০২:০৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫

সাতক্ষীরায় লবণপানির মৎস্য ঘেরে রসালো তরমুজ

সংগৃহীত ছবি

উপকূলীয় এলাকার লবণাক্ত জমিতে রসালো তরমুজ চাষ করে রীতিমতো তাক লাগিয়ে দিয়েছেন নারী কৃষি উদ্যোক্তা রূপা বেগম। অমৌসুমি গোল্ডেন ক্রাউন, বিগবাইট ও ব্ল্যাক জয়েন্ট জাতের সবুজ ও হলদে রঙের এসব তরমুজের যেমন চাহিদা, তেমনি দামও পাচ্ছেন ভালো।

সাতক্ষীরার উপকূলীয় আশাশুনি উপজেলার ফকরাবাদ গ্রামের রূপা বেগম বিজনেস বাংলাদেশকে বলেন, তার ছয় বিঘা জমির লবণপানির মৎস্য ঘেরের বেড়িতে অমৌসুমি তরমুজ চাষ করেন। বীজ, সার ও শ্রমিকের মজুরি বাবদ তার প্রায় ৩৫ হাজার টাকার মতো খরচ হয়েছে। সেখানে তিনি গেল এক মাসে বিক্রি করেছেন প্রায় লক্ষাধিক টাকার তরমুজ। পাইকারি হিসাবে প্রতিটি তরমুজ ৫৫-৬০ দরে বিক্রি করছেন। মাচানে এখনো যে পরিমাণ তরমুজ আছে তা আরো কমপক্ষে ৪০-৫০ হাজার টাকার বিক্রি হতে পারে। প্রথমবার হলেও আশা করা হচ্ছে উৎপাদন খরচ বাদে লাখ টাকার ওপরে লাভ হবে।

রূপা বেগম জানান, বেসরকারি একটি উন্নয়ন সংস্থা থেকে তরমুজ চাষের ওপর তিনি প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন। পরে সংস্থাটি থেকে কিছু জৈবসার ও তরমুজের বীজ নিয়ে চাষ শুরু করেন। আগামীতে আরো বেশি পরিমাণ জমিতে অমৌসুমি এসব তরমুজ চাষ করবেন বলে জানান এই কৃষি উদ্যোক্তা নারী।

এদিকে রূপার দেখাদেখি পাশের হেতাইলবুনিয়া গ্রামের প্রান্তিক কৃষক দিলীপ কুমার মণ্ডল, বিষ্ণুপদ মণ্ডল ও শঙ্কর কুমারও তরমুজ চাষ শুরু করেন। তাদের সঙ্গে কথা হলে জানান, একেকজন পরীক্ষামূলকভাবে দুই-তিন বিঘা জমিতে গ্রীষ্মকালীন বা অমৌসুমি তরমুজ চাষ করেছেন। ঘেরের আইলে বা ভেড়িতে মাচান পদ্ধতিতে চাষ করে তারাও বেশ সফল হয়েছেন। গাছে এরই মধ্যে প্রচুর তরমুজ ধরেছে। কিছু কিছু বিক্রির উপযোগীও হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে আগামী সপ্তাহের মধ্যেই সেগুলো বাজারে ওঠানো যাবে।

বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাতক্ষীরা কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা কৃষিবিদ অলি আহমেদ ফকির বিজনেস বাংলাদেশকে বলেন, অমৌসুমি তরমুজ খুবই লাভজনক একটি ফল। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের উদ্ভাবিত বারি-২ জাতের অমৌসুমি তরমুজ রয়েছে। সীমান্ত এলাকা হওয়ায় সাতক্ষীরার কৃষক ভারতীয় জাতের তরমুজ বীজই ব্যবহার করছেন।

বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা উন্নয়ন প্রচেষ্টার কৃষিবিষয়ক কর্মকর্তা মো. নয়ন হোসেন জানান, প্রসপারিটি প্রকল্পের অধীনে সাতক্ষীরার উপকূলীয় এলাকার ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক পর্যায়ের ২০ কৃষককে প্রশিক্ষণের পাশাপাশি তরমুজের বীজ ও জৈব সার দেয়া হয়। এরই মধ্যে অধিকাংশ কৃষকই অমৌসুমি এসব তরমুজ চাষ করে সফল হয়েছেন।

 

বিজনেস বাংলাদেশ/ হাবিব

জনপ্রিয়

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফেরাতে আপিল শুনানি চলছে

সাতক্ষীরায় লবণপানির মৎস্য ঘেরে রসালো তরমুজ

প্রকাশিত : ১১:৪৯:৪৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২২

উপকূলীয় এলাকার লবণাক্ত জমিতে রসালো তরমুজ চাষ করে রীতিমতো তাক লাগিয়ে দিয়েছেন নারী কৃষি উদ্যোক্তা রূপা বেগম। অমৌসুমি গোল্ডেন ক্রাউন, বিগবাইট ও ব্ল্যাক জয়েন্ট জাতের সবুজ ও হলদে রঙের এসব তরমুজের যেমন চাহিদা, তেমনি দামও পাচ্ছেন ভালো।

সাতক্ষীরার উপকূলীয় আশাশুনি উপজেলার ফকরাবাদ গ্রামের রূপা বেগম বিজনেস বাংলাদেশকে বলেন, তার ছয় বিঘা জমির লবণপানির মৎস্য ঘেরের বেড়িতে অমৌসুমি তরমুজ চাষ করেন। বীজ, সার ও শ্রমিকের মজুরি বাবদ তার প্রায় ৩৫ হাজার টাকার মতো খরচ হয়েছে। সেখানে তিনি গেল এক মাসে বিক্রি করেছেন প্রায় লক্ষাধিক টাকার তরমুজ। পাইকারি হিসাবে প্রতিটি তরমুজ ৫৫-৬০ দরে বিক্রি করছেন। মাচানে এখনো যে পরিমাণ তরমুজ আছে তা আরো কমপক্ষে ৪০-৫০ হাজার টাকার বিক্রি হতে পারে। প্রথমবার হলেও আশা করা হচ্ছে উৎপাদন খরচ বাদে লাখ টাকার ওপরে লাভ হবে।

রূপা বেগম জানান, বেসরকারি একটি উন্নয়ন সংস্থা থেকে তরমুজ চাষের ওপর তিনি প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন। পরে সংস্থাটি থেকে কিছু জৈবসার ও তরমুজের বীজ নিয়ে চাষ শুরু করেন। আগামীতে আরো বেশি পরিমাণ জমিতে অমৌসুমি এসব তরমুজ চাষ করবেন বলে জানান এই কৃষি উদ্যোক্তা নারী।

এদিকে রূপার দেখাদেখি পাশের হেতাইলবুনিয়া গ্রামের প্রান্তিক কৃষক দিলীপ কুমার মণ্ডল, বিষ্ণুপদ মণ্ডল ও শঙ্কর কুমারও তরমুজ চাষ শুরু করেন। তাদের সঙ্গে কথা হলে জানান, একেকজন পরীক্ষামূলকভাবে দুই-তিন বিঘা জমিতে গ্রীষ্মকালীন বা অমৌসুমি তরমুজ চাষ করেছেন। ঘেরের আইলে বা ভেড়িতে মাচান পদ্ধতিতে চাষ করে তারাও বেশ সফল হয়েছেন। গাছে এরই মধ্যে প্রচুর তরমুজ ধরেছে। কিছু কিছু বিক্রির উপযোগীও হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে আগামী সপ্তাহের মধ্যেই সেগুলো বাজারে ওঠানো যাবে।

বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাতক্ষীরা কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা কৃষিবিদ অলি আহমেদ ফকির বিজনেস বাংলাদেশকে বলেন, অমৌসুমি তরমুজ খুবই লাভজনক একটি ফল। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের উদ্ভাবিত বারি-২ জাতের অমৌসুমি তরমুজ রয়েছে। সীমান্ত এলাকা হওয়ায় সাতক্ষীরার কৃষক ভারতীয় জাতের তরমুজ বীজই ব্যবহার করছেন।

বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা উন্নয়ন প্রচেষ্টার কৃষিবিষয়ক কর্মকর্তা মো. নয়ন হোসেন জানান, প্রসপারিটি প্রকল্পের অধীনে সাতক্ষীরার উপকূলীয় এলাকার ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক পর্যায়ের ২০ কৃষককে প্রশিক্ষণের পাশাপাশি তরমুজের বীজ ও জৈব সার দেয়া হয়। এরই মধ্যে অধিকাংশ কৃষকই অমৌসুমি এসব তরমুজ চাষ করে সফল হয়েছেন।

 

বিজনেস বাংলাদেশ/ হাবিব