যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে বর্তমান বিশ্ব ব্যবস্থা এক প্রকার বাতিল হয়ে গেছে। তবে যুক্তরাষ্ট্র এমন একটি ব্যবস্থা তৈরি করবে, যা পুরোনো ব্যবস্থাকে প্রতি স্থাপন করবে। গতকাল শনিবার ওয়াশিংটনের একটি অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানে সমর্থকদের উদ্দেশে দেওয়া ভাষণের সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এ কথা বলেন। রুশ সংবাদমাধ্যম আরটির প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
অনুষ্ঠানে আলাপকালে বাইডেন জানান, তিনি কীভাবে জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়াকে ইউক্রেনে সহায়তা পাঠানোর জন্য রাজি করিয়েছেন। কীভাবে তিনি ইউরোপীয় ইউনিয়ন, সৌদি আরব ও ভারতের মধ্যে রেলপথ স্থাপনের চুক্তি করিয়েছেন।
এরপর তিনি বলেন, ‘এসব থেকে আমার কাছে একটি বিষয় প্রতীয়মান হয় যে, আমাদের অনেক কিছু করার সুযোগ রয়েছে। যদি আমরা অনেক বেশি সাহসী ও অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী হই, তাহলে আমরা বিশ্বকে আবারও একত্র করতে পারব, যা আগে ছিল না।’
এ সময় তিনি বিদ্যমান বিশ্বব্যবস্থার প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, ‘আমরা বিগত ৫০ বছর একটি যুদ্ধ-পরবর্তী যুগে ছিলাম এবং এই ব্যবস্থা খুব ভালোভাবেই কাজ করছিল। কিন্তু বর্তমানে এটি এক প্রকার পুরোনো হয়ে গেছে। তাই আমাদের নতুন বিশ্বব্যবস্থা প্রয়োজন।’
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে যে বিশ্ব ব্যবস্থা চালু হয়েছিল, তা ছিল একটি দ্বিমেরুক বিশ্ব, যেখানে যুক্তরাষ্ট্র ও সোভিয়েত ইউনিয়ন নিজ নিজ প্রভাব ও ভূরাজনৈতিক আধিপত্য বিস্তারের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল। সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনে এক মেরু বিশ্বব্যবস্থার সূচনা হয়, যেখানে যুক্তরাষ্ট্র ছিল একমাত্র পরাশক্তি। সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ এইচডব্লিউ বুশ ১৯৯১ সালে তাঁর স্টেট অব দ্য ইউনিয়ন ভাষণে স্নায়ুযুদ্ধে বিজয় ও ‘নতুন বিশ্বব্যবস্থা’ সূচনার ঘোষণা দেন।
কিন্তু সেই ঘোষণার তিন দশক পর দুটি ব্যয়বহুল যুদ্ধ এবং চীনের উত্থানের বিপরীতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবে ভাটা পড়তে শুরু করে। ১৯৯১ সালে চীনের অর্থনীতি যেখানে বিশ্বের একাদশ বৃহত্তম ছিল, সেখানে বর্তমানে চীন বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি। বেইজিং নানা খাতে যুক্তরাষ্ট্রের আধিপত্যকে চ্যালেঞ্জ করছে, এমনকি চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিনপিং একাধিকবার যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বের বিশ্ব ব্যবস্থাকে পতনশীল বলে আখ্যা দিয়েছেন।
তিনি বারবার বহুমেরুক বিশ্বের পক্ষে ওকালতি করেছেন। একই পথ অনুসরণ করেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনও।
বিসনেস বাংলাদেশ/এমএইচটি