০৫:৫৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

একশ বছরে ৬৫০০ কৃষ্ণাঙ্গকে দড়িতে ঝুলিয়ে হত্যা

দড়িতে ঝুলিয়ে অন্তত সাড়ে ৬ হাজার কৃষ্ণাঙ্গকে হত্যা করা হয়েছিল আমেরিকায়। ১৮৬৫ সাল থেকে ১৯৫০ সালে এই ঘটনা ঘটে। আলজাজিরা জানায়, রশিতে ঝুলিয়ে হত্যাকাণ্ডের শিকার কৃষ্ণাঙ্গদের স্মরণে প্রতিষ্ঠিত একটি সংগঠন এই তথ্য জানিয়েছে।

ইক্যুয়াল জাস্টিস ইনিশিয়েটিভ (ইজেআই) নামে সংগঠনটি এর আগে ১৮৬৫ সাল থেকে ১৯৫০ সালে হত্যাকাণ্ডের শিকার সাড়ে ৪ হাজার কৃষ্ণাঙ্গের তথ্য সংগ্রহ করে। তবে নতুন তথ্য যুক্ত হয়ে এই সংখ্যা বেড়ে গেছে আরও দুই হাজার।

মঙ্গলবার ইজেআই কৃষ্ণাঙ্গ হত্যাকাণ্ডের নতুন তথ্য প্রকাশ করে। এতে দেখা যায় ওই ৮৫ বছরের মধ্যে আরও দুই হাজার কৃষ্ণাঙ্গকে দড়িতে ঝুলিয়ে হত্যা করেছিল শ্বেতাঙ্গরা।

তালিকায় নতুন যুক্ত হওয়া হত্যাকাণ্ডগুলো হয়েছিল মূলত ১৮৬৫ সাল থেকে ১৮৭৬ সালের মধ্যে।

কৃষ্ণাঙ্গদের এসব গণহত্যার ঘটনা ঘটেছিল আমেরিকার গৃহযুদ্ধের পর। সেসময় দাসজীবন থেকে মুক্ত হওয়ার সুযোগ তৈরি হয়েছিল কৃষ্ণাঙ্গদের।

এসব আফ্রিকান-আমেরিকানদের মূলত দাস হিসেবে আমেরিকায় নিয়ে আসা হয়েছিল। কিন্তু গৃহযুদ্ধের পর স্বাধীনভাবে জীবনযাপনের রাজনৈতিক প্রক্রিয়া মেনে নিতে চায়নি শ্বেতাঙ্গরা।

ফলে কৃষ্ণাঙ্গরা হামলা ও আক্রমণের শিকার হয় এবং একে একে তাদের গাছে দড়িতে ঝুলিয়ে হত্যা করা হয়।

বেশিরভাগ ঘটনা ঘটে আমেরিকার দক্ষিণাঞ্চলে, তবে এই গণহত্যা শুধু ওই অঞ্চলেই থেমে থাকেনি, দেশটির অন্যান্য অঞ্চলেও ছড়িয়ে পড়ে।

নির্বাচনে অংশ নেয়ার কারণে ব্যাপক হত্যাযজ্ঞের স্বীকার হতে হয়েছিল কৃষ্ণাঙ্গদের। প্রতিবেদনে দেখা যায়, লুইজিয়ানায় নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পৃক্ত থাকায় ১৮৬৮ সালে অন্তত ২০০ কৃষ্ণাঙ্গকে হত্যা করা হয়।

এমনকি পুরা পরিবারকে হত্যার ঘটনাও ঘটে। যেমন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ইউলিসেস এস গ্রান্টকে সমর্থন দিয়েছিল জর্জিয়ার পেরি জেফরিসের পরিবার। তার পরিবার ইউলিসেসকে ভোট দেয়ার পরিকল্পনা করেছে জানতে পেরে স্ত্রী, চার ছেলেসহ জেফরিসকে হত্যা করা হয়।

পুলিশি নির্যাতনে কৃষ্ণাঙ্গ যুবক জর্জ ফ্লয়েড হত্যাকাণ্ডের শিকার হওয়ার ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্র বর্ণবাদবিরোধী তুমুল বিক্ষোভ শুরু হয়। ইউরোপসহ বিশ্বজুড়ে এই বিক্ষোভের ঢেউ উঠে।

এমন পরিস্থিতিতে ইজেআই এই প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা ব্রায়ান স্টিভেনসন এক বিবৃতিতে বলেন, শ্বেতাঙ্গ আধিপত্যবাদ এবং বর্ণবাদি কর্তৃত্ববাদের কারণে সেসময় যে দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়েছিল আমাদের, সেগুলো নিরূপণ করা ছাড়া বর্তমান মুহূর্তটি বোঝা যাবে না।

বিজনেস বাংলাদেশ/ মে আর

জনপ্রিয়

ঝিনাইদহে চোর সন্দেহে পিটিয়ে হত্যা

একশ বছরে ৬৫০০ কৃষ্ণাঙ্গকে দড়িতে ঝুলিয়ে হত্যা

প্রকাশিত : ০৭:৪১:১৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৭ জুন ২০২০

দড়িতে ঝুলিয়ে অন্তত সাড়ে ৬ হাজার কৃষ্ণাঙ্গকে হত্যা করা হয়েছিল আমেরিকায়। ১৮৬৫ সাল থেকে ১৯৫০ সালে এই ঘটনা ঘটে। আলজাজিরা জানায়, রশিতে ঝুলিয়ে হত্যাকাণ্ডের শিকার কৃষ্ণাঙ্গদের স্মরণে প্রতিষ্ঠিত একটি সংগঠন এই তথ্য জানিয়েছে।

ইক্যুয়াল জাস্টিস ইনিশিয়েটিভ (ইজেআই) নামে সংগঠনটি এর আগে ১৮৬৫ সাল থেকে ১৯৫০ সালে হত্যাকাণ্ডের শিকার সাড়ে ৪ হাজার কৃষ্ণাঙ্গের তথ্য সংগ্রহ করে। তবে নতুন তথ্য যুক্ত হয়ে এই সংখ্যা বেড়ে গেছে আরও দুই হাজার।

মঙ্গলবার ইজেআই কৃষ্ণাঙ্গ হত্যাকাণ্ডের নতুন তথ্য প্রকাশ করে। এতে দেখা যায় ওই ৮৫ বছরের মধ্যে আরও দুই হাজার কৃষ্ণাঙ্গকে দড়িতে ঝুলিয়ে হত্যা করেছিল শ্বেতাঙ্গরা।

তালিকায় নতুন যুক্ত হওয়া হত্যাকাণ্ডগুলো হয়েছিল মূলত ১৮৬৫ সাল থেকে ১৮৭৬ সালের মধ্যে।

কৃষ্ণাঙ্গদের এসব গণহত্যার ঘটনা ঘটেছিল আমেরিকার গৃহযুদ্ধের পর। সেসময় দাসজীবন থেকে মুক্ত হওয়ার সুযোগ তৈরি হয়েছিল কৃষ্ণাঙ্গদের।

এসব আফ্রিকান-আমেরিকানদের মূলত দাস হিসেবে আমেরিকায় নিয়ে আসা হয়েছিল। কিন্তু গৃহযুদ্ধের পর স্বাধীনভাবে জীবনযাপনের রাজনৈতিক প্রক্রিয়া মেনে নিতে চায়নি শ্বেতাঙ্গরা।

ফলে কৃষ্ণাঙ্গরা হামলা ও আক্রমণের শিকার হয় এবং একে একে তাদের গাছে দড়িতে ঝুলিয়ে হত্যা করা হয়।

বেশিরভাগ ঘটনা ঘটে আমেরিকার দক্ষিণাঞ্চলে, তবে এই গণহত্যা শুধু ওই অঞ্চলেই থেমে থাকেনি, দেশটির অন্যান্য অঞ্চলেও ছড়িয়ে পড়ে।

নির্বাচনে অংশ নেয়ার কারণে ব্যাপক হত্যাযজ্ঞের স্বীকার হতে হয়েছিল কৃষ্ণাঙ্গদের। প্রতিবেদনে দেখা যায়, লুইজিয়ানায় নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পৃক্ত থাকায় ১৮৬৮ সালে অন্তত ২০০ কৃষ্ণাঙ্গকে হত্যা করা হয়।

এমনকি পুরা পরিবারকে হত্যার ঘটনাও ঘটে। যেমন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ইউলিসেস এস গ্রান্টকে সমর্থন দিয়েছিল জর্জিয়ার পেরি জেফরিসের পরিবার। তার পরিবার ইউলিসেসকে ভোট দেয়ার পরিকল্পনা করেছে জানতে পেরে স্ত্রী, চার ছেলেসহ জেফরিসকে হত্যা করা হয়।

পুলিশি নির্যাতনে কৃষ্ণাঙ্গ যুবক জর্জ ফ্লয়েড হত্যাকাণ্ডের শিকার হওয়ার ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্র বর্ণবাদবিরোধী তুমুল বিক্ষোভ শুরু হয়। ইউরোপসহ বিশ্বজুড়ে এই বিক্ষোভের ঢেউ উঠে।

এমন পরিস্থিতিতে ইজেআই এই প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা ব্রায়ান স্টিভেনসন এক বিবৃতিতে বলেন, শ্বেতাঙ্গ আধিপত্যবাদ এবং বর্ণবাদি কর্তৃত্ববাদের কারণে সেসময় যে দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়েছিল আমাদের, সেগুলো নিরূপণ করা ছাড়া বর্তমান মুহূর্তটি বোঝা যাবে না।

বিজনেস বাংলাদেশ/ মে আর