০১:০৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪

গরুর খামারে করোনার প্রভাব-লোকসানের আশংকা খামারীদের

ঢাকার কেরানীগঞ্জে গরুর খামারেও এবার করোনার প্রভাব দেখা দিগয়েছে। খামারগুলোতে গরু বেচা-কেনার ধরন দেখেই বোঝা যাচ্ছে করোনার এই প্রভাব। অন্যান্য বছর এসময়ে গরুর খামারে গরু বিক্রির ধুম পড়ে যেত। সে সময় খামারগুলোতে গ্রাহকদের উপচেপড়া ভীড় লেগেই থাকতো।এসময়ের মধ্যে খামারীদের খামারের বেশিরভাগ গরু বিক্রি হয়ে যেত। কিন্তু এবছর সেখানে গ্রাহকদের তেমন আনাগোনা দেখা যাচ্ছে না।খামারগুলোতে গরু বিক্রি হলেও পরিমানেও খুবই কম।এতে লাভের পরিবর্তে লোকসানের আশংকাই বেশি করছেন খামারীরা।
উপজেলা প্রানী সম্পদ অফিসসুত্রে জানা যায় উপজেলার ১২টি ইউনিয়নে ছোট-বড় ৭৪৭টি গরুর খামার রয়েছে। এসব খামারে কোরবানির জন্য ১০৫৬০টি গরু মোটা-তাজা করন করে রাখা হরয়েছে। এসব খামারের গরুগুলোকে বিক্রির জন্য কখনো হাটে উঠানো হয়না। খামার থেকেই খামার মালিকগন তাদের গরুগুলোকে বিক্রি করেন।খামারগুলোতে শাহী, আাসা,ক্রস, দেশি,আমেরিকান ব্রাহামা, অস্ট্রেয়িান, ফিজিয়ান,হুলবডি, কষ্টাল, বাহুবলী,গয়াল ও ইন্ডিয়ান বলদসহ বিভিন্ন উন্নত জাতের গরু রয়েছে।

এছাড়া খামারগুলোতে দেশি ও চায়নার অনেক মহিষও রয়েছে।খামারগুলোতে সর্বোচ্চ ২০লাখ থেকে শুরু করে সর্বোনি¤œ ৫০হাজার টাকার মূল্যের গরু রয়েছে। এসব গরুগুলোর বিভিন্ন নামও রাখা হেয়ছে। খামার গুলোতে সম্পুর্ন অরগানিক পদ্ধতিতে গরু লালন-পালন করা হয়েছে। গরু গুলোকে সবুজ ঘাস,খর-কুটো,খৈল,ভুষি ও বিভিন্ন শস্য দানাদার খাবার খাইয়ে মোটা-তাজা করন করা হয়েছে।খামার গুলোতে কোন প্রকার ষ্টেরয়েড ইনজেকশন অথবা অন্য কোন ঔষধ ব্যবহার করে গরু মোটা-তাজা করন করা হয়নি। গরু পরিচর্যার জন্য খামারগুলোতে রয়েছে একাধিক রাখাল। তারা দিন-রাতে খামারের গরুগুলোকে দেখভাল করে থাকে।

এছাড়া গরুর চিকিৎসায় রয়েছে পশু ডাক্তার। তারা নিয়মিতভাবে গরু গুলোকে চিকিৎসা দিয়ে থাকেন।এবছর প্রান্তিক পর্যায়ের খামারীদের সংখ্যা খুবই কম। বেশিরভাগ খামারীরাই পেশাদার। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবছর করোনার প্রভাবে মৌসুমী খামারীদের দেখা যাচ্ছে না। করোনার প্রভাবে এবছর গো খাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় গরু মোটা-তাজা করন করতে গিয়ে খামারীদের খরচ গত বছরের তুলনায় একটু বেশি পড়েছে। সামায়ারা এগ্রোর মালিক মোঃ আবু বকর জানান, অন্যান্য বছর এসময় রাজধানীর বাহিরে সিলেটসহ বিভিন্ন জেলা থেকে গ্রাহকরা গরু ক্রয় করতে তার খামারে আসতেন। এবছর এই সময় তাদের কোন খবর নাই। ধারনা করা হচ্ছে করোনার কারনে তারা হয়তো গরু ক্রয় করবেন না।

এছাড়া কেরানীগঞ্জ ও এর আশেপাশের লোকজনও গরু ক্রয় করতে তাদের খামারে আসছেন না। ফিট এন্ড ফ্রেশ এগ্রোর ম্যানেজার মোঃ হিমেল খান জানান,প্রতিবছর এসময় রাজধানী ঢাকা থেকে গ্রাহকরা এসে তাদের খামারে ভীর জমাতেন। একেকজন ৫/৭টি গরু ক্রয় করে নিয়ে যেতেন। এবছর সেই গ্রাহকদের আর দেখা যাচ্ছে না। এই সময়ের মধ্যে তাদের খামারের বেশিরভাগ গরু বিক্রি হয়ে যেত। করোনার কারনেই আজ দেশে যে অর্থনৈতিক ধস নেমেছে তার প্রভাব তাদের খামারগুলোতেও পড়েছে।তাই তারা এবছর লাভের চেয়ে লোকসানের আশংকাই বেশি করছেন। কেরানীগঞ্জ উপজেলা প্রানীসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ জহির উদ্দীন জানান,করোনার কারনে অনেক মানুষ এবার বোরবানি দিবেন না । তাই খামারীদের লোকসানের আশংকাই থেকে যাচ্ছে।

বিজনেস বাংলাদেশ/বিএইচ

ট্যাগ :
জনপ্রিয়

গরুর খামারে করোনার প্রভাব-লোকসানের আশংকা খামারীদের

প্রকাশিত : ০৭:১০:৩৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ জুলাই ২০২০

ঢাকার কেরানীগঞ্জে গরুর খামারেও এবার করোনার প্রভাব দেখা দিগয়েছে। খামারগুলোতে গরু বেচা-কেনার ধরন দেখেই বোঝা যাচ্ছে করোনার এই প্রভাব। অন্যান্য বছর এসময়ে গরুর খামারে গরু বিক্রির ধুম পড়ে যেত। সে সময় খামারগুলোতে গ্রাহকদের উপচেপড়া ভীড় লেগেই থাকতো।এসময়ের মধ্যে খামারীদের খামারের বেশিরভাগ গরু বিক্রি হয়ে যেত। কিন্তু এবছর সেখানে গ্রাহকদের তেমন আনাগোনা দেখা যাচ্ছে না।খামারগুলোতে গরু বিক্রি হলেও পরিমানেও খুবই কম।এতে লাভের পরিবর্তে লোকসানের আশংকাই বেশি করছেন খামারীরা।
উপজেলা প্রানী সম্পদ অফিসসুত্রে জানা যায় উপজেলার ১২টি ইউনিয়নে ছোট-বড় ৭৪৭টি গরুর খামার রয়েছে। এসব খামারে কোরবানির জন্য ১০৫৬০টি গরু মোটা-তাজা করন করে রাখা হরয়েছে। এসব খামারের গরুগুলোকে বিক্রির জন্য কখনো হাটে উঠানো হয়না। খামার থেকেই খামার মালিকগন তাদের গরুগুলোকে বিক্রি করেন।খামারগুলোতে শাহী, আাসা,ক্রস, দেশি,আমেরিকান ব্রাহামা, অস্ট্রেয়িান, ফিজিয়ান,হুলবডি, কষ্টাল, বাহুবলী,গয়াল ও ইন্ডিয়ান বলদসহ বিভিন্ন উন্নত জাতের গরু রয়েছে।

এছাড়া খামারগুলোতে দেশি ও চায়নার অনেক মহিষও রয়েছে।খামারগুলোতে সর্বোচ্চ ২০লাখ থেকে শুরু করে সর্বোনি¤œ ৫০হাজার টাকার মূল্যের গরু রয়েছে। এসব গরুগুলোর বিভিন্ন নামও রাখা হেয়ছে। খামার গুলোতে সম্পুর্ন অরগানিক পদ্ধতিতে গরু লালন-পালন করা হয়েছে। গরু গুলোকে সবুজ ঘাস,খর-কুটো,খৈল,ভুষি ও বিভিন্ন শস্য দানাদার খাবার খাইয়ে মোটা-তাজা করন করা হয়েছে।খামার গুলোতে কোন প্রকার ষ্টেরয়েড ইনজেকশন অথবা অন্য কোন ঔষধ ব্যবহার করে গরু মোটা-তাজা করন করা হয়নি। গরু পরিচর্যার জন্য খামারগুলোতে রয়েছে একাধিক রাখাল। তারা দিন-রাতে খামারের গরুগুলোকে দেখভাল করে থাকে।

এছাড়া গরুর চিকিৎসায় রয়েছে পশু ডাক্তার। তারা নিয়মিতভাবে গরু গুলোকে চিকিৎসা দিয়ে থাকেন।এবছর প্রান্তিক পর্যায়ের খামারীদের সংখ্যা খুবই কম। বেশিরভাগ খামারীরাই পেশাদার। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবছর করোনার প্রভাবে মৌসুমী খামারীদের দেখা যাচ্ছে না। করোনার প্রভাবে এবছর গো খাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় গরু মোটা-তাজা করন করতে গিয়ে খামারীদের খরচ গত বছরের তুলনায় একটু বেশি পড়েছে। সামায়ারা এগ্রোর মালিক মোঃ আবু বকর জানান, অন্যান্য বছর এসময় রাজধানীর বাহিরে সিলেটসহ বিভিন্ন জেলা থেকে গ্রাহকরা গরু ক্রয় করতে তার খামারে আসতেন। এবছর এই সময় তাদের কোন খবর নাই। ধারনা করা হচ্ছে করোনার কারনে তারা হয়তো গরু ক্রয় করবেন না।

এছাড়া কেরানীগঞ্জ ও এর আশেপাশের লোকজনও গরু ক্রয় করতে তাদের খামারে আসছেন না। ফিট এন্ড ফ্রেশ এগ্রোর ম্যানেজার মোঃ হিমেল খান জানান,প্রতিবছর এসময় রাজধানী ঢাকা থেকে গ্রাহকরা এসে তাদের খামারে ভীর জমাতেন। একেকজন ৫/৭টি গরু ক্রয় করে নিয়ে যেতেন। এবছর সেই গ্রাহকদের আর দেখা যাচ্ছে না। এই সময়ের মধ্যে তাদের খামারের বেশিরভাগ গরু বিক্রি হয়ে যেত। করোনার কারনেই আজ দেশে যে অর্থনৈতিক ধস নেমেছে তার প্রভাব তাদের খামারগুলোতেও পড়েছে।তাই তারা এবছর লাভের চেয়ে লোকসানের আশংকাই বেশি করছেন। কেরানীগঞ্জ উপজেলা প্রানীসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ জহির উদ্দীন জানান,করোনার কারনে অনেক মানুষ এবার বোরবানি দিবেন না । তাই খামারীদের লোকসানের আশংকাই থেকে যাচ্ছে।

বিজনেস বাংলাদেশ/বিএইচ