০১:৫৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪

৮২ বছরের রেকর্ড ভেঙে কোয়ার্টার ফাইনালে ইতালি

শুরু থেকে দাপট দেখালেও মাঝখানে এবং একদম অন্তিম মুহূর্তে ইতালির সমর্থকদের ভয় পাইয়ে দিয়েছিল অস্ট্রিয়া। তবে শেষ পর্যন্ত অবশ্য কোনো অঘটন ঘটেনি। অতিরিক্ত সময়ের দুই গোলে অস্ট্রিয়ার হার নিশ্চিত করার পাশাপাশি ৮২ বছর পুরনো একটি রেকর্ড ভেঙে ইউরো কাপের শেষ আটেও উঠেছে ইতালি।

লন্ডনের ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে গতকাল শনিবার (২৬ জুন) রাতে শেষ ষোলোয় ২-১ গোলে জিতে কোয়ার্টার-ফাইনালে উঠেছে ইতালি। নির্ধারিত সময়ে গোল করতে পারেনি কোনো দল। খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। ইতিহাস ছিল ইতালির বিপক্ষে। এর আগে কখনো অতিরিক্ত সময়ে গোল করার ইতিহাস নেই দলটির। ইতালি রক্ষা পেয়েছে বদলি হিসেবে নামা দুই খেলোয়াড়ের সুবাদে। ৯৫ ও ১০৫ মিনিটে ফেদেরিকো কিয়েসা ও মাত্তেও পেসিনার গোল দুশ্চিন্তামুক্ত করেছে মানচিনিকে।

দারুণ এই জয়ে ৮২ বছরের পুরনো একটি রেকর্ড ভেঙেছে ইতালি। নিজেদের ইতিহাসে টানা অপরাজিত থাকার রেকর্ড। এই নিয়ে টানা ৩১ ম্যাচ অপরাজিত রইল দলটি। তারা সবশেষ হেরেছিল ২০১৮ সালে, পর্তুগালের বিপক্ষে নেশন্স লিগে। ১৯৩৫ থেকে ১৯৩৯ পর্যন্ত সময়ে ৩০ ম্যাচে অপরাজিত থেকে আগের রেকর্ডটি গড়েছিল তারা।
টানা ৩০ ম্যাচে অপরাজিত থাকার রেকর্ড সঙ্গী করে নামা ইতালি শুরুতে বেশকিছু সুযোগ কাজে লাগাতে ব্যর্থ হয়। ১৮তম মিনিটে প্রথম সুযোগ পায় অস্ট্রিয়া। কিন্তু আর্নাউতোভিচের শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। এরপর ৩২তম মিনিটে ইমমোবিলের শট পোস্টে প্রতিহত হয়। গোলের সুযোগ হাতছাড়া হয় ইতালির। এরপর বিরতির আগে স্পিনাজ্জোলার শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হওয়ার পর লরেঞ্জোর হেডার মাঠের বাইরে চলে যায়। ফলে দাপট দেখালেও প্রথমার্ধে গোলমুখ খুলতে পারেনি ইতালি।

দ্বিতীয়ার্ধে জমাট রক্ষণ কিছুটা উন্মুক্ত করে আক্রমণে ওঠে অস্ট্রিয়া। ৪৯তম মিনিটে অস্ট্রিয়ার আর্নাউতোভিচের শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। ৫২তম মিনিটে অস্ট্রিয়ার আলাবার শট মাঠের মাইরে। ৪ মিনিট পর একই পরিনতি হয় ইতালির বনুচ্চিরও। ৬৫তম মিনিটে সর্বশেষ ১১ ম্যাচে গোল হজম না করা ইতালিকে চমকে দেন অস্ট্রিয়ার আর্নাউতোভিচ। আলাবার পাস থেকে ইতালির জালে বল জড়িয়ে দন আর্নাউতোভিচ। যদিও রেফারি ভিএআরের সাহায্য নিয়ে গোল বাতিল করেন। অফসাইডের আওতায় পড়েছিলেন অস্ট্রিয়ার তারকা।

গোল বাতিলের পর যেন ইতালি দল হাঁফ ছেড়ে বাঁচে। এরপর কিছুক্ষণ ম্যাচের নিয়ন্ত্রণও নিয়ে নেয় দলটি। ৭২ মিনিটে গোলের সুযোগ পেয়েছিলেন পরিবর্ত হিসেবে মাঠে নামা লোকাতেল্লি। যদিও তিনি মাঠের বাইরে বল মেরে বসেন। ৭৩ মিনিটে ইনসাইনের শট মাঠের বাইরে চলে যায়। এরপর ৮৩ মিনিটে ইতালির বেরারদির শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। শেষ পর্যন্ত প্রথমার্ধের মতো দ্বিতীয়ার্ধের খেলাও থাকে গোলশূন্য।

অতিরিক্ত সময়ের খেলা শুরু হতেই গোলের জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে ইতালি। অবশেষে বদলি খেলোয়াড় ফেদেরিকো চিয়েসা ইতালিয়ানদের দমবন্ধ অবস্থা থেকে মুক্ত করে। স্পিনাজ্জোলার পাস থেকে বল মাথা দিয়ে নামিয়ে প্রথমে দারুণ দক্ষতায় অস্ট্রিয়ান ডিফেন্ডার লাইমেরের পথ থেকে সরিয়ে নিয়ে বাঁ-পায়ের অসাধারণ শটে দূরের পোস্টে পাঠিয়ে দেন চিয়েসা।

অস্ট্রিয়া গোল হজমের পর যেন অনেকটা দমে যায়। আক্রমণগুলো হতে থাকে ছন্নছাড়া। ৯৯তম মিনিটে লাইনারের শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। ১০৪ মিনিটে ইনসাইনের শট প্রতিহত করেন অস্ট্রিয়া গোলরক্ষক। তবে অতিরিক্ত সময়ের প্রথমার্ধের বিরতির ঠিক আগে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন মাত্তেও পেসিনা। খেলার একদম শেষদিকে সাসার গোলে ব্যবধান কমিয়ে আনে অস্ট্রিয়া। কিন্তু ততক্ষণে সময় ঘনিয়ে এসেছে। ফলে জয় ছিনিয়ে নেয় ইতালি।

বিজনেস বাংলাদেশ/ এস শিকদার

জনপ্রিয়

ঢাকা কলেজের পুকুরে গোসল করতে নেমে মাদ্রাসা ছাত্রের মৃত্যু

৮২ বছরের রেকর্ড ভেঙে কোয়ার্টার ফাইনালে ইতালি

প্রকাশিত : ১২:৫৯:২০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ জুন ২০২১

শুরু থেকে দাপট দেখালেও মাঝখানে এবং একদম অন্তিম মুহূর্তে ইতালির সমর্থকদের ভয় পাইয়ে দিয়েছিল অস্ট্রিয়া। তবে শেষ পর্যন্ত অবশ্য কোনো অঘটন ঘটেনি। অতিরিক্ত সময়ের দুই গোলে অস্ট্রিয়ার হার নিশ্চিত করার পাশাপাশি ৮২ বছর পুরনো একটি রেকর্ড ভেঙে ইউরো কাপের শেষ আটেও উঠেছে ইতালি।

লন্ডনের ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে গতকাল শনিবার (২৬ জুন) রাতে শেষ ষোলোয় ২-১ গোলে জিতে কোয়ার্টার-ফাইনালে উঠেছে ইতালি। নির্ধারিত সময়ে গোল করতে পারেনি কোনো দল। খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। ইতিহাস ছিল ইতালির বিপক্ষে। এর আগে কখনো অতিরিক্ত সময়ে গোল করার ইতিহাস নেই দলটির। ইতালি রক্ষা পেয়েছে বদলি হিসেবে নামা দুই খেলোয়াড়ের সুবাদে। ৯৫ ও ১০৫ মিনিটে ফেদেরিকো কিয়েসা ও মাত্তেও পেসিনার গোল দুশ্চিন্তামুক্ত করেছে মানচিনিকে।

দারুণ এই জয়ে ৮২ বছরের পুরনো একটি রেকর্ড ভেঙেছে ইতালি। নিজেদের ইতিহাসে টানা অপরাজিত থাকার রেকর্ড। এই নিয়ে টানা ৩১ ম্যাচ অপরাজিত রইল দলটি। তারা সবশেষ হেরেছিল ২০১৮ সালে, পর্তুগালের বিপক্ষে নেশন্স লিগে। ১৯৩৫ থেকে ১৯৩৯ পর্যন্ত সময়ে ৩০ ম্যাচে অপরাজিত থেকে আগের রেকর্ডটি গড়েছিল তারা।
টানা ৩০ ম্যাচে অপরাজিত থাকার রেকর্ড সঙ্গী করে নামা ইতালি শুরুতে বেশকিছু সুযোগ কাজে লাগাতে ব্যর্থ হয়। ১৮তম মিনিটে প্রথম সুযোগ পায় অস্ট্রিয়া। কিন্তু আর্নাউতোভিচের শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। এরপর ৩২তম মিনিটে ইমমোবিলের শট পোস্টে প্রতিহত হয়। গোলের সুযোগ হাতছাড়া হয় ইতালির। এরপর বিরতির আগে স্পিনাজ্জোলার শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হওয়ার পর লরেঞ্জোর হেডার মাঠের বাইরে চলে যায়। ফলে দাপট দেখালেও প্রথমার্ধে গোলমুখ খুলতে পারেনি ইতালি।

দ্বিতীয়ার্ধে জমাট রক্ষণ কিছুটা উন্মুক্ত করে আক্রমণে ওঠে অস্ট্রিয়া। ৪৯তম মিনিটে অস্ট্রিয়ার আর্নাউতোভিচের শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। ৫২তম মিনিটে অস্ট্রিয়ার আলাবার শট মাঠের মাইরে। ৪ মিনিট পর একই পরিনতি হয় ইতালির বনুচ্চিরও। ৬৫তম মিনিটে সর্বশেষ ১১ ম্যাচে গোল হজম না করা ইতালিকে চমকে দেন অস্ট্রিয়ার আর্নাউতোভিচ। আলাবার পাস থেকে ইতালির জালে বল জড়িয়ে দন আর্নাউতোভিচ। যদিও রেফারি ভিএআরের সাহায্য নিয়ে গোল বাতিল করেন। অফসাইডের আওতায় পড়েছিলেন অস্ট্রিয়ার তারকা।

গোল বাতিলের পর যেন ইতালি দল হাঁফ ছেড়ে বাঁচে। এরপর কিছুক্ষণ ম্যাচের নিয়ন্ত্রণও নিয়ে নেয় দলটি। ৭২ মিনিটে গোলের সুযোগ পেয়েছিলেন পরিবর্ত হিসেবে মাঠে নামা লোকাতেল্লি। যদিও তিনি মাঠের বাইরে বল মেরে বসেন। ৭৩ মিনিটে ইনসাইনের শট মাঠের বাইরে চলে যায়। এরপর ৮৩ মিনিটে ইতালির বেরারদির শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। শেষ পর্যন্ত প্রথমার্ধের মতো দ্বিতীয়ার্ধের খেলাও থাকে গোলশূন্য।

অতিরিক্ত সময়ের খেলা শুরু হতেই গোলের জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে ইতালি। অবশেষে বদলি খেলোয়াড় ফেদেরিকো চিয়েসা ইতালিয়ানদের দমবন্ধ অবস্থা থেকে মুক্ত করে। স্পিনাজ্জোলার পাস থেকে বল মাথা দিয়ে নামিয়ে প্রথমে দারুণ দক্ষতায় অস্ট্রিয়ান ডিফেন্ডার লাইমেরের পথ থেকে সরিয়ে নিয়ে বাঁ-পায়ের অসাধারণ শটে দূরের পোস্টে পাঠিয়ে দেন চিয়েসা।

অস্ট্রিয়া গোল হজমের পর যেন অনেকটা দমে যায়। আক্রমণগুলো হতে থাকে ছন্নছাড়া। ৯৯তম মিনিটে লাইনারের শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। ১০৪ মিনিটে ইনসাইনের শট প্রতিহত করেন অস্ট্রিয়া গোলরক্ষক। তবে অতিরিক্ত সময়ের প্রথমার্ধের বিরতির ঠিক আগে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন মাত্তেও পেসিনা। খেলার একদম শেষদিকে সাসার গোলে ব্যবধান কমিয়ে আনে অস্ট্রিয়া। কিন্তু ততক্ষণে সময় ঘনিয়ে এসেছে। ফলে জয় ছিনিয়ে নেয় ইতালি।

বিজনেস বাংলাদেশ/ এস শিকদার