ভরা মৌসুমে আমের ফলন ওঠার আগে অতিবর্ষণ আর জলাবদ্ধতা যেন মরার উপড় খারার ঘা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ কারণে ঠাকুরগাঁওয়ের আমচাষিরা এবার কাঙ্খিত দাম পাচ্ছে না। টানা বৃষ্টিপাতের কারণে বাগানের পরিচর্যা করতে পারেনি আম চাষিরা। প্রকৃতির বিরূপ আচরণে বিবর্ণ হয়ে গেছে বাগানের অধিকাংশ আম। সেই আম নিতে আগ্রহ নেই ব্যবসায়ীদের।
তাই এবার কম দামে আম বিক্রি করে কাঙ্খিত লাভের মুখ দেখছেন না চাষিরা। ভারী বৃষ্টিতে ৫শ হেক্টর জমির আম বাগানে সৃষ্টি হয়েছে জলবদ্ধতা। তাই আম তুলতে দুর্ভোগে পড়ছেন তারা।
বাগান মালিকরা বলছেন, অবিরাম বৃষ্টিতে আম বাগানের পরিচর্যা করতে না পারায় আমের শরীরে কালো দাগ পড়েছে। এ কারণে আকৃষ্ট হচ্ছে না ব্যবসায়ীরা। গেল বছর এই সময়ে যে বাগান ৪ লাখ টাকায় বিক্রি হয়েছে এবার সেই বাগান বেচতে হচ্ছে ২ লাখ টাকায়। লকডাউন আর করোনাভাইরাসের অজুহাতে ঢাকায় আম পাঠাতেও ট্রাক প্রতি গুনতে হচ্ছে ৭ হাজার থেকে ৯ হাজার টাকা পর্যন্ত বেশি ভাড়া গুনতে হচ্ছে।
চলতি মৌসুমে জেলার পাঁচ উপজেলায় ২ হাজার ৮৪০ হেক্টর জমিতে সূর্যাপুরী, মিশ্রিভোগ, হাড়িভাঙ্গা, বান্দিগৌরিসহ বিভিন্ন জাতের আম চাষ হয়েছে। এ থেকে ৪৩ হাজার ৭৭ মেট্রিক টন আমের ফলন হয়েছে বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ।
জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার ভেলাতৈড় গ্রামের আম চাষি তৈয়ব রহমান বলেন, গেল আম্পান ঝড়ে অর্ধেক আম ঝরে গেছে। এর পরেও কিছু আম কিটিয়ে রাখা হয়েছে। কিন্তু আমের দর পতনে উৎপাদন খরচ তো উঠবেই না লোকসান হবে দ্বিগুন। এবই উপজেলার বনবাড়ি গ্রামে চাষি ইমাম হোসেন বলেন, ৫০ বিঘা আম গাছ পানিতে তলিয়ে গেছে। আম নষ্ট হওয়ার আশংকায় পানিতে ডুবে আম তুলতে হচ্ছে।
ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আফতাব হোসেন বলেন, এবার আমের ভাল ফলন হয়েছে। বাজারে ক্রেতার উপস্থিতি ও পরিবহন ব্যবস্থা ভাল হলে চাষিরা আমের দাম ভাল পাবে বলে আশা করা যায়। তবে অতি বৃষ্টিপাতে জলাবদ্ধতায় কিছু আমের ক্ষেতে পানি জমেছে।
বিজনেস বাংলাদেশ / ইমরান মাসুদ