০৪:২০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪

৭ মে উৎক্ষেপণ হচ্ছে না বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট: মোস্তাফা জব্বার

বাংলাদেশের প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট আগামী ৭ মে উৎক্ষেপণের কথা থাকলেও সেটি ওই দিন উৎক্ষেপণ করা সম্ভব হচ্ছে না। নতুন তারিখ নির্ধারিত হলে সেটি জানিয়ে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।

মন্ত্রী বলেন, ‘আগামী শনিবার জানা যেতে পারে কবে নাগাদ তারা এটা উৎক্ষেপণ করা হবে। এটা ভীষণ টেকনিক্যাল বিষয়। এখানে আমাদের কোনও হাত নেই। আমরা নিজেরা এখনও প্রতিনিধি দল পাঠাইনি। সবাই এটি উৎক্ষেপণের জন্য অপেক্ষা করছি। একটা স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের আয়োজন অনেক বড়। সবকিছু চূড়ান্ত হওয়ার পরই তারা এটা উৎক্ষেপণ করে।’

এ নিয়ে পঞ্চমবারের মতো বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণের তারিখ পেছাল। ২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাসে এ স্যাটেলাইটের প্রথম উৎক্ষেপণের সময় নির্ধারিত ছিল। এরপর চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে দ্বিতীয়, এপ্রিলের ৫ তারিখ তৃতীয় ও ২৪ এপ্রিল চতুর্থবারের মতো উৎক্ষেপণের সময় নির্ধারিত ছিল। কিন্তু বারবারই তারিখ পেছানো হয়।

যদিও চতুর্থবারের মতো পেছানোর পর ২৫ এপ্রিল বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনে (বিটিআরসি) আয়োজিত ‘বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট : সম্ভাবনার মহাকাশ’ শীর্ষক এক সেমিনারে ৭ মে নতুন তারিখের কথা জানিয়েছিলেন মোস্তাফা জব্বার।

তখন তিনি বলেছিলেন, ‘আমরা সব প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিলাম। এমনকি কার্ড ছাপার কাজও সেরে ফেলা হয়েছিল। তবে আমরা জানতাম উৎক্ষেপণ বিভিন্ন কারণে পেছাতে পারে। তাই আমরা এর জন্যও প্রস্তুত ছিলাম।’

যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার ক্যাপ ক্যানাভেরালে অবস্থিত স্পেস এক্সের লঞ্চ প্যাড হতে উড়বে স্যাটেলাইটটি।

জানা গেছে, ৭ মে উৎক্ষেপণের দিন মাথায় রেখে ২ মে বুধবার ছোট একটা পরীক্ষা চালানোর কথা থাকলেও সেটি সম্পন্ন হয়নি। এই পরীক্ষার জন্য ৪ মে দিন ঠিক করেছে যুক্তরাষ্ট্রের বেসরকারি মহাকাশ অনুসন্ধান ও প্রযুক্তি কোম্পানি। এরপর সিদ্ধান্তে আসতে আরও ৩/৪ দিন সময় লাগবে।

স্যাটেলাইটটির ওজন ৩.৭ টন। সরাসরি দেখা যাবে উৎক্ষেপণের স্থান থেকে ৪ কিলোমিটার দূর থেকে। তবে মাত্র ৬-৭ মিনিট রকেটটি দেখা যাবে তার পর রকেটটি চলে যাবে দৃষ্টিসীমার বাইরে।

এই স্যাটেলাইটে রয়েছে ৪০ টি ট্রান্সপন্ডার যার ২০টি আমাদের দেশের জন্য ব্যবহার করার জন্য রাখা হবে এবং বাকি ২০টি অন্যান্য দেশে ভাড়া দেওয়া হবে। এতে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হবে।

বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণে দুই হাজার ৯৬৭ কোটি ৯৫ লাখ টাকা খরচ ধরা হয়। এর মধ্যে সরকারি অর্থ এক হাজার ৩১৫ কোটি ৫১ লাখ টাকা। আর বিদেশি অর্থায়ন এক হাজার ৬৫২ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। যদিও শেষ পর্যন্ত স্যাটেলাইট ওড়াতে সর্বমোট খরচ হচ্ছে দুই হাজার ৭৬৫ কোটি টাকা।

দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে দ্রুত ইন্টারনেট সেবা পৌঁছে দিতে সক্ষম হবে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১। স্যাটেলাইটটি সম্পূর্ণ চালু হওয়ার পর এর নিয়ন্ত্রণ বাংলাদেশের গ্রাউন্ড স্টেশনে স্থানান্তর করা হবে। তবে স্যাটেলাইটটি পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রায় ২০-২১ দিন সময় লাগবে।

এই স্যাটেলাইট নিয়ন্ত্রণের জন্য গাজীপুরের জয়দেবপুরে এবং রাঙামাটির বেতবুনিয়ায় ইতোমধ্যে দুটি গ্রাউন্ড স্টেশন নির্মাণ করা হয়েছে। মূলত গাজীপুরের গ্রাউন্ড স্টেশন থেকে এটি নিয়ন্ত্রণ করা হবে।

ট্যাগ :
জনপ্রিয়

একজন ব্যবসায়ী বান্ধব নেতা ওয়াহিদুল হাসান দিপু

৭ মে উৎক্ষেপণ হচ্ছে না বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট: মোস্তাফা জব্বার

প্রকাশিত : ১১:৩২:০২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩ মে ২০১৮

বাংলাদেশের প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট আগামী ৭ মে উৎক্ষেপণের কথা থাকলেও সেটি ওই দিন উৎক্ষেপণ করা সম্ভব হচ্ছে না। নতুন তারিখ নির্ধারিত হলে সেটি জানিয়ে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।

মন্ত্রী বলেন, ‘আগামী শনিবার জানা যেতে পারে কবে নাগাদ তারা এটা উৎক্ষেপণ করা হবে। এটা ভীষণ টেকনিক্যাল বিষয়। এখানে আমাদের কোনও হাত নেই। আমরা নিজেরা এখনও প্রতিনিধি দল পাঠাইনি। সবাই এটি উৎক্ষেপণের জন্য অপেক্ষা করছি। একটা স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের আয়োজন অনেক বড়। সবকিছু চূড়ান্ত হওয়ার পরই তারা এটা উৎক্ষেপণ করে।’

এ নিয়ে পঞ্চমবারের মতো বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণের তারিখ পেছাল। ২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাসে এ স্যাটেলাইটের প্রথম উৎক্ষেপণের সময় নির্ধারিত ছিল। এরপর চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে দ্বিতীয়, এপ্রিলের ৫ তারিখ তৃতীয় ও ২৪ এপ্রিল চতুর্থবারের মতো উৎক্ষেপণের সময় নির্ধারিত ছিল। কিন্তু বারবারই তারিখ পেছানো হয়।

যদিও চতুর্থবারের মতো পেছানোর পর ২৫ এপ্রিল বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনে (বিটিআরসি) আয়োজিত ‘বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট : সম্ভাবনার মহাকাশ’ শীর্ষক এক সেমিনারে ৭ মে নতুন তারিখের কথা জানিয়েছিলেন মোস্তাফা জব্বার।

তখন তিনি বলেছিলেন, ‘আমরা সব প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিলাম। এমনকি কার্ড ছাপার কাজও সেরে ফেলা হয়েছিল। তবে আমরা জানতাম উৎক্ষেপণ বিভিন্ন কারণে পেছাতে পারে। তাই আমরা এর জন্যও প্রস্তুত ছিলাম।’

যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার ক্যাপ ক্যানাভেরালে অবস্থিত স্পেস এক্সের লঞ্চ প্যাড হতে উড়বে স্যাটেলাইটটি।

জানা গেছে, ৭ মে উৎক্ষেপণের দিন মাথায় রেখে ২ মে বুধবার ছোট একটা পরীক্ষা চালানোর কথা থাকলেও সেটি সম্পন্ন হয়নি। এই পরীক্ষার জন্য ৪ মে দিন ঠিক করেছে যুক্তরাষ্ট্রের বেসরকারি মহাকাশ অনুসন্ধান ও প্রযুক্তি কোম্পানি। এরপর সিদ্ধান্তে আসতে আরও ৩/৪ দিন সময় লাগবে।

স্যাটেলাইটটির ওজন ৩.৭ টন। সরাসরি দেখা যাবে উৎক্ষেপণের স্থান থেকে ৪ কিলোমিটার দূর থেকে। তবে মাত্র ৬-৭ মিনিট রকেটটি দেখা যাবে তার পর রকেটটি চলে যাবে দৃষ্টিসীমার বাইরে।

এই স্যাটেলাইটে রয়েছে ৪০ টি ট্রান্সপন্ডার যার ২০টি আমাদের দেশের জন্য ব্যবহার করার জন্য রাখা হবে এবং বাকি ২০টি অন্যান্য দেশে ভাড়া দেওয়া হবে। এতে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হবে।

বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণে দুই হাজার ৯৬৭ কোটি ৯৫ লাখ টাকা খরচ ধরা হয়। এর মধ্যে সরকারি অর্থ এক হাজার ৩১৫ কোটি ৫১ লাখ টাকা। আর বিদেশি অর্থায়ন এক হাজার ৬৫২ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। যদিও শেষ পর্যন্ত স্যাটেলাইট ওড়াতে সর্বমোট খরচ হচ্ছে দুই হাজার ৭৬৫ কোটি টাকা।

দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে দ্রুত ইন্টারনেট সেবা পৌঁছে দিতে সক্ষম হবে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১। স্যাটেলাইটটি সম্পূর্ণ চালু হওয়ার পর এর নিয়ন্ত্রণ বাংলাদেশের গ্রাউন্ড স্টেশনে স্থানান্তর করা হবে। তবে স্যাটেলাইটটি পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রায় ২০-২১ দিন সময় লাগবে।

এই স্যাটেলাইট নিয়ন্ত্রণের জন্য গাজীপুরের জয়দেবপুরে এবং রাঙামাটির বেতবুনিয়ায় ইতোমধ্যে দুটি গ্রাউন্ড স্টেশন নির্মাণ করা হয়েছে। মূলত গাজীপুরের গ্রাউন্ড স্টেশন থেকে এটি নিয়ন্ত্রণ করা হবে।