০২:৪৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪

বগুড়ায় রপ্তানি আয় ৪৩১ কোটি টাকা

বগুড়ায় উৎপাদিত বেশকিছু পণ্য রপ্তানি হচ্ছে বিশ্বের অনেক দেশে। পণ্য উৎপাদন করে বিদেশে রপ্তানি করে দেশের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে বগুড়া।

বগুড়া চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি থেকে সার্টিফিকেট অব অরিজিন নিয়ে প্রতিষ্ঠানগুলোর উৎপাদিত পণ্য বিশ্বের বাজারে রপ্তানি করা হচ্ছে। বগুড়ার পণ্যের গুণগত মান এবং ব্যবসায়ীদের আন্তরিকতার কারণে প্রতি বছর চাহিদা বাড়ছে। চাহিদা অনুযায়ী রপ্তানি করায় প্রতি বছর বাড়ছে রপ্তানি আয়ও। বগুড়ার পণ্য প্রস্তুতকারক এবং রপ্তানিকারকদের কাছ থেকে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

জানা গেছে, বগুড়ায় উৎপাদিত রাইস ব্রান অয়েল, পাটজাত পণ্য, পানির পাম্প, যন্ত্রাংশ ও কৃষি যন্ত্রাংশ, কৃত্রিম চুল (পরচুলা), আলু, ভুট্টা, সবজীর বীজ নিয়মিত যাচ্ছে ভারত, নেপাল, রাশিয়া, মালয়েশিয়া এবং আমেরিকার বাজারে। এই পণ্যগুলো বগুড়ার চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি থেকে সার্টিফিকেট অব অরিজিন নিয়ে রপ্তানি করা হচ্ছে। ২০১৭ সালে বিদেশে পণ্য রপ্তানি করে আয় ছিল ১ কোটি ২৫ লাখ মার্কিন ডলার। ২০১৮ সালে রপ্তানি আয় ছিল ৩ কোটি ৩০ লাখ ৪ হাজার ২৬০ মার্কিন ডলার। ২০১৯ সালে পণ্য রপ্তানির চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় রপ্তানি আয় হয়েছিল ৭ কোটি ২৩ লাখ ৩০ হাজার ৬৩২ মার্কিন ডলার। তবে ২০২০ সালে পণ্য বিক্রি কমে যায়। গত বছর বগুড়ার পণ্য বিদেশে রপ্তানি করে আয় হয়েছে ৫ কোটি ২৬ লাখ ২১ হাজার ৯৪ মার্কিন ডলার (প্রায় ৪৩১ কোটি টাকা)।

বগুড়ার উৎপাদিত পণ্যগুলোর মধ্যে যে পণ্যটি রপ্তানি করে বেশি আয় হয় সেটি রাইস ব্র্যান অয়েল। ধানের কুড়া থেকে উৎপাদিত এই পণ্যটির বড় বাজার ভারত। গত বছর ধানের কুড়া থেকে তৈরি এই তেল বিক্রি করে আয় করা হয়েছে ৩ কোটি ৯৫ লাখ ৫১ হাজার ৩৪৮ মার্কিন ডলার। তবে ২০১৯ সালে ৫ কোটি ৬৫ লাখ ৫৬ হাজার ৬০৬ মার্কিন ডলারের রাইস ব্র্যান অয়েল বিক্রি করেছিল বগুড়ার শিল্পোদ্যোক্তারা।

বগুড়ায় রাইস ব্র্যান অয়েল প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে উৎপাদন এবং রপ্তানিতে শীর্ষে রয়েছে মজুমদার প্রোডাক্টস লিমিটেড। এই প্রতিষ্ঠানের পণ্যের নাম স্বর্ণা রাইস ব্র্যান অয়েল। এরপরে অবস্থান করছে তামিম এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। এছাড়া ওয়েস্টার্ন এগ্রো প্রোডাক্ট লিমিটেড, কিবরিয়া ট্রেডার্স লিমিটেড, আর এন্টারপ্রাইজ, আলাল এগ্রো ফুড প্রোডাক্টস লিমিটেড রাইস ব্রান অয়েল প্রস্তুত এবং রপ্তানির সঙ্গে যুক্ত। তবে কিবরিয়া ট্রেডার্স রাইস ব্র্যান অয়েল ছাড়াও ২০১৯ সালে ২ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলারের ভুট্টা রপ্তানি করেছে নেপালে। এছাড়া তামিম এ্যাগ্রো প্রায় দুই লাখ ডলারের ভুট্টা রপ্তানি করেছে নেপালে।

ব্যবসায়ীরা জানান, রাইস ব্র্যান অয়েল উৎপাদনে বড় সমস্যা ধানের কুড়ার অপ্রতুলতা। মূলত ধানের তুষ ছাড়ানোর পর চালের গায়ে বাদামি যে অংশ থাকে, সেখান থেকে এই তেল নিষ্কাশন করা হয়। যে কারণে এই কুড়া সংগ্রহ কঠিন হয়ে পড়ে। এজন্য যে পরিমাণ চাহিদা রয়েছে, সেই পরিমাণ কুড়া সব সময় পাওয়া যায় না। ভোজ্যতেলের তুলনায় ধানের কুড়ার তেলে মানবদেহের জন্য ক্ষতিকারক মাত্রা কম থাকে। যে কারণে এর চাহিদা বাইরের দেশগুলোতে বেড়ে চলছে।

রাইস ব্র্যান অয়েলের পরেই বগুড়া থেকে দেশের বাইরে রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে পাটজাত পণ্য। বগুড়ার এই পণ্যের প্রধান খরিদ্দার ভারত। বগুড়া থেকে ২০১৯ সালে ১ কোটি ৪৭ লাখ ৭৯ হাজার ৭৩২ মার্কিন ডলারের পাটের সুতা এবং সুতলী, পাটের বস্তা ও ব্যাগ ক্রয় করেছে ভারত। তবে করোনার কারণে ২০২০ সালে ব্যবসা কিছুটা কম হয়েছে। গত বছর ভারত বগুড়া থেকে ১ কোটি ২৩ লাখ ৬ হাজার ৪৯ মার্কিন ডলারের পাটজাত পণ্য নেয়। বগুড়া থেকে পাটজাত এসব পণ্যের উৎপাদন এবং রপ্তানি করছে হাসান জুট মিলস, বগুড়া জুট মিলস এবং নর্থবেঙ্গল গোল্ডেন ফাইবার অ্যান্ড ডাইভার্সিটি জুট মিলস। তবে রপ্তানির শীর্ষে রয়েছে হাসান জুট মিলস। ২০২০ সালে এসে ‘মা ট্রেডার্স’ নামের পাটজাত পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান জুট ক্যাডিস উৎপাদন করে রাশিয়ায় রপ্তানি করছে। এক বছরে এই প্রতিষ্ঠানটি রাশিয়ার কাছে ৫৯ হাজার ৬২৫ মার্কিন ডলারের জুট ক্যাডিস বিক্রি করেছে।

এদিকে, বগুড়ায় উৎপাদিত পণ্য রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জনে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে সেচ পাম্প এবং কৃষি যন্ত্রাংশ। বগুড়ার মিল্টন ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস, মাইশা এন্টারপ্রাইজ, রনি ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস, আজাদ ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস এই পণ্যগুলো উৎপাদন এবং রপ্তানি করছে ইন্ডিয়ায়। ২০২০ সালে ইন্ডিয়া বগুড়ার এসব প্রতিষ্ঠান থেকে ১ লাখ ৫৯ হাজার ৩১০ মার্কিন ডলারের পণ্য ক্রয় করেছে। তবে ২০১৯ সালে এরপর পরিমাণ ছিল আরও বেশি। সে বছর ১ লাখ ৭৯ হাজার ৫৮০ মার্কিন ডলারের পণ্য কিনেছিল ভারত।

এছাড়া বগুড়ার শোভা অ্যাডভান্সড টেকনোলজি লিমিটেডের উৎপাদিত ডিজিটাল স্কেল বাংলাদেশ ডিজিটাল সায়েন্স হাউস নিয়ে থাকে। যেটি পুরো বাংলাদেশেই সরবরাহ হয়। ২০১৯ সালে এই পণ্যটি পুরো বাংলাদেশে ৮ লাখ ১১৪ মার্কিন ডলার বিক্রি হয়েছে।

 

মজুমদার প্রোডাক্টসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) চিত্ত মজুমদার বলেন, ২০১২ সালে বগুড়ার শেরপুর উপজেলার ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কের ছনকা বাজার সংলগ্ন এলাকায় রাইস ব্র্যান অয়েল মিল চালু করি। বর্তমানে দুই মিল চালালে একদিনে ১৭০ টন তেল উৎপন্ন হয়। ভারতে ২০১৪ সাল থেকে রাইস ব্র্যান রিফাইন অয়েল এবং রাইস ব্র্যান ক্রুড রপ্তানি করা করা হচ্ছে। লোকাল মার্কেটে এই তেলের চাহিদা নেই। ঢাকায় মোটামুটি চলে। তিনি বলেন, পরিবহনে সুবিধা হওয়ায় আপাতত ভারতেই এই তেল রপ্তানি হচ্ছে।
এদিকে, পাটের দাম বৃদ্ধির কারণ সম্পর্কে শফিকুল ইসলাম নামের এক পাট ব্যবসায়ী বলেন, মূলত বন্যার কারণে এবার পাটের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। যে কারণে উৎপাদন কম। মৌসুম শেষে পাট নেই তাই দামও বেশি।

বগুড়া চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাসুদুর রহমান বলেন, চেম্বারের সার্টিফিকেট অব অরিজিন নিয়ে ২০১৭ সালে বিদেশে রপ্তানি হয়েছিল ১ কোটি ২৫ লাখ মার্কিন ডলারের পণ্য। পরের বছর সোয়া তিন কোটি মার্কিন ডলারের পণ্য রপ্তানি হলেও ২০১৯ সালে রপ্তানির পরিমাণ বেড়ে যায়। সে বছর বগুড়ার পণ্য রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা আসে ৭ কোটি ২৩ লাখ ৩০ হাজার ৬৩২ মার্কিন ডলার। পরবর্তী বছর করোনার কারণে ব্যবসা ঠিকমত হয়নি। যে কারণে রপ্তানি মূল্য সোয়া ৭ কোটি থেকে নেমে সোয়া ৫ কোটিতে নেমে আসে। এখনও করোনার প্রভাব আছেই। যে কারণে কি পরিমাণ পণ্য রপ্তানি হবে বলা যাচ্ছে না।

ট্যাগ :

বগুড়ায় রপ্তানি আয় ৪৩১ কোটি টাকা

প্রকাশিত : ১২:০১:২৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২১

বগুড়ায় উৎপাদিত বেশকিছু পণ্য রপ্তানি হচ্ছে বিশ্বের অনেক দেশে। পণ্য উৎপাদন করে বিদেশে রপ্তানি করে দেশের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে বগুড়া।

বগুড়া চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি থেকে সার্টিফিকেট অব অরিজিন নিয়ে প্রতিষ্ঠানগুলোর উৎপাদিত পণ্য বিশ্বের বাজারে রপ্তানি করা হচ্ছে। বগুড়ার পণ্যের গুণগত মান এবং ব্যবসায়ীদের আন্তরিকতার কারণে প্রতি বছর চাহিদা বাড়ছে। চাহিদা অনুযায়ী রপ্তানি করায় প্রতি বছর বাড়ছে রপ্তানি আয়ও। বগুড়ার পণ্য প্রস্তুতকারক এবং রপ্তানিকারকদের কাছ থেকে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

জানা গেছে, বগুড়ায় উৎপাদিত রাইস ব্রান অয়েল, পাটজাত পণ্য, পানির পাম্প, যন্ত্রাংশ ও কৃষি যন্ত্রাংশ, কৃত্রিম চুল (পরচুলা), আলু, ভুট্টা, সবজীর বীজ নিয়মিত যাচ্ছে ভারত, নেপাল, রাশিয়া, মালয়েশিয়া এবং আমেরিকার বাজারে। এই পণ্যগুলো বগুড়ার চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি থেকে সার্টিফিকেট অব অরিজিন নিয়ে রপ্তানি করা হচ্ছে। ২০১৭ সালে বিদেশে পণ্য রপ্তানি করে আয় ছিল ১ কোটি ২৫ লাখ মার্কিন ডলার। ২০১৮ সালে রপ্তানি আয় ছিল ৩ কোটি ৩০ লাখ ৪ হাজার ২৬০ মার্কিন ডলার। ২০১৯ সালে পণ্য রপ্তানির চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় রপ্তানি আয় হয়েছিল ৭ কোটি ২৩ লাখ ৩০ হাজার ৬৩২ মার্কিন ডলার। তবে ২০২০ সালে পণ্য বিক্রি কমে যায়। গত বছর বগুড়ার পণ্য বিদেশে রপ্তানি করে আয় হয়েছে ৫ কোটি ২৬ লাখ ২১ হাজার ৯৪ মার্কিন ডলার (প্রায় ৪৩১ কোটি টাকা)।

বগুড়ার উৎপাদিত পণ্যগুলোর মধ্যে যে পণ্যটি রপ্তানি করে বেশি আয় হয় সেটি রাইস ব্র্যান অয়েল। ধানের কুড়া থেকে উৎপাদিত এই পণ্যটির বড় বাজার ভারত। গত বছর ধানের কুড়া থেকে তৈরি এই তেল বিক্রি করে আয় করা হয়েছে ৩ কোটি ৯৫ লাখ ৫১ হাজার ৩৪৮ মার্কিন ডলার। তবে ২০১৯ সালে ৫ কোটি ৬৫ লাখ ৫৬ হাজার ৬০৬ মার্কিন ডলারের রাইস ব্র্যান অয়েল বিক্রি করেছিল বগুড়ার শিল্পোদ্যোক্তারা।

বগুড়ায় রাইস ব্র্যান অয়েল প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে উৎপাদন এবং রপ্তানিতে শীর্ষে রয়েছে মজুমদার প্রোডাক্টস লিমিটেড। এই প্রতিষ্ঠানের পণ্যের নাম স্বর্ণা রাইস ব্র্যান অয়েল। এরপরে অবস্থান করছে তামিম এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। এছাড়া ওয়েস্টার্ন এগ্রো প্রোডাক্ট লিমিটেড, কিবরিয়া ট্রেডার্স লিমিটেড, আর এন্টারপ্রাইজ, আলাল এগ্রো ফুড প্রোডাক্টস লিমিটেড রাইস ব্রান অয়েল প্রস্তুত এবং রপ্তানির সঙ্গে যুক্ত। তবে কিবরিয়া ট্রেডার্স রাইস ব্র্যান অয়েল ছাড়াও ২০১৯ সালে ২ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলারের ভুট্টা রপ্তানি করেছে নেপালে। এছাড়া তামিম এ্যাগ্রো প্রায় দুই লাখ ডলারের ভুট্টা রপ্তানি করেছে নেপালে।

ব্যবসায়ীরা জানান, রাইস ব্র্যান অয়েল উৎপাদনে বড় সমস্যা ধানের কুড়ার অপ্রতুলতা। মূলত ধানের তুষ ছাড়ানোর পর চালের গায়ে বাদামি যে অংশ থাকে, সেখান থেকে এই তেল নিষ্কাশন করা হয়। যে কারণে এই কুড়া সংগ্রহ কঠিন হয়ে পড়ে। এজন্য যে পরিমাণ চাহিদা রয়েছে, সেই পরিমাণ কুড়া সব সময় পাওয়া যায় না। ভোজ্যতেলের তুলনায় ধানের কুড়ার তেলে মানবদেহের জন্য ক্ষতিকারক মাত্রা কম থাকে। যে কারণে এর চাহিদা বাইরের দেশগুলোতে বেড়ে চলছে।

রাইস ব্র্যান অয়েলের পরেই বগুড়া থেকে দেশের বাইরে রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে পাটজাত পণ্য। বগুড়ার এই পণ্যের প্রধান খরিদ্দার ভারত। বগুড়া থেকে ২০১৯ সালে ১ কোটি ৪৭ লাখ ৭৯ হাজার ৭৩২ মার্কিন ডলারের পাটের সুতা এবং সুতলী, পাটের বস্তা ও ব্যাগ ক্রয় করেছে ভারত। তবে করোনার কারণে ২০২০ সালে ব্যবসা কিছুটা কম হয়েছে। গত বছর ভারত বগুড়া থেকে ১ কোটি ২৩ লাখ ৬ হাজার ৪৯ মার্কিন ডলারের পাটজাত পণ্য নেয়। বগুড়া থেকে পাটজাত এসব পণ্যের উৎপাদন এবং রপ্তানি করছে হাসান জুট মিলস, বগুড়া জুট মিলস এবং নর্থবেঙ্গল গোল্ডেন ফাইবার অ্যান্ড ডাইভার্সিটি জুট মিলস। তবে রপ্তানির শীর্ষে রয়েছে হাসান জুট মিলস। ২০২০ সালে এসে ‘মা ট্রেডার্স’ নামের পাটজাত পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান জুট ক্যাডিস উৎপাদন করে রাশিয়ায় রপ্তানি করছে। এক বছরে এই প্রতিষ্ঠানটি রাশিয়ার কাছে ৫৯ হাজার ৬২৫ মার্কিন ডলারের জুট ক্যাডিস বিক্রি করেছে।

এদিকে, বগুড়ায় উৎপাদিত পণ্য রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জনে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে সেচ পাম্প এবং কৃষি যন্ত্রাংশ। বগুড়ার মিল্টন ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস, মাইশা এন্টারপ্রাইজ, রনি ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস, আজাদ ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস এই পণ্যগুলো উৎপাদন এবং রপ্তানি করছে ইন্ডিয়ায়। ২০২০ সালে ইন্ডিয়া বগুড়ার এসব প্রতিষ্ঠান থেকে ১ লাখ ৫৯ হাজার ৩১০ মার্কিন ডলারের পণ্য ক্রয় করেছে। তবে ২০১৯ সালে এরপর পরিমাণ ছিল আরও বেশি। সে বছর ১ লাখ ৭৯ হাজার ৫৮০ মার্কিন ডলারের পণ্য কিনেছিল ভারত।

এছাড়া বগুড়ার শোভা অ্যাডভান্সড টেকনোলজি লিমিটেডের উৎপাদিত ডিজিটাল স্কেল বাংলাদেশ ডিজিটাল সায়েন্স হাউস নিয়ে থাকে। যেটি পুরো বাংলাদেশেই সরবরাহ হয়। ২০১৯ সালে এই পণ্যটি পুরো বাংলাদেশে ৮ লাখ ১১৪ মার্কিন ডলার বিক্রি হয়েছে।

 

মজুমদার প্রোডাক্টসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) চিত্ত মজুমদার বলেন, ২০১২ সালে বগুড়ার শেরপুর উপজেলার ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কের ছনকা বাজার সংলগ্ন এলাকায় রাইস ব্র্যান অয়েল মিল চালু করি। বর্তমানে দুই মিল চালালে একদিনে ১৭০ টন তেল উৎপন্ন হয়। ভারতে ২০১৪ সাল থেকে রাইস ব্র্যান রিফাইন অয়েল এবং রাইস ব্র্যান ক্রুড রপ্তানি করা করা হচ্ছে। লোকাল মার্কেটে এই তেলের চাহিদা নেই। ঢাকায় মোটামুটি চলে। তিনি বলেন, পরিবহনে সুবিধা হওয়ায় আপাতত ভারতেই এই তেল রপ্তানি হচ্ছে।
এদিকে, পাটের দাম বৃদ্ধির কারণ সম্পর্কে শফিকুল ইসলাম নামের এক পাট ব্যবসায়ী বলেন, মূলত বন্যার কারণে এবার পাটের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। যে কারণে উৎপাদন কম। মৌসুম শেষে পাট নেই তাই দামও বেশি।

বগুড়া চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাসুদুর রহমান বলেন, চেম্বারের সার্টিফিকেট অব অরিজিন নিয়ে ২০১৭ সালে বিদেশে রপ্তানি হয়েছিল ১ কোটি ২৫ লাখ মার্কিন ডলারের পণ্য। পরের বছর সোয়া তিন কোটি মার্কিন ডলারের পণ্য রপ্তানি হলেও ২০১৯ সালে রপ্তানির পরিমাণ বেড়ে যায়। সে বছর বগুড়ার পণ্য রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা আসে ৭ কোটি ২৩ লাখ ৩০ হাজার ৬৩২ মার্কিন ডলার। পরবর্তী বছর করোনার কারণে ব্যবসা ঠিকমত হয়নি। যে কারণে রপ্তানি মূল্য সোয়া ৭ কোটি থেকে নেমে সোয়া ৫ কোটিতে নেমে আসে। এখনও করোনার প্রভাব আছেই। যে কারণে কি পরিমাণ পণ্য রপ্তানি হবে বলা যাচ্ছে না।