নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে দেশের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি চট্টগ্রাম বন্দরের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ১৩৮তম বন্দর দিবস গতকাল শুক্রবার উদযাপন করা হয়েছে। এই উপলক্ষে বন্দরের সর্বস্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সাথে নিয়ে কেক কেটে শুভেচ্ছা জানান চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এস এম মনিরুজ্জামান। তিনি চট্টগ্রাম বন্দরকে সার্বক্ষণিক সচল রাখতে কর্মকর্তা কর্মচারীদের ভূমিকার প্রশংসা করেন।
তিনি বলেন, দেশের আমদানি-রফতানি কার্যক্রম এবং অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বাড়াতে হবে। এই লক্ষে যে উন্নয়ন পরিকল্পনা করা হয়েছে তার সফল বাস্তবায়নে তিনি সবার সহযোগিতা কামনা করেন।
২৫ এপ্রিল, চট্টগ্রাম বন্দর দিবস। চট্টগ্রাম বন্দরের জন্য বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ একটি দিন। আজকের এই আধুনিক বন্দরের ইতিহাস বহু পুরোনো। যুগে যুগে সেই পর্তুগিজ আমল থেকেই চট্টগ্রাম বন্দরের গুরুত্ব ছিল। এখন সেই গুরুত্ব বেড়ে বন্দরটি দেশের অর্থনীতির চাকায় পরিণত হয়েছে। ভূ-রাজনৈতিক বিবেচনায়ও চট্টগ্রাম বন্দরের গুরুত্ব আজ বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত। বহির্বিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের প্রায় ৯২ শতাংশ এ বন্দরের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়।
চট্টগ্রাম বন্দরের ১৩৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। দিবসটি উপলক্ষে শুক্রবার সকালে বন্দরের সর্বস্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নিয়ে কেক কেটে শুভেচ্ছা জানান চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এস এম মনিরুজ্জামান। এর আগে গত বৃহস্পতিবার দুপুরে শহীদ মো. ফজলুর রহমান মুন্সী অডিটোরিয়ামে সাংবাদিকদের সঙ্গে তিনি মতবিনিময় করেন।
বন্দর সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ১৮৮৭ সালে পোর্ট কমিশনার্স অ্যাক্ট প্রণয়ন করে ব্রিটিশ সরকার। ১৮৮৮ সালের ২৫ এপ্রিল তা কার্যকর হয়। তখন থেকে চট্টগ্রাম বন্দর আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়। তাই প্রতি বছর ২৫ এপ্রিল বন্দর দিবস উদযাপন করা হয়।
ইংরেজ শাসনের প্রথম দিকে ইংরেজ ও দেশীয় ব্যবসায়ীরা বার্ষিক এক টাকা সালামির বিনিময়ে নিজ ব্যয়ে কর্ণফুলী নদীতে কাঠের জেটি নির্মাণ করেন। পরে ১৮৬০ সালে প্রথম দুটি অস্থায়ী জেটি নির্মিত হয়। ১৮৭৭ সালে চট্টগ্রাম পোর্ট কমিশনার গঠিত হয়। ১৮৮৮ সালে চট্টগ্রাম বন্দরে দুটি মুরিং জেটি নির্মিত হয়।
১৮৮৮ সালের ২৫ এপ্রিল চট্টগ্রাম পোর্ট কমিশনার কার্যকর হয়। ১৮৯৯-১৯১০ সালের মধ্যে চট্টগ্রাম পোর্ট কমিশনার ও আসাম বেঙ্গল রেলওয়ে যুক্তভাবে চারটি স্থায়ী জেটি নির্মাণ করে। ১৯১০ সালে চট্টগ্রাম বন্দরের সঙ্গে রেলওয়ের সংযোগ হয়।
১৯২৬ সালে চট্টগ্রাম বন্দরকে মেজর পোর্ট ঘোষণা করা হয়। পাকিস্তান আমলে ১৯৬০ সালের জুলাইয়ে চট্টগ্রাম পোর্ট কমিশনারকে চট্টগ্রাম পোর্ট ট্রাস্টে পরিণত করা হয়। বাংলাদেশ আমলে ১৯৭৬ সালের সেপ্টেম্বর মাসে চট্টগ্রাম পোর্ট ট্রাস্টকে চট্টগ্রাম পোর্ট অথোরিটিতে পরিণত করা হয়। বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দর একটি স্বায়ত্তশাসিত সরকারি সংস্থা হিসেবে পরিচালিত হয়ে আসছে।
ডিএস.