”উহুমনা উহুমনা এবং আল্লাহ বল, সামনে চল” শব্দে একসময় মূখরিত হতো গ্রামবাংলা। বেহারারা বর-কনে পালকিতে ধারণ করে এবং কনের বাড়ির প্রত্যেক ঘরের সামনে গিয়ে সন্মানী পাওয়ার জন্য বিভিন্ন ধরণের গান গাইতেন। মান না দিলে সারিগানের মাধ্যমে মিষ্টি সূরে অপমানও করতেন। যার ফলে ঘরের সামনে আসা মাত্রই দাদা-দাদি, চাচা-চাচি টাকা বা সন্মানী নিয়ে রেডি থাকতেন।
বরের বাড়িতে কনেকে নিয়ে আসার বিভিন্ন ধরণের আনুষ্ঠানিকতা নিয়ে মহিলাদের ভিড় পড়ে যেতো। সে সময় বিয়ের কথা উঠলেই পালকির কথা উঠতো আগে। অনেক সময় মেয়ের বাবা বায়না ধরতেন আমার মেয়েকে তুলতে হলে জোড়া পালকি লাগবে। বর্ষাও মৌসুমে পালকি নৌকার ব্যবহার হতো। বিভিন্ন কারুকাজে তৈরী করা হতো নৌকা। পালকি নৌকায়ই সানাই বাজানো হতো। সানাইয়ের সূর সবাইকে মাতিয়ে তুলতো। আধুনিক এবং যান্ত্রিক সভ্যতার এ যুগে ওই সুর এখন আর নেই। আমাদের মাঝ থেকে হারিয়ে গেছে ময়ূরপঙ্খি পালকি। আধুনিকতার ছোয়ায় পালকি ছেড়ে মানুষ এখন দ্রæতগামি দামি গাড়িতে নানা রকমের ফুল দিয়ে সানাই বাজিয়ে বর- কনের বাহন হিসাবে ব্যবহার হচ্ছে।
এ বিষয়ে শিক্ষাবিদ ছফের আলী বলেন, গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী পালকি আমাদের গ্রামীন সংস্কৃতির একটি অংশ। পালকি হয়তো আজ আমাদের দেশ থেকে বিলুপ্ত। আমাদের গ্রামীন সংস্কৃতির ইতিহাস থেকে হয়তো পালকি কোনদিন হারাবেনা। ইদানিং দেখা যাচ্ছে সিনেমা নাটকে পালকির ব্যবহার। নাটক সিনেমাতেও হয়তো একসময় হয়তো পালকি নিয়ে অভিনয় করা হবে না। তখন হয়তো পালকি নামক যানটি রাখা হবে জাদুঘরে। আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের কাছে যখন এই পালকি নিয়ে দাদা- দাদি, নানা- নানিরা গল্প করবে তখন ভবির্ষ্যৎ প্রজন্ম আমাদের সন্মানরা বলবে পালকি কী? এইটা দেখতে কেমন? পালকি দিয়ে কী হয়?
বিজনেস বাংলাদেশ/ হাবিব




















