০৭:৪০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৭ নভেম্বর ২০২৫

হরিপুর সীমান্তে স্বজনদের রক্তের টানে মিলন মেলা

ভারত সীঁমান্তের তাঁর কাটার বেড়া আটকাতে পারেনি দুই বাংলার হাজার-হাজার স্বজনের রক্তের টান।
ঠাকুরগাঁও জেলার কোঁচল ও চাঁপাসার,গোবিন্দপুর এবং ভারতের নাড়গাঁও ও মাকারহাট সীমান্তের তাঁর কাটার এপার-ওপাওে দুই কিলোমিটার এলাকা জুড়ে দুই বাংলার হাজার-হাজার মানুষের রক্তের টানে আত্বিয়-স্বজনদের উপস্থিতিত্বে যেন মিলন মেলায় পরিণত হয়।

বর্ষ পুঞ্জিকা অনুযায়ী হিন্দু স¤প্রদায় প্রতি বছর শ্রী-শ্রী জামর কালির জিউ (পাথরকালী) পুঁজা উপলক্ষ্যে হরিপুর উপজেলার ভাতুরিয়া ইউনিয়নের গোবিন্দপুরে কুলিক নদের পাড়ে মেলা উদযাপন করে থাকেন। আর এ পুঁজা উপলক্ষে প্রতি বছরে এই দিনে দূর-দূড়ান্ত থেকে দু-দেশের স্বজনরা ভীর জমায় ঠাকুরগাঁও জেলার হরিপুর উপজেলার চাপাসার ও রানীশংকৈল উপজেলার কচল সীমান্তের ৩৪৫ ও ৩৪৬ নং পিলার এলাকার তাঁর কাটার বেড়ার এপার-ওপারে। প্রতি বছরের ন্যায় এবারও শুক্রবার সকাল থেকে দূর-দূড়ান্ত হতে দু-দেশের স্বজনরা সীমান্তে সমবেত হতে থাকে। স্বজনদের সাথে দেখা ও কথা বলার জন্য সকাল থেকে সীঁমান্তের এপার-ওপারে দাড়িয়ে অপেক্ষা করতে দেখা যায় দু-দেশের হাজার হাজার মানুষকে। শেষ পর্যন্ত দুপুর দুই টার পর আর স্বজনদের ধরে রাখতে পারেনি দু-দেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী। তাঁর কাটার গেট না খুললেও অনানুষ্ঠানিক ভাবেই তাঁর কাটার এপারে-ওপারে দাড়িয়ে স্বজনদের দেখা ও কথা হয় একে অপরের সঙ্গে।

আদান-প্রদান হয় নানা রকমের খাদ্য ও পন্য সামগ্রী। স্বজনদের সাথে দেখা করতে আসা সৈয়দপুর উপজেলার বাসিন্দা মরিয়ম বেগম (৫০) জানান, এবার দেখা করেছেন তার ছোট বোন সেফালীর সঙ্গে। ১৬ বছর আগে সেফালীর বিয়ে হয় ভারতের মাল্দা জেলার চানমুনী গ্রামে। বিয়ের পর এই প্রথম বোন ও বোনের স্বামীর দেখা পেয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। পরে তার বোন ও বোনের ছেলে-মেয়ে ও স্বামীকে কাপড় এবং মিষ্টি দিয়ে বেশ আনন্দ ভোগ করেন। ভারতের স্বজনদের সঙ্গে দেখা করতে আসা দিনাজপুর জেলার কাহারোল উপজেলার প্রতীমা রাণী (৬০) জানান, ২০ বছর পুর্বে আমার ছোট মেয়ে কমলা রাণীর বিয়ে হয় ভারতের গোয়াল পুকুর থানার পাঁচ ঘরিয়া গ্রামে। বিয়ের পর আর কথা হয়নি তার সাথে। কিন্তু আজ মেয়ের সাথে তাঁর কাটার এপার-ওপারে দাড়িয়ে কথা বলে এবং তাঁর কাটার ফাঁক দিয়ে মিষ্টি ও কাপড়-চোপড় দিতে পেড়ে মনে বড় আনন্দ পেয়েছি। মিলন মেলায় ঘুরতে আসা অনেকেই তাদের আত্বীয়-স্বজনদের সাথে দেখা করেন এবং কথা বলেন ও জিনিষ পত্র আদান-প্রদান করেন। তবে দু-দেশের রক্ষী বাহিনীর কতৃপক্ষের অনুমতি না থাকায় বিজিবি ও বিএসএফ এর ছিলো কঠোর প্রহরা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দুদেশের নিরাপত্তার দায়িত্বের থাকা বিজিবি ও বিএসএফ ধরে রাখতে পারেনি লাখো মানুষের ঢল। হরিপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার একে এম শরীফুল হক ,থানার অফিসার  তাজুল ইসলাম ও বিজিবি সুত্রে জানাগেছে , কড়া প্রহরা সত্তে¡ও অনেকে তাঁর কাটার এপার-ওপারে দাড়িয়ে বিভিন্ন স্থানে কথা বলেছেন ও খাদ্য বিনিময় করেছেন। সুষ্ঠভাবে পুজা সম্পন্ন হয়েছে।

এব্যাপারে শ্রী-শ্রী জামর জিউ কালির (পাথরকালী) পুঁজা কমিটির সভাপতি ও হরিপুর আ‘লীগের সহ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা নগেন কুমার পাল বলেন এবার স্থানীয় প্রশাসন, বিজিবি ও বিএসএফ এর পক্ষ থেকে সীমান্তে কঠোর নজরদারী থাকা সত্বেও অন্য বছরের তুলনায় এবার দু-দেশের স্বজনরা সহজেই তাঁর কাটার এপার-ওপারে দাড়িয়ে কথা বলেছেন ও খাদ্য বিনিময় করেছেন এবং সুষ্ঠভাবেই পুজা শেষ হয়েছে ।

বিজনেস বাংলাদেশ/ হাবিব

 

হরিপুর সীমান্তে স্বজনদের রক্তের টানে মিলন মেলা

প্রকাশিত : ০১:২১:৩৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ৪ ডিসেম্বর ২০২২

ভারত সীঁমান্তের তাঁর কাটার বেড়া আটকাতে পারেনি দুই বাংলার হাজার-হাজার স্বজনের রক্তের টান।
ঠাকুরগাঁও জেলার কোঁচল ও চাঁপাসার,গোবিন্দপুর এবং ভারতের নাড়গাঁও ও মাকারহাট সীমান্তের তাঁর কাটার এপার-ওপাওে দুই কিলোমিটার এলাকা জুড়ে দুই বাংলার হাজার-হাজার মানুষের রক্তের টানে আত্বিয়-স্বজনদের উপস্থিতিত্বে যেন মিলন মেলায় পরিণত হয়।

বর্ষ পুঞ্জিকা অনুযায়ী হিন্দু স¤প্রদায় প্রতি বছর শ্রী-শ্রী জামর কালির জিউ (পাথরকালী) পুঁজা উপলক্ষ্যে হরিপুর উপজেলার ভাতুরিয়া ইউনিয়নের গোবিন্দপুরে কুলিক নদের পাড়ে মেলা উদযাপন করে থাকেন। আর এ পুঁজা উপলক্ষে প্রতি বছরে এই দিনে দূর-দূড়ান্ত থেকে দু-দেশের স্বজনরা ভীর জমায় ঠাকুরগাঁও জেলার হরিপুর উপজেলার চাপাসার ও রানীশংকৈল উপজেলার কচল সীমান্তের ৩৪৫ ও ৩৪৬ নং পিলার এলাকার তাঁর কাটার বেড়ার এপার-ওপারে। প্রতি বছরের ন্যায় এবারও শুক্রবার সকাল থেকে দূর-দূড়ান্ত হতে দু-দেশের স্বজনরা সীমান্তে সমবেত হতে থাকে। স্বজনদের সাথে দেখা ও কথা বলার জন্য সকাল থেকে সীঁমান্তের এপার-ওপারে দাড়িয়ে অপেক্ষা করতে দেখা যায় দু-দেশের হাজার হাজার মানুষকে। শেষ পর্যন্ত দুপুর দুই টার পর আর স্বজনদের ধরে রাখতে পারেনি দু-দেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী। তাঁর কাটার গেট না খুললেও অনানুষ্ঠানিক ভাবেই তাঁর কাটার এপারে-ওপারে দাড়িয়ে স্বজনদের দেখা ও কথা হয় একে অপরের সঙ্গে।

আদান-প্রদান হয় নানা রকমের খাদ্য ও পন্য সামগ্রী। স্বজনদের সাথে দেখা করতে আসা সৈয়দপুর উপজেলার বাসিন্দা মরিয়ম বেগম (৫০) জানান, এবার দেখা করেছেন তার ছোট বোন সেফালীর সঙ্গে। ১৬ বছর আগে সেফালীর বিয়ে হয় ভারতের মাল্দা জেলার চানমুনী গ্রামে। বিয়ের পর এই প্রথম বোন ও বোনের স্বামীর দেখা পেয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। পরে তার বোন ও বোনের ছেলে-মেয়ে ও স্বামীকে কাপড় এবং মিষ্টি দিয়ে বেশ আনন্দ ভোগ করেন। ভারতের স্বজনদের সঙ্গে দেখা করতে আসা দিনাজপুর জেলার কাহারোল উপজেলার প্রতীমা রাণী (৬০) জানান, ২০ বছর পুর্বে আমার ছোট মেয়ে কমলা রাণীর বিয়ে হয় ভারতের গোয়াল পুকুর থানার পাঁচ ঘরিয়া গ্রামে। বিয়ের পর আর কথা হয়নি তার সাথে। কিন্তু আজ মেয়ের সাথে তাঁর কাটার এপার-ওপারে দাড়িয়ে কথা বলে এবং তাঁর কাটার ফাঁক দিয়ে মিষ্টি ও কাপড়-চোপড় দিতে পেড়ে মনে বড় আনন্দ পেয়েছি। মিলন মেলায় ঘুরতে আসা অনেকেই তাদের আত্বীয়-স্বজনদের সাথে দেখা করেন এবং কথা বলেন ও জিনিষ পত্র আদান-প্রদান করেন। তবে দু-দেশের রক্ষী বাহিনীর কতৃপক্ষের অনুমতি না থাকায় বিজিবি ও বিএসএফ এর ছিলো কঠোর প্রহরা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দুদেশের নিরাপত্তার দায়িত্বের থাকা বিজিবি ও বিএসএফ ধরে রাখতে পারেনি লাখো মানুষের ঢল। হরিপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার একে এম শরীফুল হক ,থানার অফিসার  তাজুল ইসলাম ও বিজিবি সুত্রে জানাগেছে , কড়া প্রহরা সত্তে¡ও অনেকে তাঁর কাটার এপার-ওপারে দাড়িয়ে বিভিন্ন স্থানে কথা বলেছেন ও খাদ্য বিনিময় করেছেন। সুষ্ঠভাবে পুজা সম্পন্ন হয়েছে।

এব্যাপারে শ্রী-শ্রী জামর জিউ কালির (পাথরকালী) পুঁজা কমিটির সভাপতি ও হরিপুর আ‘লীগের সহ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা নগেন কুমার পাল বলেন এবার স্থানীয় প্রশাসন, বিজিবি ও বিএসএফ এর পক্ষ থেকে সীমান্তে কঠোর নজরদারী থাকা সত্বেও অন্য বছরের তুলনায় এবার দু-দেশের স্বজনরা সহজেই তাঁর কাটার এপার-ওপারে দাড়িয়ে কথা বলেছেন ও খাদ্য বিনিময় করেছেন এবং সুষ্ঠভাবেই পুজা শেষ হয়েছে ।

বিজনেস বাংলাদেশ/ হাবিব