০২:২১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

আইসিসির প্রধান কৌঁসুলির বিরুদ্ধে রাশিয়ার গ্রেফতারি পরোয়ানা

আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত বা আইসিসির প্রধান কৌঁসুলি কারিম খানের বিরুদ্ধে রাশিয়া গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে। এ ঘটনায় আইসিসি বলছে যে তারা এতে “বিচলিত” নয়।

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে আইসিসির পক্ষ থেকে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির দু’মাস পর এখন মস্কো এই আন্তর্জাতিক আদালতের প্রধান আইনজীবী কারিম খানের বিরুদ্ধে একই ধরনের পাল্টা ব্যবস্থা নিলো।

মস্কো এখন কারিম খানকে “ওয়ান্টেড” তালিকাভুক্ত করেছে।
শনিবার আদালতের দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “বড় ধরনের অপরাধের কারণে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার আইনি ম্যান্ডেটকে খাটো করার জন্য” এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

এর আগে রাশিয়া প্রেসিডেন্ট পুতিনের বিরুদ্ধে আইসিসির জারি করা পরোয়ানাকে “অবৈধ” বলে উল্লেখ করেছে।

উল্লেখ্য, রাশিয়া আইসিসির সদস্য নয়।

কারিম খান একজন ব্রিটিশ আইনজীবী, গত মার্চ মাসে প্রেসিডেন্ট পুতিনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন তিনি। তাতে পুতিনকে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়।

রুশ প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে মূল অভিযোগ ছিল যে তিনি ইউক্রেন থেকে শিশুদের অবৈধ উপায়ে রাশিয়াতে সরিয়ে নিয়েছেন।

এ সময় রাশিয়ার শিশু অধিকার বিষয়ক কমিশনার মারিয়া এলভোভা-বেলোভার বিরুদ্ধেও একই অভিযোগে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়।

কিয়েভে ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা বলছেন, যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর ১৬ হাজারেরও বেশি শিশুকে তাদের দেশ থেকে জোরপূর্বক রাশিয়াতে নিয়ে গিয়ে তাদেরকে আটকে রাখা হয়েছে।

তারা বলছেন, রাশিয়া এমন কিছু নীতি গ্রহণ করেছে যাতে শিশুদের জোর করে রাশিয়ার নাগরিকত্ব নিতে বাধ্য করা হচ্ছে। এরপর তাদের দত্তক দেয়ার মাধ্যমে তারা যাতে পাকাপাকিভাবে রাশিয়ায় থেকে যায় – সেই ব্যবস্থা করছে।

আইসিসির বিবৃতিতে বলা হয়, এই অপরাধের পেছনে পুতিন এবং মিস এলভোভা-বেলোভার ব্যক্তিগত দায় রয়েছে।

আইসিসির এই পদক্ষেপের জবাবে ক্রেমলিনের তদন্ত কমিটি এখন বলছে যে তারা আইসিসির প্রধান আইনজীবী কারিম খানের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করবে।

কারিম খানের বিরুদ্ধে “নিরপরাধ ব্যক্তিকে অপরাধী হিসেবে বিচার করার” অভিযোগ আনা হয়েছে।

দ্য হেগ ভিত্তিক আন্তর্জাতিক আদালত আইসিসি শনিবার এক বিবৃতিতে বলেছে, তাদের “কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বেআইনি যেসব পদক্ষেপের কথা ঘোষণা করা হয়েছে” সেবিষয়ে তারা “সচেতন এবং গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।”

রাশিয়ার এই পদক্ষেপকে তারা অগ্রহণযোগ্য হিসেবে উল্লেখ করে বলেছে, নিরপেক্ষভাবে কাজ করার ব্যাপারে তাদের যে ম্যান্ডেট রয়েছে, এ ধরনের পদক্ষেপের মাধ্যমে সেটাকে থামানো যাবে না।

আইনজীবী কারিম খানের বিরুদ্ধে রাশিয়ার ঘোষিত পদক্ষেপের বিষয়ে কারিম খান এখনও কোনো মন্তব্য করেননি।

এদিকে, জাতিসংঘ মহাসচিবের শিশু ও সংঘাত বিষয়ক বিশেষ দূত ভার্জিনিয়া গ্যম্বা মস্কোতে মিস এলভোভা-বেলোভার সাথে সাক্ষাৎ করেছেন-কথিত এই খবরের বিষয়েও সমালোচনা শুরু হয়েছে।

রুশ কর্মকর্তা মিস এলভোভা-বেলোভাকে উদ্ধৃত করে বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে যে তাদের আলোচনা ছিল “গঠনমূলক ও আন্তরিক।”

বিভিন্ন অধিকার গ্রুপ ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এই বৈঠকের সমালোচনা করে বলেছেন এটি “ঠিক হয়নি।”

হিউম্যান রাইটস ওয়াচের ইন্টারন্যাশনাল জাস্টিস প্রোগ্রামের বালকিস জারাহ বলেন, ইউক্রেনে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তারা এলভোভা-বেলোভাকে দ্য হেগের কারাগারে দেখতে চায়। তারা দেখতে চায় না যে জাতিসংঘের ঊর্ধ্বতন কোনো কর্মকর্তা তার সঙ্গে বৈঠক করছেন।

সূত্র : বিবিসি।

বিজনেস বাংলাদেশ/ bh

ট্যাগ :
জনপ্রিয়

আইসিসির প্রধান কৌঁসুলির বিরুদ্ধে রাশিয়ার গ্রেফতারি পরোয়ানা

প্রকাশিত : ০৮:২১:০৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২১ মে ২০২৩

আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত বা আইসিসির প্রধান কৌঁসুলি কারিম খানের বিরুদ্ধে রাশিয়া গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে। এ ঘটনায় আইসিসি বলছে যে তারা এতে “বিচলিত” নয়।

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে আইসিসির পক্ষ থেকে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির দু’মাস পর এখন মস্কো এই আন্তর্জাতিক আদালতের প্রধান আইনজীবী কারিম খানের বিরুদ্ধে একই ধরনের পাল্টা ব্যবস্থা নিলো।

মস্কো এখন কারিম খানকে “ওয়ান্টেড” তালিকাভুক্ত করেছে।
শনিবার আদালতের দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “বড় ধরনের অপরাধের কারণে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার আইনি ম্যান্ডেটকে খাটো করার জন্য” এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

এর আগে রাশিয়া প্রেসিডেন্ট পুতিনের বিরুদ্ধে আইসিসির জারি করা পরোয়ানাকে “অবৈধ” বলে উল্লেখ করেছে।

উল্লেখ্য, রাশিয়া আইসিসির সদস্য নয়।

কারিম খান একজন ব্রিটিশ আইনজীবী, গত মার্চ মাসে প্রেসিডেন্ট পুতিনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন তিনি। তাতে পুতিনকে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়।

রুশ প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে মূল অভিযোগ ছিল যে তিনি ইউক্রেন থেকে শিশুদের অবৈধ উপায়ে রাশিয়াতে সরিয়ে নিয়েছেন।

এ সময় রাশিয়ার শিশু অধিকার বিষয়ক কমিশনার মারিয়া এলভোভা-বেলোভার বিরুদ্ধেও একই অভিযোগে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়।

কিয়েভে ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা বলছেন, যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর ১৬ হাজারেরও বেশি শিশুকে তাদের দেশ থেকে জোরপূর্বক রাশিয়াতে নিয়ে গিয়ে তাদেরকে আটকে রাখা হয়েছে।

তারা বলছেন, রাশিয়া এমন কিছু নীতি গ্রহণ করেছে যাতে শিশুদের জোর করে রাশিয়ার নাগরিকত্ব নিতে বাধ্য করা হচ্ছে। এরপর তাদের দত্তক দেয়ার মাধ্যমে তারা যাতে পাকাপাকিভাবে রাশিয়ায় থেকে যায় – সেই ব্যবস্থা করছে।

আইসিসির বিবৃতিতে বলা হয়, এই অপরাধের পেছনে পুতিন এবং মিস এলভোভা-বেলোভার ব্যক্তিগত দায় রয়েছে।

আইসিসির এই পদক্ষেপের জবাবে ক্রেমলিনের তদন্ত কমিটি এখন বলছে যে তারা আইসিসির প্রধান আইনজীবী কারিম খানের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করবে।

কারিম খানের বিরুদ্ধে “নিরপরাধ ব্যক্তিকে অপরাধী হিসেবে বিচার করার” অভিযোগ আনা হয়েছে।

দ্য হেগ ভিত্তিক আন্তর্জাতিক আদালত আইসিসি শনিবার এক বিবৃতিতে বলেছে, তাদের “কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বেআইনি যেসব পদক্ষেপের কথা ঘোষণা করা হয়েছে” সেবিষয়ে তারা “সচেতন এবং গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।”

রাশিয়ার এই পদক্ষেপকে তারা অগ্রহণযোগ্য হিসেবে উল্লেখ করে বলেছে, নিরপেক্ষভাবে কাজ করার ব্যাপারে তাদের যে ম্যান্ডেট রয়েছে, এ ধরনের পদক্ষেপের মাধ্যমে সেটাকে থামানো যাবে না।

আইনজীবী কারিম খানের বিরুদ্ধে রাশিয়ার ঘোষিত পদক্ষেপের বিষয়ে কারিম খান এখনও কোনো মন্তব্য করেননি।

এদিকে, জাতিসংঘ মহাসচিবের শিশু ও সংঘাত বিষয়ক বিশেষ দূত ভার্জিনিয়া গ্যম্বা মস্কোতে মিস এলভোভা-বেলোভার সাথে সাক্ষাৎ করেছেন-কথিত এই খবরের বিষয়েও সমালোচনা শুরু হয়েছে।

রুশ কর্মকর্তা মিস এলভোভা-বেলোভাকে উদ্ধৃত করে বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে যে তাদের আলোচনা ছিল “গঠনমূলক ও আন্তরিক।”

বিভিন্ন অধিকার গ্রুপ ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এই বৈঠকের সমালোচনা করে বলেছেন এটি “ঠিক হয়নি।”

হিউম্যান রাইটস ওয়াচের ইন্টারন্যাশনাল জাস্টিস প্রোগ্রামের বালকিস জারাহ বলেন, ইউক্রেনে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তারা এলভোভা-বেলোভাকে দ্য হেগের কারাগারে দেখতে চায়। তারা দেখতে চায় না যে জাতিসংঘের ঊর্ধ্বতন কোনো কর্মকর্তা তার সঙ্গে বৈঠক করছেন।

সূত্র : বিবিসি।

বিজনেস বাংলাদেশ/ bh