কোটা নিয়ে আন্দোলন কালে ভাংচুর অগ্নিসংযোগ, হামলা-লুটপাটের পর পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক হওয়ার পর মানুষের জীবনযাত্রা অনেকটাই স্বাভাবিক হতে চলেছে। পোশাক কারখানা চালু হলেও পর্যাপ্ত আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য না থাকায় বিভিন্ন জনমনে অজানা আতঙ্ক বিরাজ করছে। নানা অজুহাতে নিত্য পণ্যের চড়ামূল্যের কারণে ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে অসন্তোষ বিরাজ করছে। এছাড়া পণ্য পরিবহণে ছিনতাই-লুট হওয়ার আশঙ্কা করছেন গাজীপুরের ব্যবসায়িরা।
গাজীপুরের ভোগড়া বাইপাস মোড়ের পাশে মোগরখাল এলাকায় থাকা কোটা নিয়ে আন্দোলন কালে ভাংচুর অগ্নিসংযোগ, হামলা-লুটপাট ঘটনার পর পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক হওয়ার পর বর্তমানে প্রায় শতভাগ পোশাক কারখানা চালু হয়েছে। এখনও বায়ারদের নতুন করে কোন ফিডব্যাক পাইনি। অ্যাকশন/রি-অ্যাকশন পাইনি। আশা করি অতি শীঘ্রই এ অবস্থা কেটে যাবে। অনেকক্ষেত্রে বায়াররা পজেটিভ হচ্ছে। ইতোপূর্বে তারা প্রচুর অর্ডার ড্রপ করেছিল, এখন এটা রিভাইভ করবে। বায়াররা সবকিছুই অবজার্ব করছে। যানবহন চলাচল স্বাভাবিক হচ্ছে। তবে কাস্টম বিভাগে কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে কাজকর্ম ডি’লে করছে। পণ্যগুলো রিলিজ করছে না। আর্টিফিসিয়ালী ক্রাইসিস তৈরি করছে। চলমান পরিস্থিতিতে রাতের বেলা পণ্য পরিবহণ না করে দিনের বেলায় গন্তব্যে গাড়ি পাঠিচ্ছি।
চান্দনা-চৌরাস্তা কাঁচা বাজার ব্যবসায়ি ভাই ভাই বানিজ্যালয়ের মালিক রাজু মিয়া জানান, আমাদের ব্যবসার পরিস্থিতি খুব ভাল নেই। কেনা-বেচা খুব বেশি হয়না। মানুষ আগের চেয়ে কম কেনা-কাটা করছে। যা না হলেই নয় তা নিয়ে চলার চেষ্টা করছে। তবে পন্য মূল্য নিয়ন্ত্রণহী হয়ে পড়েছে। পাইকারী ব্যবসায়িরা পণ্যের মূল্য বেশি রাখা আমাদের নিত্যপণ্যে বেশি দরে বিক্রি করতে হবে। এখন কিছু শিক্ষার্থীরা বাজারে ঢুকে পণ্যের মূল কম রাখার কথা বলে গেছে। আমাদের কেনা দামের চেয়ে তারা কম বিক্রি করতে বলছেন। এমতাবস্থায় আমরা পড়েছি বেকায়দায়।
জয়দেবপুর রাজবাড়ী সড়কে ভ্যানে ভাসমান কাঁচা বাজার ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “আমরা তো সারাদিন ব্যাবসা করি না। সন্ধ্যার পর এলাকায় রিকশা ভ্যানে কাঁচা মাল ব্যবসা করি। এখন ব্যবসাা করতে গেলে আর কাউকে চাঁদা দিতে হয়না। পরিস্থিতি ভালো হচ্ছে। এখন পুলিশ নাই, চাঁদাবাজি’ও নাই। ভাসমান আরেক ফল ব্যাবসায়ী মো: কামরান হাসান বলেন, “ব্যাবসা চলছে মোটামুটি। আগে এলাকায় কাঁচামাল বিক্রি করতে গেলে রাজনৈতিক নেতাদেরও চাঁদা দিতে হতো, এখন আর কেউ চাঁদা নেয় না।
গাজীপুর-ঢাকা রুটে চলাচালকারী ভিআইপি পরিবহন সার্ভিসের পচিালক মো. কামরুল হাসান রিপর বলেন, রাস্তায় ট্রাফিক অব্যবস্থাপনার কারণে গাড়ি চালানো সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা ট্রাফিক আইন-কানুন বুঝে না। তারা চালকদের সঙ্গে সদূর্বব্যহারও করছেন। তাই আমাদের সার্ভিসের ৩০শতাংশ গাড়ি চলাচল করছে না। এতে আমাদের আয়ও ৫০শতাংশ কমে গেছে।
গাজীপুর জেলা প্রশাসক আবুল ফাতে মোহাম্মদ সফিকুল ইসলাম বলেন, চলমান পরিস্থিতিতে বাজার বাজারে ম্যাজিস্ট্রেট পাঠিয়ে ব্যবসায়িরা যাতে মূল্য বেশি না নেয় সে ব্যাপারে সচেতনতা বৃদ্ধি করছি। তারপরও তারা ঠিক না হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেব। গার্মেন্ট ব্যবসায়িদের কারাখানা ও ব্যবসায় নিরাপত্তা বিধানে টাস্কফোর্স কাজ করছে। তারপরও এ মূহুর্তে পণ্য পরিবহণে নিরাপত্তা দিতে কি করা যায় সে ব্যাপারে কারখানা মালিক ও সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদের সঙ্গে পরামর্শ করে ঠিক করা হবে।