১১:৩৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ মার্চ ২০২৫

৩০ কোটি টাকার টেন্ডারের অনিয়মের অভিযোগ , ৪ বছরেও নির্বাহী প্রকৌশলী জামালের বদলি নেই

ময়মনসিংহ জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরে নির্বাহী প্রকৌশলী জামাল হোসেনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। জানা গেছে, ২০২১ সালের ৩ জানুয়ারি সহকারী প্রকৌশলী হিসেবে মুক্তাগাছা অফিস থেকে পদোন্নতি পেয়ে জামাল হোসেন সামিউলকে হাটিয়ে নির্বাহী প্রকৌশলীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন। যদিও নিয়ম অনুযায়ী সরকারি কর্মকর্তা ৩ বছরের বেশি একই কর্মস্থলে থাকতে পারেনা। তবুও তিনি সরকারি নিয়ম ভেঙে ৪ বছর যাবৎ বহাল তবিয়তে রয়েছেন। ৫ই আগস্ট ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের পর বিভিন্ন কর্মকর্তার বদলি হলেও তিনি স্বপদে বহাল রয়েছেন। এমনকি ৫ই আগস্টের পর নির্বাহী প্রকৌশলী জামাল হোসেন শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি টাঙ্গিয়েও অফিস করেছেন, পরে সাংবাদিকদের তোপের মুখে ছবি খুলে ফেলার ঘটনাও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
অভিযোগ রয়েছে, নির্বাহী প্রকৌশলী জামাল হোসেন নামে মাত্র টেন্ডার আহ্বান করলেও মাঠ পর্যায়ে ঠিকাদারি কাজ বাগিয়ে নেন তার পছন্দের ঠিকাদারগন। তিনি মাঠ পর্যায়ের কর্মচারীদের দ্বারা ঠিকাদারি সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছেন। গত ২৩ জানুয়ারি ২০২৫ তারিখ জনস্বাস্থ্য নৌ প্রকৌশল অধিদপ্তর ময়মনসিংহ অফিস থেকে ২১ টি প্যাকেজের প্রায় ৩০ কোটি টাকা কাজের ইজিপি টেন্ডার সম্পন্ন হয়। এ টেন্ডারের আগে ও পরে দীর্ঘদিন তিনি অফিস করেননি। এ কাজেও তিনি কমিশন নিয়ে কাজ বিক্রি করে দিয়েছেন বলে একাধিক ঠিকাদার অভিযোগ করেন। তারা বলছেন, ইজিপি সিস্টেমের স্বচ্ছতা থাকলেও কৌশলে রেট বিক্রি করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন নির্বাহী প্রকৌশলী জামাল হোসেন। কৌশলটির ব্যাখা হিসেবে জানা যায়, টেন্ডারের দরপত্রে যে দর উল্লেখ থাকে সেই দরটা সঠিক থাকেনা,সে নিজস্বভাবে তৈরি করে রাখে যার ১০% নিম্ন দরে বিক্রি করে যার ফলে তার পছন্দের ঠিকাদারগন ব্যাতিত অন্যান্য ঠিকাদারগন টেন্ডারে অংশগ্রহণ করলেও তারা কাজ পায়না।
এছাড়াও মানবসম্পদ প্রকল্প, মুজিববর্ষ, আশ্রয়ন প্রকল্পে ও নলকূপ স্থাপন প্রকল্পে দুর্নীতির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন নির্বাহী প্রকৌশলী জামাল হোসেন যা দুদক তদন্ত করলেই থলের বিড়াল বেরিয়ে আসবে।
স্থানীয় সাংবাদিকরা তার এসব অনিয়ম ঔ দুর্নীতির তথ্য সংগ্রহে তার দপ্তরে তথ্য প্রাপ্তির ‘ক’ ফরমে আবেদন করলেও তিনি তথ্য দিতে বিভিন্ন তালবাহানা করেন “দেই- দিচ্ছি-দিবো” বলে সাংবাদিকদের ঘুরাতে থাকেন। এবং সাংবাদিকদের জানান তিনি কোন দুর্নীতি করেননি।
এছাড়াও আজহারুল ইসলাম মেকানিক্স ফুলপুরের মাঠ কর্মচারী হয়ে ফুলপুরের গ্রাম অঞ্চলে থাকার কথা, কিন্তু তিনি থাকেন বিলাসবহুল সরকারি ভবন ময়মনসিংহ বিভাগীয় জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সাবেক এসডিও অফিসে, সেখানে ৮ থেকে ৯টি কক্ষ রয়েছে। পরিত্যক্ত দেখিয়ে নাম কাওয়াস্তে বাসা ভাড়া না দিয়েই বছরের পর বছর সরকারকে ফাঁকি দিচ্ছেন। এর সঙ্গে নির্বাহী প্রকৌশলী জামাল হোসেন গং জড়িত। এছাড়াও অনেক ঠিকাদারগন কাজ না করেই বিল উত্তোলন করে নেয়ার অভিযোগ প্রায়ই দেখা যায়। যার সিন্ডিকেট সদস্য জেলার ক্যাশিয়ার। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর ময়মনসিংহ জেলার ক্যাশিয়ার সুকান্ত বনিক বাবু তার বদলী নেই। বদলি হয়েছিলো নরসিংদীতে নির্বাহী প্রকৌশলী তদবির করে বদলি স্থগিত করেছেন।তার সিন্ডিকেট নাকি অনেক শক্তিশালী। এছাড়াও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের ভালুুকা উপজেলার মেকানিক্স রাহুল,সদর উপজেলার মেহেদী, ফুলবাড়িয়ার মেকানিক্স সাদেক, গৌরীপুরের মেকানিক্স শামসুল হক, নান্দাইলের মেকানিক্স সানাউল্লাহ করণিক মেকানিক্স মোজাম্মেল মেকানিক্স আব্দুল কুদ্দুস লিটন হালুয়াঘাট স্ব-স্ব উপজেলায় লুটপাটে রাজত্ব কায়েম করেছেন, তারাও একই প্রক্রিয়ায় নির্বাহী প্রকৌশলীর অন্যতম সিন্ডিকেট সদস্য ও লুটপাটের সাথে জড়িত। এছাড়াও ফুলপুর উপজেলার মাঠ পর্যায়ে মেকানিক্স আজহারুল ইসলাম তিনি কোটি কোটি টাকার মালিক দীর্ঘদিন যাবৎ ঠিকাদারী করছেন নির্বাহী প্রকৌশলী জামাল হোসেনের সাথে আঁতাত করে তাদের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায়না।
স্থানীয় নাগরিকরা বলেছেন, ৫ই আগস্টের পর এমন দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তারা যদি এখনো বহাল তবিয়তে থাকে তবে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান ব্যর্থ হবে। তারা অন্তবর্তীকালীন সরকারকে ব্যর্থ করতে চায়। তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
অভিযোগ বিষয়ে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও ময়মনসিংহ জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী জামাল হোসেনের সাঁড়া মেলেনি।
ডিএস../
ট্যাগ :
জনপ্রিয়

৩০ কোটি টাকার টেন্ডারের অনিয়মের অভিযোগ , ৪ বছরেও নির্বাহী প্রকৌশলী জামালের বদলি নেই

প্রকাশিত : ০৬:২৪:১০ অপরাহ্ন, রবিবার, ৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
ময়মনসিংহ জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরে নির্বাহী প্রকৌশলী জামাল হোসেনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। জানা গেছে, ২০২১ সালের ৩ জানুয়ারি সহকারী প্রকৌশলী হিসেবে মুক্তাগাছা অফিস থেকে পদোন্নতি পেয়ে জামাল হোসেন সামিউলকে হাটিয়ে নির্বাহী প্রকৌশলীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন। যদিও নিয়ম অনুযায়ী সরকারি কর্মকর্তা ৩ বছরের বেশি একই কর্মস্থলে থাকতে পারেনা। তবুও তিনি সরকারি নিয়ম ভেঙে ৪ বছর যাবৎ বহাল তবিয়তে রয়েছেন। ৫ই আগস্ট ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের পর বিভিন্ন কর্মকর্তার বদলি হলেও তিনি স্বপদে বহাল রয়েছেন। এমনকি ৫ই আগস্টের পর নির্বাহী প্রকৌশলী জামাল হোসেন শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি টাঙ্গিয়েও অফিস করেছেন, পরে সাংবাদিকদের তোপের মুখে ছবি খুলে ফেলার ঘটনাও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
অভিযোগ রয়েছে, নির্বাহী প্রকৌশলী জামাল হোসেন নামে মাত্র টেন্ডার আহ্বান করলেও মাঠ পর্যায়ে ঠিকাদারি কাজ বাগিয়ে নেন তার পছন্দের ঠিকাদারগন। তিনি মাঠ পর্যায়ের কর্মচারীদের দ্বারা ঠিকাদারি সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছেন। গত ২৩ জানুয়ারি ২০২৫ তারিখ জনস্বাস্থ্য নৌ প্রকৌশল অধিদপ্তর ময়মনসিংহ অফিস থেকে ২১ টি প্যাকেজের প্রায় ৩০ কোটি টাকা কাজের ইজিপি টেন্ডার সম্পন্ন হয়। এ টেন্ডারের আগে ও পরে দীর্ঘদিন তিনি অফিস করেননি। এ কাজেও তিনি কমিশন নিয়ে কাজ বিক্রি করে দিয়েছেন বলে একাধিক ঠিকাদার অভিযোগ করেন। তারা বলছেন, ইজিপি সিস্টেমের স্বচ্ছতা থাকলেও কৌশলে রেট বিক্রি করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন নির্বাহী প্রকৌশলী জামাল হোসেন। কৌশলটির ব্যাখা হিসেবে জানা যায়, টেন্ডারের দরপত্রে যে দর উল্লেখ থাকে সেই দরটা সঠিক থাকেনা,সে নিজস্বভাবে তৈরি করে রাখে যার ১০% নিম্ন দরে বিক্রি করে যার ফলে তার পছন্দের ঠিকাদারগন ব্যাতিত অন্যান্য ঠিকাদারগন টেন্ডারে অংশগ্রহণ করলেও তারা কাজ পায়না।
এছাড়াও মানবসম্পদ প্রকল্প, মুজিববর্ষ, আশ্রয়ন প্রকল্পে ও নলকূপ স্থাপন প্রকল্পে দুর্নীতির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন নির্বাহী প্রকৌশলী জামাল হোসেন যা দুদক তদন্ত করলেই থলের বিড়াল বেরিয়ে আসবে।
স্থানীয় সাংবাদিকরা তার এসব অনিয়ম ঔ দুর্নীতির তথ্য সংগ্রহে তার দপ্তরে তথ্য প্রাপ্তির ‘ক’ ফরমে আবেদন করলেও তিনি তথ্য দিতে বিভিন্ন তালবাহানা করেন “দেই- দিচ্ছি-দিবো” বলে সাংবাদিকদের ঘুরাতে থাকেন। এবং সাংবাদিকদের জানান তিনি কোন দুর্নীতি করেননি।
এছাড়াও আজহারুল ইসলাম মেকানিক্স ফুলপুরের মাঠ কর্মচারী হয়ে ফুলপুরের গ্রাম অঞ্চলে থাকার কথা, কিন্তু তিনি থাকেন বিলাসবহুল সরকারি ভবন ময়মনসিংহ বিভাগীয় জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সাবেক এসডিও অফিসে, সেখানে ৮ থেকে ৯টি কক্ষ রয়েছে। পরিত্যক্ত দেখিয়ে নাম কাওয়াস্তে বাসা ভাড়া না দিয়েই বছরের পর বছর সরকারকে ফাঁকি দিচ্ছেন। এর সঙ্গে নির্বাহী প্রকৌশলী জামাল হোসেন গং জড়িত। এছাড়াও অনেক ঠিকাদারগন কাজ না করেই বিল উত্তোলন করে নেয়ার অভিযোগ প্রায়ই দেখা যায়। যার সিন্ডিকেট সদস্য জেলার ক্যাশিয়ার। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর ময়মনসিংহ জেলার ক্যাশিয়ার সুকান্ত বনিক বাবু তার বদলী নেই। বদলি হয়েছিলো নরসিংদীতে নির্বাহী প্রকৌশলী তদবির করে বদলি স্থগিত করেছেন।তার সিন্ডিকেট নাকি অনেক শক্তিশালী। এছাড়াও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের ভালুুকা উপজেলার মেকানিক্স রাহুল,সদর উপজেলার মেহেদী, ফুলবাড়িয়ার মেকানিক্স সাদেক, গৌরীপুরের মেকানিক্স শামসুল হক, নান্দাইলের মেকানিক্স সানাউল্লাহ করণিক মেকানিক্স মোজাম্মেল মেকানিক্স আব্দুল কুদ্দুস লিটন হালুয়াঘাট স্ব-স্ব উপজেলায় লুটপাটে রাজত্ব কায়েম করেছেন, তারাও একই প্রক্রিয়ায় নির্বাহী প্রকৌশলীর অন্যতম সিন্ডিকেট সদস্য ও লুটপাটের সাথে জড়িত। এছাড়াও ফুলপুর উপজেলার মাঠ পর্যায়ে মেকানিক্স আজহারুল ইসলাম তিনি কোটি কোটি টাকার মালিক দীর্ঘদিন যাবৎ ঠিকাদারী করছেন নির্বাহী প্রকৌশলী জামাল হোসেনের সাথে আঁতাত করে তাদের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায়না।
স্থানীয় নাগরিকরা বলেছেন, ৫ই আগস্টের পর এমন দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তারা যদি এখনো বহাল তবিয়তে থাকে তবে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান ব্যর্থ হবে। তারা অন্তবর্তীকালীন সরকারকে ব্যর্থ করতে চায়। তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
অভিযোগ বিষয়ে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও ময়মনসিংহ জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী জামাল হোসেনের সাঁড়া মেলেনি।
ডিএস../