ইন্দোনেশিয়ায় করোনা পরিস্থিতি দিন দিন খারাপ হচ্ছে। আজ শনিবার দেশটিতে মোট সংক্রমণ ২০ লাখ ৫০ হাজার ছাড়িয়েছে। ডেলটাসহ করোনার অতিসংক্রামক ধরনগুলো ছড়িয়ে পড়ায় কোভিড রোগীদের ভিড় বেড়েছে রাজধানী জাকার্তাসহ ইন্দোনেশিয়ার হাসপাতালগুলোয়। ইতিমধ্যে হাসপাতালে রোগী ভর্তির হার ৭৫ শতাংশ ছাড়িয়েছে। করোনা রোগীর বাড়তি চাপ সামলাতে জাকার্তার হাসপাতালগুলো অস্থায়ী তাঁবু টানিয়ে সেবা দিতে শুরু করেছে। খবর এএফপি ও আল–জাজিরার।
মহামারি শুরুর পর থেকে দেশটিতে প্রায় ১ হাজার স্বাস্থ্যকর্মী করোনায় মারা গেছেন। ইন্দোনেশিয়ার মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন গতকাল শুক্রবার জানিয়েছে, কোভিডে আক্রান্ত হয়ে দেশটিতে ৪০১ জন চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ১৪ জন করোনার টিকার দুটি ডোজ নিয়েছিলেন।
চলতি মাসে ইন্দোনেশিয়ার সেন্ট্রাল জাভা প্রদেশে টিকা নেওয়ার পরও ৩০০ জনের বেশি চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীর করোনা শনাক্ত হওয়ার খবর মিলেছে। তাঁদের অনেককেই হাসপাতালে ভর্তি করানোর প্রয়োজন হয়েছিল। আগামী বছরের শুরু নাগাদ ইন্দোনেশিয়া সরকার দেশটির ১৮ কোটির বেশি মানুষকে টিকা দেওয়ার পরিকল্পনা এগিয়ে নিচ্ছে।
ওয়েস্ট জাভার মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের মুখপাত্র ইকা মুলইয়ানা বলেন, ‘আমাদের এখানে হাসপাতালগুলো করোনা রোগীতে ভরে গেছে। কোনো হাসপাতালে ৯০ শতাংশের বেশি শয্যায় রোগী ভর্তি আর কোনো হাসপাতালে এই সংখ্যা শতভাগ ছাড়িয়েছে। অনেক হাসপাতাল অস্থায়ীভাবে তাঁবু টানিয়ে বাড়তি রোগীর চাপ সামাল দিচ্ছে। এই হারে করোনা রোগী হাসপাতালে ভর্তি হলে আমাদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়বে।’
উত্তরাঞ্চলীয় সুমাত্রা প্রদেশের কোভিডবিষয়ক টাস্কফোর্সের সদস্য ডা. ইনকে নাদিয়া ডি লুবিস জানান, গত ছয় মাসে প্রাদেশিক রাজধানী মেদানে প্রায় ১ হাজার ৮০০ শিশুর করোনা শনাক্ত হয়েছে। মারা গেছে ১৪ জন। বয়স বিবেচনায় বেশির ভাগ শিশু প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বয়সী। করোনায় আক্রান্ত হওয়া শিশুদের চার ভাগের এক ভাগ সেখানকার হাইস্কুলে পড়ার বয়সী।
গত রোজার ঈদে লাখো মানুষ ইন্দোনেশিয়ার বিভিন্ন প্রান্তে স্বজনদের সঙ্গে উৎসব উদ্যাপনে ছড়িয়ে পড়েছিলেন। দেশটিতে করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার পেছনে সেটা ভূমিকা রেখেছে বলে মনে করা হচ্ছে। ইন্দোনেশিয়া মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের মুখপাত্র আহমাদ ইপুল সাইফুদ্দিন বলেন, ঈদের তিন সপ্তাহ পর থেকে সংক্রমণ বাড়তির পথে রয়েছে। ছড়িয়ে পড়ছে অতিসংক্রামক ডেলটা ধরন।
গতকাল শুক্রবার ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদো বলেন, ইন্দোনেশিয়া এখন অস্বাভাবিক পরিস্থিতি পার করছে। এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় দ্রুত ও যথাযথ নীতি গ্রহণ করতে হবে।
এদিকে ওয়ার্ল্ডোমিটারসের হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, আজ দুপুর পর্যন্ত ইন্দোনেশিয়ায় কোভিড শনাক্ত হয়েছে ২০ লাখ ৭২ হাজার ৮৬৭ জনের। করোনায় আক্রান্ত হয়ে দেশটিতে মৃত্যুর মোট সংখ্যা ৫৬ হাজার ৩৭১। এই মুহূর্তে ইন্দোনেশিয়ায় সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যা ১ লাখ ৮১ হাজার ৪৩৫।
বিজনেস বাংলাদেশ/বিএইচ