পৈতৃক ও মাতৃক সম্পত্তির থেকে বঞ্চিত হয়ে এক প্রবাসী সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে আইনি সহায়তা ও প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেছেন। কুমিল্লা নগরীর কান্দিরপাড়স্থ একটি হল রুমে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে মির হোসেন নামে ওই ভুক্তভোগী নিজের ওপর চলা নির্যাতন, প্রতারণা ও সম্পত্তি দখলের অভিযোগ তুলে ধরেন।
সংবাদ সম্মেলনে মির হোসেন জানান, তিনি নগরীর চক বাজার কাসারিপট্টি এলাকার বাসিন্দা ১২ বছর ধরে বিদেশে শ্রম দিয়ে উপার্জিত অর্থ প্রতি মাসে দেশে মায়ের কাছে পাঠিয়েছেন। পরিবারের দায়িত্ব পালন, ভাইদের পড়াশোনা ও খরচ নির্বাহ করেছেন। কিন্তু বিদেশে থাকাকালীন সময়ে তার আপন ভাই ও মা মিলে তাকে সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হন।
তিনি বলেন, “প্রবাসে থাকাকালীন আমার মায়ের দেওয়া দানপত্রকৃত দোকান ও বাড়ির সম্পত্তি আমার নাম থেকে প্রতারণার মাধ্যমে অন্য ভাইদের নামে দলিল করে নেয়া হয়। এমনকি আমার স্বাক্ষর জাল করে আদালতে আপোষনামা দাখিল করে মিথ্যা মামলা পরিচালনা করা হয়েছে, যার আমি কিছুই জানি না।”
মির হোসেন অভিযোগ করেন, তার ভাই কামরুল হাসান কাজল (৩৭), মোঃ সাদ্দাম হোসাইন (৩১), মোঃ এমরান হোসেন (৩০) এবং মা দেলোয়ারা বেগমসহ অজ্ঞাতনামা কুচক্রী মহল তার সম্পত্তি দখলের জন্য বিভিন্ন সময় হামলা, হুমকি, গালিগালাজ ও হত্যার চেষ্টায় লিপ্ত হয়েছেন। সম্প্রতি তিনি দেশে ফিরে নিজ প্রাপ্ত সম্পত্তি পরিদর্শনে গেলে তার ভাইয়েরা লাঠি, ছেনি, সোটা নিয়ে হামলার উদ্দেশ্যে তেড়ে আসেন এবং তাকে প্রাণনাশের হুমকি দেন।
তিনি আরও বলেন, “আমি যখন ঘর তুলতে যাই, তখন তারা আমাকে খুন-জখমের হুমকি দেয়। আমি পুলিশ প্রশাসন, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি এবং সেনাবাহিনীর শরণাপন্ন হয়েও কোনো স্থায়ী সমাধান পাইনি।”
প্রবাসী মির হোসেন জানান, তার নামে রেজিস্ট্রিকৃত বৈধ কাগজপত্র থাকা সত্ত্বেও তাকে দখলে যেতে বাধা দেওয়া হচ্ছে। তার অভিযোগ, সম্পত্তির দলিল বাতিলের নামে যে মামলাটি দায়ের করা হয়েছে, সেখানে তার স্বাক্ষর নকল করে আদালতে আপোষনামা দাখিল করা হয়েছে, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও জালিয়াতির মাধ্যমে সংঘটিত হয়েছে। আমি এখন আমার স্ত্রী, সন্তান নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতেছি।”
সংবাদ সম্মেলনে আরো অভিযোগ করেন মীর হোসেনের একমাত্র বোন সখী। তিনি বলেন, আমার ভাই কামরুল, সাদ্দাম ও দেলোয়ার আমাকে ঠকিয়েছে। আমি পড়াশুনা জানি না। আমাকে ভুল বুঝিয়ে আমার স্বাক্ষর নিয়ে আমার জায়গা নিয়ে নিয়েছে। দলিল করছে যে আমি জানিও না। আমি তাদেরকে বিশ্বাস করে স্বাক্ষর করে দিয়েছিলাম। কিন্তু তারা আমাকে ঠকিয়েছে। আমি প্রশাসনের কাছে এর বিচার চাই।
সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ভুক্তভোগী মীরু দেশের প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান, যেন যথাযথ তদন্তের মাধ্যমে প্রতারক ও দখলবাজদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় এবং তিনি তার প্রাপ্য সম্পত্তি ফিরে পান।
এই বিষয়ে কুমিল্লা কোতওয়ালী থানায় অভিযোগ ও কুমিল্লার আদালতে মামলাও দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী মীর হোসেন। তবে, থানা থেকে অভিযোগ তুলে নেওয়ারও চাপ দেওয়া হয়েছে বলে জানান ভুক্তভোগী মীর হোসেন।
তবে, এই বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযোগের তদন্ত কর্মকর্তা কুমিল্লা কোতওয়ালী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) জহিরুল ইসলাম বলেন, অভিযোগ তুলে নিতে চাপ দেওয়ার কোনো প্রশ্নই আসে না। আমরা অভিযোগটির তদন্ত করছি। তদন্ত শেষে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।
ডিএস../