১১:৫৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৮ মে ২০২৪

ছয় বছরেও সরকারি সুবিধাদি না পেয়ে তাবদাহে জমিতে কাজ করছেন সাবেক অধ্যাপক

দেশে চলমান তীব্র তাপদাহে যেখানে ঘর থেকে বাইরে বের হওয়া দুস্কর এমন সময় প্রখর রোদে নিজের জমিতে কাজ করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সময়ের স্বর্নপদকপ্রাপ্ত শিক্ষার্থী নরসিংদী জেলার সরকারিকরণকৃত মনোহরদী সরকারি কলেজের ইসলাম শিক্ষা বিভাগের সাবেক সহকারী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান আবুল ফজল মোঃ রিয়াজ উদ্দিন।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণা অনুযায়ী ২০১৮ সালের ৮ ই আগস্ট প্রায় তিন শতাধিক কলেজের সাথে জাতীয়করণ করা হয় নরসিংদী জেলার মনোহরদী উপজেলাস্থ মনোহরদী ডিগ্রি কলেজ। উক্ত কলেজ থেকে ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে বিধি মোতাবেক ৫৯ বছর পূর্ন করে অবসরে যান তিনি। ২০২৩ সালের ১৪ ই আগস্ট এডহক নিয়োগ পেয়েও প্রায় ছয় বছর যাবত কোনো সরকারি সুবিধাদি (পেনশন, বকেয়া, পিআর এল ইত্যাদি ) না পেয়ে অবসরে গিয়ে বার্ধক্যে এসে বিশ্রাম করার সময়টুকুতে জমিতে কাজ করতে হচ্ছে। এ শিক্ষকের বাড়ি মনোহরদী উপজেলার নোয়াকান্দি গ্রামে।

 

সম্প্রতি সরকারি কলেজ শিক্ষকদের একটি ফেসবুক পেজে এই শিক্ষকের প্রখর রোদে কাজ করার একটি ভিডিও ক্লিপ প্রকাশিত হয়। যার ফলশ্রুতিতে এই বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চাইলে সাবেক সহকারী অধ্যাপক রিয়াজ উদ্দিন জানান, আমি মনোহরদী সরকারি কলেজ থেকে ইসলাম শিক্ষা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হিসেবে ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে অবসরে গিয়েছিলাম। দীর্ঘ ছয় বছরেরও আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে কলেজ সরকারিকরণ ও এডহক নিয়োগ পাওয়ার পরও সরকারি কোনো সুযোগ সুবিধা পাচ্ছি না। কয়েক মাসের বকেয়া ছাড়া কিছুই পাইনি। আমার পেনশন, কয়েক বছরের বকেয়া, পিআর এল, ল্যাম গ্র্যান্ড সহ কোনো সুবিধা পাচ্ছি না। তিন সন্তান আর স্ত্রীর ভরণপোষণ সামলাতে তাই অনেকটা বাধ্য হয়েই নিজের জমি, কলা, লটকন বাগান, পুকুর ইত্যাদি দেখভাল করতে হচ্ছে।

হতাশার অন্ধকারে মানবেতর জীবনযাপন করা এই শিক্ষক এডহক নিয়োগের পরেও বেতন ভাতা পাওয়ার আশা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করে বলেন, সাহসী বাবার সাহসী কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণা অনুযায়ী সরকারিকরণ করা কলেজ গুলোর প্রায় কয়েক হাজার শিক্ষক ইতিমধ্যে অবসরে গিয়েছেন এবং কোনো সুবিধা না পেয়েই মৃত্যুবরণ করেছেন। তাই অতি দ্রুত সমস্যার সমাধান করাটা জরুরি।

উল্লেখ্য, প্রত্যেক উপজেলায় একটি করে স্কুল ও কলেজ জাতীয়করণের এই সাহসী পদক্ষেপের অংশ হিসেবে তিন শতাধিক কলেজ সরকারিকরণ করা হয়। কিন্তু কোন অদৃশ্য জটিলতায় ৮ ই আগস্ট ২০১৮ এর পরে যারা অবসরে গিয়েছেন এবং মৃত্যুবরণ করেছেন এমন প্রায় কয়েক হাজার শিক্ষক- কর্মচারী এখনও পর্যন্ত সরকারি সুবিধা বঞ্চিত। পাশাপাশি অনেক প্রতিষ্ঠানে এখনো এডহক নিয়োগ এবং অন্যান্য প্রক্রিয়া শেষ হয়নি। যার অভিশাপস্বরূপ কয়েক হাজার মানুষ গড়ার কারিগর আজ অসহায় এবং জীবন যুদ্ধে কঠিন সংগ্রাম করছেন।

বিজনেস বাংলাদেশ/একে

ছয় বছরেও সরকারি সুবিধাদি না পেয়ে তাবদাহে জমিতে কাজ করছেন সাবেক অধ্যাপক

প্রকাশিত : ০৪:১৯:৪১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ মে ২০২৪

দেশে চলমান তীব্র তাপদাহে যেখানে ঘর থেকে বাইরে বের হওয়া দুস্কর এমন সময় প্রখর রোদে নিজের জমিতে কাজ করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সময়ের স্বর্নপদকপ্রাপ্ত শিক্ষার্থী নরসিংদী জেলার সরকারিকরণকৃত মনোহরদী সরকারি কলেজের ইসলাম শিক্ষা বিভাগের সাবেক সহকারী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান আবুল ফজল মোঃ রিয়াজ উদ্দিন।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণা অনুযায়ী ২০১৮ সালের ৮ ই আগস্ট প্রায় তিন শতাধিক কলেজের সাথে জাতীয়করণ করা হয় নরসিংদী জেলার মনোহরদী উপজেলাস্থ মনোহরদী ডিগ্রি কলেজ। উক্ত কলেজ থেকে ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে বিধি মোতাবেক ৫৯ বছর পূর্ন করে অবসরে যান তিনি। ২০২৩ সালের ১৪ ই আগস্ট এডহক নিয়োগ পেয়েও প্রায় ছয় বছর যাবত কোনো সরকারি সুবিধাদি (পেনশন, বকেয়া, পিআর এল ইত্যাদি ) না পেয়ে অবসরে গিয়ে বার্ধক্যে এসে বিশ্রাম করার সময়টুকুতে জমিতে কাজ করতে হচ্ছে। এ শিক্ষকের বাড়ি মনোহরদী উপজেলার নোয়াকান্দি গ্রামে।

 

সম্প্রতি সরকারি কলেজ শিক্ষকদের একটি ফেসবুক পেজে এই শিক্ষকের প্রখর রোদে কাজ করার একটি ভিডিও ক্লিপ প্রকাশিত হয়। যার ফলশ্রুতিতে এই বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চাইলে সাবেক সহকারী অধ্যাপক রিয়াজ উদ্দিন জানান, আমি মনোহরদী সরকারি কলেজ থেকে ইসলাম শিক্ষা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হিসেবে ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে অবসরে গিয়েছিলাম। দীর্ঘ ছয় বছরেরও আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে কলেজ সরকারিকরণ ও এডহক নিয়োগ পাওয়ার পরও সরকারি কোনো সুযোগ সুবিধা পাচ্ছি না। কয়েক মাসের বকেয়া ছাড়া কিছুই পাইনি। আমার পেনশন, কয়েক বছরের বকেয়া, পিআর এল, ল্যাম গ্র্যান্ড সহ কোনো সুবিধা পাচ্ছি না। তিন সন্তান আর স্ত্রীর ভরণপোষণ সামলাতে তাই অনেকটা বাধ্য হয়েই নিজের জমি, কলা, লটকন বাগান, পুকুর ইত্যাদি দেখভাল করতে হচ্ছে।

হতাশার অন্ধকারে মানবেতর জীবনযাপন করা এই শিক্ষক এডহক নিয়োগের পরেও বেতন ভাতা পাওয়ার আশা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করে বলেন, সাহসী বাবার সাহসী কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণা অনুযায়ী সরকারিকরণ করা কলেজ গুলোর প্রায় কয়েক হাজার শিক্ষক ইতিমধ্যে অবসরে গিয়েছেন এবং কোনো সুবিধা না পেয়েই মৃত্যুবরণ করেছেন। তাই অতি দ্রুত সমস্যার সমাধান করাটা জরুরি।

উল্লেখ্য, প্রত্যেক উপজেলায় একটি করে স্কুল ও কলেজ জাতীয়করণের এই সাহসী পদক্ষেপের অংশ হিসেবে তিন শতাধিক কলেজ সরকারিকরণ করা হয়। কিন্তু কোন অদৃশ্য জটিলতায় ৮ ই আগস্ট ২০১৮ এর পরে যারা অবসরে গিয়েছেন এবং মৃত্যুবরণ করেছেন এমন প্রায় কয়েক হাজার শিক্ষক- কর্মচারী এখনও পর্যন্ত সরকারি সুবিধা বঞ্চিত। পাশাপাশি অনেক প্রতিষ্ঠানে এখনো এডহক নিয়োগ এবং অন্যান্য প্রক্রিয়া শেষ হয়নি। যার অভিশাপস্বরূপ কয়েক হাজার মানুষ গড়ার কারিগর আজ অসহায় এবং জীবন যুদ্ধে কঠিন সংগ্রাম করছেন।

বিজনেস বাংলাদেশ/একে