০২:১৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪

স্বাস্থ্যবিধি মেনে সংসদের শীতকালীন অধিবেশন শুরু

একাদশ জাতীয় সংসদের ১৬তম (শীতকালীন) অধিবেশন এবং চলতি বছরের প্রথম অধিবেশন শুরু হয়েছে। রবিবার বিকেলে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে শুরু হওয়া অধিবেশন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ-এর ভাষণ শেষে মূলতবি করা হয়েছে। এই অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর সাধারণ আলোচনা ছাড়াও অধিবেশনে বেশ কয়েকটি বিল পাসের সম্ভাবনা রয়েছে।

রাষ্ট্রপতির ভাষণ ও করোনাভাইরাস সংক্রমণ বাড়তে থাকায় সংসদ অধিবেশনে স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে অনুসরণ ও নিরাপত্তা ব্যবস্থায় কড়াকড়ি আরোপ করা হয়। করোনা নেগেটিভ নিশ্চিত হয়েই সংসদ সদস্যসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সংসদ ভবনে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়।

অধিবেশনে সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপস্থিত থাকলেও তার পাশে সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর আসনটি খালি ছিলো। সংসদে অনুপস্থিত ছিলেন বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদ ও বিরোধী দলীয় উপনেতা জিএম কাদের। তবে করোনাকালের অন্যান্য দিনের থেকে অধিবেশনে উপস্থিতি ছিলো বেশি।

অধিবেশনের শুরুতে স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকারের অনুপস্থিতিতে সংসদ অধিবেশন পরিচালনার জন্য সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য নির্বাচন করা হয়। নির্বাচিতরা হলেন- উপাধ্যক্ষ মো. আবদুস শহীদ, এ বি তাজুল ইসলাম, মনজুর হোসেন, মো. মুজিবুল হক ও পারভীন শিকদার।

রাষ্ট্রপতির ভাষণের আগে সংসদ অধিবেশনে শোক প্রস্তাব উপস্থাপন ও তা গ্রহণ শেষে প্রয়াতদের বিদেহী আত্মার মাফফেরাত কামনা করে এক মিনিট নিরাবতা পালন ও মোনাজাত করা হয়। শোক প্রস্তাবে যাদের নাম রয়েছে, তারা হলেন সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আফসার উদ্দিন আহমদ খান, সাবেক গণপরিষদ সদস্য মহান মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক অধ্যাপক মো. হানিফ, সাবেক পূর্বপাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদ সদস্য ভাষাসৈনিক অ্যাডভোকেট গোলাম হাসনায়েন নান্নু, সাবেক সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল আবদিন হাজারী, চৌধুরী আকমল ইবনে ইউসুফ, মো. আহাদ মিয়া ও শাহাদত হোসেন চৌধুরী।

শোক প্রস্তাবে একুশে পদকপ্রাপ্ত জাতীয় অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম, প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক, বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যক্ষ আফজল খান, একাত্তরের স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শব্দসৈনিক বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদজায়া মুশতারী শফী, সংসদ সদস্য এস এম শাহজাদার মাতা ছকিনা খানম, দক্ষিণ আফ্রিকার আর্চবিশপ শান্তিতে নোবেলজয়ী ডেসমন্ড টুটু এবং ইউরোপীয় পার্লামেন্টের প্রেসিডেন্ট ডেভিড সাসোলি-এর মৃত্যুতে শোক ও দুঃখ প্রকাশ করা হয়। এছাড়া অভিযান-১০ লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডে হতাহত, মেক্সিকোতে সড়ক দুর্ঘটনা, ভারতের তামিলনাড়ুতে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনাসহ দেশ-বিদেশের বিভিন্ন স্থানে দুর্ঘটনায় হতাহতদের জন্য শোক প্রকাশ করা হয়।

শোক প্রস্তাব গ্রহণ শেষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ সংসদে ভাষণ দেন। এরআগে রাষ্ট্রপতি সংসদের উত্তর প্লাজা বা প্রেসিডেন্ট’স প্লাজা দিয়ে সংসদে প্রবেশ করেন। তারপর রাষ্ট্রপতির জন্য নির্ধারিত সংসদের বিশেষ লিফটে চড়ে সাত তলায় রাষ্ট্রপতির চেম্বারে যান। অধিবেশন শুরু পর রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ সংসদের অধিবেশন কক্ষে প্রবেশকালে বিউগলে ফ্যানফেয়ার বাজতে থাকে। এরপর নিয়ম অনুযায়ী জাতীয় সংগীত বাজানো হয়। স্পিকারের অনুরোধে ডায়াসে দাঁড়িয়ে ভাষণ দেন রাষ্ট্রপতি। এরপর অধিবেশন মূলতবি করা হয়। রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর সোমবার সংসদে ধন্যবাদ প্রস্তাব উত্থাপন এবং তা নিয়ে সরকার ও বিরোধী দলীয় সদস্যরা আলোচনা করবেন।

সংসদ সচিবালয়ের কর্মকর্তারা জানান, অন্যান্য বছর এই অধিবেশনটি দীর্ঘ হলেও করোনা পরিস্থিতির কারণে গত বছরের মতো এবারের অধিবেশন সংক্ষিপ্ত হবে। করোনা ঝুঁকির কারণে আগের ৯টি অধিবেশনের মতো তা স্বাস্থ্যবিধি মেনেই পরিচালনা হবে। প্রতি কার্যদিবসে ৭০-৮০ জন সংসদ সদস্যের উপস্থিতি নিশ্চিত করা হয়। করোনা ঝুঁকি এড়াতে মাঝখানে গ্যাপ দিয়ে দিয়ে আসন বিন্যাস করা হয়। সংসদে দর্শনার্থী প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে।

বিজনেস বাংলাদেশ/বিএইচ

ট্যাগ :
জনপ্রিয়

দাবিকৃত চাঁদার টাকা না দেওয়ায় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, নগদ অর্থ লুট, আহত ৩

স্বাস্থ্যবিধি মেনে সংসদের শীতকালীন অধিবেশন শুরু

প্রকাশিত : ০৬:০৭:২৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২২

একাদশ জাতীয় সংসদের ১৬তম (শীতকালীন) অধিবেশন এবং চলতি বছরের প্রথম অধিবেশন শুরু হয়েছে। রবিবার বিকেলে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে শুরু হওয়া অধিবেশন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ-এর ভাষণ শেষে মূলতবি করা হয়েছে। এই অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর সাধারণ আলোচনা ছাড়াও অধিবেশনে বেশ কয়েকটি বিল পাসের সম্ভাবনা রয়েছে।

রাষ্ট্রপতির ভাষণ ও করোনাভাইরাস সংক্রমণ বাড়তে থাকায় সংসদ অধিবেশনে স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে অনুসরণ ও নিরাপত্তা ব্যবস্থায় কড়াকড়ি আরোপ করা হয়। করোনা নেগেটিভ নিশ্চিত হয়েই সংসদ সদস্যসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সংসদ ভবনে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়।

অধিবেশনে সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপস্থিত থাকলেও তার পাশে সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর আসনটি খালি ছিলো। সংসদে অনুপস্থিত ছিলেন বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদ ও বিরোধী দলীয় উপনেতা জিএম কাদের। তবে করোনাকালের অন্যান্য দিনের থেকে অধিবেশনে উপস্থিতি ছিলো বেশি।

অধিবেশনের শুরুতে স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকারের অনুপস্থিতিতে সংসদ অধিবেশন পরিচালনার জন্য সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য নির্বাচন করা হয়। নির্বাচিতরা হলেন- উপাধ্যক্ষ মো. আবদুস শহীদ, এ বি তাজুল ইসলাম, মনজুর হোসেন, মো. মুজিবুল হক ও পারভীন শিকদার।

রাষ্ট্রপতির ভাষণের আগে সংসদ অধিবেশনে শোক প্রস্তাব উপস্থাপন ও তা গ্রহণ শেষে প্রয়াতদের বিদেহী আত্মার মাফফেরাত কামনা করে এক মিনিট নিরাবতা পালন ও মোনাজাত করা হয়। শোক প্রস্তাবে যাদের নাম রয়েছে, তারা হলেন সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আফসার উদ্দিন আহমদ খান, সাবেক গণপরিষদ সদস্য মহান মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক অধ্যাপক মো. হানিফ, সাবেক পূর্বপাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদ সদস্য ভাষাসৈনিক অ্যাডভোকেট গোলাম হাসনায়েন নান্নু, সাবেক সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল আবদিন হাজারী, চৌধুরী আকমল ইবনে ইউসুফ, মো. আহাদ মিয়া ও শাহাদত হোসেন চৌধুরী।

শোক প্রস্তাবে একুশে পদকপ্রাপ্ত জাতীয় অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম, প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক, বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যক্ষ আফজল খান, একাত্তরের স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শব্দসৈনিক বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদজায়া মুশতারী শফী, সংসদ সদস্য এস এম শাহজাদার মাতা ছকিনা খানম, দক্ষিণ আফ্রিকার আর্চবিশপ শান্তিতে নোবেলজয়ী ডেসমন্ড টুটু এবং ইউরোপীয় পার্লামেন্টের প্রেসিডেন্ট ডেভিড সাসোলি-এর মৃত্যুতে শোক ও দুঃখ প্রকাশ করা হয়। এছাড়া অভিযান-১০ লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডে হতাহত, মেক্সিকোতে সড়ক দুর্ঘটনা, ভারতের তামিলনাড়ুতে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনাসহ দেশ-বিদেশের বিভিন্ন স্থানে দুর্ঘটনায় হতাহতদের জন্য শোক প্রকাশ করা হয়।

শোক প্রস্তাব গ্রহণ শেষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ সংসদে ভাষণ দেন। এরআগে রাষ্ট্রপতি সংসদের উত্তর প্লাজা বা প্রেসিডেন্ট’স প্লাজা দিয়ে সংসদে প্রবেশ করেন। তারপর রাষ্ট্রপতির জন্য নির্ধারিত সংসদের বিশেষ লিফটে চড়ে সাত তলায় রাষ্ট্রপতির চেম্বারে যান। অধিবেশন শুরু পর রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ সংসদের অধিবেশন কক্ষে প্রবেশকালে বিউগলে ফ্যানফেয়ার বাজতে থাকে। এরপর নিয়ম অনুযায়ী জাতীয় সংগীত বাজানো হয়। স্পিকারের অনুরোধে ডায়াসে দাঁড়িয়ে ভাষণ দেন রাষ্ট্রপতি। এরপর অধিবেশন মূলতবি করা হয়। রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর সোমবার সংসদে ধন্যবাদ প্রস্তাব উত্থাপন এবং তা নিয়ে সরকার ও বিরোধী দলীয় সদস্যরা আলোচনা করবেন।

সংসদ সচিবালয়ের কর্মকর্তারা জানান, অন্যান্য বছর এই অধিবেশনটি দীর্ঘ হলেও করোনা পরিস্থিতির কারণে গত বছরের মতো এবারের অধিবেশন সংক্ষিপ্ত হবে। করোনা ঝুঁকির কারণে আগের ৯টি অধিবেশনের মতো তা স্বাস্থ্যবিধি মেনেই পরিচালনা হবে। প্রতি কার্যদিবসে ৭০-৮০ জন সংসদ সদস্যের উপস্থিতি নিশ্চিত করা হয়। করোনা ঝুঁকি এড়াতে মাঝখানে গ্যাপ দিয়ে দিয়ে আসন বিন্যাস করা হয়। সংসদে দর্শনার্থী প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে।

বিজনেস বাংলাদেশ/বিএইচ