বাংলাদেশে ২০১৭ সালে মোবাইল ফোনসেট কারখানা স্থাপনে নীতি সহায়তা ও প্রণোদনা নিশ্চিত করেছি। আর এর ফলে দেশে মোবাইল শিল্পের বিস্তার ঘটেছে। কারখানা স্থাপন করেছে ১৪টি কম্পানি। স্থানীয়ভাবে চাহিদার প্রায় ৯৫ শতাংশ ফোনসেট উৎপন্ন হচ্ছে এখন। বিশ্বের প্রায় সব বড় কম্পানি এখন দেশে মোবাইল ফোনসেট উৎপাদন করে। এটা আমাদের জন্য একটি বড় ধরনের পরিবর্তন।
চীনের ব্র্যান্ড হুয়াওয়ে ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রদর্শনীতে কিছু ডিভাইস প্রদর্শন করছিল। তারা জানিয়েছে, এগুলো তারা এ দেশে উৎপাদন করবে। সরকারের প্রযুক্তিবান্ধব নীতির কারণে দেশে বিশ্বমানের মোবাইল ফোনসেট কারখানা করেছে। আরো চারটি কারখানা স্থাপিত হচ্ছে। নেপাল, নাইজেরিয়াসহ বিশ্বের অনেক দেশে আমাদের দেশে উৎপন্ন ল্যাপটপ ও কম্পিউটার রপ্তানি করছি। বাংলাদেশে উৎপন্ন ফাইভজি মোবাইল ফোনসেট যুক্তরাষ্ট্রেও রপ্তানি করা হচ্ছে।
বাংলাদেশে গ্রে মার্কেট ছাড়া উদ্যোক্তাদের আর কোনো চ্যালেঞ্জ সম্ভবত নেই। অবৈধভাবে আসা ফোনসেটের বাজার বা গ্রে মার্কেট আমরা একা ঠেকাতে পারব না। অবৈধ ফোনসেট বিদেশ থেকে এসে বিমানবন্দর দিয়ে ঢোকে। আমরা এই বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে বলেছি কার্যকর পদক্ষেপ নিতে। আগে দেশে রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে অবৈধ ফোনসেট ঢোকা বন্ধ করতে হবে। উৎস বেশি পদক্ষেপ নিতে হবে, যাতে মার্কেট তৈরি না হয়। আমরা এ বিষয়ে সচেতন। আমরা বাজারে মাঝেমধ্যে অভিযান চালাই, যারা এগুলো বিক্রি করছে তাদের ধরি। বর্তমান পরিস্থিতিতে ডলার সংকটের মধ্যে অবৈধভাবে ফোনসেট আসা বন্ধ করতে হবে। এ জন্য সমন্বিত পদক্ষেপ নিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, দেশে অবৈধ ফোনসেট বন্ধে ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেনটিটি রেজিস্টারের (এনইআইআর) নিয়ম চালু করেছিলাম। যেটা নিবন্ধিত নয়, সেটা বন্ধ করব। কিন্তু আমাদের দেশের প্যাসেঞ্জার ব্যাগেজ রুলস ২০১৬-তে একটি ধারা আছে। সেখানে আছে, কোনো রকম ট্যাক্স ছাড়া, নিবন্ধন ও অনুমতি ছাড়া যে কেউ বিদেশ থেকে দুটি মোবাইল ফোনসেট আনতে পারে। আমরা চেষ্টা করেছিলাম, যাতে যেকোনো ফোনসেট এলে নিবন্ধিত হয়। কিন্তু সরকারের তরফ থেকে বলা হয়েছে, মানুষকে ভোগান্তিতে ফেলা যাবে না। আমরা যদি পাইকারি হারে সব বন্ধ করে দিই, তাহলে যারা পরিবারের জন্য ফোনসেট নিয়ে আসে ব্যাগেজ রুলসের আওতায়, সেটাও বন্ধ হয়ে যাবে। বরং এনবিআর যদি আমাদের রিপোর্ট করে, যে কোনটি অবৈধভাবে আসা, তাহলে আমরা সেটি বন্ধ করে দিতে পারি। এনইআইআরের ব্যাপক প্রয়োগের কথা আমরা এ মুহূর্তে চিন্তা করছি না। কারণ এতে সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তবে কেউ অভিযোগ করলে অবৈধভাবে আসা ফোনসেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যাবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৫ সালের ৬ আগস্ট ডিজিটাল ডিভাইস উৎপাদন ও রপ্তানিকারক দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে প্রতিষ্ঠার যে স্বপ্ন জাতিকে দেখিয়েছিলেন, তা আজ পূরণ করতে সক্ষম হয়েছি। আগামী দিনের ডিজিটাল প্রযুক্তির চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ডিজিটাল বাংলাদেশের ভিত্তিকে আরো শক্তিশালী করার বিকল্প নেই।
বিজনেস বাংলাদেশ/ হাবিব