বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি) একাডেমিক ও প্রশাসনিক ভবনগুলোর মাঝখানে স্থায়ী জলাবদ্ধতা, বিভিন্ন জায়গার অপরিচ্ছন্ন পুকুর ও খালগুলোর জলাবদ্ধতা এবং প্রচুর ঝোপঝাড়ের কারণে মশার উৎপাত বেড়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়ছে শিক্ষার্থীরা।
দেখা যায়, দিনের নানা ব্যস্ততার পরে; দিনশেষে, ক্যাম্পাসের এগারো চত্ত্বর, হতাশা চত্বর, প্রীতিলতা চত্বর, সুফিয়া কামাল চত্বর, মুক্তমঞ্ছ, শহীদ মিনার, টিএসসিসহ ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গায় শিক্ষার্থীরা অনেকেই বন্ধু-বান্ধব নিয়ে আড্ডা, গ্রুপস্টাডিসহ নানাভাবে সময় কাটায়। এসময় একটু অন্ধকার নামলেই বাড়ে মশার উৎপাত। যা চরম ভোগান্তিতে ফেলেছে ববি শিক্ষার্থীদের।
এ বিষয়ে শিক্ষার্থীরা জানান, সন্ধ্যা নামলে মশার উৎপাতে ক্যাম্পাসের কোথাও আমরা শান্তিতে বসতে পারিনা। মশার কারণে আমরা অতিষ্ঠ। আমাদের ভয় হয়, মশার জন্য কোন রোগে আক্রান্ত হই কিনা। এদিকে, প্রশাসনও মশা নিধনে কোন কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছেনা।
বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী বদরুজ্জামান বলেন, ক্যাম্পাসে মশার উপদ্রব এতটাই বৃদ্ধি পেয়েছে যে, সন্ধ্যার পর গ্রুপ স্টাডি, বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেওয়া মশার কামড়ে তা সম্ভব হয়না। এছাড়া, আবাসিক শিক্ষার্থীরা রাতে পড়তে বসলে মশার জন্য ভালোমতো পড়তে পারিনা।
আবাসিক হলগুলোর কয়েকজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা হয়। তারা জানান, হলের তৃতীয় তলা পর্যন্ত মশার উপদ্রব বেশি। যার কারণে তাদের পড়াশোনাসহ নানা কাজে সমস্যা হচ্ছে। তারা আরও জানান, হলগুলোর আশেপাশে প্রচুর ঝোপঝাড়, জঙ্গল ও অপরিচ্ছন্ন জলাবদ্ধ জায়গাগুলোর কারণে মশার উপদ্রব বৃদ্ধি পেয়েছে।
এছাড়াও দেখা যায়, সন্ধ্যার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির রিডিংরুম ও বারান্দায় পড়তে বসা শিক্ষার্থীরা মশার উপদ্রবে ঠিক মতো পড়াশোনা করতে পারছেনা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারের সিনিয়র মেডিকেল অফিসার ডাঃ মোঃ তানজীন হোসেন বলেন, ওয়েদার ইফেক্টের কারণে শীতের শুরুতে মশার উপদ্রব বেড়ে যায়। এ সময়টায় উচিত মশা নিধনের জন্য যে স্প্রে ও ওষুধ রয়েছে তা নিয়মিত প্রয়োগ করা এবং ক্যাম্পাস পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা।
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রহমতউল্লাহ খাঁন হাসিব বলেন, বর্তমানে বরিশালসহ সারাদেশে ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে যা শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভীতির সৃষ্টি করছে। এছাড়াও, মশার কামড়ে নানা রোগের ভাইরাস ছড়ায়। তাই, মশার কামড় থেকে শিক্ষার্থীদের সুরক্ষার জন্য মশার ওষুধ ছিটানো প্রয়োজন। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দায়িত্বশীলতার পরিচয় দেবে এটাই প্রত্যাশা।
এ বিষয়ে ডাঃ মোঃ তানজীন হোসেন বলেন, সাধারণত অপ্রবাহিত ডোবা বা ছোট পুকুর অপরিচ্ছন্ন থাকলে, সেগুলো থেকে মশার জন্ম হয়। এছাড়া, ভার্সিটিতে অনেকে ময়লা, ডাবের খোসা, পলিথিন ফেলে। এইসবে জমে থাকা পরিষ্কার পানিতে এডিস মশা জন্ম নেয়। আমি মনে করি, ক্যাম্পাসে এধরণের আবর্জনা পরিষ্কার করা এবং এক্ষেত্রে সচেতনতা ও প্রতিরোধটাই জরুরি।
মশা নিধনের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর ড. মো. খোরশেদ আলম বলেন, করোনার শেষে ক্যাম্পাস ওপেন হওয়ার পর আমরা সিটি কর্পোরেশনকে মশা নিধনের জন্য বলেছিলাম এবং তারা এসে কয়েকবার মশা নিধনের প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে। সেক্ষেত্রে প্রয়োজন হলে, আমরা আবার বলবো এবং আশেপাশের যে ঝোপঝাড় আছে তা পরিষ্কার করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিব।
বিজনেস বাংলাদেশ/ হাবিব


























