ভারতে খ্রিষ্টানদের বড়দিন উদযাপনে আবারও বাধা দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। গত বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) আসামের নালবাড়ি জেলায় একটি স্কুলে বড়দিন উপলক্ষে করা সাজসজ্জা ভাঙচুর ও আগুন অভিযোগ উঠেছে কট্টর হিন্দুত্ববাদী সংগঠন বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (ভিএইচপি) ও বজরং দলের সদস্যদের বিরুদ্ধে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এদিন ভিএইচপি ও বজরং দলের কয়েক জন সদস্য নালবাড়ির পানিগাঁও গ্রামের সেন্ট মেরিস স্কুল প্রাঙ্গণে ঢুকে বড়দিনের সাজসজ্জা ও পোস্টার ছিঁড়ে ফেলে এবং আগুন ধরিয়ে দেয়। ইন্ডিয়া টুডে এনই প্রকাশিত একটি ভিডিওতে দেখা যায়, একদল ব্যক্তি ‘জয় শ্রী রাম’ স্লোগান দিতে দিতে বড়দিনের সাজসজ্জায় আগুন দিচ্ছে।
একই দিনে নালবাড়ির আরেকটি ঘটনায় প্রায় ১৫ থেকে ২০ জন বজরং দলের সদস্য একটি দোকানে রাখা বড়দিনের সাজসজ্জার সামগ্রী পুড়িয়ে দেয় এবং দোকানটি বন্ধ করতে বাধ্য করে বলে জানিয়েছে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম আসাম লাইভ। দোকানদারের বক্তব্য অনুযায়ী, তিনি জানতেন না যে বড়দিনের সাজসজ্জার সামগ্রী বিক্রি করা যাবে না। তার অভিযোগ, অভিযুক্তরা পণ্যগুলো নর্দমায় ফেলে আগুন ধরিয়ে দেয়।
সম্প্রতি ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে বড়দিন উপলক্ষে খ্রিষ্টানদের ওপর হামলা বা উৎসব ব্যাহত করার একাধিক অভিযোগ সামনে এসেছে। কেরালার পালাক্কাড় জেলার পুদুস্সেরি গ্রামে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ক্যারল গান গাওয়ার সময় শিশুদের একটি দলের ওপর হামলার ঘটনায় রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের এক কর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
উত্তরাখণ্ডের হরিদ্বারে গঙ্গার তীরে রাজ্য পর্যটন দপ্তর পরিচালিত একটি হোটেল বড়দিনের অনুষ্ঠান বাতিল করতে বাধ্য হযেছে। গঙ্গা সভার ডাকে হওয়া প্রতিবাদের জেরে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এদিকে দিল্লির লাজপত নগরের একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে, যেখানে সান্তা ক্লজের টুপি পরা নারী ও শিশুদের হুমকি দিতে দেখা যায়। যদিও পুলিশ জানিয়েছে, এটি সামান্য মৌখিক বিরোধ ছিল এবং তা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে রূপ নেয়নি।
এর আগে মঙ্গলবার ক্যাথলিক বিশপস কনফারেন্স অব ইন্ডিয়া দেশের বিভিন্ন রাজ্যে বড়দিনের আগে খ্রিষ্টানদের ওপর হামলার ‘উদ্বেগজনক বৃদ্ধি’ নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে। সংগঠনটি জানায়, এই ধরনের ঘটনা সংবিধানে প্রদত্ত ধর্মীয় স্বাধীনতা ও নির্ভয়ে উপাসনার অধিকারের পরিপন্থি।
বিশেষ করে, মধ্য প্রদেশের জবলপুরে একটি গির্জায় বড়দিনের অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী এক নারীকে বিজেপির স্থানীয় নেত্রী অঞ্জু ভার্গভা শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় তারা ‘মর্মাহত’ বলে জানিয়েছে। অভিযোগ অনুযায়ী, ওই নেত্রী নারীর বিরুদ্ধে ধর্মান্তরের অভিযোগ তোলেন, আর সেই সময় ঘটনাস্থলে একজন পুলিশ সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
সূত্র: আসাম ট্রিবিউন, স্ক্রল
ডিএস./





















