০৬:৩৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৮ নভেম্বর ২০২৫

টিএসসিতে ত্রাণ দিতে আজও মানুষের ঢল

দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে চলমান বন্যা পরিস্থিতিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উদ্যোগে দ্বিতীয় দিনের মতো ‘গণত্রাণ’ কর্মসূচিতে ত্রাণ পৌঁছে দিতে হাজারো মানুষের ঢল নেমেছে। ব্যক্তিগত গাড়ি থেকে শুরু করে, ট্রাক, সিএনজি, রিকশা বা হাতে করে অসংখ্য মানুষ ত্রাণ নিয়ে আসছেন।

সারাদেশে বন্যার্তদের সহায়তা করতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) আজ শনিবারও (২৪ আগস্ট) ত্রাণ সংগ্রহ কার্যক্রম পরিচালনা করবেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ও সহ-সমন্বয়করা। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) বুথ বসিয়ে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত গণত্রাণ সংগ্রহ কর্মসূচি চলবে। এর আগে শুক্রবার (২৩ আগস্ট) সকাল থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত চলে এ কার্যক্রম।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ শনিবার ভোরে ফেসবুক লাইভে বলেছেন, দুর্গত এলাকায় ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম চলছে। পাশাপাশি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গণত্রাণ সংগ্রহ চলবে। এতে মানুষ অভূতপূর্ব সাড়া দিচ্ছেন। এটাকে জাতীয় ঐক্যের প্রতীক বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, দল-মত নির্বিশেষে সবাই অংশগ্রহণ করছেন। এ টাকা খরচের পর সংগৃহীত টাকার হিসাব দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

এর আগে দেশের বন্যার্ত এলাকার মানুষের সহায়তার জন্য শুক্রবার ১ কোটি ২৬ লাখ ২২ হাজার ১৭২ টাকা সংগ্রহ করেছে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মী এবং সাধারণ শিক্ষার্থীরা। তারা জানিয়েছেন, শুক্রবার নগদ অর্থের পাশাপাশি সংগ্রহ করা হয়েছে শুকনো খাবার, প্রয়োজনীয় ওষুধ, স্যালাইন ও পোশাক। এছাড়াও সংগ্রহ করা হয়েছে গবাদি পশুর খাবারও। এদিন যে পরিমাণ ত্রাণ সামগ্রী উঠানো হয়েছে, তা বন্যা দুর্গত এলাকাগুলোতে পৌছাতে ৩০টির মতো ট্রাক লাগবে।

টিএসসি প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা যায়, রাজধানীর বিভিন্ন স্থান থেকে মানুষ ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে বিভিন্ন পরিবহনে করে বন্যার্তদের জন্য খাবার, জামা-কাপড়, ওষুধ ও প্রয়োজনীয় সামগ্রী নিয়ে আসছেন। অসংখ্য মানুষ তাদের ব্যক্তিগত গাড়িতে করে ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছে দিতে এসেছেন। তাছাড়া বিকেলে বিজিবির একটি কাভার্ড ভ্যান ভর্তি করে ত্রাণ শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়।

বিপুল পরিমাণ ত্রাণ সংগ্রহে শতাধিক স্বেচ্ছাসেবী শিক্ষার্থীকে বিরামহীনভাবে কাজ করতে দেখা যায়। ত্রাণের বহর খালি করতে হিমশিম খাচ্ছেন তারা। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ও সহ-সমন্বয়কদের এসব তদারকি করতে দেখা যায়।

এদিকে দিনভর বিপুল পরিমাণ ত্রাণ সামগ্রী আসায় টিএসসি ক্যাফেটেরিয়া ও গেমস রুম বিকেলেই পূর্ণ হয়ে যায়। পরবর্তীতে টিএসসির বারান্দায় ত্রাণ সামগ্রী স্তূপ করে রাখা শুরু হয়। টিএসসির বারান্দায়ও ত্রাণ সামগ্রী বিশাল স্তূপ লক্ষ্য করা গেছে। স্বেচ্ছাসেবকরা মানব লাইন তৈরি করে টিএসসি গেট থেকে ভেতরে ত্রাণ পৌঁছে দিচ্ছেন।

শুধু খাদ্যসামগ্রী নয়, সংগ্রহ করা হচ্ছে নগদ টাকাও। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দেওয়া তথ্য মতে, রাত ৮টা পর্যন্ত নগদ অর্থ উঠেছে ৮৬ লাখ টাকা। ধারণা করা হচ্ছে, অনলাইন মিলিয়ে রাত ১০টা পর্যন্ত তা এক কোটি টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে।

এক স্বেচ্ছাসেবক বলেন, সাধারণ মানুষ বন্যার্তদের সাহায্যে এভাবে এগিয়ে আসবে তা কল্পনাতীত ছিল। আমরা ভাবতেও পারিনি এত পরিমাণ ব্যক্তিগত গাড়িতে করে ত্রাণ আসবে। মানুষ যতটা পারছে সাহায্য করছে। দ্রুতই ত্রাণ সামগ্রী বন্যার্ত মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে।

ত্রাণ পৌঁছে দিতে আসা একজন নারী বলেন, আমি আজীমপুর থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এই গণত্রাণ কর্মসূচিতে অংশ নিতে এসেছি। নিজের যতটুকু সামর্থ্য সে অনুযায়ী আমি সাহায্য করার চেষ্টা করেছি। দেশের সকল স্তরের মানুষ এগিয়ে এসেছে। অসহায় মানুষের পাশে এভাবে সবাইকে এগিয়ে আসতে দেখে অনেক ভালো লাগছে। এই শিক্ষার্থীরাই সামনের দিনে সুন্দর দেশ গড়বে বলে আমি মনে করি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে সরাসরি উপস্থিত হয়ে নগদ অর্থ ও খাদ্যসামগ্রী দেওয়া যাবে। অনলাইনে বিকাশ, নগদ, রকেট ও ব্যাং অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে নিম্নোক্ত নম্বরগুলোতে অর্থ সহায়তা পাঠানো যাবে।

মোবাইল ব্যাংকিং :

বিকাশ ও নগদ : 01886969859

রকেট : 018869698597

মোবাইল ব্যাংকিংয়ের নম্বর দুটি মার্চেন্ট অ্যাকাউন্ট। তাই টাকা পাঠানোর সময় অবশ্যই পেমেন্ট করতে হবে।

ব্যাংক অ্যাকাউন্ট :

Mohammad Anisur Rahman

Account : 20503100200291004

Badda Branch, Dhaka

Islami Bank Bangladesh

Swift code: IBBLBDDH

Routing Number: 125260341

টিএসসিতে ত্রাণ দিতে আজও মানুষের ঢল

প্রকাশিত : ০৮:২৩:৩০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৪ অগাস্ট ২০২৪

দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে চলমান বন্যা পরিস্থিতিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উদ্যোগে দ্বিতীয় দিনের মতো ‘গণত্রাণ’ কর্মসূচিতে ত্রাণ পৌঁছে দিতে হাজারো মানুষের ঢল নেমেছে। ব্যক্তিগত গাড়ি থেকে শুরু করে, ট্রাক, সিএনজি, রিকশা বা হাতে করে অসংখ্য মানুষ ত্রাণ নিয়ে আসছেন।

সারাদেশে বন্যার্তদের সহায়তা করতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) আজ শনিবারও (২৪ আগস্ট) ত্রাণ সংগ্রহ কার্যক্রম পরিচালনা করবেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ও সহ-সমন্বয়করা। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) বুথ বসিয়ে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত গণত্রাণ সংগ্রহ কর্মসূচি চলবে। এর আগে শুক্রবার (২৩ আগস্ট) সকাল থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত চলে এ কার্যক্রম।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ শনিবার ভোরে ফেসবুক লাইভে বলেছেন, দুর্গত এলাকায় ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম চলছে। পাশাপাশি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গণত্রাণ সংগ্রহ চলবে। এতে মানুষ অভূতপূর্ব সাড়া দিচ্ছেন। এটাকে জাতীয় ঐক্যের প্রতীক বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, দল-মত নির্বিশেষে সবাই অংশগ্রহণ করছেন। এ টাকা খরচের পর সংগৃহীত টাকার হিসাব দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

এর আগে দেশের বন্যার্ত এলাকার মানুষের সহায়তার জন্য শুক্রবার ১ কোটি ২৬ লাখ ২২ হাজার ১৭২ টাকা সংগ্রহ করেছে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মী এবং সাধারণ শিক্ষার্থীরা। তারা জানিয়েছেন, শুক্রবার নগদ অর্থের পাশাপাশি সংগ্রহ করা হয়েছে শুকনো খাবার, প্রয়োজনীয় ওষুধ, স্যালাইন ও পোশাক। এছাড়াও সংগ্রহ করা হয়েছে গবাদি পশুর খাবারও। এদিন যে পরিমাণ ত্রাণ সামগ্রী উঠানো হয়েছে, তা বন্যা দুর্গত এলাকাগুলোতে পৌছাতে ৩০টির মতো ট্রাক লাগবে।

টিএসসি প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা যায়, রাজধানীর বিভিন্ন স্থান থেকে মানুষ ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে বিভিন্ন পরিবহনে করে বন্যার্তদের জন্য খাবার, জামা-কাপড়, ওষুধ ও প্রয়োজনীয় সামগ্রী নিয়ে আসছেন। অসংখ্য মানুষ তাদের ব্যক্তিগত গাড়িতে করে ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছে দিতে এসেছেন। তাছাড়া বিকেলে বিজিবির একটি কাভার্ড ভ্যান ভর্তি করে ত্রাণ শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়।

বিপুল পরিমাণ ত্রাণ সংগ্রহে শতাধিক স্বেচ্ছাসেবী শিক্ষার্থীকে বিরামহীনভাবে কাজ করতে দেখা যায়। ত্রাণের বহর খালি করতে হিমশিম খাচ্ছেন তারা। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ও সহ-সমন্বয়কদের এসব তদারকি করতে দেখা যায়।

এদিকে দিনভর বিপুল পরিমাণ ত্রাণ সামগ্রী আসায় টিএসসি ক্যাফেটেরিয়া ও গেমস রুম বিকেলেই পূর্ণ হয়ে যায়। পরবর্তীতে টিএসসির বারান্দায় ত্রাণ সামগ্রী স্তূপ করে রাখা শুরু হয়। টিএসসির বারান্দায়ও ত্রাণ সামগ্রী বিশাল স্তূপ লক্ষ্য করা গেছে। স্বেচ্ছাসেবকরা মানব লাইন তৈরি করে টিএসসি গেট থেকে ভেতরে ত্রাণ পৌঁছে দিচ্ছেন।

শুধু খাদ্যসামগ্রী নয়, সংগ্রহ করা হচ্ছে নগদ টাকাও। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দেওয়া তথ্য মতে, রাত ৮টা পর্যন্ত নগদ অর্থ উঠেছে ৮৬ লাখ টাকা। ধারণা করা হচ্ছে, অনলাইন মিলিয়ে রাত ১০টা পর্যন্ত তা এক কোটি টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে।

এক স্বেচ্ছাসেবক বলেন, সাধারণ মানুষ বন্যার্তদের সাহায্যে এভাবে এগিয়ে আসবে তা কল্পনাতীত ছিল। আমরা ভাবতেও পারিনি এত পরিমাণ ব্যক্তিগত গাড়িতে করে ত্রাণ আসবে। মানুষ যতটা পারছে সাহায্য করছে। দ্রুতই ত্রাণ সামগ্রী বন্যার্ত মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে।

ত্রাণ পৌঁছে দিতে আসা একজন নারী বলেন, আমি আজীমপুর থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এই গণত্রাণ কর্মসূচিতে অংশ নিতে এসেছি। নিজের যতটুকু সামর্থ্য সে অনুযায়ী আমি সাহায্য করার চেষ্টা করেছি। দেশের সকল স্তরের মানুষ এগিয়ে এসেছে। অসহায় মানুষের পাশে এভাবে সবাইকে এগিয়ে আসতে দেখে অনেক ভালো লাগছে। এই শিক্ষার্থীরাই সামনের দিনে সুন্দর দেশ গড়বে বলে আমি মনে করি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে সরাসরি উপস্থিত হয়ে নগদ অর্থ ও খাদ্যসামগ্রী দেওয়া যাবে। অনলাইনে বিকাশ, নগদ, রকেট ও ব্যাং অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে নিম্নোক্ত নম্বরগুলোতে অর্থ সহায়তা পাঠানো যাবে।

মোবাইল ব্যাংকিং :

বিকাশ ও নগদ : 01886969859

রকেট : 018869698597

মোবাইল ব্যাংকিংয়ের নম্বর দুটি মার্চেন্ট অ্যাকাউন্ট। তাই টাকা পাঠানোর সময় অবশ্যই পেমেন্ট করতে হবে।

ব্যাংক অ্যাকাউন্ট :

Mohammad Anisur Rahman

Account : 20503100200291004

Badda Branch, Dhaka

Islami Bank Bangladesh

Swift code: IBBLBDDH

Routing Number: 125260341