স্বাস্থ্যসম্মত ভোজ্য তেল খাওয়ার অভ্যাস করা এবং বিদেশ নির্ভর সয়াবিন তেলের ওপর থেকে মানুষকে ফেরাতে সূর্যমুখীর আবাদ হচ্ছে নেত্রকোনায় বিভিন্ন উপজেলায়। পরীক্ষামুলক এই আবাদে প্রাথমিক সফলতায় আগ্রহী হচ্ছে উঠছেন অনেকই।
প্রথমবারের মতো সূর্যমুখী ফুল চাষ করে ইতোমধ্যেই জেলায় সাড়া ফেলে দিয়েছেন নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলার সবুজ মিয়া নামে এক কৃষক। তিনি ১৯৯৬ সাল থেকে শুটকির ব্যবসা করতেন। উত্তরবঙ্গ রংপুরসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে করতেন শুটকির বেচা বিক্রি। কৃষি বিষয়ে আগ্রহ থাকায় তখন থেকে বিভিন্ন এলাকার কৃষি ফসল সম্পর্কে ধারণা নিতেন।
চলতি বছর করোনার প্রভাবে ওই ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তিনি কৃষিতে মনোযোগ দেন। পরবর্তীতে কৃষি বিভাগের পরামর্শে সূর্যমুখী ও বিভিন্ন জাতের সবজি আবাদের উদ্যোগ নেন।
বর্তমানে সবুজ মিয়ার বাগানে সূর্যমুখীর সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতিদিন ভিড় করছেন শতাধিক দর্শনার্থী। এতে দর্শনার্থীরা কিছুটা আনন্দ পেলেও আবার ক্ষতির মুখে পড়ছেন বলেও জানান কৃষক সবুজ মিয়া।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পরামর্শ ও সহযোগিতায় নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলায় সিংধা ইউনিয়নের ভাঠিপাড়ায় প্রায় ১০ একর জায়গায় সূর্যমুখী ফুলের চাষ করেন সবুজ মিয়া। এ ছাড়াও আবাদ করেছেন পিয়াজ, ভুট্টা, আলুসহ বিভিন্ন জাতের সবজি। মাত্র কয়েক মাসেই বাগানের সফলতায় এখন আগ্রহী হয়ে উঠছেন অনেকেই।
তার এই উদ্যোগে সৃষ্টি হয়েছে স্থানীয়দের কর্মসংস্থানের। ১০ থেকে ১৫ জনের মতো শ্রমিক কাজ করছেন ওই বাগানে। তারা পরিবারের খরচ যোগাতে কাজ করায় করোনাকালে বেকার সমস্যা দূর হচ্ছে কিছুটা। সবুজ মিয়া ছাড়াও জেলার বিভিন্ন স্থানে অনেকেই সূর্যমুখী ফুল আবাদে আগ্রহী হয়ে উঠছেন।
এদিকে কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, সূর্যমুখীর বীজ থেকে উন্নত মানের ভোজ্য তেল উৎপাদিত হয়। তাই এর চাষাবাদ বৃদ্ধিতে কাজ করছে কৃষি বিভাগ। সফল হলে কৃষিতেও বড় ধরেনর শিল্প সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন বারহাট্টা উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা মোহাইমিনুর রহমান।
তিনি জানান এই তেল শরীরের জন্য উপকারী। তাছাড়া দেশের মানুষকে বিদেশী নির্ভর সয়াবিন থেকে ফিরিয়ে আনতেও একটি উদ্যোগ বলে জানিয়েছেন।
তবে প্রকৃতি নিয়ে গবেষকরা বলছেন, ব্যাপকভাবে এর চাষাবাদ বৃদ্ধি করে ভোজ্য তেলের চাহিদা মেটাতে ভূমিকা রাখবেন এখানকার চাষিরাই। যদি কৃষি বিভাগ ভালোভাবে সহযোগিতা করে।