০৩:৫৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

চীন-বাংলাদেশ বাণিজ্য পৌঁছেছে ১৮.৮৩ বিলিয়ন ডলারে

চলতি বছরের আট মাসে চীন-বাংলাদেশ বাণিজ্য ১৮ দশমিক ৮৩ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। বাণিজ্যে প্রবৃদ্ধি এসেছে ২৩ দশমিক ৯ শতাংশ। গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবে ডিপ্লোম্যাটিক করেসপনডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ডিক্যাব) ডিক্যাব টক শীর্ষক আয়োজনে এ তথ্য জানান চীনা রাষ্ট্রদূত লি জিমিং।

তিনি বলেন, চীন সবসময় বাংলাদেশসহ প্রতিবেশী দেশগুলোকে নিয়ে যৌথ উন্নয়নে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম আট মাসে চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে পণ্য বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ১৮ দশমিক ৮৩ বিলিয়ন ডলার, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২৩ দশমিক ৯ শতাংশ বেশি। সেপ্টেম্বরে ৯৮ শতাংশ পণ্যে শূন্যশুল্ক কার্যকর হওয়ার পাশাপাশি চীনে বাংলাদেশের রফতানি বাড়ার প্রত্যাশা রয়েছে।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে লি জিমিং বলেন, চীন বাংলাদেশকে সহযোগিতা ও উন্নয়নের কৌশলগত অংশীদার হিসেবে দেখে। এ বছর আমাদের বাণিজ্য উদ্বৃত্ত অনেক বেশি, যা চীনের অনুকূলে। অনেক চীনা কোম্পানি বাংলাদেশে আগ্রহী। বাংলাদেশ সম্পর্কে চীনের মনোভাব খুবই ইতিবাচক। তাই আমরা বাংলাদেশের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ দেখতে চাই। যেকোনো উল্লেখযোগ্য উন্নয়নের শর্ত হলো শান্তি ও স্থিতিশীলতা। আন্তর্জাতিক শান্তি ও অভ্যন্তরীণ স্থিতিশীলতা ছাড়া কোনো উন্নয়ন হয় না। চীন আশা করে অভ্যন্তরীণ ইস্যু সমাধান হওয়া উচিত শান্তিপূর্ণভাবে।

চীনে ব্যবসা বাড়াতে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের আগ্রহ কম বলেও মন্তব্য করেন লি। তিনি বলেন, আমাদের ওখানে ২০০ বর্গকিলোমিটারের বড় একটা ট্রেড সেন্টার আছে। সেখানে বাংলাদেশের প্যাভেলিয়ন আছে। সেখানে বাংলাদেশের পতাকা ওড়ে, সুন্দর আলোকসজ্জাও করা আছে। কিন্তু এ দেশের ব্যবসায়ীরা সে সুযোগ নেন না। কখনো কিছু মানুষের দেখা মিললেও পণ্য মেলে না।

চীনা বাজার ধরতে পণ্যে বৈচিত্র্যের প্রয়োজন উল্লেখ করে লি জিমিং বলেন, আমি বলব না বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়ালাইজড কান্ট্রি। সেটা হতে আরো অনেক দূর, তবে তা শুরু হয়েছে। চীনা বিনিয়োগ আসছে। বিশেষ অর্থনৈতিক জোন হচ্ছে। এখানে পণ্য উৎপাদন হয়ে চীনে গেলে বাণিজ্য ঘাটতি কমে আসবে।

চীনের ঋণকে ফাঁদ বলা হয়, এমন প্রসঙ্গ টেনে লি জিমিং বলেন, আপনি যদি মনোযোগী দৃষ্টি দেন দেখবেন দেশটির বেশি ঋণই পশ্চিমা ও বহুজাতিক ঋণদাতা সংস্থার। সম্ভবত বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও বিষয়টি একই রকম। শুধু বাংলাদেশে নয়, বিশ্বের কোথাও চীনা ঋণের কোনো ফাঁদ নেই। চীন থেকে বাংলাদেশ যে ঋণ নিয়েছে, সেটি মোট ঋণের খুবই ক্ষুদ্র একটি অংশ। শ্রীলংকার ঋণের ১০ শতাংশ চীনের। আর বাংলাদেশে এ হার ৬ শতাংশেরও কম।

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, রোহিঙ্গাদের দ্রুত তাদের মাতৃভূমি মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের জন্য প্রচেষ্টা চলছে। তবে রাখাইনে শান্তি ফেরা পর্যন্ত আমাদের অপেক্ষা করতে হবে। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে চীন নীরবে কাজ করছে। আমরা অবশ্যই নিরাপদ, স্বেচ্ছায় রোহিঙ্গাদের ফেরাতে চাই।

বাংলাদেশকে পরিবেশবান্ধব জ্বালানি খাতে সহযোগিতা করতে চীনের আগ্রহ আছে বলে জানিয়েছেন লি জিমিং। তিনি বলেন, কারখানা, পোস্ট অফিস, বাজার, হাসপাতাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পরিচ্ছন্ন জ্বালানির লক্ষ্যে সোলার প্যানেল স্থাপনে সহায়তা করবে চীন। কারণ বিশ্বের সবচেয়ে বেশি সোলার প্যানেল উৎপাদন করে চীন।

বিজনেস বাংলাদেশ/ হাবিব

চীন-বাংলাদেশ বাণিজ্য পৌঁছেছে ১৮.৮৩ বিলিয়ন ডলারে

প্রকাশিত : ১১:০৩:৪৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ অক্টোবর ২০২২

চলতি বছরের আট মাসে চীন-বাংলাদেশ বাণিজ্য ১৮ দশমিক ৮৩ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। বাণিজ্যে প্রবৃদ্ধি এসেছে ২৩ দশমিক ৯ শতাংশ। গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবে ডিপ্লোম্যাটিক করেসপনডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ডিক্যাব) ডিক্যাব টক শীর্ষক আয়োজনে এ তথ্য জানান চীনা রাষ্ট্রদূত লি জিমিং।

তিনি বলেন, চীন সবসময় বাংলাদেশসহ প্রতিবেশী দেশগুলোকে নিয়ে যৌথ উন্নয়নে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম আট মাসে চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে পণ্য বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ১৮ দশমিক ৮৩ বিলিয়ন ডলার, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২৩ দশমিক ৯ শতাংশ বেশি। সেপ্টেম্বরে ৯৮ শতাংশ পণ্যে শূন্যশুল্ক কার্যকর হওয়ার পাশাপাশি চীনে বাংলাদেশের রফতানি বাড়ার প্রত্যাশা রয়েছে।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে লি জিমিং বলেন, চীন বাংলাদেশকে সহযোগিতা ও উন্নয়নের কৌশলগত অংশীদার হিসেবে দেখে। এ বছর আমাদের বাণিজ্য উদ্বৃত্ত অনেক বেশি, যা চীনের অনুকূলে। অনেক চীনা কোম্পানি বাংলাদেশে আগ্রহী। বাংলাদেশ সম্পর্কে চীনের মনোভাব খুবই ইতিবাচক। তাই আমরা বাংলাদেশের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ দেখতে চাই। যেকোনো উল্লেখযোগ্য উন্নয়নের শর্ত হলো শান্তি ও স্থিতিশীলতা। আন্তর্জাতিক শান্তি ও অভ্যন্তরীণ স্থিতিশীলতা ছাড়া কোনো উন্নয়ন হয় না। চীন আশা করে অভ্যন্তরীণ ইস্যু সমাধান হওয়া উচিত শান্তিপূর্ণভাবে।

চীনে ব্যবসা বাড়াতে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের আগ্রহ কম বলেও মন্তব্য করেন লি। তিনি বলেন, আমাদের ওখানে ২০০ বর্গকিলোমিটারের বড় একটা ট্রেড সেন্টার আছে। সেখানে বাংলাদেশের প্যাভেলিয়ন আছে। সেখানে বাংলাদেশের পতাকা ওড়ে, সুন্দর আলোকসজ্জাও করা আছে। কিন্তু এ দেশের ব্যবসায়ীরা সে সুযোগ নেন না। কখনো কিছু মানুষের দেখা মিললেও পণ্য মেলে না।

চীনা বাজার ধরতে পণ্যে বৈচিত্র্যের প্রয়োজন উল্লেখ করে লি জিমিং বলেন, আমি বলব না বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়ালাইজড কান্ট্রি। সেটা হতে আরো অনেক দূর, তবে তা শুরু হয়েছে। চীনা বিনিয়োগ আসছে। বিশেষ অর্থনৈতিক জোন হচ্ছে। এখানে পণ্য উৎপাদন হয়ে চীনে গেলে বাণিজ্য ঘাটতি কমে আসবে।

চীনের ঋণকে ফাঁদ বলা হয়, এমন প্রসঙ্গ টেনে লি জিমিং বলেন, আপনি যদি মনোযোগী দৃষ্টি দেন দেখবেন দেশটির বেশি ঋণই পশ্চিমা ও বহুজাতিক ঋণদাতা সংস্থার। সম্ভবত বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও বিষয়টি একই রকম। শুধু বাংলাদেশে নয়, বিশ্বের কোথাও চীনা ঋণের কোনো ফাঁদ নেই। চীন থেকে বাংলাদেশ যে ঋণ নিয়েছে, সেটি মোট ঋণের খুবই ক্ষুদ্র একটি অংশ। শ্রীলংকার ঋণের ১০ শতাংশ চীনের। আর বাংলাদেশে এ হার ৬ শতাংশেরও কম।

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, রোহিঙ্গাদের দ্রুত তাদের মাতৃভূমি মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের জন্য প্রচেষ্টা চলছে। তবে রাখাইনে শান্তি ফেরা পর্যন্ত আমাদের অপেক্ষা করতে হবে। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে চীন নীরবে কাজ করছে। আমরা অবশ্যই নিরাপদ, স্বেচ্ছায় রোহিঙ্গাদের ফেরাতে চাই।

বাংলাদেশকে পরিবেশবান্ধব জ্বালানি খাতে সহযোগিতা করতে চীনের আগ্রহ আছে বলে জানিয়েছেন লি জিমিং। তিনি বলেন, কারখানা, পোস্ট অফিস, বাজার, হাসপাতাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পরিচ্ছন্ন জ্বালানির লক্ষ্যে সোলার প্যানেল স্থাপনে সহায়তা করবে চীন। কারণ বিশ্বের সবচেয়ে বেশি সোলার প্যানেল উৎপাদন করে চীন।

বিজনেস বাংলাদেশ/ হাবিব