০২:০৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২১ জুলাই ২০২৫

জয়পুরহাটে খেজুরের রস থেকে গুড় তৈরিতে ব্যস্ত গাছিরা

হেমন্তের সকালে জয়পুরহাটে খেজুর রস থেকে সুস্বাদ গুড় তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন গাছিরা। খেজুর গাছ প্রস্তুতের কাজ চলছে। এই গুড়ের চাহিদা অনেক বেশি। জেলার বিভিন্ন অঞ্চলের গাছিরা এখন রস সংগ্রহে ব্যস্ত সময় পার করছেন। রাজশাহী জেলার বাঘামারা এলাকা থেকে এসেছেন অনেকে । এ ছাড়া প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে গুড় উৎপাদন ও বিপণনের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছেন স্থানীয় অনেকেই। আর গাছিদের উৎপাদিত গুড় ব্যবসায়ীদের হাত ঘুরে পরিবহনের মাধ্যমে জয়পুরহাট থেকে দেশের নানা প্রান্তে পৌঁছে যাচ্ছে।

খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করে গুড় তৈরি হয়। আবহমান গ্রামবাংলার এ ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে শীতের সকালে সূর্য যখন মিটমিট করে আলো ছড়ায় তার আগেই গাছিরা বেরিয়ে পড়েন খেজুরের রস সংগ্রহে। এরপর সংগৃহীত রস জ্বাল দিয়ে তৈরি করা হয় সুস্বাদু পাটালি ও লালি গুড়। তারপর এসব গুড় বিক্রি করা হয়। এতে চাঙ্গা হয় গ্রামীণ অর্থনীতির চাকা।জয়পুরহাটের জেলার পাঁচটি উপজেলার অনেক মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে এ পেশার সাথে জড়িত।
প্রতি গাছ থেকে ৩ থেকে ৪ কেজি খেজুরের রস সংগ্রহ করতে পারি। প্রতি কেজি ডিকা গুড়ের দাম ৩০০ টাকা দরে বাজারে বিক্রি করি। গুড় কিনতে আসা একজন ক্রেতা জানান নির্ভেজাল খেজুরের গুড় পাওয়া যায়। তাই কয়েক কেজি গুড় কিনতে এসেছি। তবে গত বছরের চেয়ে এবারের গুড়ের দাম বেশি। তবুও ভালো গুড় বিধায় কিনতেছি।

জয়পুরহাট সদর উপজেলার খঞ্জনপুর রাজশাহীর বাঘা উপজেলা থেকে আসা খেজুর রস সংগ্রহকারী আনসার মিয়া জানান, প্রতি বছরের মতো এবারো জয়পুরহাট, পাঁচবিবি ও আক্কেলপুর উপজেলার বিভন্ন এলাকায় তারা খেজুর গাছ লিজ নিয়েছেন। তারা বলেন, শীতের পুরো ৪ মাস এসব খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করে গুড় উৎপাদন করবেন। দীর্ঘ ২৭ বছর ধরে এভাবেই খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহের মাধ্যমে চুলার আঁচে পাটালি ও লালি গুড় তৈরি করে থাকেন।

গুড় কিনতে আসা একজন ক্রেতা আব্দুর রাজ্জাক জানান এই গুড় একদম ভেজাল মুক্ত। এই জন্য আমরা দূর-দূরান্ত থেকে এখানে গুড় কিনতে আসি ।এই গুড়ের চাহিদা অনেক বেশি এবং খেতেও ভালো। দোগাছী ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য রানা আহমেদ আজকের বিজনেস বাংলাদেশকে বলেন দূর দূরান্ত থেকে অনেক মানুষ এখানে গুড় কিনতে আসেন। এখানকার গুড় বিভিন্ন জায়গায় রপ্তানি করা হয়। এলাকার মানুষজন এই গুড় কিনে নানা রকম শীতের পিঠা বানান। এই গুড় একদম ভেজাল মুক্ত। এই জন্য এই গুড়ের চাহিদাও বেশি।

জেলার পাঁচটি উপজেলায় ১০ হাজার খেজুর গাছ থেকে প্রতিদিন ২ হাজার ৫০০ কেজি খেজুর গুড় উৎপাদন করা হচ্ছে। খেজুর গাছের জন্য বাড়তি কোনও পরিচর্যার প্রয়োজন হয় না বলে কৃষি বিভাগ কৃষকদের বাড়ির আশপাশ, জমির আইল, পুকুরপাড় এবং সড়কের ধারে খেজুর গাছ লাগানোর পরামর্শ দিচ্ছে। পরিত্যক্ত জমিতে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে খেজুর বাগান গড়ে তোলা হলে কৃষকেরা লাভবান হবেন।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রশিক্ষন কমকতা এনামুল হক জানান, জয়পুরহাট জেলার পাঁচটি উপজেলার অনেক মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে এ পেশার সাথে জড়িত। এই উৎপাদিত গুড় নিজের জেলার চাহিদা মিটিয়ে রপ্তানি করা সম্ভব।

বিজনেস বাংলাদেশ/DS

জনপ্রিয়

ভবিষ্যতে আরও কঠোর হবে এনসিপির প্রতিবাদপ্রতিশ্রুতি পূরণে ব্যর্থ অন্তর্বর্তী সরকার: মাহবুব আলম

জয়পুরহাটে খেজুরের রস থেকে গুড় তৈরিতে ব্যস্ত গাছিরা

প্রকাশিত : ১১:১১:০৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৪

হেমন্তের সকালে জয়পুরহাটে খেজুর রস থেকে সুস্বাদ গুড় তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন গাছিরা। খেজুর গাছ প্রস্তুতের কাজ চলছে। এই গুড়ের চাহিদা অনেক বেশি। জেলার বিভিন্ন অঞ্চলের গাছিরা এখন রস সংগ্রহে ব্যস্ত সময় পার করছেন। রাজশাহী জেলার বাঘামারা এলাকা থেকে এসেছেন অনেকে । এ ছাড়া প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে গুড় উৎপাদন ও বিপণনের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছেন স্থানীয় অনেকেই। আর গাছিদের উৎপাদিত গুড় ব্যবসায়ীদের হাত ঘুরে পরিবহনের মাধ্যমে জয়পুরহাট থেকে দেশের নানা প্রান্তে পৌঁছে যাচ্ছে।

খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করে গুড় তৈরি হয়। আবহমান গ্রামবাংলার এ ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে শীতের সকালে সূর্য যখন মিটমিট করে আলো ছড়ায় তার আগেই গাছিরা বেরিয়ে পড়েন খেজুরের রস সংগ্রহে। এরপর সংগৃহীত রস জ্বাল দিয়ে তৈরি করা হয় সুস্বাদু পাটালি ও লালি গুড়। তারপর এসব গুড় বিক্রি করা হয়। এতে চাঙ্গা হয় গ্রামীণ অর্থনীতির চাকা।জয়পুরহাটের জেলার পাঁচটি উপজেলার অনেক মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে এ পেশার সাথে জড়িত।
প্রতি গাছ থেকে ৩ থেকে ৪ কেজি খেজুরের রস সংগ্রহ করতে পারি। প্রতি কেজি ডিকা গুড়ের দাম ৩০০ টাকা দরে বাজারে বিক্রি করি। গুড় কিনতে আসা একজন ক্রেতা জানান নির্ভেজাল খেজুরের গুড় পাওয়া যায়। তাই কয়েক কেজি গুড় কিনতে এসেছি। তবে গত বছরের চেয়ে এবারের গুড়ের দাম বেশি। তবুও ভালো গুড় বিধায় কিনতেছি।

জয়পুরহাট সদর উপজেলার খঞ্জনপুর রাজশাহীর বাঘা উপজেলা থেকে আসা খেজুর রস সংগ্রহকারী আনসার মিয়া জানান, প্রতি বছরের মতো এবারো জয়পুরহাট, পাঁচবিবি ও আক্কেলপুর উপজেলার বিভন্ন এলাকায় তারা খেজুর গাছ লিজ নিয়েছেন। তারা বলেন, শীতের পুরো ৪ মাস এসব খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করে গুড় উৎপাদন করবেন। দীর্ঘ ২৭ বছর ধরে এভাবেই খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহের মাধ্যমে চুলার আঁচে পাটালি ও লালি গুড় তৈরি করে থাকেন।

গুড় কিনতে আসা একজন ক্রেতা আব্দুর রাজ্জাক জানান এই গুড় একদম ভেজাল মুক্ত। এই জন্য আমরা দূর-দূরান্ত থেকে এখানে গুড় কিনতে আসি ।এই গুড়ের চাহিদা অনেক বেশি এবং খেতেও ভালো। দোগাছী ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য রানা আহমেদ আজকের বিজনেস বাংলাদেশকে বলেন দূর দূরান্ত থেকে অনেক মানুষ এখানে গুড় কিনতে আসেন। এখানকার গুড় বিভিন্ন জায়গায় রপ্তানি করা হয়। এলাকার মানুষজন এই গুড় কিনে নানা রকম শীতের পিঠা বানান। এই গুড় একদম ভেজাল মুক্ত। এই জন্য এই গুড়ের চাহিদাও বেশি।

জেলার পাঁচটি উপজেলায় ১০ হাজার খেজুর গাছ থেকে প্রতিদিন ২ হাজার ৫০০ কেজি খেজুর গুড় উৎপাদন করা হচ্ছে। খেজুর গাছের জন্য বাড়তি কোনও পরিচর্যার প্রয়োজন হয় না বলে কৃষি বিভাগ কৃষকদের বাড়ির আশপাশ, জমির আইল, পুকুরপাড় এবং সড়কের ধারে খেজুর গাছ লাগানোর পরামর্শ দিচ্ছে। পরিত্যক্ত জমিতে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে খেজুর বাগান গড়ে তোলা হলে কৃষকেরা লাভবান হবেন।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রশিক্ষন কমকতা এনামুল হক জানান, জয়পুরহাট জেলার পাঁচটি উপজেলার অনেক মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে এ পেশার সাথে জড়িত। এই উৎপাদিত গুড় নিজের জেলার চাহিদা মিটিয়ে রপ্তানি করা সম্ভব।

বিজনেস বাংলাদেশ/DS