০১:৪২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০১ জুলাই ২০২৪

বেনজীরের শুনানি পেছাতে দুদকে স্ত্রী ও কন্যার চিঠি

পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদের শুনানি পেছাতে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) চিঠি দিয়েছেন তার স্ত্রী ও তিন মেয়ে। এর আগে ১৫ দিন সময় চেয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে দুদকে আবেদন করেছিলেন বেনজীর। সেই সময় বেনজীরের ব্যক্তিগত শুনানির জন্য ৬ জুন নির্ধারিত ছিল।

রোববার (৯ জুন) তার স্ত্রী ও তিন মেয়ে দুদককে ফের সময় পেছাতে চিঠি দেন। এবার বেনজীরকে ২৩ জুন জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দিন ধার্য করে দুদক।

এদিকে ঢাকা মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ আশ-শামস জগলুল হোসেন বেনজীর আহমেদ ও তার পরিবারের সদস্যদের স্থাবর সম্পত্তি দেখভালের জন্য তত্ত্বাবধায়ক নিয়োগ দেন। তার সাভারের সম্পত্তি দেখবেন সেখানকার ইউএনও, গোপালগঞ্জের মাছের খামার দেখবেন জেলা মৎস্য কর্মকর্তা। এ ছাড়া মাদারীপুর ও কক্সবাজারের সম্পত্তি দেখাশোনা করবেন সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক।

প্রসঙ্গত, বেনজীরের বিশাল বিত্তবৈভব নিয়ে গত ৩১ মার্চ ও ৩ এপ্রিল প্রতিবেদন প্রকাশ হয় বিভিন্ন গণমাধ্যমে। এতে সাবেক এই আইজিপি ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ উঠে আসে। প্রতিবেদনে বলা হয়, গোপালগঞ্জের সাহাপুর ইউনিয়নে সাভানা ইকো রিসোর্ট নামে প্রায় ১৪০০ বিঘা জমিতে একটি রিসোর্ট গড়ে তুলেছে বেনজীর পরিবার। এ ছাড়া ঢাকা ও পূর্বাচলে সাবেক এ আইজিপির একাধিক ফ্ল্যাট ও বাড়ি আছে। তার স্ত্রী ও দুই মেয়ের নামে দেশের বিভিন্ন এলাকায় আছে অন্তত ছয়টি কোম্পানি। পাঁচটি প্রতিষ্ঠানে বেনজীরের বিনিয়োগের পরিমাণ ৫০০ কোটি টাকারও বেশি হতে পারে বলে উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে। পরবর্তীতে অভিযোগ যাচাই-বাছাই শেষে গত ১৮ এপ্রিল অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় দুদক।

অনুসন্ধান করতে গিয়ে বেনজীর আহমেদ, তার স্ত্রী জিশান মীর্জা ও তিন মেয়ের নামে ১৯৬টি দলিলে থাকা ৬২৭ বিঘা জমি (২০ হাজার ৭০৩ শতক), ৩৩টি ব্যাংক হিসাব ও ২৫টি কোম্পানিতে বিনিয়োগের সন্ধান পায় দুদক। এরপর সংস্থাটির আবেদনের প্রেক্ষিতে এসব সম্পদ জব্দ ও অবরুদ্ধ করার আদেশ দেন আদালত।

আদালতের নথি থেকে জানা যায়, বেনজীরের সম্পত্তির একটি বড় অংশ রয়েছে তার নিজ জেলা গোপালগঞ্জের তিন উপজেলায়। গোপালগঞ্জ সদরে ২০১৭ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ৬৫টি দলিলে ২৪০ বিঘা জমি কিনেছেন তিনি। টুঙ্গিপাড়ায় তিনটি দলিলে ৪৭ শতাংশ, কোটালীপাড়ায় ৩৫ বিঘা জমি কিনেছেন। এ ছাড়া পার্শ্ববর্তী জেলা মাদারীপুরের রাজৈরে ২০২১ ও ২০২২ সালে তার স্ত্রী জীশান মীর্জার নামে প্রায় ২৮০ বিঘা জমি কেনা হয়েছে।

বেনজীর আহমেদ ২০১৫ সালের ৭ জানুয়ারি এলিট ফোর্স র‌্যাবের মহাপরিচালকের দায়িত্ব পান। এর আগে তিনি ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সাড়ে চার বছর র‌্যাবের নেতৃত্ব দেওয়ার পর ২০২০ সালের ১৫ এপ্রিল আইজিপি হিসেবে দায়িত্ব পান তিনি।

বিজনেস বাংলাদেশ/একে

ট্যাগ :
জনপ্রিয়

ফরিদপুর চর অঞ্চল ও কৃষকদের মাঝে জেলা প্রসাশকের গামবুট বিতরণ

বেনজীরের শুনানি পেছাতে দুদকে স্ত্রী ও কন্যার চিঠি

প্রকাশিত : ০৩:৪৭:২৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ৯ জুন ২০২৪

পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদের শুনানি পেছাতে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) চিঠি দিয়েছেন তার স্ত্রী ও তিন মেয়ে। এর আগে ১৫ দিন সময় চেয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে দুদকে আবেদন করেছিলেন বেনজীর। সেই সময় বেনজীরের ব্যক্তিগত শুনানির জন্য ৬ জুন নির্ধারিত ছিল।

রোববার (৯ জুন) তার স্ত্রী ও তিন মেয়ে দুদককে ফের সময় পেছাতে চিঠি দেন। এবার বেনজীরকে ২৩ জুন জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দিন ধার্য করে দুদক।

এদিকে ঢাকা মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ আশ-শামস জগলুল হোসেন বেনজীর আহমেদ ও তার পরিবারের সদস্যদের স্থাবর সম্পত্তি দেখভালের জন্য তত্ত্বাবধায়ক নিয়োগ দেন। তার সাভারের সম্পত্তি দেখবেন সেখানকার ইউএনও, গোপালগঞ্জের মাছের খামার দেখবেন জেলা মৎস্য কর্মকর্তা। এ ছাড়া মাদারীপুর ও কক্সবাজারের সম্পত্তি দেখাশোনা করবেন সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক।

প্রসঙ্গত, বেনজীরের বিশাল বিত্তবৈভব নিয়ে গত ৩১ মার্চ ও ৩ এপ্রিল প্রতিবেদন প্রকাশ হয় বিভিন্ন গণমাধ্যমে। এতে সাবেক এই আইজিপি ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ উঠে আসে। প্রতিবেদনে বলা হয়, গোপালগঞ্জের সাহাপুর ইউনিয়নে সাভানা ইকো রিসোর্ট নামে প্রায় ১৪০০ বিঘা জমিতে একটি রিসোর্ট গড়ে তুলেছে বেনজীর পরিবার। এ ছাড়া ঢাকা ও পূর্বাচলে সাবেক এ আইজিপির একাধিক ফ্ল্যাট ও বাড়ি আছে। তার স্ত্রী ও দুই মেয়ের নামে দেশের বিভিন্ন এলাকায় আছে অন্তত ছয়টি কোম্পানি। পাঁচটি প্রতিষ্ঠানে বেনজীরের বিনিয়োগের পরিমাণ ৫০০ কোটি টাকারও বেশি হতে পারে বলে উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে। পরবর্তীতে অভিযোগ যাচাই-বাছাই শেষে গত ১৮ এপ্রিল অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় দুদক।

অনুসন্ধান করতে গিয়ে বেনজীর আহমেদ, তার স্ত্রী জিশান মীর্জা ও তিন মেয়ের নামে ১৯৬টি দলিলে থাকা ৬২৭ বিঘা জমি (২০ হাজার ৭০৩ শতক), ৩৩টি ব্যাংক হিসাব ও ২৫টি কোম্পানিতে বিনিয়োগের সন্ধান পায় দুদক। এরপর সংস্থাটির আবেদনের প্রেক্ষিতে এসব সম্পদ জব্দ ও অবরুদ্ধ করার আদেশ দেন আদালত।

আদালতের নথি থেকে জানা যায়, বেনজীরের সম্পত্তির একটি বড় অংশ রয়েছে তার নিজ জেলা গোপালগঞ্জের তিন উপজেলায়। গোপালগঞ্জ সদরে ২০১৭ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ৬৫টি দলিলে ২৪০ বিঘা জমি কিনেছেন তিনি। টুঙ্গিপাড়ায় তিনটি দলিলে ৪৭ শতাংশ, কোটালীপাড়ায় ৩৫ বিঘা জমি কিনেছেন। এ ছাড়া পার্শ্ববর্তী জেলা মাদারীপুরের রাজৈরে ২০২১ ও ২০২২ সালে তার স্ত্রী জীশান মীর্জার নামে প্রায় ২৮০ বিঘা জমি কেনা হয়েছে।

বেনজীর আহমেদ ২০১৫ সালের ৭ জানুয়ারি এলিট ফোর্স র‌্যাবের মহাপরিচালকের দায়িত্ব পান। এর আগে তিনি ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সাড়ে চার বছর র‌্যাবের নেতৃত্ব দেওয়ার পর ২০২০ সালের ১৫ এপ্রিল আইজিপি হিসেবে দায়িত্ব পান তিনি।

বিজনেস বাংলাদেশ/একে