০৩:২৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪

রূপগঞ্জে ভোগান্তির আরেক নাম রাস্তা, প্রায় ছয় যুগেও সংস্কার হয়নি 

এইডাও কি রাস্তা। নাকি কোনো খানা খন্দক। এখান দিয়ে কি কোনো মানুষ যাতায়াত করতে পারে। দেশে কত উন্নয়ণ হচ্ছে। রাজনৈতিক পরিবর্তন হচ্ছে। নেতা আসছে , নেতা চলে যাচ্ছে। ভোটের সময় আমাদের কদর অনেক বেড়ে যায়। নেতারা জামাই আদর করে তখন। জোর করে চা পান খাওয়ায়, বুকে টেনে নেয়। মামা কাকা ভাই আরো কত কিছু বলে ডাকে। ভোট চলে গেলেই সব বেমালুম ভুলে যায়। বয়স তো আর কম হইল না।

৮০ বছর ধরে এ দুর্ভোগের রাস্তা দিয়েই চলছি। এখনও ভোগান্তির শেষ হল না। ভোটের সময় কত নেতা কইল রাস্তা করে দিমু। ভোট চলে গেলে আর কেউ কোনো খবর নেয় না।” এমনি করে মনের দুঃখে ক্ষোভে কথাগুলো বলছিলেন উপজেলার খামার পাড়া এলাকার ডা. আফতাব উদ্দিন আহমেদ। তার মতো আরো অনেকেই এ রাস্তার ভোগান্তি নিয়ে আমাদের প্রতিনিধিকে বলেন। ভাই একটা কিছু করেন। আল্লাহ আপনাদের ভাল করবে। ৮৫ বছরের বৃদ্ধ হাবিবুর রহমান বলেন, বাজান এ রাস্তা দিয়ে নামাজ পড়তে যেতে পারি না। বৃষ্টি হলেই হাঁটু পানি জমে থাকে।

কাঁদাপানি একাকার হয়ে থাকে। অনেকেই পড়ে গিয়ে আহতও হয়েছেন। কিন্তু তার পরও কারো নজর নাই এ রাস্তার দিকে। ভাল কইরা লিখেন বাজান যাতে এ অভিসপ্ত রাস্তাটার কিছু একটা হয়। উপজেলার কায়েতপাড়া ইউনিয়নের খামারপাড়া এলাকার এ রাস্তাটা দীর্ঘদিন ধরে বেহাল অবস্থা। মনে হয় এর কোনো অভিভাবক নেই। কোনো জনপ্রতিনিধির নজর পড়েনি এ রাস্তার উপর। চেয়ারম্যান মেম্বারদের কাছে ধন্যা দিয়েও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানান এলাকাবাসীরা।

হাজার হাজার লোক এ রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন যাতায়াত করেন। ২ টি মহিলা মাদ্রাসা, ১ টি মাদ্রাসা ও ২ টি স্কুলের অবস্থান রয়েছে এ এলাকায়। দুর দুরান্ত থেকে শিক্ষার্থীরাসহ অভিভাবকরা অনেক কষ্টে এ রাস্তা দিয়েই আসা যাওয়া করে। সম্প্রতি আখি আক্তার নামে একজন মাদ্রাসা শিক্ষার্থী পা পিছলে পড়ে গিয়ে কোমড় ভেঙ্গে যায়। আজও সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছে। আরো অনেকেই এ রাস্তায় চলাচল করতে গিয়ে আহত হয়েছেন। স্থানীয় মেম্বার মাছুম আহমেদ বলেন, বরাদ্ধ নেই, তাই কাজ করতে পারছি না। মাদ্রাসার মোহতামিম মাহমুদ মাওলানা বলেন, এ রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের আসা যাওয়ায় অনেক কষ্ট হচ্ছে। কেউ এ রাস্তা মেরামত করে দিলে এলাকাবাসীর অনেক উপকার হত।

খামারপাড়া এলাকার এ রাস্তার ব্যাপারে কথা বললে রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী জামাল উদ্দিন জানান, এ রাস্তাটার বেহাল দশার কথা আমার জানা ছিল না। খুঁজ নিয়ে খুব দূতই কাজ করার চেষ্টা করবো।
এটা তো ঢালাই থাকার কথা। তারপরও আমি দেখছি কি করা যায়।

রাস্তার ব্যাপারে কথা বলেন স্থানীয় রাজনৈতিক কর্মী আলী হোসেন। তিনি বলেন, কাজতো একবার হইছিল। ওই সময়েরর একজন জনপ্রতিনিধি (মেম্বার) নাম প্রকাশ করতে চান না রাস্তার উপর শুধু বালুর আস্তর দিয়ে ছিল। যা কয়েক দিন পরই বৃষ্টির পানিতে ধুয়েমুছে যায়। এখন বেহাল অবস্থায়ই আছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ নুশরাত জাহান বলেন, লোকাল এলাকার বিষয়ে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বা মেম্বারের দায়িত্ব সংস্কার করার। আমাদের কাছে কোন জনপ্রতিনিধি ও এলাকাবাসি আসেনি আসলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বিজনেস বাংলাদেশ/বিএইচ

ট্যাগ :
জনপ্রিয়

রূপগঞ্জে ভোগান্তির আরেক নাম রাস্তা, প্রায় ছয় যুগেও সংস্কার হয়নি 

প্রকাশিত : ০৩:২৮:৩৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২ অক্টোবর ২০২১

এইডাও কি রাস্তা। নাকি কোনো খানা খন্দক। এখান দিয়ে কি কোনো মানুষ যাতায়াত করতে পারে। দেশে কত উন্নয়ণ হচ্ছে। রাজনৈতিক পরিবর্তন হচ্ছে। নেতা আসছে , নেতা চলে যাচ্ছে। ভোটের সময় আমাদের কদর অনেক বেড়ে যায়। নেতারা জামাই আদর করে তখন। জোর করে চা পান খাওয়ায়, বুকে টেনে নেয়। মামা কাকা ভাই আরো কত কিছু বলে ডাকে। ভোট চলে গেলেই সব বেমালুম ভুলে যায়। বয়স তো আর কম হইল না।

৮০ বছর ধরে এ দুর্ভোগের রাস্তা দিয়েই চলছি। এখনও ভোগান্তির শেষ হল না। ভোটের সময় কত নেতা কইল রাস্তা করে দিমু। ভোট চলে গেলে আর কেউ কোনো খবর নেয় না।” এমনি করে মনের দুঃখে ক্ষোভে কথাগুলো বলছিলেন উপজেলার খামার পাড়া এলাকার ডা. আফতাব উদ্দিন আহমেদ। তার মতো আরো অনেকেই এ রাস্তার ভোগান্তি নিয়ে আমাদের প্রতিনিধিকে বলেন। ভাই একটা কিছু করেন। আল্লাহ আপনাদের ভাল করবে। ৮৫ বছরের বৃদ্ধ হাবিবুর রহমান বলেন, বাজান এ রাস্তা দিয়ে নামাজ পড়তে যেতে পারি না। বৃষ্টি হলেই হাঁটু পানি জমে থাকে।

কাঁদাপানি একাকার হয়ে থাকে। অনেকেই পড়ে গিয়ে আহতও হয়েছেন। কিন্তু তার পরও কারো নজর নাই এ রাস্তার দিকে। ভাল কইরা লিখেন বাজান যাতে এ অভিসপ্ত রাস্তাটার কিছু একটা হয়। উপজেলার কায়েতপাড়া ইউনিয়নের খামারপাড়া এলাকার এ রাস্তাটা দীর্ঘদিন ধরে বেহাল অবস্থা। মনে হয় এর কোনো অভিভাবক নেই। কোনো জনপ্রতিনিধির নজর পড়েনি এ রাস্তার উপর। চেয়ারম্যান মেম্বারদের কাছে ধন্যা দিয়েও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানান এলাকাবাসীরা।

হাজার হাজার লোক এ রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন যাতায়াত করেন। ২ টি মহিলা মাদ্রাসা, ১ টি মাদ্রাসা ও ২ টি স্কুলের অবস্থান রয়েছে এ এলাকায়। দুর দুরান্ত থেকে শিক্ষার্থীরাসহ অভিভাবকরা অনেক কষ্টে এ রাস্তা দিয়েই আসা যাওয়া করে। সম্প্রতি আখি আক্তার নামে একজন মাদ্রাসা শিক্ষার্থী পা পিছলে পড়ে গিয়ে কোমড় ভেঙ্গে যায়। আজও সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছে। আরো অনেকেই এ রাস্তায় চলাচল করতে গিয়ে আহত হয়েছেন। স্থানীয় মেম্বার মাছুম আহমেদ বলেন, বরাদ্ধ নেই, তাই কাজ করতে পারছি না। মাদ্রাসার মোহতামিম মাহমুদ মাওলানা বলেন, এ রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের আসা যাওয়ায় অনেক কষ্ট হচ্ছে। কেউ এ রাস্তা মেরামত করে দিলে এলাকাবাসীর অনেক উপকার হত।

খামারপাড়া এলাকার এ রাস্তার ব্যাপারে কথা বললে রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী জামাল উদ্দিন জানান, এ রাস্তাটার বেহাল দশার কথা আমার জানা ছিল না। খুঁজ নিয়ে খুব দূতই কাজ করার চেষ্টা করবো।
এটা তো ঢালাই থাকার কথা। তারপরও আমি দেখছি কি করা যায়।

রাস্তার ব্যাপারে কথা বলেন স্থানীয় রাজনৈতিক কর্মী আলী হোসেন। তিনি বলেন, কাজতো একবার হইছিল। ওই সময়েরর একজন জনপ্রতিনিধি (মেম্বার) নাম প্রকাশ করতে চান না রাস্তার উপর শুধু বালুর আস্তর দিয়ে ছিল। যা কয়েক দিন পরই বৃষ্টির পানিতে ধুয়েমুছে যায়। এখন বেহাল অবস্থায়ই আছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ নুশরাত জাহান বলেন, লোকাল এলাকার বিষয়ে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বা মেম্বারের দায়িত্ব সংস্কার করার। আমাদের কাছে কোন জনপ্রতিনিধি ও এলাকাবাসি আসেনি আসলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বিজনেস বাংলাদেশ/বিএইচ