রমজানকে সামনে রেখে কুষ্টিয়ায় নতুন পেঁয়াজ না উঠার অজুহাতে দিনের পর দিন মুলকাটা পেঁয়াজের দাম বেড়েই চলেছে।
গত এক সপ্তাহের ব্যাবধানে পেঁয়াজ প্রতি কেজিতে পাইকারী বাজারে বেড়েছে ৬০ টাকা। গত এক সপ্তাহ আগেও যা খুচরা মূল্যে বিক্রি করা হয়েছে ১০০ থেকে ১১০ টাকায়। ১০ ফেব্রুয়ারি শনিবার ওই পেঁয়াজ পাইকারী বাজারে বেরে ১২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। খুচরা বাজারে ১৪০ টাকা কেজী। ভোক্তারা বাজারে এসে পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি দেখে চোখের পানি ঝড়িয়ে হতাশ হয়েছেন।
তবে কুষ্টিয়া পৌর বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, মুল কাটা পেঁয়াজ শেষের দিকে হওয়ায় দাম কিছুটা বেড়েছে। মাঠ থেকে চারা পেঁয়াজ উঠে আসলেই দাম কমে যাবে। বাজার নিয়ন্ত্রনে না থাকায় কতিপয় ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি করে চলেছে। স্থানীয় প্রশাসন ওই সব সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি হয়ে আছে বলে অভিযোগ করছে ভোক্তারা। পেঁয়াজের মূল্য বৃদ্ধির ফলে নিম্ন ও মধ্যবৃত্ত আয়ের মানুষগুলো পড়েছে বেকায়দায়।
খুচরা ব্যবসায়ী ফয়েজ উদ্দিন বলেন, গত সপ্তাহে যে পেঁয়াজ পাইকারী বাজার থেকে ৬০/৭০ টাকায় কিনেছি ওই বাজারেই আজ ১৩০ টাকা কেজী পেঁয়াজ কিনতে হলো। আমরা এই পেঁয়াজ ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকা খুচরা বিক্রি করছি। আমরা যে দামে খরিদ করছি সামান্য লাভে তা বিক্রি করছি। তবে আর অল্প কিছু দিনের মধ্যেই পেঁয়াজের দাম কমে যাবে।
ফরিদ উদ্দিন নামের অপর এক খুচরা ব্যবসায়ী বলেন, পেঁয়াজের যেহারে দাম বাড়ছে আমি অতীতে এমন দাম বাড়া দেখিনি। প্রশাসনের নজর না থাকায় পাইকারী ব্যবসায়ীরা তাদের ইচ্ছেমত দাম বৃদ্ধি করে চলেছে। নানা অজুহাত দেখিয়ে পাইকারি ব্যবসা ব্যবসায়ীরা পেঁয়াজের মূল্য বৃদ্ধি করলেও প্রশাসন নিরব রয়েছে।
আব্দুল আলিম নামের এক ভোক্তা কুষ্টিয়া পৌর বাজারে পেঁয়াজ কিনতে এসে হতাশ হয়ে বলেন, আমি এসেছিল ৫’শ গ্রাম পেঁয়াজ কিনতে। কিন্তু পেঁয়াজের যে দাম তাতে আমি ২৫০ গ্রাম পেঁয়াজ কিনে বাড়ী যাচ্ছি। তিনি বলেন, বাজারের মূল্যবৃদ্ধির কথা কার কাছে বলবো। বাজারতো নিয়ন্ত্রনহীন। সকালে এক দাম বিকেলে আরেক দাম। বাজার নিয়ন্ত্রনে সরকার সম্পূর্ন ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। সরকার জোর গলায় বলছেন বাজার নিয়ন্ত্রনে রাখা হবে, কৈ আমরাতো তার কোন নমুনা দেখছি না।
সফর আলী নামের আরেক ভোক্তা বাজারে এসে পেঁয়াজ না কিনে খালি হাতে ব্যাগ নিয়ে বাড়ী যাবার সময় বললেন, আমরা কোন দেশে বাস করছি সামান্য পেঁয়াজ তাও কিনে খেতে পারছিনা। ৭০ টাকার পেঁয়াজ আজ ১৪০ টাকা।
আমি একজন দিন মজুর, একদিন কাজ হলে আরেকদিন বসে থাকি। এত দাম দিয়ে পেঁয়াজ কিনে খাবো কিভাবে। তাই মনে করছি আজ না হয় পেঁয়াজ বাদেই তরকারী রান্না করতে হবে। বাজার নিয়ন্ত্রনে কাজ করা সিনিয়র কৃষি বিপনন কর্মকর্তা সুজাত হোসেন খান বলেন, বাজার নিয়ন্ত্রনে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আমরা প্রতিদিনই বাজার মনিটরিং করছি। কেই সিন্ডিকেট করে ব্যবসা করলে তাদের ছাড় দেয়া হবে না। রমজানের আগেই বাজারে পেঁয়াজের মূল্য বৃদ্ধি নিয়ে হতাশ হয়েপড়েছে নিম্ন ও মধ্যবৃত্ত আয়ের মানুষগুলো।
এখনই বাজারে পেঁয়াজের লাগাম টেনে ধরতে না পারলে রমজান মাসে আরো ক্রয় ক্ষমতার বাহিরে চলে যাবে বলে মনে করছে সুশীল সমাজ।