০৪:৩৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

তালায় পানির পিএইচ নির্নয়ে প্রশিক্ষণ, খরচ ২০ পয়সা!

সহজতর উপায়ে পানির পিএইচ পরিমাপে ‘সিঙ্গেল ড্রপ টাইট্রেশন’ নামের নতুন এক পদ্ধতির উদ্ভাবন করলেন মৎস্য অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক ও তালা উপজেলার সাবেক সিনিয়র মৎস্য অফিসার মো. হাদিউজ্জামান। দীর্ঘ গবেষনায় তাঁর উদ্ভাবিত এই পদ্ধতি প্রয়োগে পানির পিএইচ মান নির্নয়ে খরচ হবে সর্বোচ্চ ২০ পয়সা। যে কারনে এই পদ্ধতির ব্যবহারে মাছ চাষিরা অর্থনৈতিক ভাবে লাভবান হবে।

মৎস্য অধিদপ্তরের ইনোভেশন সেলের সহযোগিতায় ‘সিঙ্গেল ড্রপ টাই ট্রেশন’ এর মাঠ পর্যায়ে উপযোগিতা যাচাইয়ের জন্য বর্তমানে পাইলটিং কর্মসূচী চলমান রয়েছে। এই কর্মসূচির আওতায় উদ্ভাবক মো. হাদিউজ্জামান ইতোমধ্যে সাতক্ষীরা’র তালা উপজেলায় ১০০জন মৎস্য চাষিকে পদ্ধতিটির কৌশল সম্পর্কে প্রশিক্ষণ সহ নব-উদ্ভাবিত পিএইচ কিটবক্স প্রদান করেন।

মো. হাদিউজ্জামান তাঁর উদ্ভাবিত পদ্ধতিটি মৎস্য ও প্রাণি সম্পদ মন্ত্রণালয় কর্তৃক আয়োজিত ২০১৮ সালের ইনোভেশন শোকেসিং মেলায় উপস্থাপন করেন। বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনষ্টিটিউট, ময়মনসিংহ ২১/০১/২০১৯ তারিখে পদ্ধতিটির প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেন। এরআগে এই উদ্ভাবনী কাজের জন্য তিনি ২০১৭ সালে সতক্ষীরা জেলা প্রশাসক’র পক্ষ্য হতে শ্রেষ্ঠ উদ্ভাবকের পুরস্কার লাভ করেন। এছাড়া, মৎস্য ও প্রাণি সম্পদ মন্ত্রণালয় তাঁকে গত ২৩/০৬/২০১৯ তারিখে সফল বিভাগীয় ইনোভেটর হিসেবে মনোনীত করেন।

উদ্ভাবনী কার্যক্রম সম্পর্কে মো. হাদিউজ্জামান বলেন, এক্সেস টু ইনফরমেশন প্রোগ্রামের আওতায় প্রশিক্ষণ পেয়ে এবং মৎস্য অধিদপ্তরের উৎসাহে সাধারণ মৎস্য চাষিদের জন্য সহজতর, সাশ্রয়ী ও বাস্তব উপযোগী দু-একটা কারিগরী কৌশল উদ্ভাবন’র পরিকল্পনা করি। সেভাবে ‘সিঙ্গেল ড্রপ টাই ট্রেশনের মাধ্যমে পানির পিএইচ পরিমাপকরণ পদ্ধতিটি অন্যতম। এই পদ্ধতিতে আয়োডিনকে ইনডিকেটর হিসেবে ব্যবহার করে খুব সহজে পানির পিএইচ পরিমাপ করা যাবে।

মো. হাদিউজ্জামান বলেন, মাছ চাষের জন্য পানির পিএইচ মান নিয়ন্ত্রণে রাখা খুব জরুরী। কারন মাছ একটা নির্দিষ্ট পরিসরের (৬.৫-৮.৫) পিএইচ মানের মধ্যে সাবলীল থাকে। পিএইচ মান ১০ এর উপরে কিংবা ৬ এর নিচে হলে মাছের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যহত হয়, মাছ খাদ্য গ্রহণ বন্ধ করে দেয়, মাছের চোখ, ফুলকা ইত্যাদি আক্রান্ত হতে পারে। এছাড়া পানিতে এমোনিয়ার বিষক্রিয়া বৃদ্ধি পায়, মাছের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায় এবং জলাশয়ের পানির প্রাথমিক উৎপাদনশীলতা বিঘিœত হয়। তাই মাছ চাষের জলাশয়ের পানির পিএইচ নিয়মিত পরিমাপ করে তা অনুকূল পরিসরের মধ্যে রাখা খুব জরুরী। এজন্য সিঙ্গেল ড্রপ টাই ট্রেশন এর মাধ্যমে খুব সহজে পানির পিএইচ পরিমাপ করা যেতে পারে।

তিনি জানান, এই পদ্ধতিতে পানির প্রতিটি পিএইচ পরীক্ষার জন্য মাত্র ১৫-২০ পয়সা খরচ হবে। যা’ পিএইচ নির্ণয়ের জন্য খুবই উপযোগী এবং মৎস্য চাষিদের সহ লাভজনক হবে।

বিজনেস বাংলাদেশ/ এ আর

ট্যাগ :
জনপ্রিয়

পিরোজপুরে ছাত্রলীগ কর্মীকে পিটিতে হত্যা মামলায় ২ আসামী গ্রেপ্তার

তালায় পানির পিএইচ নির্নয়ে প্রশিক্ষণ, খরচ ২০ পয়সা!

প্রকাশিত : ১২:৩৮:২৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৬ নভেম্বর ২০২০

সহজতর উপায়ে পানির পিএইচ পরিমাপে ‘সিঙ্গেল ড্রপ টাইট্রেশন’ নামের নতুন এক পদ্ধতির উদ্ভাবন করলেন মৎস্য অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক ও তালা উপজেলার সাবেক সিনিয়র মৎস্য অফিসার মো. হাদিউজ্জামান। দীর্ঘ গবেষনায় তাঁর উদ্ভাবিত এই পদ্ধতি প্রয়োগে পানির পিএইচ মান নির্নয়ে খরচ হবে সর্বোচ্চ ২০ পয়সা। যে কারনে এই পদ্ধতির ব্যবহারে মাছ চাষিরা অর্থনৈতিক ভাবে লাভবান হবে।

মৎস্য অধিদপ্তরের ইনোভেশন সেলের সহযোগিতায় ‘সিঙ্গেল ড্রপ টাই ট্রেশন’ এর মাঠ পর্যায়ে উপযোগিতা যাচাইয়ের জন্য বর্তমানে পাইলটিং কর্মসূচী চলমান রয়েছে। এই কর্মসূচির আওতায় উদ্ভাবক মো. হাদিউজ্জামান ইতোমধ্যে সাতক্ষীরা’র তালা উপজেলায় ১০০জন মৎস্য চাষিকে পদ্ধতিটির কৌশল সম্পর্কে প্রশিক্ষণ সহ নব-উদ্ভাবিত পিএইচ কিটবক্স প্রদান করেন।

মো. হাদিউজ্জামান তাঁর উদ্ভাবিত পদ্ধতিটি মৎস্য ও প্রাণি সম্পদ মন্ত্রণালয় কর্তৃক আয়োজিত ২০১৮ সালের ইনোভেশন শোকেসিং মেলায় উপস্থাপন করেন। বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনষ্টিটিউট, ময়মনসিংহ ২১/০১/২০১৯ তারিখে পদ্ধতিটির প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেন। এরআগে এই উদ্ভাবনী কাজের জন্য তিনি ২০১৭ সালে সতক্ষীরা জেলা প্রশাসক’র পক্ষ্য হতে শ্রেষ্ঠ উদ্ভাবকের পুরস্কার লাভ করেন। এছাড়া, মৎস্য ও প্রাণি সম্পদ মন্ত্রণালয় তাঁকে গত ২৩/০৬/২০১৯ তারিখে সফল বিভাগীয় ইনোভেটর হিসেবে মনোনীত করেন।

উদ্ভাবনী কার্যক্রম সম্পর্কে মো. হাদিউজ্জামান বলেন, এক্সেস টু ইনফরমেশন প্রোগ্রামের আওতায় প্রশিক্ষণ পেয়ে এবং মৎস্য অধিদপ্তরের উৎসাহে সাধারণ মৎস্য চাষিদের জন্য সহজতর, সাশ্রয়ী ও বাস্তব উপযোগী দু-একটা কারিগরী কৌশল উদ্ভাবন’র পরিকল্পনা করি। সেভাবে ‘সিঙ্গেল ড্রপ টাই ট্রেশনের মাধ্যমে পানির পিএইচ পরিমাপকরণ পদ্ধতিটি অন্যতম। এই পদ্ধতিতে আয়োডিনকে ইনডিকেটর হিসেবে ব্যবহার করে খুব সহজে পানির পিএইচ পরিমাপ করা যাবে।

মো. হাদিউজ্জামান বলেন, মাছ চাষের জন্য পানির পিএইচ মান নিয়ন্ত্রণে রাখা খুব জরুরী। কারন মাছ একটা নির্দিষ্ট পরিসরের (৬.৫-৮.৫) পিএইচ মানের মধ্যে সাবলীল থাকে। পিএইচ মান ১০ এর উপরে কিংবা ৬ এর নিচে হলে মাছের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যহত হয়, মাছ খাদ্য গ্রহণ বন্ধ করে দেয়, মাছের চোখ, ফুলকা ইত্যাদি আক্রান্ত হতে পারে। এছাড়া পানিতে এমোনিয়ার বিষক্রিয়া বৃদ্ধি পায়, মাছের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায় এবং জলাশয়ের পানির প্রাথমিক উৎপাদনশীলতা বিঘিœত হয়। তাই মাছ চাষের জলাশয়ের পানির পিএইচ নিয়মিত পরিমাপ করে তা অনুকূল পরিসরের মধ্যে রাখা খুব জরুরী। এজন্য সিঙ্গেল ড্রপ টাই ট্রেশন এর মাধ্যমে খুব সহজে পানির পিএইচ পরিমাপ করা যেতে পারে।

তিনি জানান, এই পদ্ধতিতে পানির প্রতিটি পিএইচ পরীক্ষার জন্য মাত্র ১৫-২০ পয়সা খরচ হবে। যা’ পিএইচ নির্ণয়ের জন্য খুবই উপযোগী এবং মৎস্য চাষিদের সহ লাভজনক হবে।

বিজনেস বাংলাদেশ/ এ আর