পাকিস্তানে ভারী বৃষ্টিপাত ও আকস্মিক বন্যায় দুই শতাধিক মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হওয়া অতিভারী বর্ষণে খাইবার পাখতুনখোয়ার বেশ কয়েকটি জেলায় রাস্তাঘাট, সেতু এবং ভবনের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার বিদ্যুৎ স্থাপনাসহ অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি এবং প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে বুনের, বাজাউর এবং বাটগ্রামে। খবর ডনের।
প্রাদেশিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, প্রদেশের সাতটি বাড়ি-ঘর ধ্বংস হয়ে গেছে এবং ৩৮টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যার বেশিরভাগই সোয়াত জেলায়। বেশ কিছু স্কুলেও ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে।
এদিকে বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিপর্যস্ত অঞ্চলে ত্রাণ সামগ্রী সরবরাহ করতে গিয়ে একটি হেলিকপ্টার ভেঙে পড়েছে। ওই ঘটনায় দুজন পাইলটসহ মোট পাঁচজন মারা গেছেন বলে খাইবার পাখতুনখোয়া বিপর্যয় মোকাবিলা এজেন্সি জানিয়েছে।
অন্যদিকে পাকিস্তান শাসিত কাশ্মীরে ভূমিধ্বসে আটজন নিহত হয়েছেন এবং নীলম ও ঝিলম উপত্যকায় প্রায় ৫০০ পর্যটক আটকা পড়েছেন বলে জানা যাচ্ছে।
উদ্ধার ও ত্রাণকার্যের পর্যালোচনা করতে প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের সভাপতিত্বে এটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠক হয়েছে।প্রধানমন্ত্রীর দফতর সূত্রে বিবিসি জানতে পেরেছে যে খাইবার পাখতুনখোয়াকে ‘বিপর্যস্ত এলাকা’ হিসেবে ঘোষিত হতে পারে।
সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বুনের জেলা। মেঘ-ভাঙা বৃষ্টির ফলে ভূমিধসে সেখানে চাপা পড়ে আছেন বহু মানুষ। শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত সেখানে ১৫৭টি মরদেহ উদ্ধার করা গেছে বলে স্থানীয় প্রশাসন নিশ্চিত করেছে। এর মধ্যে শুধু গাডেজি তহশিলেই মারা গেছেন ১২০ জন।
বুনেরের ডেপুটি কমিশনারের দফতর থেকে জানানো হয়েছে যে, মাত্র ৭৮টি মরদেহ হাসপাতালে আনা সম্ভব হয়েছে। চাঘারজাই তহশিলে একটি ভবন চাপা পড়ে একই পরিবারের ২২ জন সদস্য মারা গেছেন। উদ্ধার-কর্মকর্তারা জানাচ্ছেন হিগুকান্দ এবং পীর বাবা এলাকায় বন্যায় বহু নারী ও শিশু আটকা পড়েছে। আল মদিনা নামের একটি হোটেল সম্পূর্ণ ভেসে গেছে।
প্রশাসনের জারি করা এক বিজ্ঞপ্তি অনুসারে, ভারী বৃষ্টি ও বন্যায় নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা হিসেবে প্রদেশজুড়ে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হবে।
এদিকে বুনের জেলায় ৩০০ স্কুলছাত্রসহ ২ হাজার ৭১ জন আটকে পড়া মানুষকে উদ্ধার করেছে উদ্ধারকারী টিম।জেলা প্রশাসক কাশিফ কাইয়ুম জানিয়েছেন, দুর্যোগ কবলিত এলাকায় ত্রাণ তৎপরতা অব্যাহত থাকায় জেলাজুড়ে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। প্রত্যন্ত ও দুর্গম অঞ্চলে উদ্ধার অভিযান পরিচালনার জন্য হেলিকপ্টার ব্যবহার করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
ডিএস./