দীর্ঘ ১৭ বছর আ্ওয়ামীলীগ,যুবলীগ,ছাত্রলীগের দখলে ছিল চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী আবদুল জব্বারের বলীখেলা। সে স্বৈরাচার ৫ আগষ্ট পতনের পর নেতা কর্মীরা পালিয়ে গেলেও চট্টগ্রামের এ জব্বরের বলি খেলা ও মেলা এখনো দখলে নিয়েছে অ.জ.ম নাছিরের অনুসারীরা। বিএনপি ,জামাতের কাউকে কমিটিতে স্থান না পাওয়ায় মেলা ও বলি খেলা নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। ক্ষোভে পুষে উঠছে বিএনপি, যুবদল,ছাত্রদল,জামায়াতের ইসলামির নেতা কর্মীরা।
বিএনপির নেতারা এ ব্যাপারে বলেন,যাঁরা ১৭ বছর মেলার নামে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিত তাদের দিয়ে কমিটি গঠন করে মেলা করার যে পরিকল্পনা করছে তা আমরা হতে দেবনা, এবং হতে দিতে পারিনা। যে সাংবাদিক আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা, ৩ আগষ্ট চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে ছাত্রদল,শিবির কে সন্ত্রাসী দল বলে মাইকে বক্তৃতা দিয়ে ভাইরাল হওয়া সাংবাদিক দিয়ে যে কমিটি গঠন করে যে মেলা কমিটি হয়েছে আমরা এবং ছাত্র জনতার মেনে নিতে পারিনা।
আগামী ২৫ এপ্রিল শুক্রবার অনুষ্ঠিত হবে ঐতিহ্যবাহী আবদুল জব্বারের বলীখেলা। এবার জব্বারের বলীখেলার ১১৬ তম আসর বসবে ঐতিহাসিক লালদীঘি মাঠে। বলীখেলা উপলক্ষে ২৪ এপ্রিল থেকে তিন দিনের বৈশাখী মেলা বসবে লালদীঘি মাঠ ও আশপাশের চার বর্গকিলোমিটার এলাকায় বসে থাকে।
প্রতিবছর ১২ বৈশাখ ঐতিহ্যবাহী এই বলীখেলা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। বকশিরহাটের আবদুল জব্বার সওদাগর ১৯০৯ সালে এই বলীখেলার প্রবর্তন করেছিলেন। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে তরুণ ও যুবকদের উদ্বুদ্ধ করতে কুস্তি বা বলীখেলা শুরু করেছিলেন লালদীঘি মাঠে। সেই থেকে প্রতিবছর বৈশাখ মাসের ১২ তারিখ বলীখেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। কালের বিবর্তনে এই বলীখেলা এই অঞ্চলের ঐতিহ্যের প্রতীক হিসেবে দাঁড়িয়েছে। রূপ লাভ করেছে প্রাণের মেলায়।কিন্তু স্বৈরচার দোষদের দিয়ে কমিটি দেওয়ায় চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী মেলা নিয়ে দেখা দিযেছে অনিশ্চয়তা।বিএনপি, যুবদল,ছাত্রদল,জামাতে ইসলামির নেতা কর্মীরা তাদের ফেইজ বুকে মেলা ও বলি খেলার কমিটি নিয়ে যে ভাবে লিখে যাচ্ছে ২৪ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া নিয়ে এখনো অনিশ্চত।
দেশের আলোচিত জব্বারে বলীখেলা এবং বৈশাখী মেলা সুষ্ঠুভাবে আয়োজন করতে বুধবার চট্টগ্রাম নগর পুলিশের (সিএমপি) ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক বৈঠক করেছে মেলা কমিটি। নগর পুলিশের উপকমিশনারের (দক্ষিণ) কার্যালয়ে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় পুলিশের পক্ষ থেকে জনসাধারণের নির্বিঘ্নে চলাচল এবং যানবাহন চলাচলের সুবিধার্থে আন্দরকিল্লা থেকে আদালত পর্যন্ত প্রধান সড়কে মেলার দোকান না বসানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে মেলাকে ঘিরে দোকান বিক্রি, দখল, চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে প্রশাসন কঠোর অবস্থানে থাকবে বলে জানানো হয়।
সভায় উপস্থিত ছিলেন নগর পুলিশের উপকমিশনার (দক্ষিণ) মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন, অতিরিক্ত উপকমিশনার মোহাম্মদ মাহমুদুল হাসান মামুন, সহকারী কমিশনার (কোতোয়ালি) মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান, কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ আব্দুল করিম, মেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও প্রয়াত আব্দুল জব্বার সওদাগরের নাতি শওকত আনোয়ার, বলীখেলার প্রধান রেফারি হাফিজুর রহমান, সাবেক কাউন্সিলর ইসমাইল হোসেন প্রমুখ।
কমিটি গঠন করার খবর পত্রিকার মাধ্যমে জানাজানি হলে ক্ষোভ দেখা দেয় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা এবং বিএনপি,যুবদল, ছাত্রদল, জামাত শিবিরের নেতা কর্মীদের মাঝে। তারা বলেন যারা সতের বছর এই মেলাকে লুটপাট করে খেয়েছে, আওয়ামী এবং আজম নাসিরের দোষরা কিভাবে মেলা করতে পারে আমাদের বোধগম্য নয়।
১৯০৯ সালে চট্টগ্রামের বদরপাতি এলাকার ধনাঢ্য ব্যবসায়ী আবদুল জব্বার সওদাগর এ খেলার সূচনা করেন। তার মৃত্যুর পর এটি ‘জব্বারের বলি খেলা’ নামে পরিচিতি পায়। বলি খেলাকে কেন্দ্র করে লালদীঘি ময়দানের আশেপাশে প্রায় তিন কিলোমিটারজুড়ে বৈশাখী মেলার আয়োজন করা হয়।
ডিএস./