০৭:৩৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫

আশুগঞ্জে আগুনে পুড়ে পিতা-পুত্রের মৃত্যু, দগ্ধ মা-ছেলে

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে আগুনের ঘটনায় ৬ বছরের ছেলে জুবায়ের এর পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেলেন তার বাবা মকবুল হোসেন (৪০)।

বুধবার বিকালে ঢাকা শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করছেন তিনি। সে উপজেলার শরীফপুর ইউনিয়নের সফর মিয়ার ছেলে। এঘটনায় অগ্নিদগ্ধ ৯ জনের মধ্যে পরিবারের অপর ২ সদস্য অগ্নিদগ্ধ মা ও ছেলের অবস্থাও আশংকাজনক। মঙ্গলবার রাত সোয়া ১০টার দিকে উপজেলা সদরের শরীয়তনগর এলাকায় আগুনের ঘটনা ঘটে। এসময় নিহত মকবুল হোসেনের ছেলে জুবায়ের (৬) অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যায়। এ ঘটনায় মকবুল হোসেন (৪০) ও তার স্ত্রী রেখা বেগম (৩২) এবং তাদের আরেক ছেলে জয় (১২), ভবনের বাসিন্দা জামিয়া রহমানসহ মোট ১০ জন দগ্ধ হয়েছেন। তাদেরকে মুমূর্ষু অবস্থায় ঢাকা শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন ছিলেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে,মঙ্গলবার রাতে শরীয়তনগর এলাকায় স্থানীয় মোহাম্মদ আলাই মিয়ার পাঁচতলা বিশিষ্ট বাড়ির নিচতলার ভাড়া থাকতেন মকবুল হোসেন ও তার পরিবার। রাত সোয়া ১০ টার দিকে মকবুলের বড় ছেলে জয় মশার কয়েল ধরানোর জন্য দিয়াশলাই দিয়ে আগুন জ্বালায়। এসময় হঠাৎ বিকট শব্দ হয়ে কিছু বুঝার আগেই মুহূর্তের মধ্যেই আগুন পুরো ভবনে ছড়িয়ে পড়ে। আশে পাশের সকল ভবন কেঁপে উঠে। ভবনে থাকা মানুষ ছোটাছুটি করে ভবন থেকে নেমে পড়ে। পুরো এলাকা ছড়িয়ে পড়ে আতংক। ধারণা করা হচ্ছে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হয়ে এই অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটতে পারে। বিল্ডিংয়ের সাথেই একটি খাবার হোটেল রয়েছে,যেখানে গ্যাস সিলিন্ডার দ্বারা হোটেলের রান্না করা হয়। আইয়ূব আলী ভর্তা বাড়ি নামে এই হোটেলের সিলিন্ডার বিস্ফোরনের ফলেও আগুনের সুত্রপাত হতে পারে বলেও অনেকে ধারনা করছেন।

মকবুল হোসেন তখন রাতের খাবার খেতে বসেছিল। অগ্নিকান্ডের ফলে বাসার বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার কারনে অন্ধকারে দরজা খুজে না পাওয়ায় তারা বের হতে পারেনি। ফলে তারা বাসার ভেতরে আটকে যায় ও অগ্নিদ্বদ্ধ হয়। খবর পেয়ে আশুগঞ্জ, সরাইল ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া ফায়ার সার্ভিসের ৪টি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রায় এক ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণ আনে।

নিহতের চাচা মোহাম্মদ মমিনুল ইসলাম জানান, অগ্নি দগ্ধ হওয়ার পর রাতেই মকবুল হোসেন ও তার পরিবারের আরও দুই সদস্যকে ঢাকা শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার বিকালে মকবুল হোসেন মৃত্যুবরণ করেন।

এ ব্যাপারে আশুগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার মো: মিজানুর রহমান জানান অগ্নিকান্ডের খবর পেয়ে তাৎক্ষনিক ঘটনাস্থলে গিয়ে এক ঘন্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রনে আনা হয়।পরে ভবনের ভিতর থেকে অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত শিশু জুবায়েরের লাশ উদ্বার করি। ধারনা করা হচ্ছে বিদ্যুতের শর্টসার্কিট হয়ে ভবনের টিভি কিংবা ফ্রিজের সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হয়ে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটতে পারে।এব্যাপারে আরো অধিকতর তদন্ত চলছে।

আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আজাদ রহমান বলেন, মকবুল হোসেনের মৃত্যুর বিষয়টি আমরা শুনেছি। অভিযোগ পেলে পরবর্তিতে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বিজনেস বাংলাদেশ/ এ আর

ট্যাগ :
জনপ্রিয়

স্বামীর কবরের পাশেই চিরনিদ্রায় শায়িত আপসহীন নেত্রী

আশুগঞ্জে আগুনে পুড়ে পিতা-পুত্রের মৃত্যু, দগ্ধ মা-ছেলে

প্রকাশিত : ০৯:৩৫:২০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২২

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে আগুনের ঘটনায় ৬ বছরের ছেলে জুবায়ের এর পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেলেন তার বাবা মকবুল হোসেন (৪০)।

বুধবার বিকালে ঢাকা শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করছেন তিনি। সে উপজেলার শরীফপুর ইউনিয়নের সফর মিয়ার ছেলে। এঘটনায় অগ্নিদগ্ধ ৯ জনের মধ্যে পরিবারের অপর ২ সদস্য অগ্নিদগ্ধ মা ও ছেলের অবস্থাও আশংকাজনক। মঙ্গলবার রাত সোয়া ১০টার দিকে উপজেলা সদরের শরীয়তনগর এলাকায় আগুনের ঘটনা ঘটে। এসময় নিহত মকবুল হোসেনের ছেলে জুবায়ের (৬) অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যায়। এ ঘটনায় মকবুল হোসেন (৪০) ও তার স্ত্রী রেখা বেগম (৩২) এবং তাদের আরেক ছেলে জয় (১২), ভবনের বাসিন্দা জামিয়া রহমানসহ মোট ১০ জন দগ্ধ হয়েছেন। তাদেরকে মুমূর্ষু অবস্থায় ঢাকা শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন ছিলেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে,মঙ্গলবার রাতে শরীয়তনগর এলাকায় স্থানীয় মোহাম্মদ আলাই মিয়ার পাঁচতলা বিশিষ্ট বাড়ির নিচতলার ভাড়া থাকতেন মকবুল হোসেন ও তার পরিবার। রাত সোয়া ১০ টার দিকে মকবুলের বড় ছেলে জয় মশার কয়েল ধরানোর জন্য দিয়াশলাই দিয়ে আগুন জ্বালায়। এসময় হঠাৎ বিকট শব্দ হয়ে কিছু বুঝার আগেই মুহূর্তের মধ্যেই আগুন পুরো ভবনে ছড়িয়ে পড়ে। আশে পাশের সকল ভবন কেঁপে উঠে। ভবনে থাকা মানুষ ছোটাছুটি করে ভবন থেকে নেমে পড়ে। পুরো এলাকা ছড়িয়ে পড়ে আতংক। ধারণা করা হচ্ছে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হয়ে এই অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটতে পারে। বিল্ডিংয়ের সাথেই একটি খাবার হোটেল রয়েছে,যেখানে গ্যাস সিলিন্ডার দ্বারা হোটেলের রান্না করা হয়। আইয়ূব আলী ভর্তা বাড়ি নামে এই হোটেলের সিলিন্ডার বিস্ফোরনের ফলেও আগুনের সুত্রপাত হতে পারে বলেও অনেকে ধারনা করছেন।

মকবুল হোসেন তখন রাতের খাবার খেতে বসেছিল। অগ্নিকান্ডের ফলে বাসার বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার কারনে অন্ধকারে দরজা খুজে না পাওয়ায় তারা বের হতে পারেনি। ফলে তারা বাসার ভেতরে আটকে যায় ও অগ্নিদ্বদ্ধ হয়। খবর পেয়ে আশুগঞ্জ, সরাইল ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া ফায়ার সার্ভিসের ৪টি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রায় এক ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণ আনে।

নিহতের চাচা মোহাম্মদ মমিনুল ইসলাম জানান, অগ্নি দগ্ধ হওয়ার পর রাতেই মকবুল হোসেন ও তার পরিবারের আরও দুই সদস্যকে ঢাকা শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার বিকালে মকবুল হোসেন মৃত্যুবরণ করেন।

এ ব্যাপারে আশুগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার মো: মিজানুর রহমান জানান অগ্নিকান্ডের খবর পেয়ে তাৎক্ষনিক ঘটনাস্থলে গিয়ে এক ঘন্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রনে আনা হয়।পরে ভবনের ভিতর থেকে অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত শিশু জুবায়েরের লাশ উদ্বার করি। ধারনা করা হচ্ছে বিদ্যুতের শর্টসার্কিট হয়ে ভবনের টিভি কিংবা ফ্রিজের সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হয়ে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটতে পারে।এব্যাপারে আরো অধিকতর তদন্ত চলছে।

আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আজাদ রহমান বলেন, মকবুল হোসেনের মৃত্যুর বিষয়টি আমরা শুনেছি। অভিযোগ পেলে পরবর্তিতে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বিজনেস বাংলাদেশ/ এ আর