০৫:২২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪

ডানা মেলেছে দোয়েল

  • তাকী জোবায়ের
  • প্রকাশিত : ১২:৩১:৫০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৮ জানুয়ারী ২০২১
  • 45

২০২১ সালে এক নম্বর দেশিয় ব্র্যান্ড হওয়ার লক্ষ্য নিয়ে ডানা মেলেছে দেশের প্রথম ও একমাত্র সরকারি ল্যাপটপ ব্রান্ড ‘দোয়েল’। ইতোমধ্যে লাভের মুখ দেখেছে বেশ কয়েকবছর ধুঁকতে থাকা প্রকল্পটি। গুণগত মানেও এসেছে আমূল পরিবর্তন। ২০১৮ সালের পর থেকে উৎপাদিত ল্যাপটপ নিয়ে নেই উল্লেখযোগ্য কোনও অভিযোগ। লক্ষ্য এবার বাংলাদেশের ল্যাপটপ বাজারের বড় অংশীদারিত্ব দখলে নেওয়া- বিজনেস বাংলাদেশকে এমনটাই জানালেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।

রবিবার বিকেলে মন্ত্রী বলেন, “ল্যাপটপের বাজার ধরতে হলে সবার আগে যেটা প্রয়োজন সেটা হলো ল্যাপটপের গুণগত মান নিশ্চিত করা। সুখবর হলো, ২০১৮ সালে দায়িত্বে এসে আমি ল্যাপটপের গুণগত মান নিশ্চিত করার যে উদ্যোগ নিয়েছিলাম সেটা সফল হয়েছে। ২০১৮ সালেই আইসিটি মন্ত্রণালয়ে ১৪ হাজার ল্যাপটপের বড় একটি চালান দিয়েছি। ওই চালানের একটি ল্যাপটপ সম্পর্কেও এখন পর্যন্ত আমরা কোনও কমপ্লেইন পাইনি। বর্তমানে দোয়েলের যেসব মডেলের ল্যাপটপ তৈরি হচ্ছে সেগুলো নিয়ে কোন কমপ্লেইন নেই।”

মোস্তাফা জব্বার বলেন, “দোয়েল প্রকল্প নিয়ে প্রাথমিক যে ধকল ছিল তা আমরা কাটিয়ে উঠেছি। আমরা আমাদের সংকট খুঁজে বের করেছি। কোয়ালিটি ইমপ্রভ করেছি। ম্যানেজমেন্ট চেঞ্জ করেছি। এর সুফলও মিলছে। দোয়েল ল্যাপটপ প্রকল্পে জয়েন্ট ভেঞ্চারে বিনিয়োগের বেশ কয়েকটি প্রস্তাব ইতোমধ্যে আমরা পেয়েছি।”

“আমাদের হাতে উন্নতমানের যন্ত্রাংশের বড় চালান এসেছে। আশা করি, ২০২১ সালে বড় ধরনের উৎপাদন করা সম্ভব হবে এবং বাংলাদেশের একটা বড় বাজার দোয়েল ল্যাপটপ ধরতে পারবে। ২০২১ সালে দেশের সবচেয়ে বড় ল্যাপটপ ব্রান্ড হবে দোয়েল”বলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী।

বর্তমান সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচির অংশ দোয়েল ল্যাপটপ প্রকল্প। ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে জনগণের হাতে ল্যাপটপ সরবরাহ করার উদ্দেশ্যে দোয়েলের পথচলা শুরু হয় ২০১১ সালে। দোয়েল ল্যাপটপ উৎপাদনের দায়িত্ব দেওয়া হয় টেলিফোন শিল্প সংস্থা বা টেশিস’কে। ২০১১ সালের ১১ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই ল্যাপটপের উদ্বোধন করেন।

গত নয় বছরে ৮০ হাজারটি দোয়েল ল্যাপটপ উৎপাদন করেছে টেশিস। এর মধ্যে ৬০ হাজার ল্যাপটপ বিক্রি হয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, ডাক বিভাগ, শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব প্রকল্প, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগসহ সরকারের কিছু দপ্তরে। বাকি ২০ হাজার কিনেছে সাধারণ গ্রাহক। বর্তমানে চীন ও তাইওয়ান থেকে স্বল্পদামে মানসম্পন্ন যন্ত্রাংশ এনে টঙ্গীর কারখানায় দোয়েল ল্যাপটপ সংযোজন করছে টেশিস। এ পর্যন্ত ১১টি মডেলের ল্যাপটপ উৎপাদন করেছে তারা।

দেশীয় উদ্যোগে ল্যাপটপ তৈরির কথা বলা হলেও শুরু থেকে এ পর্যন্ত সরকারি কোনো বরাদ্দ পায়নি টেশিস। ২০১০-১১ অর্থবছরে দোয়েল ল্যাপটপের জন্য বিটিসিএল থেকে ৯৫ কোটি টাকা প্রকল্প সহায়তা দেওয়া হয়। বর্তমানে পণ্য সরবরাহের মূল্য সমন্বয়ের মাধ্যমে এই অর্থ পরিশোধ করছে টেশিস।

ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, “সরকার ২০১১ সালে এটাকে একটি কোম্পানি করেছে। কিন্তু এই দোয়েল প্রকল্পে সরকারের কোন বিনিয়োগ নেই। টেশিস টেলিফোন তৈরি করার জন্য যাত্রা শুরু করেছিল। তারা বিটিসিএল’র জন্য টেলিফোন সেট তৈরি করতো। সেই কারখানায় ল্যাপটপ তৈরি করার প্রকল্প নেওয়া হয়েছিল। এখানে ল্যাপটপ অ্যাসেম্বলিংয়ের চমৎকার ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে গিয়ে যে সমস্যা হয়েছিল সেটা হলো, দক্ষ জনবলের বিপুল ঘাটতি ছিল।”
দোয়েল ল্যাপটপ দ্রত গরম হয়ে যায়, চার্জ থাকে না, ঠিকমতো কাজ করে না এমন অভিযোগ ছিল শুরুতে। এ কারণে শুরুতে মুখ থুবড়ে পড়েছিল সম্ভাবনাময় এই প্রকল্পটি। মূলত প্রথম চালানে মালয়েশিয়া থেকে নিমানের যন্ত্রাংশের চালান আসাকেই এই সমস্যার প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন মন্ত্রী।

ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, “দোয়েল নিয়ে মানুষ প্রথমে বিভ্রান্ত হয়েছে। এই ল্যাপটম মার্কেটে আসার পর শুরুতে ব্যাড রেপুটেশন কামিয়েছে। মানুষ প্রকৃত বিষয় জানেনা সেজন্য এই বদনাম হয়েছে। শুরুতে আমরা যখন শুরু করি তখন যন্ত্রাংশ সরবরাহের জন্য মালয়শিয়ান কোম্পনির সঙ্গে চুক্তি হয়েছিল। তারা যে যন্ত্রাংশের চালান দিয়েছিল সেটা ভাল ছিল না। যে কারণে সেই চালানের যন্ত্রাংশ দিয়ে যে ল্যাপটপ তৈরি করা হয়েছিল তা নিয়ে আমাদের বদনাম হয়েছে। আমরা এখন চেষ্টা করছি এই বদনাম থেকে বের হয়ে আসতে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন এই প্রতিষ্ঠানটিকে একটি লাভজনক শিল্প হিসেবে দাঁড় করানোর জন্য। পরেতো তিনি আমাকে মন্ত্রীই করে দিলেন। বর্তমান সময়ে এসে প্রকল্পটি লাভের মুখ দেখেছে। আশা করছি, ২০২১ সালে আমরা ল্যাপটপের বাজারের উল্লেখযোগ্য অংশীদার হবো।”

টেশিসের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০১১ সাল থেকে এ পর্যন্ত দোয়েল ল্যাপটপ থেকে টেশিসের আয় প্রায় ৩৪১ কোটি টাকা এবং ব্যয় প্রায় ৩২৫ কোটি টাকা। তাদের লাভ প্রায় ১৬ কোটি টাকা।

টেশিস কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ২০১১ সালে ১০ হাজার টাকায় মোটামুটি মানের ল্যাপটপও দেওয়া সম্ভব ছিল না। একটি ল্যাপটপের অপারেটিং সিস্টেমের দামই ছিল আট হাজার টাকা। তাই ১০ হাজার টাকা দামে যে ল্যাপটপটি তখন দেওয়া হয় তা মূলত অ্যান্ড্রয়েড ফোনের ল্যাপটপ ভার্সন ছিল। ফলে মান ভালো ছিল না। দোয়েলের বর্তমান অপারেটর সংখ্যা ৪৭ জন। এখন বাজারে দোয়েলের ১৫ হাজার টাকা থেকে ৭৫ হাজার টাকা দামের ল্যাপটপ পাওয়া যায়।

টেশিস কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই মুহূর্তে তাদের স্টকে দুটি মডেলের ল্যাপটপ আছে। একটি কোর আই-৭, অষ্টম জেনারেশনের। এর ফিচারগুলো- ৮ জিবি র‌্যাম, এক টেরাবাইট হার্ডডিস্ক, ইনটেল এইচডি গ্রাফিকস ৬২০, ১৪ ইঞ্চি মনিটর। এর বিক্রয় মূল্য ৭৫ হাজার ২৯৫ টাকা। আরেকটি মডেল ফ্রিডম। যার ফিচার হচ্ছে ইনটেল কিউএন ৪২০০, ৪ জিবি র‌্যাম, সাধারণ গ্রাফিকস, এক টেরাবাইট হার্ডডিস্ক, ১৪ ইঞ্চি মনিটর। এর বাজার মূল্য ২২ হাজার হলেও এখন ১৫ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
দোয়েল ল্যাপটপ কিনতে হলে বিটিসিএলের টেলিফোন বিক্রয়কেন্দ্রগুলোতে যেতে হবে। রাজধানীর রমনা, নীলক্ষেত বিটিসিএল অফিসে দোয়েল বিক্রি হয়। আগারগাঁওয়ের আইডিবি ভবনে একটি বিক্রয় কেন্দ্র আছে। ঢাকার বাইরে টঙ্গী, খুলনা ও রাজশাহীতে একটি করে বিক্রয় কেন্দ্র রয়েছে।

বিজনেস বাংলাদেশ

জনপ্রিয়

একজন ব্যবসায়ী বান্ধব নেতা ওয়াহিদুল হাসান দিপু

ডানা মেলেছে দোয়েল

প্রকাশিত : ১২:৩১:৫০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৮ জানুয়ারী ২০২১

২০২১ সালে এক নম্বর দেশিয় ব্র্যান্ড হওয়ার লক্ষ্য নিয়ে ডানা মেলেছে দেশের প্রথম ও একমাত্র সরকারি ল্যাপটপ ব্রান্ড ‘দোয়েল’। ইতোমধ্যে লাভের মুখ দেখেছে বেশ কয়েকবছর ধুঁকতে থাকা প্রকল্পটি। গুণগত মানেও এসেছে আমূল পরিবর্তন। ২০১৮ সালের পর থেকে উৎপাদিত ল্যাপটপ নিয়ে নেই উল্লেখযোগ্য কোনও অভিযোগ। লক্ষ্য এবার বাংলাদেশের ল্যাপটপ বাজারের বড় অংশীদারিত্ব দখলে নেওয়া- বিজনেস বাংলাদেশকে এমনটাই জানালেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।

রবিবার বিকেলে মন্ত্রী বলেন, “ল্যাপটপের বাজার ধরতে হলে সবার আগে যেটা প্রয়োজন সেটা হলো ল্যাপটপের গুণগত মান নিশ্চিত করা। সুখবর হলো, ২০১৮ সালে দায়িত্বে এসে আমি ল্যাপটপের গুণগত মান নিশ্চিত করার যে উদ্যোগ নিয়েছিলাম সেটা সফল হয়েছে। ২০১৮ সালেই আইসিটি মন্ত্রণালয়ে ১৪ হাজার ল্যাপটপের বড় একটি চালান দিয়েছি। ওই চালানের একটি ল্যাপটপ সম্পর্কেও এখন পর্যন্ত আমরা কোনও কমপ্লেইন পাইনি। বর্তমানে দোয়েলের যেসব মডেলের ল্যাপটপ তৈরি হচ্ছে সেগুলো নিয়ে কোন কমপ্লেইন নেই।”

মোস্তাফা জব্বার বলেন, “দোয়েল প্রকল্প নিয়ে প্রাথমিক যে ধকল ছিল তা আমরা কাটিয়ে উঠেছি। আমরা আমাদের সংকট খুঁজে বের করেছি। কোয়ালিটি ইমপ্রভ করেছি। ম্যানেজমেন্ট চেঞ্জ করেছি। এর সুফলও মিলছে। দোয়েল ল্যাপটপ প্রকল্পে জয়েন্ট ভেঞ্চারে বিনিয়োগের বেশ কয়েকটি প্রস্তাব ইতোমধ্যে আমরা পেয়েছি।”

“আমাদের হাতে উন্নতমানের যন্ত্রাংশের বড় চালান এসেছে। আশা করি, ২০২১ সালে বড় ধরনের উৎপাদন করা সম্ভব হবে এবং বাংলাদেশের একটা বড় বাজার দোয়েল ল্যাপটপ ধরতে পারবে। ২০২১ সালে দেশের সবচেয়ে বড় ল্যাপটপ ব্রান্ড হবে দোয়েল”বলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী।

বর্তমান সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচির অংশ দোয়েল ল্যাপটপ প্রকল্প। ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে জনগণের হাতে ল্যাপটপ সরবরাহ করার উদ্দেশ্যে দোয়েলের পথচলা শুরু হয় ২০১১ সালে। দোয়েল ল্যাপটপ উৎপাদনের দায়িত্ব দেওয়া হয় টেলিফোন শিল্প সংস্থা বা টেশিস’কে। ২০১১ সালের ১১ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই ল্যাপটপের উদ্বোধন করেন।

গত নয় বছরে ৮০ হাজারটি দোয়েল ল্যাপটপ উৎপাদন করেছে টেশিস। এর মধ্যে ৬০ হাজার ল্যাপটপ বিক্রি হয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, ডাক বিভাগ, শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব প্রকল্প, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগসহ সরকারের কিছু দপ্তরে। বাকি ২০ হাজার কিনেছে সাধারণ গ্রাহক। বর্তমানে চীন ও তাইওয়ান থেকে স্বল্পদামে মানসম্পন্ন যন্ত্রাংশ এনে টঙ্গীর কারখানায় দোয়েল ল্যাপটপ সংযোজন করছে টেশিস। এ পর্যন্ত ১১টি মডেলের ল্যাপটপ উৎপাদন করেছে তারা।

দেশীয় উদ্যোগে ল্যাপটপ তৈরির কথা বলা হলেও শুরু থেকে এ পর্যন্ত সরকারি কোনো বরাদ্দ পায়নি টেশিস। ২০১০-১১ অর্থবছরে দোয়েল ল্যাপটপের জন্য বিটিসিএল থেকে ৯৫ কোটি টাকা প্রকল্প সহায়তা দেওয়া হয়। বর্তমানে পণ্য সরবরাহের মূল্য সমন্বয়ের মাধ্যমে এই অর্থ পরিশোধ করছে টেশিস।

ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, “সরকার ২০১১ সালে এটাকে একটি কোম্পানি করেছে। কিন্তু এই দোয়েল প্রকল্পে সরকারের কোন বিনিয়োগ নেই। টেশিস টেলিফোন তৈরি করার জন্য যাত্রা শুরু করেছিল। তারা বিটিসিএল’র জন্য টেলিফোন সেট তৈরি করতো। সেই কারখানায় ল্যাপটপ তৈরি করার প্রকল্প নেওয়া হয়েছিল। এখানে ল্যাপটপ অ্যাসেম্বলিংয়ের চমৎকার ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে গিয়ে যে সমস্যা হয়েছিল সেটা হলো, দক্ষ জনবলের বিপুল ঘাটতি ছিল।”
দোয়েল ল্যাপটপ দ্রত গরম হয়ে যায়, চার্জ থাকে না, ঠিকমতো কাজ করে না এমন অভিযোগ ছিল শুরুতে। এ কারণে শুরুতে মুখ থুবড়ে পড়েছিল সম্ভাবনাময় এই প্রকল্পটি। মূলত প্রথম চালানে মালয়েশিয়া থেকে নিমানের যন্ত্রাংশের চালান আসাকেই এই সমস্যার প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন মন্ত্রী।

ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, “দোয়েল নিয়ে মানুষ প্রথমে বিভ্রান্ত হয়েছে। এই ল্যাপটম মার্কেটে আসার পর শুরুতে ব্যাড রেপুটেশন কামিয়েছে। মানুষ প্রকৃত বিষয় জানেনা সেজন্য এই বদনাম হয়েছে। শুরুতে আমরা যখন শুরু করি তখন যন্ত্রাংশ সরবরাহের জন্য মালয়শিয়ান কোম্পনির সঙ্গে চুক্তি হয়েছিল। তারা যে যন্ত্রাংশের চালান দিয়েছিল সেটা ভাল ছিল না। যে কারণে সেই চালানের যন্ত্রাংশ দিয়ে যে ল্যাপটপ তৈরি করা হয়েছিল তা নিয়ে আমাদের বদনাম হয়েছে। আমরা এখন চেষ্টা করছি এই বদনাম থেকে বের হয়ে আসতে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন এই প্রতিষ্ঠানটিকে একটি লাভজনক শিল্প হিসেবে দাঁড় করানোর জন্য। পরেতো তিনি আমাকে মন্ত্রীই করে দিলেন। বর্তমান সময়ে এসে প্রকল্পটি লাভের মুখ দেখেছে। আশা করছি, ২০২১ সালে আমরা ল্যাপটপের বাজারের উল্লেখযোগ্য অংশীদার হবো।”

টেশিসের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০১১ সাল থেকে এ পর্যন্ত দোয়েল ল্যাপটপ থেকে টেশিসের আয় প্রায় ৩৪১ কোটি টাকা এবং ব্যয় প্রায় ৩২৫ কোটি টাকা। তাদের লাভ প্রায় ১৬ কোটি টাকা।

টেশিস কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ২০১১ সালে ১০ হাজার টাকায় মোটামুটি মানের ল্যাপটপও দেওয়া সম্ভব ছিল না। একটি ল্যাপটপের অপারেটিং সিস্টেমের দামই ছিল আট হাজার টাকা। তাই ১০ হাজার টাকা দামে যে ল্যাপটপটি তখন দেওয়া হয় তা মূলত অ্যান্ড্রয়েড ফোনের ল্যাপটপ ভার্সন ছিল। ফলে মান ভালো ছিল না। দোয়েলের বর্তমান অপারেটর সংখ্যা ৪৭ জন। এখন বাজারে দোয়েলের ১৫ হাজার টাকা থেকে ৭৫ হাজার টাকা দামের ল্যাপটপ পাওয়া যায়।

টেশিস কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই মুহূর্তে তাদের স্টকে দুটি মডেলের ল্যাপটপ আছে। একটি কোর আই-৭, অষ্টম জেনারেশনের। এর ফিচারগুলো- ৮ জিবি র‌্যাম, এক টেরাবাইট হার্ডডিস্ক, ইনটেল এইচডি গ্রাফিকস ৬২০, ১৪ ইঞ্চি মনিটর। এর বিক্রয় মূল্য ৭৫ হাজার ২৯৫ টাকা। আরেকটি মডেল ফ্রিডম। যার ফিচার হচ্ছে ইনটেল কিউএন ৪২০০, ৪ জিবি র‌্যাম, সাধারণ গ্রাফিকস, এক টেরাবাইট হার্ডডিস্ক, ১৪ ইঞ্চি মনিটর। এর বাজার মূল্য ২২ হাজার হলেও এখন ১৫ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
দোয়েল ল্যাপটপ কিনতে হলে বিটিসিএলের টেলিফোন বিক্রয়কেন্দ্রগুলোতে যেতে হবে। রাজধানীর রমনা, নীলক্ষেত বিটিসিএল অফিসে দোয়েল বিক্রি হয়। আগারগাঁওয়ের আইডিবি ভবনে একটি বিক্রয় কেন্দ্র আছে। ঢাকার বাইরে টঙ্গী, খুলনা ও রাজশাহীতে একটি করে বিক্রয় কেন্দ্র রয়েছে।

বিজনেস বাংলাদেশ