০১:৩৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৯ অগাস্ট ২০২৫

ব্যাংক খাতে সরকারের ঋণ কমেছে ৩২৮৩ কোটি টাকা

  • নাজমুল ইসলাম
  • প্রকাশিত : ০৭:০৪:০৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৩
  • 79

২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে (জুলাই ও আগস্ট) সরকার ঋণ নেওয়ার পরিবর্তে ব্যাংকিং খাতে ৩,২৮৩ কোটি টাকা পরিশোধ করেছে। এদিকে আগস্টের শেষে ব্যাংকিং খাত থেকে সরকারের নিট ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩.৯০ লাখ কোটি টাকা।

তবে নতুন অর্থবছরে সরকারি-বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে সরকারের ঋণ নেওয়ার পরিমাণ বেড়েছে। জুলাই ও আগস্ট মাসে বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে মোট ১৮ হাজার ৮০০ কোটি টাকা ঋণ নেওয়া হয়েছে।
নতুন অর্থবছরের শুরুতেই বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) বাস্তবায়ন করা এখনো আরাম্ভ না হওয়ায় আগস্ট মাসে ব্যাংকিং খাত থেকে সরকারের ঋণ নেওয়ার পরিমাণ কমেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, সরকার গত বছরের আগস্টে ব্যাংকিং খাত থেকে ৩,৫১০ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছিল, যা এই বছরের আগস্টে ছিল ৫৪০ কোটি টাকা। অর্থাৎ সরকার গত বছরের একই মাসের তুলনায় এবারের আগস্টে ৮৫% কম ঋণ নিয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগস্ট মাসে সরকার বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে মূলত ট্রেজারি বিলের মাধ্যমে ১৩,২৭৪ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছিল এবং বাংলাদেশ ব্যাংকে ১২,৭৩৩ কোটি টাকা পরিশোধ করেছে। এর অর্থ হতে পারে এই যে, সরকার বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঋণ পরিশোধ করছে। নতুন অর্থবছরে সরকারি-বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে সরকারের ঋণ নেওয়ার পরিমাণ বেড়েছে। জুলাই ও আগস্ট মাসে বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে মোট ১৮ হাজার ৮০০ কোটি টাকা ঋণ নেওয়া হয়েছে।

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বেসরকারি খাতে অর্থের যোগান কমে যাওয়ায় বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে সরকারি ঋণ বৃদ্ধি মূল্যস্ফীতিকে আরও বাড়িয়ে দিতে পারে।

ব্যংকাররা বলেন, “সরকার মূলত ট্রেজারি বিলের মাধ্যমে ঋণ নিচ্ছে। বেসরকারি খাতে ঋণ দেওয়ার পরিবর্তে, ব্যাংকগুলো ট্রেজারি বিলে বিনিয়োগ বাড়িয়েছে কারণ এতে আরও ভাল রিটার্ন এবং সিকিউরিটি আছে।” এদিকে আমদানি লেটার অব ক্রেডিট (এলসি) খোলার হার কমে যাওয়ায় বেসরকারি খাতে ঋণের চাহিদা আগের তুলনায় কমেছে।

অন্য একটি ব্যাংকের এমডি বলেছেন, “ট্রেজারি বিলে বিনিয়োগের একটি কারণ হল উচ্চ সুদহার। এখন আমরা বিলের বিপরীতে ৮-৯% সুদ পাচ্ছি। বেসরকারি খাতের ঋণের বেলায় সুদের হার ১০% এর কিছু বেশি হলেও, এক্ষেত্রে কিছু ঝুঁকি আছে। কিন্তু সরকারকে ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে কোন ঝুঁকি নেই।”

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, “সরকার বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে ঋণ নিলে বেসরকারি খাতের জন্য উপলব্ধ তহবিলের পরিমাণ কমে যায়। এমনিতেই আমাদের অর্থনীতি তারল্য সংকট এবং আমানত কমে যাওয়াসহ নানা সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। সরকার এখন ব্যাংক থেকে বেশি ঋণ নিচ্ছে। তবে এটা খুব একটা ভালো সিদ্ধান্ত নয়।”

সাবেক এই গভর্নর বলেন, “নির্বাচনের আগে ঝুঁকিপূর্ণ ঋণ বিতরণের চাপ এড়াতে এবং নিরাপদ বিনিয়োগের জন্য ব্যাংকগুলো ট্রেজারি বিলে বিনিয়োগ করছে। অবশ্যই এভাবে ঋণ দেওয়া ব্যাংকের জন্য উপকারী। কিন্তু, ব্যাংকের প্রধান কাজ বেসরকারি খাতে ঋণের ব্যবস্থা করা। তা না করে তারা নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে সরকারকে ঋণ দিচ্ছে।”
তিনি আরও বলেন, ব্যাংকগুলো বেসরকারি খাতে ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে কিছু গ্রাহকের পক্ষপাতী।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা বলেন, বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঋণ পরিশোধ করলে অর্থনীতিতে অর্থ সরবরাহ কমে যায়। রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রির কারণে প্রতিদিন অনেক টাকা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভল্টে যাচ্ছে।

গত অর্থবছরে রিজার্ভ থেকে ১৩.৫৮ বিলিয়ন ডলার বিক্রির ফলে বাজার থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভল্টে ১.১৪ লাখ কোটি টাকা জমা হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক জুলাই ও আগস্ট মাসে ২ বিলিয়ন ডলারের বেশি বিক্রি করেছে যা অর্থনীতি থেকে ২২ হাজার কোটি টাকা তুলে নিয়েছে, জানান তিনি।

গত জুলাই ও আগস্টে কেনা নতুন ট্রেজারি বিল ও বন্ডের জন্য প্রায় ৫ হাজার ২০০ কোটি টাকা ছাপতে হয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক একে নেট ডিভলভমেন্ট বলে। এর আগে, গত জুনে শেষ হওয়া ২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রায় ৭৮,১৪০ কোটি টাকা মুদ্রিত হয়েছিল।

অর্থনীতিবিদদের মতে, যখন নতুন টাকা ছাপিয়ে বাজারে ছাড়া হয়, তখন তা মুদ্রাস্ফীতিকে আরো উস্কে দেয়। গত বছর প্রচুর টাকা ছাপার কারণে বর্তমানে মূল্যস্ফীতি বাড়ছে। সরকারের এই ঋণ কমানো মূল্যস্ফীতিকে খুব একটা নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না। ১ জুলাই থেকে শুরু হওয়া চলতি অর্থবছরের মুদ্রানীতিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশে রাখার লক্ষ্যমাত্রা দিয়েছে। আগস্টে প্রধান খাদ্যদ্রব্যগুলোর বৈশ্বিক মূল্য দুই বছরের সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌঁছালেও, বাংলাদেশে এই মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল ১২.৫৪%, যা ১৩ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। সামগ্রিক মুদ্রাস্ফীতির হার জুলাইতে ছিল ৯.৬৯%, তা আগস্টে এসে সামান্য বৃদ্ধি পেয়ে ৯.৯২% এ এসে দাঁড়িয়েছে।

বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়ার এ সরকারি পদক্ষেপ মূল্যস্ফীতি কমাতে খুব একটা কার্যকর হবে না উল্লেখ করে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, “বেসরকারি খাতে ঋণ কমলে উৎপাদন কমে যাবে, নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে না। সরকারের নেওয়া ঋণ উৎপাদনশীল খাতে ব্যয় করা হয় না। এতে মূল্যস্ফীতি আরও বাড়বে।”
২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট ঘাটতি মেটাতে সরকার ব্যাংকিং খাত থেকে ১,৩২,৩৯৫ কোটি টাকা ঋণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে।

২০২২-২৩ অর্থবছরে সরকার ব্যাংকিং খাত থেকে ১,০৬,৩৩৪ কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল কিন্তু ব্যয় বৃদ্ধির কারণে এ অর্থবছরে ১,১৯,২৭৫ কোটি টাকা ঋণ নিতে হয়েছিল।

বিজনেস বাংলাদেশ/ এনআই

ব্যাংক খাতে সরকারের ঋণ কমেছে ৩২৮৩ কোটি টাকা

প্রকাশিত : ০৭:০৪:০৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৩

২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে (জুলাই ও আগস্ট) সরকার ঋণ নেওয়ার পরিবর্তে ব্যাংকিং খাতে ৩,২৮৩ কোটি টাকা পরিশোধ করেছে। এদিকে আগস্টের শেষে ব্যাংকিং খাত থেকে সরকারের নিট ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩.৯০ লাখ কোটি টাকা।

তবে নতুন অর্থবছরে সরকারি-বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে সরকারের ঋণ নেওয়ার পরিমাণ বেড়েছে। জুলাই ও আগস্ট মাসে বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে মোট ১৮ হাজার ৮০০ কোটি টাকা ঋণ নেওয়া হয়েছে।
নতুন অর্থবছরের শুরুতেই বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) বাস্তবায়ন করা এখনো আরাম্ভ না হওয়ায় আগস্ট মাসে ব্যাংকিং খাত থেকে সরকারের ঋণ নেওয়ার পরিমাণ কমেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, সরকার গত বছরের আগস্টে ব্যাংকিং খাত থেকে ৩,৫১০ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছিল, যা এই বছরের আগস্টে ছিল ৫৪০ কোটি টাকা। অর্থাৎ সরকার গত বছরের একই মাসের তুলনায় এবারের আগস্টে ৮৫% কম ঋণ নিয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগস্ট মাসে সরকার বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে মূলত ট্রেজারি বিলের মাধ্যমে ১৩,২৭৪ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছিল এবং বাংলাদেশ ব্যাংকে ১২,৭৩৩ কোটি টাকা পরিশোধ করেছে। এর অর্থ হতে পারে এই যে, সরকার বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঋণ পরিশোধ করছে। নতুন অর্থবছরে সরকারি-বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে সরকারের ঋণ নেওয়ার পরিমাণ বেড়েছে। জুলাই ও আগস্ট মাসে বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে মোট ১৮ হাজার ৮০০ কোটি টাকা ঋণ নেওয়া হয়েছে।

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বেসরকারি খাতে অর্থের যোগান কমে যাওয়ায় বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে সরকারি ঋণ বৃদ্ধি মূল্যস্ফীতিকে আরও বাড়িয়ে দিতে পারে।

ব্যংকাররা বলেন, “সরকার মূলত ট্রেজারি বিলের মাধ্যমে ঋণ নিচ্ছে। বেসরকারি খাতে ঋণ দেওয়ার পরিবর্তে, ব্যাংকগুলো ট্রেজারি বিলে বিনিয়োগ বাড়িয়েছে কারণ এতে আরও ভাল রিটার্ন এবং সিকিউরিটি আছে।” এদিকে আমদানি লেটার অব ক্রেডিট (এলসি) খোলার হার কমে যাওয়ায় বেসরকারি খাতে ঋণের চাহিদা আগের তুলনায় কমেছে।

অন্য একটি ব্যাংকের এমডি বলেছেন, “ট্রেজারি বিলে বিনিয়োগের একটি কারণ হল উচ্চ সুদহার। এখন আমরা বিলের বিপরীতে ৮-৯% সুদ পাচ্ছি। বেসরকারি খাতের ঋণের বেলায় সুদের হার ১০% এর কিছু বেশি হলেও, এক্ষেত্রে কিছু ঝুঁকি আছে। কিন্তু সরকারকে ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে কোন ঝুঁকি নেই।”

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, “সরকার বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে ঋণ নিলে বেসরকারি খাতের জন্য উপলব্ধ তহবিলের পরিমাণ কমে যায়। এমনিতেই আমাদের অর্থনীতি তারল্য সংকট এবং আমানত কমে যাওয়াসহ নানা সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। সরকার এখন ব্যাংক থেকে বেশি ঋণ নিচ্ছে। তবে এটা খুব একটা ভালো সিদ্ধান্ত নয়।”

সাবেক এই গভর্নর বলেন, “নির্বাচনের আগে ঝুঁকিপূর্ণ ঋণ বিতরণের চাপ এড়াতে এবং নিরাপদ বিনিয়োগের জন্য ব্যাংকগুলো ট্রেজারি বিলে বিনিয়োগ করছে। অবশ্যই এভাবে ঋণ দেওয়া ব্যাংকের জন্য উপকারী। কিন্তু, ব্যাংকের প্রধান কাজ বেসরকারি খাতে ঋণের ব্যবস্থা করা। তা না করে তারা নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে সরকারকে ঋণ দিচ্ছে।”
তিনি আরও বলেন, ব্যাংকগুলো বেসরকারি খাতে ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে কিছু গ্রাহকের পক্ষপাতী।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা বলেন, বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঋণ পরিশোধ করলে অর্থনীতিতে অর্থ সরবরাহ কমে যায়। রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রির কারণে প্রতিদিন অনেক টাকা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভল্টে যাচ্ছে।

গত অর্থবছরে রিজার্ভ থেকে ১৩.৫৮ বিলিয়ন ডলার বিক্রির ফলে বাজার থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভল্টে ১.১৪ লাখ কোটি টাকা জমা হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক জুলাই ও আগস্ট মাসে ২ বিলিয়ন ডলারের বেশি বিক্রি করেছে যা অর্থনীতি থেকে ২২ হাজার কোটি টাকা তুলে নিয়েছে, জানান তিনি।

গত জুলাই ও আগস্টে কেনা নতুন ট্রেজারি বিল ও বন্ডের জন্য প্রায় ৫ হাজার ২০০ কোটি টাকা ছাপতে হয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক একে নেট ডিভলভমেন্ট বলে। এর আগে, গত জুনে শেষ হওয়া ২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রায় ৭৮,১৪০ কোটি টাকা মুদ্রিত হয়েছিল।

অর্থনীতিবিদদের মতে, যখন নতুন টাকা ছাপিয়ে বাজারে ছাড়া হয়, তখন তা মুদ্রাস্ফীতিকে আরো উস্কে দেয়। গত বছর প্রচুর টাকা ছাপার কারণে বর্তমানে মূল্যস্ফীতি বাড়ছে। সরকারের এই ঋণ কমানো মূল্যস্ফীতিকে খুব একটা নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না। ১ জুলাই থেকে শুরু হওয়া চলতি অর্থবছরের মুদ্রানীতিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশে রাখার লক্ষ্যমাত্রা দিয়েছে। আগস্টে প্রধান খাদ্যদ্রব্যগুলোর বৈশ্বিক মূল্য দুই বছরের সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌঁছালেও, বাংলাদেশে এই মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল ১২.৫৪%, যা ১৩ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। সামগ্রিক মুদ্রাস্ফীতির হার জুলাইতে ছিল ৯.৬৯%, তা আগস্টে এসে সামান্য বৃদ্ধি পেয়ে ৯.৯২% এ এসে দাঁড়িয়েছে।

বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়ার এ সরকারি পদক্ষেপ মূল্যস্ফীতি কমাতে খুব একটা কার্যকর হবে না উল্লেখ করে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, “বেসরকারি খাতে ঋণ কমলে উৎপাদন কমে যাবে, নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে না। সরকারের নেওয়া ঋণ উৎপাদনশীল খাতে ব্যয় করা হয় না। এতে মূল্যস্ফীতি আরও বাড়বে।”
২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট ঘাটতি মেটাতে সরকার ব্যাংকিং খাত থেকে ১,৩২,৩৯৫ কোটি টাকা ঋণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে।

২০২২-২৩ অর্থবছরে সরকার ব্যাংকিং খাত থেকে ১,০৬,৩৩৪ কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল কিন্তু ব্যয় বৃদ্ধির কারণে এ অর্থবছরে ১,১৯,২৭৫ কোটি টাকা ঋণ নিতে হয়েছিল।

বিজনেস বাংলাদেশ/ এনআই