০৩:৫৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ মার্চ ২০২৫

২১ নভেম্বর ইমরান-এরিকোর তিন সন্তান বিষয়ে আদেশ

বাংলাদেশি পিতা ইমরান শরীফ ও জাপানি মা এরিকো নাকানোর তিন শিশুকন্যার জিম্মা নেওয়ার বিষয়ে শুনানি শেষ হয়েছে। রায়ের জন্য আগামী ১৪ নভেম্বর দিন নির্ধারণ করেছেন হাইকোর্ট।

বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ রবিবার (৩১ অক্টোবর) এই দিন ধার্য করেন।

আদালতে ইমরান শরীফের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ফিদা এম কামাল ও ফাওজিয়া করিম ফিরোজ। এরিকো নাকানোর পক্ষে ছিলেন আইনজীবী শিশির মনির।

গত চলতি মাসের শুরুর দিকে জাপানে থাকা নিজের ছোট মেয়েকে আদালতে হাজির করানোর নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত আমেরিকান নাগরিক ইমরান শরীফ। পরে গত ২১ অক্টোবর বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের বেঞ্চে শুনানি হয়। এর পর পরবর্তী শুনানির জন্য ১৪ নভেম্বর (আজ রবিবার) ধার্য করেন আদালত।

তার আগে, বড় ও মেজ মেয়েকে হাইকোর্টে হাজির করানোর নির্দেশনা চেয়ে রিট করেন জাপানি নাগরিক এরিকো নাকানো। পরে আদালতের নির্দেশে ঢাকার গুলশানের একটি ভাড়া বাসায় দিন-রাত পর্যায়ক্রমে সন্তানদের দেখাশোনা করছেন তাদের বাবা-মা।

শিশুদের নিয়ে বাবা-মায়ের মধ্যে সমঝোতা না হওয়ায় দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা দুই মেয়েকে নিয়ে গুলশানের ভাড়া করা বাসায় থাকার জন্য জাপানি মা নাকানো এরিকোকে অনুমতি দেন আদালত। এই সময়ে বাবা ইমরান শরীফ শুধু দিনের বেলা সন্তানদের সঙ্গে দেখা করতে ও অবস্থানের অনুমতি দেওয়া হয়।

গত ৩০ সেপ্টেম্বর বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।

গত ১৬ সেপ্টেম্বর এক শুনানিতে উভয়পক্ষ সমঝোতায় আসবে বলে আশা প্রকাশ করেছিলেন আদালত। কিন্তু তাঁদের মধ্যে সমাঝোতা না হওয়ায় ২৮ সেপ্টেম্বর আদালত আরো সময় দেন। পরে গত ২৯ সেপ্টেম্বর সমঝোতার জন্য দুপক্ষের আইনজীবীরা আবারও বৈঠক করেও কোনো সমাধানে পৌঁছাতে পারেননি।

এর আগে, গত ১৬ সেপ্টেম্বর জাপান থেকে আসা সেই দুই শিশুকে গুলশানের বাসায় ২৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে মা-বাবার সঙ্গে থাকার অনুমতি দেন আদালত। এই সময়ের মধ্যে উভয়পক্ষ সমঝোতায় আসবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন আদালত। আর এই সমঝোতা করতে দায়িত্ব দেওয়া হয় বাবার পক্ষের আইনজীবী রোকনউদ্দিন মাহমুদকে। আর রোকনউদ্দিন মাহমুদের সঙ্গে এ বিষয়ে বসেন মায়ের পক্ষের আইনজীবী শিশির মনির।

তবে নির্ধারিত সময়ে দুপক্ষ আলোচনা করে সমাধানে পৌঁছাতে পারেনি। এদিকে, গত ২৯ সেপ্টেম্বর এই মামলা থেকে শিশুদের বাবার পক্ষের আইনজীবী রোকনউদ্দিন মাহমুদ নিজেকে প্রত্যাহার করে নেন।

এর আগে হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে গুলশানের একটি ভাড়া বাসায় থাকছে জাপান থেকে আসা ১০ ও ১১ বছর বয়সী দুই শিশু। গত ৩১ আগস্ট হাইকোর্টের একই বেঞ্চ কয়েক দফা নির্দেশনাসহ আদেশ দেন। এ আদেশের অংশবিশেষ সংশোধন চেয়ে কয়েকটি বিষয়ে নির্দেশনা চেয়ে শিশুদের মা গত ৬ সেপ্টেম্বর আবেদন করেন।

ওই আবেদনের শুনানি নিয়ে গত ৮ সেপ্টেম্বর একই বেঞ্চ কয়েক দফা নির্দেশনা দেন। এতে দুই মেয়ের সঙ্গে চার রাত থাকা ও তাদের নিয়ে বাসার বাইরে বেড়াতে যাওয়ার সুযোগ পান মা ও বাবা।

জাপান থেকে কন্যা শিশু দুটিকে নিয়ে গত ২১ ফেব্রুয়ারি দুবাই হয়ে বাংলাদেশে আসেন পিতা ইমরান শরীফ। দেশে ফিরে সন্তান দুটিকে ঢাকায় কানাডিয়ান ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে ভর্তি করিয়ে দেন। এ অবস্থায় গত ১৮ জুলাই এরিকো শ্রীলংকা হয়ে বাংলাদেশে আসেন। এরপর বাংলাদেশের হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন মা এরিকো।

আবেদনে হাইকোর্টের আদেশের পর গত ২২ আগস্ট রাতে শিশু দুটিকে পিতার বাসা থেকে উদ্ধার করে তেজগাঁও ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে রাখে সিআইডি পুলিশ। এ অবস্থায় গত ৩১ আগস্ট একই হাইকোর্ট বেঞ্চ সেই দুই কন্যা শিশুকে ১৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জাপানি মা ও বাংলাদেশি পিতার সঙ্গেই গুলশান এক নম্বরে চার কক্ষের একটি ভাড়া বাসায় থাকার নির্দেশনা দেন। এরপর শিশু দুটিকে তেজগাঁও ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টার থেকে ওই বাসায় স্থানান্তর করা হয়।

বিজনেস বাংলাদেশ/ এস শিকদার

জনপ্রিয়

জুমাতুল বিদা আজ

২১ নভেম্বর ইমরান-এরিকোর তিন সন্তান বিষয়ে আদেশ

প্রকাশিত : ০১:১২:৪৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২১

বাংলাদেশি পিতা ইমরান শরীফ ও জাপানি মা এরিকো নাকানোর তিন শিশুকন্যার জিম্মা নেওয়ার বিষয়ে শুনানি শেষ হয়েছে। রায়ের জন্য আগামী ১৪ নভেম্বর দিন নির্ধারণ করেছেন হাইকোর্ট।

বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ রবিবার (৩১ অক্টোবর) এই দিন ধার্য করেন।

আদালতে ইমরান শরীফের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ফিদা এম কামাল ও ফাওজিয়া করিম ফিরোজ। এরিকো নাকানোর পক্ষে ছিলেন আইনজীবী শিশির মনির।

গত চলতি মাসের শুরুর দিকে জাপানে থাকা নিজের ছোট মেয়েকে আদালতে হাজির করানোর নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত আমেরিকান নাগরিক ইমরান শরীফ। পরে গত ২১ অক্টোবর বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের বেঞ্চে শুনানি হয়। এর পর পরবর্তী শুনানির জন্য ১৪ নভেম্বর (আজ রবিবার) ধার্য করেন আদালত।

তার আগে, বড় ও মেজ মেয়েকে হাইকোর্টে হাজির করানোর নির্দেশনা চেয়ে রিট করেন জাপানি নাগরিক এরিকো নাকানো। পরে আদালতের নির্দেশে ঢাকার গুলশানের একটি ভাড়া বাসায় দিন-রাত পর্যায়ক্রমে সন্তানদের দেখাশোনা করছেন তাদের বাবা-মা।

শিশুদের নিয়ে বাবা-মায়ের মধ্যে সমঝোতা না হওয়ায় দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা দুই মেয়েকে নিয়ে গুলশানের ভাড়া করা বাসায় থাকার জন্য জাপানি মা নাকানো এরিকোকে অনুমতি দেন আদালত। এই সময়ে বাবা ইমরান শরীফ শুধু দিনের বেলা সন্তানদের সঙ্গে দেখা করতে ও অবস্থানের অনুমতি দেওয়া হয়।

গত ৩০ সেপ্টেম্বর বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।

গত ১৬ সেপ্টেম্বর এক শুনানিতে উভয়পক্ষ সমঝোতায় আসবে বলে আশা প্রকাশ করেছিলেন আদালত। কিন্তু তাঁদের মধ্যে সমাঝোতা না হওয়ায় ২৮ সেপ্টেম্বর আদালত আরো সময় দেন। পরে গত ২৯ সেপ্টেম্বর সমঝোতার জন্য দুপক্ষের আইনজীবীরা আবারও বৈঠক করেও কোনো সমাধানে পৌঁছাতে পারেননি।

এর আগে, গত ১৬ সেপ্টেম্বর জাপান থেকে আসা সেই দুই শিশুকে গুলশানের বাসায় ২৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে মা-বাবার সঙ্গে থাকার অনুমতি দেন আদালত। এই সময়ের মধ্যে উভয়পক্ষ সমঝোতায় আসবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন আদালত। আর এই সমঝোতা করতে দায়িত্ব দেওয়া হয় বাবার পক্ষের আইনজীবী রোকনউদ্দিন মাহমুদকে। আর রোকনউদ্দিন মাহমুদের সঙ্গে এ বিষয়ে বসেন মায়ের পক্ষের আইনজীবী শিশির মনির।

তবে নির্ধারিত সময়ে দুপক্ষ আলোচনা করে সমাধানে পৌঁছাতে পারেনি। এদিকে, গত ২৯ সেপ্টেম্বর এই মামলা থেকে শিশুদের বাবার পক্ষের আইনজীবী রোকনউদ্দিন মাহমুদ নিজেকে প্রত্যাহার করে নেন।

এর আগে হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে গুলশানের একটি ভাড়া বাসায় থাকছে জাপান থেকে আসা ১০ ও ১১ বছর বয়সী দুই শিশু। গত ৩১ আগস্ট হাইকোর্টের একই বেঞ্চ কয়েক দফা নির্দেশনাসহ আদেশ দেন। এ আদেশের অংশবিশেষ সংশোধন চেয়ে কয়েকটি বিষয়ে নির্দেশনা চেয়ে শিশুদের মা গত ৬ সেপ্টেম্বর আবেদন করেন।

ওই আবেদনের শুনানি নিয়ে গত ৮ সেপ্টেম্বর একই বেঞ্চ কয়েক দফা নির্দেশনা দেন। এতে দুই মেয়ের সঙ্গে চার রাত থাকা ও তাদের নিয়ে বাসার বাইরে বেড়াতে যাওয়ার সুযোগ পান মা ও বাবা।

জাপান থেকে কন্যা শিশু দুটিকে নিয়ে গত ২১ ফেব্রুয়ারি দুবাই হয়ে বাংলাদেশে আসেন পিতা ইমরান শরীফ। দেশে ফিরে সন্তান দুটিকে ঢাকায় কানাডিয়ান ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে ভর্তি করিয়ে দেন। এ অবস্থায় গত ১৮ জুলাই এরিকো শ্রীলংকা হয়ে বাংলাদেশে আসেন। এরপর বাংলাদেশের হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন মা এরিকো।

আবেদনে হাইকোর্টের আদেশের পর গত ২২ আগস্ট রাতে শিশু দুটিকে পিতার বাসা থেকে উদ্ধার করে তেজগাঁও ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে রাখে সিআইডি পুলিশ। এ অবস্থায় গত ৩১ আগস্ট একই হাইকোর্ট বেঞ্চ সেই দুই কন্যা শিশুকে ১৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জাপানি মা ও বাংলাদেশি পিতার সঙ্গেই গুলশান এক নম্বরে চার কক্ষের একটি ভাড়া বাসায় থাকার নির্দেশনা দেন। এরপর শিশু দুটিকে তেজগাঁও ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টার থেকে ওই বাসায় স্থানান্তর করা হয়।

বিজনেস বাংলাদেশ/ এস শিকদার