নরসিংদীর বেলাব উপজেলার অধিকাংশ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়েই রয়েছে শিক্ষক বন্টনে অনিয়ম। আর এ নিয়মের মধ্যেই চলছে পাঠদান। উপজেলার ৮৪টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বেশিরভাগ বিদ্যালয়েই দেখা গেছে এ চিত্র। শিক্ষক বন্টনে এ অনিয়মের কারনে প্রভাব পড়ছে পাঠদানে।
জানা গেছে ৮৪টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে শিক্ষার্থী রয়েছে ১৭৭১২ জন। এর মধ্যে প্রধান শিক্ষক রয়েছে ৭১ জন,সহকারী শিক্ষক আছে ৪৭৪ জন। প্রধান শিক্ষকের পদ খালি আছে ১৩টি ও সহকারী শিক্ষকের পদ খালি আছে ২২ টি। এর মধ্যে বেশিরভাগ বিদ্যালয়ের শিক্ষক বন্টন নিয়ে রয়েছে অনিয়ম। শিক্ষক বন্টনে এসব অনিয়মের কারণে অনেক শিক্ষক ভয়ে মুখ না খুললেও তাদের মধ্যে ক্ষোভও আছে যথেষ্ট।
সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ঘুরে বিভিন্ন শিক্ষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে এসব কথা। ধুকুন্দি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে খাতা পত্রে শিক্ষার্থী ২০০ জন থাকলে ও বাস্তবে আছে ১৭৫ জন।তার বিপরীতে শিক্ষক রয়েছে ৮জন,নারায়নপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২৫৩ জন শিক্ষার্থীর জন্য শিক্ষক ০৯ জন শিক্ষক থাকলে ও পাটুলী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১৫৯ জন শিক্ষার্থীর জন্য রয়েছে ৯ জন শিক্ষক। এসব বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর তুলনায় শিক্ষক বেশি।
অন্যদিকে,উজিলাব এ এইচ আসলাম সানী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দেখা গেছে ১৫৮ জন শিক্ষার্থীর জন্য শিক্ষক আছে মাত্র ১ জন। এই ১ জন শিক্ষকই কয়েকমাস যাবত রয়েছেন মাতৃত্বকালীন ছুটিতে। ফলে শিক্ষক শূণ্য এই বিদ্যালয়ে অন্য স্কুল থেকে ডিপুটেশনে ৩ জন শিক্ষক এনে করানো হয় পাঠদান।এই তিন জনের মধ্যে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অফিসিয়াল কাজে প্রায়ই ব্যস্ত থাকতে হয়, ফলে দুই জন শিক্ষক দিয়ে চলে পাঠদান।বারৈচা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৩০২ জন শিক্ষার্থীর পাঠদানের জন্য রয়েছে ৬ জন শিক্ষক, চরউজিলাব হাজী আরব আলী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১০২ জন শিক্ষার্থীর জন্য কর্মরত রয়েছে দুই জন শিক্ষক। এসব বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর তুলনায় শিক্ষকের পরিমান কম থাকায় পাঠদানে সৃষ্টি হচ্ছে সমস্যা।
উজিলাব এ এইচ আসলাম সানী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোঃ কৌশিক আলম ওয়াসিম বলেন,শিক্ষক সংকট এবং সুষমবন্টনের কারনে মানসম্মত শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। কিছু বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর তুলনায় শিক্ষক বেশি আবার কিছু বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর তুলনায় শিক্ষক কম এরকম বৈষম্য আসলেই ঠিক না। তার মতে শিক্ষক বন্টনে সমন্বয়হীনতার অভাবে রয়েছে বলে আমি মনে করি ।
নাম প্রকাশে একাধিক শিক্ষক অভিযোগ করে বলেন, বেলাবতে শিক্ষক বন্টন ও শিক্ষক সংকট উভয়টাই চরম পর্যায়ে। যার প্রভাব পড়ছে পাঠদানে। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জুলেখা শারমিন জানান,অনেক শিক্ষক নিজের এলাকায় থাকার জন্য মন্ত্রী এমপি এমনকি স্থানীয় নেতাদের দিয়ে তদবির করে। একারনে দেখা যায় কোন কোন স্কুলে শিক্ষকের পরিমাণ বেশি।তবে আমরা ডিসেম্বর মাসে বসে সমন্বয় করবো।
বিজনেস বাংলাদেশ/ হাবিব