১০:২৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১০ মে ২০২৫

দেশের ১৮ কোটি মানুষ আ. লীগকে আর দেখতে চায় না: মির্জা ফখরুল

দেশের ১৮ কোটি মানুষ আওয়ামী লীগকে আর দেখতে চায় না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, আমরা যারা এই মাঠে আছি শুধু নয়, সারা বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষ চায় না এই আওয়ামী লীগকে। কারণ তারা গণতন্ত্র ধ্বংস করেছে, বাকশাল কায়েম করেছে।
শনিবার (১০ মে) বিকালে  চট্টগ্রাম মহানগরের ঐতিহাসিক পলোগ্রাউন্ড মাঠে ‘তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠা’ শীর্ষক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। সমাবেশের আয়োজন করে বিএনপির তিন অঙ্গসংগঠন—যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল।
মির্জা ফখরুল বলেন, এখানে যখন আপনাদের একটি সভা হচ্ছে, ঠিক একই সময়ে ঢাকা এবং চট্টগ্রামের নিউমার্কেট এলাকায় অন্য একটি সভা চলছে। তাদের একটাই দাবি—আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে। আমরা যারা এই মাঠে আছি শুধু নয়, সারা বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষ চায় না এই আওয়ামী লীগকে। কারণ, তারা গণতন্ত্র ধ্বংস করেছে, বাকশাল কায়েম করেছে। এই আওয়ামী লীগ স্বাধীনতার পর থেকেই দেশের মানুষের ওপর দমন-পীড়ন চালিয়েছে, একদলীয় শাসন বাকশাল কায়েম করেছে, গণতন্ত্র ধ্বংস করেছে
শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্যে করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, হাসিনা পালিয়েছে, কিন্তু তার প্রেতাত্মারা এখনো আছে। তারা এখনো ষড়যন্ত্র করছে—বাংলাদেশে আবারও তাদের রাজত্ব প্রতিষ্ঠা করার জন্য। কিন্তু তরুণদের সামনে তারা টিকতে পারবে না।
অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ্যে করে মির্জা ফখরুল বলেন, দুর্ভাগ্য আমাদের, আমাদের দেশকে একটি গণতান্ত্রিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে যাদেরকে দায়িত্বে দিয়েছি, তারা এখনো সঠিকভাবে সেই কাজটা করতে পারছেন না। ফলে মাঝে মাঝে বিভিন্ন রকমের সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। সে সমস্যা গুলো তাদেরকে আরো শক্তিশালী করার সুযোগ সৃষ্টি করে দিচ্ছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, প্রথম সংস্কার করেছেন জিয়াউর রহমান, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, অর্থনীতির আজকে যে ভিত্তি গার্মেন্টস সেক্টর সেটাও জিয়াউর রহমানের অবদান। কেয়ারটেকার ব্যবস্থা এনেছেন খালেদা জিয়া। আজকে সবাই সবকিছু ভুলে যায়, বিদেশ থেকে এসে বড় বড় কথা বললে, মানুষ ভুলে যাবে তাই না।
তিনি বলেন, আমাদের তরুণরা ব্যবসা চায়, চাকরি চায়। তরুণ সমাজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শান্তি চায়। একটা গণতান্ত্রিক দেশ চায়, যে যার কথা বলবে। আমরা সে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে চাই। আজকে তারুণ্যের সমাবেশের একটা উদ্দেশ্য, তরুণরা আবার জেগে উঠো সমস্তকে চক্রান্ত ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করে নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, জিয়াউর রহমান যুদ্ধ করেছেন গণতান্ত্রিক দেশের জন্য, খালেদা জিয়া গণতন্ত্রের জন্য কাজ করেছেন। তারেক রহমান আধুনিক বাংলাদেশ করতে চান। দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব বিক্রি করে কিছু চাই না। এ জন্য তারেক রহমান বলেছেন সবার আগে বাংলাদেশ। তিনি বলেছেন ফয়সালা হবে রাজপথে, সেটাই হয়েছে।
তিনি বলেন, সুন্দর সমৃদ্ধ বাংলাদেশ হবে। যেখানে মানুষ মানুষকে ভালোবাসবে, মাথা উচু থাকবে দেশের।  বাংলাদেশের পতাকাটা উড়বে পতপত করে। ওয়াসিমের রক্তের বিনিময়ে আমাদের নতুন স্বাধীনতা। তাকে পাঠ্য পুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করা হবে— এটা আশা করি।
এর আগে সমাবেশস্থল ঘুরে দেখা গেছে, ছাত্র-শ্রমিকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার সমর্থক ভিড় করছেন। কেউ হেঁটে, কেউ বাসে আর কেউ ট্রাকে করে আসছেন। কেউ আবার ঢাক-ঢোলের তালে তালে। তাদের অনেকে সরাসরি পলোগ্রাউন্ডের দিকে চলে গেলেও কিছু টাইগারপাস মোড়ে জড়ো হচ্ছেন। বড় আকারের মিছিল নিয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যে তারা টাইগারপাসে এক হচ্ছেন বলে জানান নেতাকর্মীরা।
অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেছেন স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান ও ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন নাসির। বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তব্য দেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাৎ হোসেন।
সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিল বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মীর হেলাল, যুবদল সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্না, সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন, স্বেচ্ছাসেবক দল সভাপতি এস এম জিলানী, ছাত্রদল সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মো. এরশাদুল্লাহ, সদস্য সচিব নাজিমুর রহমান নাজিম প্রমুখ।
ট্যাগ :
জনপ্রিয়

দেবিদ্বার সেনা সদস্যের বাড়িতে দুর্বৃত্তদের হামলা, ভাংচুর ও লুটপাট

দেশের ১৮ কোটি মানুষ আ. লীগকে আর দেখতে চায় না: মির্জা ফখরুল

প্রকাশিত : ০৮:৫৮:২০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১০ মে ২০২৫
দেশের ১৮ কোটি মানুষ আওয়ামী লীগকে আর দেখতে চায় না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, আমরা যারা এই মাঠে আছি শুধু নয়, সারা বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষ চায় না এই আওয়ামী লীগকে। কারণ তারা গণতন্ত্র ধ্বংস করেছে, বাকশাল কায়েম করেছে।
শনিবার (১০ মে) বিকালে  চট্টগ্রাম মহানগরের ঐতিহাসিক পলোগ্রাউন্ড মাঠে ‘তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠা’ শীর্ষক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। সমাবেশের আয়োজন করে বিএনপির তিন অঙ্গসংগঠন—যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল।
মির্জা ফখরুল বলেন, এখানে যখন আপনাদের একটি সভা হচ্ছে, ঠিক একই সময়ে ঢাকা এবং চট্টগ্রামের নিউমার্কেট এলাকায় অন্য একটি সভা চলছে। তাদের একটাই দাবি—আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে। আমরা যারা এই মাঠে আছি শুধু নয়, সারা বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষ চায় না এই আওয়ামী লীগকে। কারণ, তারা গণতন্ত্র ধ্বংস করেছে, বাকশাল কায়েম করেছে। এই আওয়ামী লীগ স্বাধীনতার পর থেকেই দেশের মানুষের ওপর দমন-পীড়ন চালিয়েছে, একদলীয় শাসন বাকশাল কায়েম করেছে, গণতন্ত্র ধ্বংস করেছে
শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্যে করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, হাসিনা পালিয়েছে, কিন্তু তার প্রেতাত্মারা এখনো আছে। তারা এখনো ষড়যন্ত্র করছে—বাংলাদেশে আবারও তাদের রাজত্ব প্রতিষ্ঠা করার জন্য। কিন্তু তরুণদের সামনে তারা টিকতে পারবে না।
অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ্যে করে মির্জা ফখরুল বলেন, দুর্ভাগ্য আমাদের, আমাদের দেশকে একটি গণতান্ত্রিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে যাদেরকে দায়িত্বে দিয়েছি, তারা এখনো সঠিকভাবে সেই কাজটা করতে পারছেন না। ফলে মাঝে মাঝে বিভিন্ন রকমের সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। সে সমস্যা গুলো তাদেরকে আরো শক্তিশালী করার সুযোগ সৃষ্টি করে দিচ্ছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, প্রথম সংস্কার করেছেন জিয়াউর রহমান, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, অর্থনীতির আজকে যে ভিত্তি গার্মেন্টস সেক্টর সেটাও জিয়াউর রহমানের অবদান। কেয়ারটেকার ব্যবস্থা এনেছেন খালেদা জিয়া। আজকে সবাই সবকিছু ভুলে যায়, বিদেশ থেকে এসে বড় বড় কথা বললে, মানুষ ভুলে যাবে তাই না।
তিনি বলেন, আমাদের তরুণরা ব্যবসা চায়, চাকরি চায়। তরুণ সমাজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শান্তি চায়। একটা গণতান্ত্রিক দেশ চায়, যে যার কথা বলবে। আমরা সে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে চাই। আজকে তারুণ্যের সমাবেশের একটা উদ্দেশ্য, তরুণরা আবার জেগে উঠো সমস্তকে চক্রান্ত ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করে নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, জিয়াউর রহমান যুদ্ধ করেছেন গণতান্ত্রিক দেশের জন্য, খালেদা জিয়া গণতন্ত্রের জন্য কাজ করেছেন। তারেক রহমান আধুনিক বাংলাদেশ করতে চান। দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব বিক্রি করে কিছু চাই না। এ জন্য তারেক রহমান বলেছেন সবার আগে বাংলাদেশ। তিনি বলেছেন ফয়সালা হবে রাজপথে, সেটাই হয়েছে।
তিনি বলেন, সুন্দর সমৃদ্ধ বাংলাদেশ হবে। যেখানে মানুষ মানুষকে ভালোবাসবে, মাথা উচু থাকবে দেশের।  বাংলাদেশের পতাকাটা উড়বে পতপত করে। ওয়াসিমের রক্তের বিনিময়ে আমাদের নতুন স্বাধীনতা। তাকে পাঠ্য পুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করা হবে— এটা আশা করি।
এর আগে সমাবেশস্থল ঘুরে দেখা গেছে, ছাত্র-শ্রমিকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার সমর্থক ভিড় করছেন। কেউ হেঁটে, কেউ বাসে আর কেউ ট্রাকে করে আসছেন। কেউ আবার ঢাক-ঢোলের তালে তালে। তাদের অনেকে সরাসরি পলোগ্রাউন্ডের দিকে চলে গেলেও কিছু টাইগারপাস মোড়ে জড়ো হচ্ছেন। বড় আকারের মিছিল নিয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যে তারা টাইগারপাসে এক হচ্ছেন বলে জানান নেতাকর্মীরা।
অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেছেন স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান ও ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন নাসির। বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তব্য দেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাৎ হোসেন।
সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিল বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মীর হেলাল, যুবদল সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্না, সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন, স্বেচ্ছাসেবক দল সভাপতি এস এম জিলানী, ছাত্রদল সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মো. এরশাদুল্লাহ, সদস্য সচিব নাজিমুর রহমান নাজিম প্রমুখ।