাঝখান থেকে ভুক্তভোগী সাধারণ শিক্ষার্থীরা। অবস্থা এমন ‘রাজায় রাজায় যুদ্ধ হয় আর উলুখাগড়ার প্রাণ যায়’।

বিজনেস বাংলাদেশ/একে

বিশ্ববিদ্যালয়ে উদ্ভুত পরিস্থিতি ও শিক্ষার্থীদের অনিশ্চিত ভবিষ্যত

প্রকাশিত : ১১:০৩:৫০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৯ মে ২০২৪

আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছি চোখে নানারকম রঙিন স্বপ্ন নিয়ে। বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশ্বমানের পড়াশোনা হবে। নিজের স্বপ্ন পূরণ করব। ক্যারিয়ারের সফলতার ধাপে পা রাখব। কিন্তু এসবই আমাদের বারবার হোঁচট খায় অনবরত।

আমরা দেখেছি বিশ্ববিদ্যালয় প্রায়ই অশান্ত থাকে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রছাত্রীদের নানারকম ঝামেলার কারণে অশান্ত বাতাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ ভারী হয়ে থাকে। ছাত্র-ছাত্রছাত্রীদের অভ্যন্তরীন কোন্দল, ঝগড়া বিবাদ, মারামারি, হানাহানির কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ নষ্ট হয়। অবস্থা বেগতিক দেখলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাশন ক্যাম্পাস বন্ধ ঘোষণা করে। কিন্তু শিক্ষকদের মধ্যে চলা মারামারি, তাদের অভ্যন্তরীন কোন্দল, শিক্ষক সমিতি আর ভিসির মধ্যে চলা দ্বন্দ্বের কারণেও এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ অস্থিতিশীল হয়ে উঠেছে।

সম্প্রতি এমনই একটি ঘটনা ঘটেছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ও ভিসির মধ্যে চলা দ্বন্দ্বের জেরেই পাল্টাপাল্টি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস বন্ধ ঘোষনা করা হয়। গত ২৮ এপ্রিল দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি ও ভিসির (ভিসি পন্থিদের) মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে। এরই জের ধরে শিক্ষক সমিতি উপাচার্যের পদত্যাগ না হওয়া পর্যন্ত ক্লাস, পরীক্ষা বন্ধ ঘোষনা করে। যার সর্বশেষ পরিণতি লাভ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘৯৩ তম সিন্ডিকেট পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় ও হলসমূহ বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া’র মাধ্যমে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্বমানের শিক্ষকগণ প্রকাশ্যে ছাত্রছাত্রীদের মতো মারামারিতে জড়িয়ে পড়া আর তার প্রতিবাদ স্বরূপ বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষনা করার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ‘স্টেক হোল্ডার’ শিক্ষার্থীদের শিক্ষা জীবন অনিশ্চয়তার পথে দোলায়মান।

শিক্ষকরা তাদের দাবি আদায়ে শিক্ষার্থীদের ‘বলির পাঠা’ হিসেবে ব্যবহার করছেন। এমনিতেই করোনা অতিমারির কারণে সেশনজট চলমান। তার উপর বিভিন্ন বিভাগের অভ্যন্তরীণ নানা কারণেও সেশনজট বেড়েই চলছে। এখন সিন্ডিকেট সভার এই ‘পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় ও হলসমূহ বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে’ এর অবস্থা ‘মারার উপর খাড়ার ঘা’ হয়ে দেখা দিয়েছে।

এই সেশন জটের দায় কি শিক্ষকরা নেবেন। কিভাবে শিক্ষকরা এর ক্ষতি পূরণ করবেন। জটের কারণে শিক্ষার্থীদের চাকরিতে আবেদন করার বয়স তো আর বসে থাকবে না। তার সমাধান তারা কিভাবে করবেন।

এই পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে আসে বেশির ভাগ ছাত্র ছাত্রী মধ্যবিত্ত বা তার নিচের। তাদের পরিবার তো চেয়ে থকে কবে তাদের সন্তান দেশের সনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে পড়া লেখা শেষ করে একটা ভালো চাকরি নিয়ে পরিবারের হাল ধরবে। সংসারের দুঃখ ঘোচাবে।

অন্যদিকে আন্দোলন করে ক্যাম্পাস বন্ধ ঘোষণা করা শিক্ষকরা কিন্তু ঠিকই তাদের বেতন ভাতা গ্রহন করছেন। মাঝখান থেকে ভুক্তভোগী সাধারণ শিক্ষার্থীরা। অবস্থা এমন ‘রাজায় রাজায় যুদ্ধ হয় আর উলুখাগড়ার প্রাণ যায়’।

বিজনেস বাংলাদেশ/একে