০৩:৩৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪

কবিরাজের ছদ্মবেশে ১৭ বছর পলাতক অবশেষে র‍্যাব-৩ এর হাতে কট

২০০৫ সালের অক্টোবর মাসে বাগেরহাট জেলার সদর এলাকায় মনু বেগম এক নারীর বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করা হয়। উক্ত হত্যাকান্ডের ঘটনায় হেমায়েতসহ ০৫ জনকে আসামি করে ভুক্ত ভোগীর বোন বাদী হয়ে বাগেরহাট থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। যার মামলা নম্বর-০৯ গত ০৯ অক্টোবর ২০০৫। বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধারের ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের তৈরি হয় কিন্তু মামলার অন্যতম আসামি হেমায়েত জাহিদ কবিরাজ পলাতক থাকে। মামলাটির তদন্ত শেষে সাক্ষ্য প্রমানের ভিত্তিতে ২০০৯ সালের জুন মাসে বিজ্ঞ আদালত আসামি হেমায়েত কে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ডের আদেশ প্রদান করেন। দীর্ঘদিন যাবৎ পলাতক এরূপ আসামিদের আইনের আওতায় নিয়ে আসতে র‍্যাব-৩ নিয়মিত গোয়েন্দা নজরদারী পরিচালনা করে থাকে।

এরই ধারাবাহিকতায় র‍্যাব-৩ এর অভিযানে গত ২৬ অক্টোবর রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে মোঃ হেমায়েত খান জাহিদ কবিরাজ (৫২)পিরোজপুর’কে গ্রেফতার করে। উদ্ধার করা হয় কবিরাজি চিকিৎসায় ব্যবহৃত বিভিন্ন ধরনের আংটি- ১২৯টি, বক্স-০১টি, শঙ্খ-০৩টি, আলাদিনের চেরাগ-০১টি, ক্রেস্ট-০২টি, কবিরাজি সংক্রান্ত বই-১৫টি, পিতলের পাঞ্জা-০১টি ও কবিরাজি সংক্রান্ত অন্যান্য সরঞ্জামাদি। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত মনু হত্যার বিষয়টি স্বীকার করেছে।

গ্রেফতারকৃত ভন্ড হেমায়েত জানায়,সে ১৫-১৬ বছর বয়স থেকে কবিরাজি পেশা শুরু করে। কবিরাজির পেশার মাধ্যমে সে নানাভাবে মানুষকে প্রতারিত করে অর্থ উপার্জন করত। তার বাবা কবিরাজি পেশায় থাকায় সে তার বাবার কাছ থেকে কবিরাজির বিভিন্ন পদ্ধতি ও কৌশল শিখে নেয়। মূলত নারীরাই ছিল তার প্রতারণার মূল টার্গেট। ২০০৩ সালে সে তার স্ত্রী সন্তানসহ পিরোজপুর থেকে বাগেরহাটে এসে কবিরাজি ব্যবসা শুরু করে।

কবিরাজি পেশায় তার অন্যতম সহযোগী ছিল উক্ত হত্যা মামলার অপর মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামি সোবহান। হেমায়েত ভিকটিম মনুকে কিছু ভেষজ উপাদানের মাধ্যম নিয়মিত ঘুমের চিকিৎসা দেওয়া শুরু করে। একপর্যায়ে মনুকে তার যাবতীয় সম্পত্তির দলিলপত্র এবং টাকা পয়সা শত্রু পক্ষের জ্বীনের আক্রমনে পড়তে পারে বলে ভয় ভীতি দেখিয়ে তার যাবতীয় সহায় সম্পত্তির দলিলপত্র নিরাপত্তার জন্য হেমায়েত পীরের নিকট জমা রাখার জন্য মনুকে উদ্বুদ্ধ করে।

সে মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের তাবিজ, স্বামী-স্ত্রীর কলহ দূরীকরণ তাবিজ, বশীকরণ তাবিজ ইত্যাদির মাধ্যমে সাধারন মানুষের নিকট থেকে বড় অংকের টাকা নিয়ে প্রতারণা করত।মূলত সে নারীদের টার্গেট করে জ্বীনের বাদশার মাধ্যমে নারীদের বিভিন্ন শারীরিক, মানসিক, আর্থিক ও পারিবারিক সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে দীর্ঘদিন যাবৎ সে কবিরাজি ব্যবসা চালিয়ে আসছে।তার পরিচয় গোপন রাখার জন্য সে মাঝে মাঝেই তার চুল দাড়ি রং পরিবর্তন, পোশাকের ধরন পরিবর্তন করেছে। গ্রেফতারকৃত আসামীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

বিজনেস বাংলাদেশ/ হাবিব

ট্যাগ :
জনপ্রিয়

একজন ব্যবসায়ী বান্ধব নেতা ওয়াহিদুল হাসান দিপু

কবিরাজের ছদ্মবেশে ১৭ বছর পলাতক অবশেষে র‍্যাব-৩ এর হাতে কট

প্রকাশিত : ০৩:৫১:২৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ অক্টোবর ২০২২

২০০৫ সালের অক্টোবর মাসে বাগেরহাট জেলার সদর এলাকায় মনু বেগম এক নারীর বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করা হয়। উক্ত হত্যাকান্ডের ঘটনায় হেমায়েতসহ ০৫ জনকে আসামি করে ভুক্ত ভোগীর বোন বাদী হয়ে বাগেরহাট থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। যার মামলা নম্বর-০৯ গত ০৯ অক্টোবর ২০০৫। বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধারের ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের তৈরি হয় কিন্তু মামলার অন্যতম আসামি হেমায়েত জাহিদ কবিরাজ পলাতক থাকে। মামলাটির তদন্ত শেষে সাক্ষ্য প্রমানের ভিত্তিতে ২০০৯ সালের জুন মাসে বিজ্ঞ আদালত আসামি হেমায়েত কে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ডের আদেশ প্রদান করেন। দীর্ঘদিন যাবৎ পলাতক এরূপ আসামিদের আইনের আওতায় নিয়ে আসতে র‍্যাব-৩ নিয়মিত গোয়েন্দা নজরদারী পরিচালনা করে থাকে।

এরই ধারাবাহিকতায় র‍্যাব-৩ এর অভিযানে গত ২৬ অক্টোবর রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে মোঃ হেমায়েত খান জাহিদ কবিরাজ (৫২)পিরোজপুর’কে গ্রেফতার করে। উদ্ধার করা হয় কবিরাজি চিকিৎসায় ব্যবহৃত বিভিন্ন ধরনের আংটি- ১২৯টি, বক্স-০১টি, শঙ্খ-০৩টি, আলাদিনের চেরাগ-০১টি, ক্রেস্ট-০২টি, কবিরাজি সংক্রান্ত বই-১৫টি, পিতলের পাঞ্জা-০১টি ও কবিরাজি সংক্রান্ত অন্যান্য সরঞ্জামাদি। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত মনু হত্যার বিষয়টি স্বীকার করেছে।

গ্রেফতারকৃত ভন্ড হেমায়েত জানায়,সে ১৫-১৬ বছর বয়স থেকে কবিরাজি পেশা শুরু করে। কবিরাজির পেশার মাধ্যমে সে নানাভাবে মানুষকে প্রতারিত করে অর্থ উপার্জন করত। তার বাবা কবিরাজি পেশায় থাকায় সে তার বাবার কাছ থেকে কবিরাজির বিভিন্ন পদ্ধতি ও কৌশল শিখে নেয়। মূলত নারীরাই ছিল তার প্রতারণার মূল টার্গেট। ২০০৩ সালে সে তার স্ত্রী সন্তানসহ পিরোজপুর থেকে বাগেরহাটে এসে কবিরাজি ব্যবসা শুরু করে।

কবিরাজি পেশায় তার অন্যতম সহযোগী ছিল উক্ত হত্যা মামলার অপর মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামি সোবহান। হেমায়েত ভিকটিম মনুকে কিছু ভেষজ উপাদানের মাধ্যম নিয়মিত ঘুমের চিকিৎসা দেওয়া শুরু করে। একপর্যায়ে মনুকে তার যাবতীয় সম্পত্তির দলিলপত্র এবং টাকা পয়সা শত্রু পক্ষের জ্বীনের আক্রমনে পড়তে পারে বলে ভয় ভীতি দেখিয়ে তার যাবতীয় সহায় সম্পত্তির দলিলপত্র নিরাপত্তার জন্য হেমায়েত পীরের নিকট জমা রাখার জন্য মনুকে উদ্বুদ্ধ করে।

সে মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের তাবিজ, স্বামী-স্ত্রীর কলহ দূরীকরণ তাবিজ, বশীকরণ তাবিজ ইত্যাদির মাধ্যমে সাধারন মানুষের নিকট থেকে বড় অংকের টাকা নিয়ে প্রতারণা করত।মূলত সে নারীদের টার্গেট করে জ্বীনের বাদশার মাধ্যমে নারীদের বিভিন্ন শারীরিক, মানসিক, আর্থিক ও পারিবারিক সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে দীর্ঘদিন যাবৎ সে কবিরাজি ব্যবসা চালিয়ে আসছে।তার পরিচয় গোপন রাখার জন্য সে মাঝে মাঝেই তার চুল দাড়ি রং পরিবর্তন, পোশাকের ধরন পরিবর্তন করেছে। গ্রেফতারকৃত আসামীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

বিজনেস বাংলাদেশ/ হাবিব