০৫:০২ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৭ জুলাই ২০২৪

ডিজিটাল ব্যাংক কতদূর

বাংলাদেশের জন্য সুখবর বয়ে নিয়ে এসেছে ডিজিটাল ব্যাংকিং পদ্ধতি। নগদ টাকার ব্যবহার কমিয়ে আনা ও লেনদেন আরও সহজ করতে ‘ক্যাশলেস সোসাইটি’ গড়ার উদ্যোগে ডিজিটাল ব্যাংক চালু করার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। তফসলি ব্যাংকের তালিকায় যুক্ত করে দেশের প্রথম ডিজিটাল ব্যাংক হিসেবে চূড়ান্ত লাইসেন্স দেয়া হয়েছে ‘নগদ লিমিটেড’কে। এর মাধ্যমে এই ব্যাংকিং ব্যবস্থা ডিজিটাল যুগে প্রবেশ করেছে। তবে নগদের পক্ষ থেকে ডিজিটাল ব্যাংকিং পদ্ধতি বাণিজ্যকভাবে কবে শুরু করবে তা এখনো জানা যায়নি।

সম্প্রতি নগদ লিমিটেডকে চূড়ান্তভাবে অনুমোদন দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এর আগে প্রাথমিকভাবে নগদ ও ‘কড়ি’কে এলওআই (লেটার অব ইনটেন্ট) দেওয়া হয়।

নগদের হেড অব মিডিয়া অ্যান্ড কমিউনিকেশন্স মুহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম বিজনেস বাংলাদেশকে বলেন, নগদ ডিজিটাল ব্যাংক কার্যক্রম শুরুর প্রস্তুতি পুরোদমে চলছে। এখন আনুষ্ঠানিক ঘোষণার মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনার অপেক্ষায় আছি আমরা। ভবিষ্যত পরিকল্পনার বিষয়ে তিনি বলেন, ডিজিটাল ব্যাংকের মাধ্যমে ব্যাংকের বাইরে থাকা মানুষদের ব্যাংকিং ব্যবস্থার মধ্যে নিয়ে আসার চেষ্টা করবে নগদ। তার জন্য সিঙ্গেল ডিজিট সুদে ঋণ, আকর্ষণীয় মুনাফায় ডিপিএস করাসহ এমন অনেক বিষয়ে চমক আনবে নগদ ডিজিটাল ব্যাংক।

ডিজিটাল ব্যাংকিং পদ্ধতি প্রথম ধাপে অনুমোদন পায় ৫টি কোম্পানি: মোবাইলে আর্থিক সেবাদাতা নগদ, এসিআই এর ‘কড়ি’, কয়েকটি ব্যাংকের যৌথ উদ্যোগ ডিজি টেন, ব্র্যাকের উদ্যোগ বিকাশ ও ব্যাংক এশিয়ার উদ্যোগ ডিজিটাল ব্যাংক লিমিটেড। দেশের ব্যাংকিং খাতে ডিজিটাল লেনদেনের জন্য পৃথক ব্যাংকিং ব্যবস্থা ডিজিটাল ব্যাংকের সেবা দিতে লাইসেন্স পেতে একক ও যৌথ অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে ৫২টি আবেদন জমা পড়েছিল। সেগুলো যাচাই বাছাই করে এসব কোম্পানিকে অনুমোদন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মেজবাউল হক জানান, ১০ ব্যাংকের মার্জারের মাধ্যমে পরিচালিত ডিজি টেন ব্যাংক লিমিটেড, ব্র্যাকের বিকাশ ডিজিটাল ব্যাংক ও ব্যাংক এশিয়ার ডিজিটাল ব্যাংক লিমিটেড ব্যাংকিং খাতের হওয়ায় তাদেরকে পৃথকভাবে ডিজিটাল ব্যাংকের লাইসেন্স নেওয়ার প্রয়োজন হবে না। ডিজিটাল ব্যাংকিং ‘উইং’ খুলে এ তিন কোম্পানি ডিজিটাল ব্যাংকিং সেবা দিতে পারবে জানিয়ে তিনি বলেন, এ তিন কোম্পানি একটি নীতিমালার মাধ্যমে ডিজিটাল ব্যাংক পরিচালনা করতে পারবে। পরে তাদের চ‚ড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হবে।

তিনি বলেন, ২০২৩ সালের ১৭ অগাস্ট পর্যন্ত বাড়ানো সময়ের মধ্যে একক ও যৌথভাবে ৫২টি কোম্পানি ব্যাংক পেতে আবেদন করে। এসব আবেদন তিনটি কমিটির মাধ্যমে যাচাই-বাছাই করে প্রাথমিকভাবে নয়টি কোম্পানিকে যোগ্য মনে করা হয়। যাদের ব্যবসায়িক অভিজ্ঞতা, সম্ভ্যব্যতা, প্রযুক্তি ও নিরাপত্তা ব্যবস্থাসহ বিভিন্ন বিষয়ে ১০০ নম্বরের মধ্যে ৬০ নম্বর পেয়েছে সে সকল কোম্পানিকে তালিকায় রাখা হয়।

ডিজিটাল ব্যাংকিংয়ে কীভাবে কী সেবা পাবে: নীতিমালা অনুযায়ী ডিজিটাল ব্যাংকের একটি প্রধান কার্যালয় থাকবে বাংলাদেশে। এই কার্যালয় ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা ও সার্পোট স্টাফদের দপ্তর হিসেবে ব্যবহৃত হবে। পাশাপাশি সশরীরে বা ডিজিটাল পদ্ধতিতে গ্রাহকের অভিযোগ গ্রহণ ও নিষ্পত্তির কাজটি এই কেন্দ্রীয় দপ্তরে হবে। কিন্তু ডিজিটাল ব্যাংকগুলো প্রচলিত ব্যাংকের মত সরাসরি কাউন্টারে গ্রাহকদের লেনদেন সেবা দিতে পারবে না। এ ব্যাংকের নিজস্ব কোনো শাখা, উপশাখা, এজেন্ট বা উইন্ডো থাকবে না। এমনকি নিজস্ব কোনো এটিএম/সিডিএম/সিআরএম বা স্পর্শযোগ্য ইনস্ট্রুমেন্ট থাকতে পারবে না। ডিজিটাল ব্যাংকে গ্রাহক হিসাব খোলা হবে কেওয়াইসি পরিপালন করে অনলাইনে। তাদের নিজস্ব কোনো এটিএম বুথ থাকবে না। হিসাব খোলার পর ভিন্ন কোনো ব্যাংক বা এমএএফএস এজেন্ট, এটিএম বুথ, সিডিএম, সিআরএম নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে অনলাইনে অর্থ স্থানান্তর এবং ব্যবহার করতে পারবে গ্রাহক। নিজের অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তোলা যাবে একই পদ্ধতিতে। লেনদেন সহজ করতে ভার্চুয়াল কার্ড, কিউ আর কোড বা অন্য কোনো অগ্রসর প্রযুক্তিনির্ভর পণ্য চালু করতে পারবে ডিজিটাল ব্যাংক। এই ব্যাংক দেশের ভেতরে যে কোনো পর্যায়ের গ্রাহককে ঋণ দিতে পারবে, তবে বৈদেশিক লেনদেনের সুযোগ থাকবে সীমিত। তবে তারা বিদেশ থেকে রেমিটেন্স গ্রহণ ও এফসি হিসাব পরিচালনা করতে পারবে। এই ব্যাংক কারও পক্ষে পেমেন্ট বা পরিশোধকারী ব্যাংক হিসেবে কাজ করতে পারবে। বিদেশে লেখাপড়া, চিকিৎসা, ভ্রমণ বা অন্য কোনো প্রয়োজনে অনুমোদন সাপেক্ষে বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেন করতে পারবে গ্রাহকের পক্ষে। তবে বৈদেশিক বাণিজ্যে ঋণ, বৃহৎ ও মাঝারি শিল্পে মেয়াদি ঋণে অর্থায়ন করতে পারবে না।

এ ব্যাংক দেশের ভেতরে যে কোনো পর্যায়ের গ্রাহককে ঋণ দিতে পারবে। প্রান্তিক ও এসএমই খাতে ঋণ দিতে অগ্রাধিকার দিতে বলা হয়েছে নীতিমালায়।

বিজনেস বাংলাদশে/একে

দুই মাসে পিয়াজের দাম বেড়েছে ৮০  শতাংশ , আলু ৫৫ শতাংশ

ডিজিটাল ব্যাংক কতদূর

প্রকাশিত : ০৪:২৩:২৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ জুলাই ২০২৪

বাংলাদেশের জন্য সুখবর বয়ে নিয়ে এসেছে ডিজিটাল ব্যাংকিং পদ্ধতি। নগদ টাকার ব্যবহার কমিয়ে আনা ও লেনদেন আরও সহজ করতে ‘ক্যাশলেস সোসাইটি’ গড়ার উদ্যোগে ডিজিটাল ব্যাংক চালু করার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। তফসলি ব্যাংকের তালিকায় যুক্ত করে দেশের প্রথম ডিজিটাল ব্যাংক হিসেবে চূড়ান্ত লাইসেন্স দেয়া হয়েছে ‘নগদ লিমিটেড’কে। এর মাধ্যমে এই ব্যাংকিং ব্যবস্থা ডিজিটাল যুগে প্রবেশ করেছে। তবে নগদের পক্ষ থেকে ডিজিটাল ব্যাংকিং পদ্ধতি বাণিজ্যকভাবে কবে শুরু করবে তা এখনো জানা যায়নি।

সম্প্রতি নগদ লিমিটেডকে চূড়ান্তভাবে অনুমোদন দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এর আগে প্রাথমিকভাবে নগদ ও ‘কড়ি’কে এলওআই (লেটার অব ইনটেন্ট) দেওয়া হয়।

নগদের হেড অব মিডিয়া অ্যান্ড কমিউনিকেশন্স মুহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম বিজনেস বাংলাদেশকে বলেন, নগদ ডিজিটাল ব্যাংক কার্যক্রম শুরুর প্রস্তুতি পুরোদমে চলছে। এখন আনুষ্ঠানিক ঘোষণার মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনার অপেক্ষায় আছি আমরা। ভবিষ্যত পরিকল্পনার বিষয়ে তিনি বলেন, ডিজিটাল ব্যাংকের মাধ্যমে ব্যাংকের বাইরে থাকা মানুষদের ব্যাংকিং ব্যবস্থার মধ্যে নিয়ে আসার চেষ্টা করবে নগদ। তার জন্য সিঙ্গেল ডিজিট সুদে ঋণ, আকর্ষণীয় মুনাফায় ডিপিএস করাসহ এমন অনেক বিষয়ে চমক আনবে নগদ ডিজিটাল ব্যাংক।

ডিজিটাল ব্যাংকিং পদ্ধতি প্রথম ধাপে অনুমোদন পায় ৫টি কোম্পানি: মোবাইলে আর্থিক সেবাদাতা নগদ, এসিআই এর ‘কড়ি’, কয়েকটি ব্যাংকের যৌথ উদ্যোগ ডিজি টেন, ব্র্যাকের উদ্যোগ বিকাশ ও ব্যাংক এশিয়ার উদ্যোগ ডিজিটাল ব্যাংক লিমিটেড। দেশের ব্যাংকিং খাতে ডিজিটাল লেনদেনের জন্য পৃথক ব্যাংকিং ব্যবস্থা ডিজিটাল ব্যাংকের সেবা দিতে লাইসেন্স পেতে একক ও যৌথ অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে ৫২টি আবেদন জমা পড়েছিল। সেগুলো যাচাই বাছাই করে এসব কোম্পানিকে অনুমোদন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মেজবাউল হক জানান, ১০ ব্যাংকের মার্জারের মাধ্যমে পরিচালিত ডিজি টেন ব্যাংক লিমিটেড, ব্র্যাকের বিকাশ ডিজিটাল ব্যাংক ও ব্যাংক এশিয়ার ডিজিটাল ব্যাংক লিমিটেড ব্যাংকিং খাতের হওয়ায় তাদেরকে পৃথকভাবে ডিজিটাল ব্যাংকের লাইসেন্স নেওয়ার প্রয়োজন হবে না। ডিজিটাল ব্যাংকিং ‘উইং’ খুলে এ তিন কোম্পানি ডিজিটাল ব্যাংকিং সেবা দিতে পারবে জানিয়ে তিনি বলেন, এ তিন কোম্পানি একটি নীতিমালার মাধ্যমে ডিজিটাল ব্যাংক পরিচালনা করতে পারবে। পরে তাদের চ‚ড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হবে।

তিনি বলেন, ২০২৩ সালের ১৭ অগাস্ট পর্যন্ত বাড়ানো সময়ের মধ্যে একক ও যৌথভাবে ৫২টি কোম্পানি ব্যাংক পেতে আবেদন করে। এসব আবেদন তিনটি কমিটির মাধ্যমে যাচাই-বাছাই করে প্রাথমিকভাবে নয়টি কোম্পানিকে যোগ্য মনে করা হয়। যাদের ব্যবসায়িক অভিজ্ঞতা, সম্ভ্যব্যতা, প্রযুক্তি ও নিরাপত্তা ব্যবস্থাসহ বিভিন্ন বিষয়ে ১০০ নম্বরের মধ্যে ৬০ নম্বর পেয়েছে সে সকল কোম্পানিকে তালিকায় রাখা হয়।

ডিজিটাল ব্যাংকিংয়ে কীভাবে কী সেবা পাবে: নীতিমালা অনুযায়ী ডিজিটাল ব্যাংকের একটি প্রধান কার্যালয় থাকবে বাংলাদেশে। এই কার্যালয় ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা ও সার্পোট স্টাফদের দপ্তর হিসেবে ব্যবহৃত হবে। পাশাপাশি সশরীরে বা ডিজিটাল পদ্ধতিতে গ্রাহকের অভিযোগ গ্রহণ ও নিষ্পত্তির কাজটি এই কেন্দ্রীয় দপ্তরে হবে। কিন্তু ডিজিটাল ব্যাংকগুলো প্রচলিত ব্যাংকের মত সরাসরি কাউন্টারে গ্রাহকদের লেনদেন সেবা দিতে পারবে না। এ ব্যাংকের নিজস্ব কোনো শাখা, উপশাখা, এজেন্ট বা উইন্ডো থাকবে না। এমনকি নিজস্ব কোনো এটিএম/সিডিএম/সিআরএম বা স্পর্শযোগ্য ইনস্ট্রুমেন্ট থাকতে পারবে না। ডিজিটাল ব্যাংকে গ্রাহক হিসাব খোলা হবে কেওয়াইসি পরিপালন করে অনলাইনে। তাদের নিজস্ব কোনো এটিএম বুথ থাকবে না। হিসাব খোলার পর ভিন্ন কোনো ব্যাংক বা এমএএফএস এজেন্ট, এটিএম বুথ, সিডিএম, সিআরএম নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে অনলাইনে অর্থ স্থানান্তর এবং ব্যবহার করতে পারবে গ্রাহক। নিজের অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তোলা যাবে একই পদ্ধতিতে। লেনদেন সহজ করতে ভার্চুয়াল কার্ড, কিউ আর কোড বা অন্য কোনো অগ্রসর প্রযুক্তিনির্ভর পণ্য চালু করতে পারবে ডিজিটাল ব্যাংক। এই ব্যাংক দেশের ভেতরে যে কোনো পর্যায়ের গ্রাহককে ঋণ দিতে পারবে, তবে বৈদেশিক লেনদেনের সুযোগ থাকবে সীমিত। তবে তারা বিদেশ থেকে রেমিটেন্স গ্রহণ ও এফসি হিসাব পরিচালনা করতে পারবে। এই ব্যাংক কারও পক্ষে পেমেন্ট বা পরিশোধকারী ব্যাংক হিসেবে কাজ করতে পারবে। বিদেশে লেখাপড়া, চিকিৎসা, ভ্রমণ বা অন্য কোনো প্রয়োজনে অনুমোদন সাপেক্ষে বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেন করতে পারবে গ্রাহকের পক্ষে। তবে বৈদেশিক বাণিজ্যে ঋণ, বৃহৎ ও মাঝারি শিল্পে মেয়াদি ঋণে অর্থায়ন করতে পারবে না।

এ ব্যাংক দেশের ভেতরে যে কোনো পর্যায়ের গ্রাহককে ঋণ দিতে পারবে। প্রান্তিক ও এসএমই খাতে ঋণ দিতে অগ্রাধিকার দিতে বলা হয়েছে নীতিমালায়।

বিজনেস বাংলাদশে/একে