১২:১২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

মুরাদনগর উপজেলার কোম্পানীগঞ্জ বাজার তথা বাস টার্মিণালে যানজট যেন নিত্যদিনের সঙ্গি

  • রাহাত হোসাইন
  • প্রকাশিত : ০৯:৫৬:০৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • 36

কুমিল্লা উত্তর প্রতিনিধি কুমিল্লার মুরাদনগরে যানজট যেন অভিশাপ দাঁড়িয়েছে। যানজযটের চিরচেনা এ রেওয়াজ থেকে বের হতেই যেন পারছে না এ রাস্তায় ব্যবহারকারী চালক ও যাত্রীরা। উপজেলার কোম্পানীগঞ্জ বাস টার্মিনাল যেন যানজটের এক অভিশপ্ত বাস টার্মিনালে পরিনত হয়েছে। সকাল থেকে সন্ধ্যা এ বাস টার্মিনালে যানজট ছিল না এমন দেখা ব্যাক্তির সংখ্যা হয়তো হাতে গুনা মাত্র। বাস টার্মিনালের ৫শ’ মিটার অংশ পার হতে অপেক্ষা করতে হয় ঘন্টার পর ঘন্টা। হাইওয়ে পুলিশ ও মুরাদনগর থানা পুলিশ মাঝেমধ্যে যানযট নিরসনের জন্য দায়িত্ব পালন করে। তবে সারাদিন নয় যানজটের তীব্রতা বেড়ে গেলে আংশিক সময়ের জন্য পুলিশ সদস্যরা দায়িত্ব পালন করে। পুলিশ যাওয়ার পরপরই আগের রূপে ফিরে আসে আবার যানজট। তবে কমিউনিটি পুলিশিং সদস্য ও বাস পরিবহন শ্রমিকরা দায়িত্ব পালন করলেও চাহিদার তুলনায় লোকবল কম থাকায় যানজট পুরোপুরি নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে না। মুরাদনগর উপজেলার আশপাশের ছয়টি উপজেলার সবচেয়ে বড় বাজার বলে বিবেচিত কোম্পানীগঞ্জ বাজার। আর এ বাজারের বাস টার্মিনাল থেকে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, ব্রাহ্মনবাড়িয়া ও কুমিল্লাতে নিয়মিত চলাচল করে দূরপাল্লার বাস। তাছাড়া কুমিল্লা-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়ক এ বাজারের পাশ দিয়ে যাওয়ায় গুরুত্বপূর্ন হয়ে উটেছে কোম্পানীগঞ্জ বাজার সহ কোম্পানীগঞ্জ বাস টার্মিনাল। জানা যায়, কোম্পানীগঞ্জ বাস টার্মিনালে নেই কোন প্রশাসন কর্তৃক শৃঙ্খলা, যেভাবে ইচ্ছা সেভাবেই রাস্তার উপরে সিএনজি, অটো রিকশা ও বাস সহ বিভিন্ন ধরনের যানবাহন নিয়ম-নীতি তোয়াক্কা না করে যানজটসহ পথচারী চলাচলে বিঘ্ন ঘটাচ্ছে। আর কোম্পানীগঞ্জ বাস টার্মিনাল কুমিল্লা-ব্রাহ্মনবাড়িয়া-সিলেট যোগাযোগের একমাত্র সড়ক হিসেবে গুরুত্ব থাকায়, দূর দূরান্ত থেকে মালবাহী ও যাত্রীবাহী যান চলাচল করে এ সড়কে। যানজট নিরসন খুবই প্রয়োজন হলেও কর্তৃপক্ষের নীরবতা ও পরিবহন মালিক শ্রমিকদের দায়িত্বহীন অবস্থা বিরাজ করছে। তাছাড়া কোম্পানীগঞ্জ বাস টার্মিনাল পার হলেই ২কিলোমিটার পর দেবিদ্বার উপজেলা সদর। আর দেবিদ্বার উপজেলা সদরে বিষেশায়িত কয়েকটি প্রাইভেট হাসপাতাল গড়ে উঠায় মুরাদনগর, হোমনা, বাঞ্চারামপুর, কসবা, ব্রাহ্মনপাড়া এলাকার অসুস্থ রোগীদের আধুনিক চিকিৎসার একমাত্র ভরসা যেন দেবিদ্বার উপজেলার প্রাইভেট হাসপাতালগুলো। কুমিল্লা থেকে কাছাকাছি হওয়াতে দেবিদ্বার উপজেলায় প্রথমিক চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসা হয় অসুস্থ রোগীদের। এদিকে কোম্পানীগঞ্জ বাজারের যানজটের ঘন্টার পর ঘন্টা বসে থেকে অসহায়ত্ব ছাড়া আর কিছু করার নেই যেন রোগী, স্বজন ও যাত্রী চালকদের। মো: খলিল নামে এক গাড়ি চালক বলেন, কোম্পানীগঞ্জ বাস টার্মিনাল হয়ে যাতায়াতকারী যাত্রী ও চালকরা নির্ধারিত সময়ের চেয়ে এক থেকে দেড় ঘন্টা হাতে রেখে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে বের হতে হয়। এ জায়গায় যানযট চিরচেনা দূর্ভোগ। রাস্তার উপর থেকে গাড়িতে যাত্রী না তুলে নির্ধারিত স্ট্যান্ড থেকে যাত্রী তুললে যানজট অনেকটাই কমে যাবে। তাছাড়া গাড়ি চালকদের বিরেুদ্ধে প্রশাসন কঠোর হলে যানজট নিরসন হয়ে যাবে। সাইমন সরকার নামে এক প্রইভেট চাকুরিজীবি জানান, অল্প বয়সী শিশু চালক ও অদক্ষ চালক ব্যাহত করছে সড়কের শৃঙ্খলা, অধিকাংশ চালকদের নেই ড্রাইভিং লাইসেন্স। যে যেভাবে পারছে রাস্তার উপর থেকে যাত্রী তুলছে, রাস্তার উপর থেকে ছোট ও বড় পরিবহনে যাত্রী তোলার কারনে অধিকাংশ সময়ে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। বাসা থেকে নির্ধারিত সময়ে অফিসে পৌছানোর জন্য বের হলেও অফিসে নির্ধারিত সময়ে পৌছাতে পারি না যানজটের কারনে। আবার অফিসে পৌছানোর জন্য নির্ধারিত সময়ে বের হওয়ার পর যানজটের কারনে প্রায় এক কিলোমিটার হেটে অফিসে পৌছাতে হয়। অন্যদিকে রাস্তার উপরে অবৈধভাবে ফুটপাত দখল করার কারনে ব্যাহত হচ্ছে পথচারি চলাচল তার কারনেও যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। মিরপুর হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ মঞ্জুরুল আবসার বলেন, যানজট যখন বেশি সৃষ্টি হয় তখন পুলিশ যানজট নিয়ন্ত্রণের জন্য কাজ করে। আর কোম্পানীগঞ্জ বাস টার্মিনালে যানজট নিয়ন্ত্রণের জন্য সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টার দরকার। শুধু পুলিশ চেষ্টা করে একা যানজট নিয়ন্ত্রণ সম্ভব না। বর্তমান পরিস্থিতিতে আমরা যানবাহনের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থাও নিতে পারছি না। মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সিফাত উদ্দিন বলেন, কোম্পানীগঞ্জের যানজটের বিষয়টি আমার নজরে এসেছে। বর্তমানে উপজেলার কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক অপসারণের দাবিতে আন্দোলন চলছে যার কারণে যানজটের বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে একটু দেরি হচ্ছে। কোম্পানীগঞ্জ বাস টার্মিনালের যানজট নিরসনে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

ট্যাগ :
জনপ্রিয়

মুরাদনগর উপজেলার কোম্পানীগঞ্জ বাজার তথা বাস টার্মিণালে যানজট যেন নিত্যদিনের সঙ্গি

প্রকাশিত : ০৯:৫৬:০৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪

কুমিল্লা উত্তর প্রতিনিধি কুমিল্লার মুরাদনগরে যানজট যেন অভিশাপ দাঁড়িয়েছে। যানজযটের চিরচেনা এ রেওয়াজ থেকে বের হতেই যেন পারছে না এ রাস্তায় ব্যবহারকারী চালক ও যাত্রীরা। উপজেলার কোম্পানীগঞ্জ বাস টার্মিনাল যেন যানজটের এক অভিশপ্ত বাস টার্মিনালে পরিনত হয়েছে। সকাল থেকে সন্ধ্যা এ বাস টার্মিনালে যানজট ছিল না এমন দেখা ব্যাক্তির সংখ্যা হয়তো হাতে গুনা মাত্র। বাস টার্মিনালের ৫শ’ মিটার অংশ পার হতে অপেক্ষা করতে হয় ঘন্টার পর ঘন্টা। হাইওয়ে পুলিশ ও মুরাদনগর থানা পুলিশ মাঝেমধ্যে যানযট নিরসনের জন্য দায়িত্ব পালন করে। তবে সারাদিন নয় যানজটের তীব্রতা বেড়ে গেলে আংশিক সময়ের জন্য পুলিশ সদস্যরা দায়িত্ব পালন করে। পুলিশ যাওয়ার পরপরই আগের রূপে ফিরে আসে আবার যানজট। তবে কমিউনিটি পুলিশিং সদস্য ও বাস পরিবহন শ্রমিকরা দায়িত্ব পালন করলেও চাহিদার তুলনায় লোকবল কম থাকায় যানজট পুরোপুরি নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে না। মুরাদনগর উপজেলার আশপাশের ছয়টি উপজেলার সবচেয়ে বড় বাজার বলে বিবেচিত কোম্পানীগঞ্জ বাজার। আর এ বাজারের বাস টার্মিনাল থেকে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, ব্রাহ্মনবাড়িয়া ও কুমিল্লাতে নিয়মিত চলাচল করে দূরপাল্লার বাস। তাছাড়া কুমিল্লা-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়ক এ বাজারের পাশ দিয়ে যাওয়ায় গুরুত্বপূর্ন হয়ে উটেছে কোম্পানীগঞ্জ বাজার সহ কোম্পানীগঞ্জ বাস টার্মিনাল। জানা যায়, কোম্পানীগঞ্জ বাস টার্মিনালে নেই কোন প্রশাসন কর্তৃক শৃঙ্খলা, যেভাবে ইচ্ছা সেভাবেই রাস্তার উপরে সিএনজি, অটো রিকশা ও বাস সহ বিভিন্ন ধরনের যানবাহন নিয়ম-নীতি তোয়াক্কা না করে যানজটসহ পথচারী চলাচলে বিঘ্ন ঘটাচ্ছে। আর কোম্পানীগঞ্জ বাস টার্মিনাল কুমিল্লা-ব্রাহ্মনবাড়িয়া-সিলেট যোগাযোগের একমাত্র সড়ক হিসেবে গুরুত্ব থাকায়, দূর দূরান্ত থেকে মালবাহী ও যাত্রীবাহী যান চলাচল করে এ সড়কে। যানজট নিরসন খুবই প্রয়োজন হলেও কর্তৃপক্ষের নীরবতা ও পরিবহন মালিক শ্রমিকদের দায়িত্বহীন অবস্থা বিরাজ করছে। তাছাড়া কোম্পানীগঞ্জ বাস টার্মিনাল পার হলেই ২কিলোমিটার পর দেবিদ্বার উপজেলা সদর। আর দেবিদ্বার উপজেলা সদরে বিষেশায়িত কয়েকটি প্রাইভেট হাসপাতাল গড়ে উঠায় মুরাদনগর, হোমনা, বাঞ্চারামপুর, কসবা, ব্রাহ্মনপাড়া এলাকার অসুস্থ রোগীদের আধুনিক চিকিৎসার একমাত্র ভরসা যেন দেবিদ্বার উপজেলার প্রাইভেট হাসপাতালগুলো। কুমিল্লা থেকে কাছাকাছি হওয়াতে দেবিদ্বার উপজেলায় প্রথমিক চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসা হয় অসুস্থ রোগীদের। এদিকে কোম্পানীগঞ্জ বাজারের যানজটের ঘন্টার পর ঘন্টা বসে থেকে অসহায়ত্ব ছাড়া আর কিছু করার নেই যেন রোগী, স্বজন ও যাত্রী চালকদের। মো: খলিল নামে এক গাড়ি চালক বলেন, কোম্পানীগঞ্জ বাস টার্মিনাল হয়ে যাতায়াতকারী যাত্রী ও চালকরা নির্ধারিত সময়ের চেয়ে এক থেকে দেড় ঘন্টা হাতে রেখে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে বের হতে হয়। এ জায়গায় যানযট চিরচেনা দূর্ভোগ। রাস্তার উপর থেকে গাড়িতে যাত্রী না তুলে নির্ধারিত স্ট্যান্ড থেকে যাত্রী তুললে যানজট অনেকটাই কমে যাবে। তাছাড়া গাড়ি চালকদের বিরেুদ্ধে প্রশাসন কঠোর হলে যানজট নিরসন হয়ে যাবে। সাইমন সরকার নামে এক প্রইভেট চাকুরিজীবি জানান, অল্প বয়সী শিশু চালক ও অদক্ষ চালক ব্যাহত করছে সড়কের শৃঙ্খলা, অধিকাংশ চালকদের নেই ড্রাইভিং লাইসেন্স। যে যেভাবে পারছে রাস্তার উপর থেকে যাত্রী তুলছে, রাস্তার উপর থেকে ছোট ও বড় পরিবহনে যাত্রী তোলার কারনে অধিকাংশ সময়ে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। বাসা থেকে নির্ধারিত সময়ে অফিসে পৌছানোর জন্য বের হলেও অফিসে নির্ধারিত সময়ে পৌছাতে পারি না যানজটের কারনে। আবার অফিসে পৌছানোর জন্য নির্ধারিত সময়ে বের হওয়ার পর যানজটের কারনে প্রায় এক কিলোমিটার হেটে অফিসে পৌছাতে হয়। অন্যদিকে রাস্তার উপরে অবৈধভাবে ফুটপাত দখল করার কারনে ব্যাহত হচ্ছে পথচারি চলাচল তার কারনেও যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। মিরপুর হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ মঞ্জুরুল আবসার বলেন, যানজট যখন বেশি সৃষ্টি হয় তখন পুলিশ যানজট নিয়ন্ত্রণের জন্য কাজ করে। আর কোম্পানীগঞ্জ বাস টার্মিনালে যানজট নিয়ন্ত্রণের জন্য সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টার দরকার। শুধু পুলিশ চেষ্টা করে একা যানজট নিয়ন্ত্রণ সম্ভব না। বর্তমান পরিস্থিতিতে আমরা যানবাহনের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থাও নিতে পারছি না। মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সিফাত উদ্দিন বলেন, কোম্পানীগঞ্জের যানজটের বিষয়টি আমার নজরে এসেছে। বর্তমানে উপজেলার কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক অপসারণের দাবিতে আন্দোলন চলছে যার কারণে যানজটের বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে একটু দেরি হচ্ছে। কোম্পানীগঞ্জ বাস টার্মিনালের যানজট নিরসনে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।