০৬:৫৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪

চট্টগ্রাম কক্সবাজার মহাসড়ক, পারস্পারিক সমঝোতায় চলছে তিন চাকার গাড়ি

হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা ও সরকারি বিধি-বিধানকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে চট্টগ্রাম- কক্সবাজার মহা সড়কে দাপিয়ে চলছে বিভিন্ন ধরণের তিন চাকার (থ্রি হুইলার) গাড়ি। জানা যায়, নামসর্বস্ব পত্রিকার কার্ডধারী কিছু কথিত সাংবাদিক, নেতা-পাতিনেতা, স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তি ও প্রশাসনের কিছু দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের পারস্পারিক সমঝোতার ভিত্তিতে টোকেন বাণিজ্যের মাধ্যমে এ মহাসড়কে চলছে তিন চাকার সিএনজি, মাহিন্দ্রা, নসিমন, করিমন ও ব্যাটারী চালিত রিকশার রাজত্ব। ফলে মহাসড়কটিতে যানজট-দুর্ঘটনা লেগেই আছে। প্রতিনিয়ত ক্ষয় হচ্ছে জীবন, সময় ও সম্পদ। গত কয়েক বছরে মহাসড়কটি মৃত্যুফাঁদে পরিণত হলেও সংশ্লিষ্টদেও কার্যকর নজরদারীসহ দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ তিন চাকার গাড়ি চলাচল বন্ধে পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছেনা। যদিও সংশ্লিষ্ট হাইওয়ে থানাদ্বয়ের দাবি, তাদের নিয়মিত অভিযান অব্যাহত আছে। অভিযানে অবৈধ গাড়ি আটক ও মামলা দেয়া হচ্ছে। এ মহাসড়কে দীর্ঘদিন ধরে গাড়ি চালানো অন্তত ১৭/১৮ জন চালকের সাথে কথা হয়। তারা জানান, এসব গাড়ি (থ্রি হুইলার) মহাসড়কের যত্রতত্র দাড়িঁয়ে যাত্রী উঠানামা করে। তুলনামুলক কম গতির কারণে যানজটের সৃষ্টি করে। ফলে দুর্ঘটনার ঝুঁকি বেড়ে যায়। তাছাড়া চালকের অজ্ঞতা আর অদক্ষতা তো আছেই। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে হরহামেশাই চলাচল করছে নিষিদ্ধ তিন চাকার যানবাহন। মাঝে মধ্যে মামলা খেলেও অতিরিক্ত আয়ের আশায় বার বার উঠেন মহাসড়কে। কখনো পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে কখনো সংশ্লিষ্টদের ম্যানেজ করে। রেজিস্ট্রেশনবিহীন এসব গাড়ি নিয়ে কেউ ভাবছেন বলে মনে হয়না। গত দুই মাসে এই মহাসড়কে সংঘটিত ছোট বড় অন্তত ২০টি দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে জানা যায়, এসব দুর্ঘটনায় অধিকাংশই সিএনজি বা ব্যাটারী চালিত রিকশাই দায়ী। চলতে গিয়ে মাঝপথে হঠাৎ থেমে যাত্রী উঠানামা করে কোন ধরণের সংকেত ছাড়াই। এসময় পিছনের ভারী যানবাহননিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দৃর্ঘটনার শিকার হয়। সড়ক নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করছেন এমন বিশেষজ্ঞগণ বলছেন, মহাসড়কে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সিএনজি, মাহেন্দ্রা, ব্যাটারী চালিত রিকশাসহ বিভিন্ন ধরণের তিন চাকার গাড়ি চলাচলের কারণে প্রতিদিনই ঘটছে দুর্ঘটনা। সড়ক দুর্ঘটনার কারণ ও প্রতিকার বিষয়ে বার বার সুপারিশ দেয়া হলেও সংশ্লিষ্ট পক্ষ রহস্যজনক উদাসীন। সড়ক দুর্ঘটনারোধে আইনের কার্যকর প্রয়োগ, প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত দক্ষ চালক, চলাচল উপযোগী ভালোমানের যানবাহন ও প্রশস্ত সড়ক আবশ্যক। সেই সাথে যাত্রীদেরও হতে হবে সচেতন। বিশেষজ্ঞদের অভিযোগ, স্থানীয় প্রশাসন ও হাইওয়ে পুলিশের নির্লিপ্ততার কারণে মহাসড়কে অবৈধ যানবাহন চলাচল বন্ধ করা যাচ্ছেনা। নিয়মিত মাসোহারা আদায় করা হয় এসব অবৈধ যানবাহন থেকে। ফলে সরকারের সদিচ্ছার বাস্তবায়ন সম্ভব হচ্ছেনা। সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ সূত্র জানায়, ২০১৫ সালের ১ আগস্ট থেকে দেশের ২২টি মহাসড়কে দুর্ঘটনা কমাতে তিন চাকার যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়। সরকারি সিদ্ধান্তের প্রথম দিকে পুলিশী তৎপরতায় মহাসড়ক গুলোতে দুর্ঘটনার মাত্রা কমেছিল।পরবর্তীতে কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার সুযোগে মহাসড়ক গুলো আবারও তিন চাকার যানবাহনের দখলে চলে যায়। ফলে আশংকাজনক হারে বেড়েছে সড়ক দুর্ঘটনা। বেড়েছে সড়কে মৃত্যুও মিছিল। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে সম্পদহানীর মাত্রাও। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোঃ মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন. গত ৬/৭ বছরে প্রায় তিন লাখ সিএনজি অটোরিকশা আমদানী করা হয়েছে। যার অর্ধেকও লাইসেন্স পায়নি। স্থানীয় ভাবে ২৫০/৩০০ টাকা মাসোহারা দিয়ে চলছে এসব যানবাহন। নছিমন, করিমন, ভটভটি, ইজিবাইক, ব্যাটারী চালিত রিকশা গুলোও চলছে একই প্রক্রিয়াতে। এব্যাপারে দোহাজারী হাইওয়ে থানার ওসি খান মোহাম্মদ এরফান বলেন, আমরা নিয়মিত অভিযান চালিয়ে তিন চাকার যানবাহন আটক করে মামলা দিচ্ছি। ফিডার রাস্তার কারণে তিন চাকার যানবাহনগুলো মহাসড়কে উঠে পড়ে। আর টোকেন বাণিজ্যের ব্যাপারে আমার জানা নেই।

ট্যাগ :

চট্টগ্রাম কক্সবাজার মহাসড়ক, পারস্পারিক সমঝোতায় চলছে তিন চাকার গাড়ি

প্রকাশিত : ০৭:৫৭:৪৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ নভেম্বর ২০২২

হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা ও সরকারি বিধি-বিধানকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে চট্টগ্রাম- কক্সবাজার মহা সড়কে দাপিয়ে চলছে বিভিন্ন ধরণের তিন চাকার (থ্রি হুইলার) গাড়ি। জানা যায়, নামসর্বস্ব পত্রিকার কার্ডধারী কিছু কথিত সাংবাদিক, নেতা-পাতিনেতা, স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তি ও প্রশাসনের কিছু দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের পারস্পারিক সমঝোতার ভিত্তিতে টোকেন বাণিজ্যের মাধ্যমে এ মহাসড়কে চলছে তিন চাকার সিএনজি, মাহিন্দ্রা, নসিমন, করিমন ও ব্যাটারী চালিত রিকশার রাজত্ব। ফলে মহাসড়কটিতে যানজট-দুর্ঘটনা লেগেই আছে। প্রতিনিয়ত ক্ষয় হচ্ছে জীবন, সময় ও সম্পদ। গত কয়েক বছরে মহাসড়কটি মৃত্যুফাঁদে পরিণত হলেও সংশ্লিষ্টদেও কার্যকর নজরদারীসহ দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ তিন চাকার গাড়ি চলাচল বন্ধে পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছেনা। যদিও সংশ্লিষ্ট হাইওয়ে থানাদ্বয়ের দাবি, তাদের নিয়মিত অভিযান অব্যাহত আছে। অভিযানে অবৈধ গাড়ি আটক ও মামলা দেয়া হচ্ছে। এ মহাসড়কে দীর্ঘদিন ধরে গাড়ি চালানো অন্তত ১৭/১৮ জন চালকের সাথে কথা হয়। তারা জানান, এসব গাড়ি (থ্রি হুইলার) মহাসড়কের যত্রতত্র দাড়িঁয়ে যাত্রী উঠানামা করে। তুলনামুলক কম গতির কারণে যানজটের সৃষ্টি করে। ফলে দুর্ঘটনার ঝুঁকি বেড়ে যায়। তাছাড়া চালকের অজ্ঞতা আর অদক্ষতা তো আছেই। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে হরহামেশাই চলাচল করছে নিষিদ্ধ তিন চাকার যানবাহন। মাঝে মধ্যে মামলা খেলেও অতিরিক্ত আয়ের আশায় বার বার উঠেন মহাসড়কে। কখনো পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে কখনো সংশ্লিষ্টদের ম্যানেজ করে। রেজিস্ট্রেশনবিহীন এসব গাড়ি নিয়ে কেউ ভাবছেন বলে মনে হয়না। গত দুই মাসে এই মহাসড়কে সংঘটিত ছোট বড় অন্তত ২০টি দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে জানা যায়, এসব দুর্ঘটনায় অধিকাংশই সিএনজি বা ব্যাটারী চালিত রিকশাই দায়ী। চলতে গিয়ে মাঝপথে হঠাৎ থেমে যাত্রী উঠানামা করে কোন ধরণের সংকেত ছাড়াই। এসময় পিছনের ভারী যানবাহননিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দৃর্ঘটনার শিকার হয়। সড়ক নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করছেন এমন বিশেষজ্ঞগণ বলছেন, মহাসড়কে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সিএনজি, মাহেন্দ্রা, ব্যাটারী চালিত রিকশাসহ বিভিন্ন ধরণের তিন চাকার গাড়ি চলাচলের কারণে প্রতিদিনই ঘটছে দুর্ঘটনা। সড়ক দুর্ঘটনার কারণ ও প্রতিকার বিষয়ে বার বার সুপারিশ দেয়া হলেও সংশ্লিষ্ট পক্ষ রহস্যজনক উদাসীন। সড়ক দুর্ঘটনারোধে আইনের কার্যকর প্রয়োগ, প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত দক্ষ চালক, চলাচল উপযোগী ভালোমানের যানবাহন ও প্রশস্ত সড়ক আবশ্যক। সেই সাথে যাত্রীদেরও হতে হবে সচেতন। বিশেষজ্ঞদের অভিযোগ, স্থানীয় প্রশাসন ও হাইওয়ে পুলিশের নির্লিপ্ততার কারণে মহাসড়কে অবৈধ যানবাহন চলাচল বন্ধ করা যাচ্ছেনা। নিয়মিত মাসোহারা আদায় করা হয় এসব অবৈধ যানবাহন থেকে। ফলে সরকারের সদিচ্ছার বাস্তবায়ন সম্ভব হচ্ছেনা। সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ সূত্র জানায়, ২০১৫ সালের ১ আগস্ট থেকে দেশের ২২টি মহাসড়কে দুর্ঘটনা কমাতে তিন চাকার যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়। সরকারি সিদ্ধান্তের প্রথম দিকে পুলিশী তৎপরতায় মহাসড়ক গুলোতে দুর্ঘটনার মাত্রা কমেছিল।পরবর্তীতে কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার সুযোগে মহাসড়ক গুলো আবারও তিন চাকার যানবাহনের দখলে চলে যায়। ফলে আশংকাজনক হারে বেড়েছে সড়ক দুর্ঘটনা। বেড়েছে সড়কে মৃত্যুও মিছিল। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে সম্পদহানীর মাত্রাও। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোঃ মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন. গত ৬/৭ বছরে প্রায় তিন লাখ সিএনজি অটোরিকশা আমদানী করা হয়েছে। যার অর্ধেকও লাইসেন্স পায়নি। স্থানীয় ভাবে ২৫০/৩০০ টাকা মাসোহারা দিয়ে চলছে এসব যানবাহন। নছিমন, করিমন, ভটভটি, ইজিবাইক, ব্যাটারী চালিত রিকশা গুলোও চলছে একই প্রক্রিয়াতে। এব্যাপারে দোহাজারী হাইওয়ে থানার ওসি খান মোহাম্মদ এরফান বলেন, আমরা নিয়মিত অভিযান চালিয়ে তিন চাকার যানবাহন আটক করে মামলা দিচ্ছি। ফিডার রাস্তার কারণে তিন চাকার যানবাহনগুলো মহাসড়কে উঠে পড়ে। আর টোকেন বাণিজ্যের ব্যাপারে আমার জানা নেই।